নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কলমের তুলি আমার প্রতিবাদের হাতিয়ার

জেআইসিত্রস

তুমি তাকেই ভালবেসে আগলে রাখ যার ভালবাসার বিনিময়ে কিছু চাওয়া পাওয়া নেই।

জেআইসিত্রস › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের নজরুল

১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ১:৩৫

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম জয়ন্তিতে বিশেষ প্রবন্ধ।
আমাদের নজরুল
কাজী নজরুল ইসলাম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে (২৪ শে মে ১৮৯৯) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন,বিদ্রোহী কবি,সাম্যের কবি,মানবতার কবি,প্রেমের কবি আমাদের জাতীয়কবি।।যৌবনের অপ্রতিরোধ্য কবি নজরুল কে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন নিযাতন, অসাম্য- বৈষম্য ও পরাধীনতার গ্লানির কোন কিছুই দাবিয়ে রাখতে পাড়েনি তাকে।বাংলার আকাশে বিজয় কেতন উড়িয়েছেন।যৌবনেই তিনি আত্মজাগারণ তুলেন শোষকের বিরুদ্ধে,বিদ্রোহ করেন লিখলির মাধে্যমে মানবতার মুক্তির জন্য,পরাধীনতার সাম্প্রদায়িকতার অচলায়তন ধ্বংস করার।মানুষকে অনুপ্রাণিত করেন দারিদ্র, কুসংস্কার,ধর্মান্ধতা, সমাজ শ্রেণিভেদে ভূলে কাদে কাদ মিলিয়ে চলার।
নজরুলের বাবা ছিলেন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম। তারা ছিলেন তিন ভাই-বোন।নজরলের ডাক নাম ছিল “দুখু মিয়া” স্থানীয় মক্তবে (মসজিদ পরিচালিত মুসলিমদের ধর্মীয় স্কুল) কুরআন,ইসলাম ধর্ম,দর্শন এবং ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন।
১৯০৮খ্রিস্টাব্দে যখন তাঁর পিতার মৃত্যু হয়, তখন তার বয়স মাত্র নয় বছর।পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে তাঁর শিক্ষাজীবন বাঁধাগ্রস্থ হয়,মাত্র দশ বছর বয়সে তাকে নেমে যেতে হয় জীবিকার সন্ধানে।এসময় নজরুল মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন।মসজিদের মুয়জ্জিন হিসেবে চাকুরি করেন।নজরুল অল্প বয়সেই ইসলাম ধর্মের মৌলিক আচার-অনুষ্ঠানের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হবার সুযোগ পান,পরবর্তীকালে সাহিত্যকর্মকে সানিত করে।বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একটি লেটো দলে যোগ দেন।তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লেটো দলের বিশিষ্ট ওস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফারসি ও উর্দূ ভাষায় তার দখল ছিল।এছাড়া বজলে করিম মিশ্র ভাষায় গান রচনা করতেন। ধারণা করা হয়, বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল লেটো দলে যোগ দিয়েছিলেন।এছাড়া ঐ অঞ্চলের জনপ্রিয় লেটো কবি শেখ চকোর (গোদা কবি) এবং কবিয়া বাসুদেবের লেটো ও কবিগানের আসরে নজরুল নিয়মিত অংশ নিতেন। লেটো দলেই সাহিত্য চর্চা শুরু হয়।এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্য গান ও কবিতা লিখতেন।নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বাংলা এবং সংস্কৃতি সাহিত্য অধ্যয়ন শুরু করেন। একইসাথে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ পুরাণসমূহ অধ্যয়ন
করতে থাকেন। সেই অল্প বয়সেই তার নাট্যদলের জন্য বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন।এর মধ্যে রয়েছে চাষার সঙ, শকুনীবধ,রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ,দাতা কর্ণ,আকবর বাদশাহ, কবি কালিদাস,বিদ্যাভূতুম,রাজপুত্রের গান,বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ এবং মেঘনাদ বধ।
একদিকে মসজিদ, মাজার ও মক্তব জীবন, অপর দিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের
অনেক উপাদান সরবরাহ করেছে। নজরুল কালীদেবিকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা সঙ্গিতও রচনা করেন, নজরুল। “কেউ বলেন আমার বানী যবন কেউ বলেন কাফের। আমি বলি হিন্দু না ওরা মুসলিম ওই জিজ্ঞাসে কোন জন ? কান্ডারী! বল,ডুবিছে মানুষ,সন্তান মোর মা'র।
১৯১০ সালে নজরুল লেটো দল ছেড়ে
ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন।এই নতুন ছাত্রজীবনে তার প্রথম স্কুল ছিল রানীগঞ্জের
সিয়ারসোল রাজ স্কুল।এরপর ভর্তি হন মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে যা পরবর্তীতে নবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশন নামে পরিচিতি লাভ
করে।মাথরুন স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন কুমুদরঞ্জন মল্লিক যিনি সেকালের বিখ্যাত কবি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।তার সান্নিধ্য নজরুলের অনুপ্রেরণার একটি উৎস।কুমুদরঞ্জন স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে নজরুল সম্বন্ধে লিখেছেন, “ছোট সুন্দর ছনমনে ছেলেটি, আমি ক্লাশ পরিদর্শন করিতে গেলে সে আগেই প্রণাম
করিত।আমি হাসিয়া তাহাকে আদর করিতাম।সে বড় লাজুক ছিল। ”
যাহোক,আর্থিক সমস্যা তাকে বেশী দিন এখানে পড়াশোনা করতেদেয়নি।ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়।প্রথমে যোগ দেন বাসুদেবের কবিদলে।এর পর একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা এবং সবশেষে আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন।এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে।এই দোকানে কাজ করার সময়
আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহ’র’ সাথে তার পরিচয় হয়।দোকানে একা একা বসে নজরুল যেসব কবিতা ও ছড়া রচনা করতেন তা দেখে রফিজউল্লাহ তার প্রতিভার পরিচয় পান।তিনিই নজরুলকে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন।১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি আবার
রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে যান এবং সেখানে অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়াশোনা শুরু করেন।১৯১৭ সাল পর্যন্ত এখানেই পড়াশোনা করেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রি-
টেস্ট পরীক্ষার না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন।এই স্কুলে অধ্যয়নকালে নজরুল এখানকার চারজন শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এরা হলেন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল,বিপ্লবী চেতনা বিশিষ্ট নিবারণচন্দ্র ঘটক,ফারসি সাহিত্যের হাফিজ নুরুন্নবী এবং সাহিত্য চর্চার নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।প্রথমে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে এবং পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের জন্য সীমান্ত প্রদেশের নওশেরায় যান।প্রশিক্ষণ শেষে করাচি সেনানিবাসে সৈনিক জীবন কাটাতে শুরু করেন।তিনি সেনাবাহিনীতে ছিলেন ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগ থেকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত,অর্থাৎ প্রায় আড়াই বছর।যুদ্ধ শেষে কলকাতায় এসে নজরুল ৩২ নং কলেজ স্ট্রিটে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিসে বসবাস শুরু করেন।
১৯২০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই ১২ তারিখে নবযুগ নামক একটি সান্ধ্য দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হওয়া শুরু করে।অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন শেরে-বাংলা এ. কে. ফজলুল হক।তখন দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।নজরুল কুমিল্লা থেকে কিছুদিনের জন্য দৌলতপুরে আলী আকবর খানের বাড়িতে থেকে আবার কুমিল্লা ফিরে যান ১৯ জুনে।এখানে যতদিন ছিলেন ততদিনে তিনি পরিণত হন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মীতে।তাঁর মূল কাজ ছিল শোভাযাত্রা ও সভায় যোগ দিয়ে গান গাওয়া।তখনকার সময়ে তার রচিত ও সুরারোপিত গানগুলির মধ্যে রয়েছে “এ কোন পাগল পথিক ছুটে এলো বন্দিনী মার আঙ্গিনায়,আজি রক্ত-নিশি ভোরে/ একি এ শুনি ওরে/ মুক্তি-কোলাহল বন্দী-শৃঙ্খলে” প্রভৃতি।এখানে ১৭ দিন থেকে তিনি স্থান পরিবর্তন করেছিলেন।১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে আবার কুমিল্লায় ফিরে যান।
২১ নভেম্বর ছিল সমগ্র ভারতব্যাপী হরতাল। এ উপলক্ষে নজরুল আবার পথে নেমে আসেন; অসহযোগ মিছিলের সাথে শহর প্রদক্ষিণ করেন আর গান করেন, “ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও! ফিরে চাও ওগো পুরবাসী”।নজরুলের এ সময়কার কবিতা, গান ও প্রন্ধের মধ্যে বিদ্রোহের ভাব প্রকাশিত হয়েছে।এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে বিদ্রোহী নামক কবিতাটি।বিদ্রোহী কবিতাটি ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় এবং সারা ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতিলাভ করে। এই কবিতায় নজরুল নিজেকে বর্ণনা করেনঃ-“ আমি বঞ্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,আমি
অবমানিতের মরম বেদনা,বিষ জ্বালা,চির লাঞ্ছিত বুকে গতি ফের,আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা,ব্যথা সুনিবিড়, চিত চুম্বন-চোর-কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর !আমিগোপন প্রিয়ার চকিত চাহনি,ছল করে দেখা অনুখন,আমি চপল মেয়েরর ভালবাসা তার কাকন চুড়ির কন-কন । …মহা- বিদ্রোহী রণক্লান্ত.আমি সেই দিন হব শান্ত। যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ,ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেই দিন হব শান্ত। ....আমি চির-বিদ্রোহী বীর -আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!
কাজী নজরুল ইসলাম তার নিজের
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে লিখেছেন, বন্ধু গো আর বলিতে পারিনা,বড় বিষ-জ্বালা এই বুকে,দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি,তাই যাহা আসে কই মুখে। রক্ত ঝরাতে পারি না ত একা,তাই লিখে যাই এ রক্ত লেখা,বড় কথা বড় ভাব আসে নাক মাথায়,বন্ধ,বড় দুখে,তমর কাব্য তোমরা লিখিও ‘বন্ধু’ যাহারা আছ মুখে।১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ই আগস্ট নজরুল ধূমকেতু পত্রিকা প্রকাশ করে।এটি সপ্তাহে দুবার প্রকাশিত হতো। ১৯২০-এর দশকে অসহযোগ ও খিলাফত
আন্দোলন এক সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।এর পরপর স্বরাজ গঠনে যে সশস্ত্র বিপ্লববাদের আবির্ভাব ঘটে তাতে ধূমকেতু
পত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল।এই পত্রিকাকে আশীর্বাদ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন,কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু,আয় চলে আয়রে ধূমকেতু। আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু, দুর্দিনের এই দুর্গশিরে উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।” পত্রিকার প্রথম পাতার শীর্ষে এই বাণী লিখা থাকতো।পত্রিকার ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২২
সংখ্যায় নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে প্রকাশিত হয় এই রাজনৈতিক কবিতা প্রকাশিত হওয়ায় ৮ নভেম্বর পত্রিকার উক্ত সংখ্যাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।একই বছরের ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একই দিনে তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারের পর তাকে কুমিল্লা থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দী হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দী প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে এই জবানবন্দী দিয়েছিলেন।তার এই জবানবন্দী বাংলা সাহিত্যের রাজবন্দীর জবানবন্দী নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে।এই জবানবন্দীতে নজরুল বলেছেন:“ আমার উপর অভিযোগ,
আমি রাজবিদ্রোহী। তাই আমি আজ রাজকারাগারে বন্দি এবং রাজদ্বারে অভিযুক্ত।আমি কবি,আমি অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তিদানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত। কবির কণ্ঠে ভগবান সাড়া দেন, আমার বাণী সত্যের প্রকাশিকা ভগবানের বাণী। সেবাণী রাজবিচারে রাজদ্রোহী হতে
পারে,কিন্তু ন্যায় বিচারে সে বাণী ন্যায়দ্রোহী নয়, সত্যাদ্রোহী নয়।সত্যের প্রকাশ নিরুদ্ধ হবে না। আমার হাতের ধূমকেতু এবার ভগবানের হাতের অগ্নি-মশাল হয়ে অন্যায় অত্যাচার দগ্ধ করবে।১৬ জানুয়ারি বিচারের পর নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।নজরুলকে আলিপুর কেদ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।এখানে যখন বন্দী জীবন কাটাচ্ছিলেন তখন (১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারি ২২) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তার বসন্ত গীতিনাট্য গ্রন্থটি নজরুলকে উৎসর্গ করেন।এতে নজরুল বিশেষ উল্লসিত হন।এই
আনন্দে জেলে বসে আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে কবিতাটি রচনা করেন।
"মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর টগবগিয়ে খুন হাসে, আজ সৃষ্টি -সুখের উল্লাসে"।
কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী সৃষ্টির মধ্যে একটি হচ্ছে যৌবনের গান। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জে মুসলিম যুব সমাজের অভিনন্দনের উত্তরে তাদের উদ্দেশ্যে কাজী নজরুল যে প্রানোচ্ছল ভাষন দিয়েছিলেন, যৌবনের গান রচনাটি তারই পরিমার্জিত লিখিত রুপ।তিনি সিরাজগঞ্জের মুসলিম যুব সমাজের
উদ্দেশ্যে মূল্যবান যে ভাষণ প্রদান করে ছিল তার একটু বুঝলে কাজী
নজরুল ইসলামের লেখা আমাদের তরুণ্যের জন্য কতটুকু প্রয়োজন।তিনি বলেছিলেন
‘‘পথ-পার্শ্বের ধর্ম-অট্রালিকা আজ পড় পড়
হইয়াছে,তাহাকে ভাঙিয়া ফেলিয়া দেওয়াই আমাদের ধর্ম, ঐ জীর্ণ অট্টালিকা চাপা পড়িয়া বহু মানবের মৃত্যুর কারণ হইতে পারে।যে ঘর আমাদের আশ্রয় দান করিয়াছে,তাহা যদি সংস্কারাতীত হইয়া
আমাদেরই মাথায় পড়িবার উপক্রম করে, তাহাকে ভাঙিয়া নতুন করিয়া
গড়িবার দুঃসাহস আছে একা তরুণ্যেরই। খোদার দেওয়া এই পৃথিবীর নিয়ামত হইতে যে নিজেকে বঞ্চিত রাখিল,যে যত মোনাজাতই করুক, খোদা তাহা কবুলকয়িাবেননা।খোদা হাত দিয়েছেন বেহশত ও বেহেশত চিজ অর্জন করিয়া লইবার জন্য,ভিখারীর মতো হাত
তুলিয়া ভিক্ষা করিবার জন্য নয়।আমাদের পৃথিবী আমরা আমাদের মনের মতো মরিয়া গড়িয়া লইব। ইহাই হউক তরুণের সাধনা। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকার সঙ্গে সঙ্গে
প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিত, তিনি বাংলা ভাষার
অন্যতম সাহিত্যিক, দেশপ্রেমী এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি।
অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রেহী, তেমনই জীবনে কাজেই “বিদ্রোহী কবি"।তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ।র্ধমীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন।ছোট,গল্প,উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত।বাংলা কাব্য তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল। এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামাসংগীত
ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন।নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা “নজরুল গীতি” নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়।মধ্যবয়সে তিনি
পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হন।এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম
থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়।একই সাথে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন।এসময় তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়।বাংলাদেশেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
লেখকঃ
জে আই চৌধুরী শান্ত

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩১

এহসান সাবির বলেছেন: এটা ভালো পোস্ট ছিল। আপনি রি পোস্ট দিতে পারেন এটা।

২| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৩

জেআইসিত্রস বলেছেন: ধন্যবাদ।ভাই সতি্য কথা হলো কেহ পড়ে না।পাঠক নেই লেখক বেশী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.