নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন অলস মানুষ; ভালোবাসি স্বপ্ন দেখতে, চিন্তা করতে, আর কবিতা লিখতে।পেশায় চিকিৎসক, তবে স্বপ্ন দেখি সাহিত্যের সাথে নিবিড় সখ্য গড়বার।ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলাম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে, ভবিষ্যতে কাজ করতে চাই কন্যাশিশু নিরাপত্তা ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে।

তাহমিদ রহমান

প্রবাসী চিকিৎসক ও স্বপ্নচারী। শখের বশে কবিতা লেখার প্রয়াস হয়। হয়তো সেগুলা কবিতা হয়ে ওঠে না, হয় অগোছালো শব্দমালা,জীবনের মতোন...

তাহমিদ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পথ চলতে শেখা_১

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৯



২০১৪ সাল।

প্রথমবারের মতোন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গেছি। এয়ারপোর্টের বাহিরে অপেক্ষা করছেন কাকা-কাকী।এদিকে ইমিগ্রেশনে হলো প্যাঁচ, কাগজ-পত্র ক্লিয়ার না করে বের হতে পারছিনা।
সময় চলে গেছে একঘন্টা, আমরা যে এসেছি এই খবর দেওয়ার জো নেই।

মার্কিন দেশে সময়জ্ঞান খুব কড়া, উনারা নিশ্চিত ভেবে নিবেন আমরা কোনো কারণে আসতেই পারিনাই। হয়তো দূরের পথ পাড়ি দিয়ে আবার বাসায় চলে যাবেন।
কুইন্স থেকে কেনেডি, কম দূরত্ব না। যাত্রাবাড়ি থেকে কুমিল্লা-বিশ্বরোড সমান দূর হবে?
হতে পারে!
সে যাইহোক, আমাদের কাছে মার্কিন সিমকার্ড নাই, এয়ারপোর্টে ওয়াইফাই পাবো কিনা অনিশ্চিত।কাকার বাসার ঠিকানাও জানিনা ভালো করে।একবার উনারা চলে গেলে কঠিন বিপদ!

সিদ্ধান্ত নিলাম কারো থেকে চেয়ে নিয়ে ফোনকল করবো। ভদ্রলোকের দেশ, সাহায্য করার লোকের তো অভাব হবেনা। তাছাড়া চারপাশে দস্তুরমতো পুলিশের লোক। আগেও দেখেছি, তাছাড়া নভেল- সিনেমা মারফত জেনেছি, উন্নত বিশ্বের পুলিশ খুব উপকারী, আদতেই জনগণের আপনা লোক।
তো, গেলাম পুলিশের কাছে,
'আমার খুব প্রয়োজন একটা ফোনকল করা। আঙ্কলকে ফোন দিয়ে জানাতে হবে আমরা পৌছেছি, ইমিগ্রেশনে একটু দেরী হচ্ছে। আমার কাছে কয়েন নেই, বুথ ব্যবহার করতে পারছিনা, উপায় বাতলে দাও কি করতে পারি।'
কিন্তু পুলিশ উপায়হীন, নিয়ম নাকি নেই, সাহায্য করতে পারবেনা এই ব্যাপারে। কোনো তথ্যও দিতে পারলোনা।
একজন, দুইজন, তিনজন - একই প্রশ্ন আর একই উত্তর।
'স্যরি।'
এবার এক সাহেব মতোন শ্বেতাঙ্গকে বললাম। সাহেবরা ত ভালোই নিয়েছেন আমাদের থেকে, অতীতের প্রায়শ্চিত্ত করতে দিলেও দিতে পারেন একটা ফোনকলের সুযোগ।
না, সাহেবের ফোনে সীম কিংবা নেটওয়ার্ক,কি যেন নাই, দিতে পারলেন না।
আমাদের চোখে সব সাদা চামড়াই সাহেব, হূলস্থুল ব্যাপার। তবে সব সাদা-ই ইংরেজ না বাস্তবে, ইনিও তাই,মেক্সিকান বা লাতিনো। হয়তো এজন্য প্রায়শ্চিত্তির জ্বালা ছিলোনা তিনার।
বাঙালী আমি, জাতে-রক্তে বর্ণবাদ-সাম্প্রদায়িকতা-বিভক্তির সর্বকলা,সর্বজ্ঞান কেটলীর পানির মতো ফুটছে। তাই এতোক্ষণ গেছি খালি সফেদ গাত্রধারীদের কাছে, যদিও চারপাশে কৃষ্ণাঙ্গও ছিলো প্রচুর।
ছোটোবেলায় কে যেন বলেছিলো ওরা বড় ডেঞ্জারাস, তাছাড়া দু-চার কথার কাটাকাটিতে আত্মীয়ের মধ্যে একজনকে রীতিমতো গুলি করে দিয়েছিলো। অতএব, ওদের কাছে চাওয়ার সাহস হয়নি।
হঠাৎ কাঁধে হাত, রিফ্লেক্সে ফিরলাম পেছনে। ছাইরঙ্গা টু-পীস পড়া, চোখে রীমড চশমা, পঞ্চাশোর্ধ একজন ভদ্রলোক। আরেকহাতে কালো মোবাইলখানা বাড়িয়ে রেখেছেন। চোখের ইশারায় এগিয়ে দিলেন।
কাকাকে কল দিলাম, কথা হলো।
ফোন ফিরৎ দিলাম, সাথে অন্তরিক ধন্যবাদ।
'এটা কোনো ব্যাপারই না, আরো কল করা প্রয়োজন হলেও করতে পারো'

না, আর প্রয়োজন ছিলোনা। আরেকবার ধন্যবাদ দিয়ে, স্মিত হাসি উপহার পেয়ে নিশ্চিন্তে ইমিগ্রেশনের ওয়েটিং এর জায়গায় ফেরৎ গেলাম।

হ্যা, উনি কৃষ্ণাঙ্গই ছিলেন। কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ....

পরিচিত অবয়বগুলো বিপদে পাশে থাকেনা, অথচ এভাবেই অচেনা মানুষ অপ্রত্যাশিত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সেই সাথে কিছু ভুল ভাঙ্গে,আর কিছু ভুল নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:১১

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেছেন: ভালো বলেছেন।।।। সুন্দর বলেছেন

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৩৬

তাহমিদ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনাদের মন্তব্যগুলো অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০২

রাজীব নুর বলেছেন: বাহ!!
খুব ভাল।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৪৭

তাহমিদ রহমান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: তাহমিদ রহমান ,




সুন্দর অভিজ্ঞতা । লিখেছেনও , ধরে রাখে এমন চুম্বকের মতো ।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৪৯

তাহমিদ রহমান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৫১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: লেখা পড়ে ভাল লাগল।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৫০

তাহমিদ রহমান বলেছেন: শুকরিয়া :- )

৫| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৩

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: মানুষ মানুষের জন্য -তবে সাদারা একটু ব্যতিক্রম!

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৫৩

তাহমিদ রহমান বলেছেন: সাদাদের চিন্তা-ভাবনার ধাঁচটাই আমার কাছে আশ্চর্যজনক। পাশ্চাত্য আর প্রাচ্যের জীবনদর্শনে যে দূরত্ব, সেটা ভৌগোলিক ফারাকের চেয়েও দীর্ঘতর।

৬| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫১

পুলক ঢালী বলেছেন: খুব সুন্দর ভাবে লিখেছেন। ফোনের জন্য ছোটাছুটি না করে ওয়াইফাই চালু করে দেখতেন এয়ারপোর্টের ভিতরে ফ্রী ওয়াইফাই চালু থাকে। পুলিশের সমস্যা হলো তারা আপনাকে সাহায্য করলে আপনার যদি কোন ত্রুটি বেড়িয়ে পড়ে তাহলে তারা প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। আপনি এয়ারপোর্টের বাহিরে এসে পুলিশের সাহায্য চান অবশ্যই পাবেন এতদিনে আপনি এটা জেনে যাওয়ার কথা। ভাল থাকুন।

৭| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:১১

তাহমিদ রহমান বলেছেন: জেএফকে'র ওয়াইফাই মহাশয় সম্ভবত আমার উপর রুষ্ট। সেদিনও যেমন পাইনি ওয়াইফাই, এই মাসদুয়েক আগেও ওয়াইফাই সংযোগ করার প্রয়াসে আমার গোবেচারা মোবাইল ফোনটার সাথে একপাক্ষিক মল্লযুদ্ধ, জুডো, তায়কোয়ান্দো সবই একদফা করে হয়েছে, কিন্তু লাভের খাতা শূন্য। অথচ আমার সাথেরই একজন বিনাযুদ্ধে উঁনার আইফোনখানা একবারে কানেক্ট করে ফেলেছেন। পরে বিস্তর খোঁজখবর করে এই সিদ্ধান্তে পৌছলাম যে, আমার প্রাচ্যদেশীয় ফোনের ওয়াইফাই ফ্রিকোয়েন্সী মার্কিন মুল্লুকে অনেকটা নিধিরাম সর্দার, কানেক্ট হয়না, হলেও কমজোরি, ছবিছাড়া পেইজও লোড হয়না। আর সবকিছুর মতো মার্কিনীরা তাদের ওয়াইফাই ফ্রিকোয়েন্সীও আলাদা রেখেছে, কান্ডটা দেখেন!

৮| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭

পুলক ঢালী বলেছেন: হা হা হা তাহমিদ রহমান। আমার স্যামসাং ফোনে একবারেই কানেক্টেড হয়ে গিয়েছিলো। অাই ফোনেও সমস্যা নেই। তবে অন্য অনেক ফোন আছে যেগুলোর সফটঅয়্যারের দুর্বলতার জন্য কাজ করেনা। তাছাড়া ইন ফ্লাইটে ২০ মেগা ফ্রী পাওয়া যায় ৩০/৩৫ হাজার ফুট উপরে ওঠার পর তখন কথা পরিষ্কার শোনা যায়না তবে হোয়াটস এ্যাপে মেসেজ দেওয়া যায়। বিদেশের যে কোন জায়গায় গিয়ে যোগাযোগ করতে না পারলে ভীষন অসহায় মনে হয়। ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.