নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসার এই ব্লগে ইহা আমার ২য় নিক।

আব্দুল্যাহ

ব্লগে ফিরে আসা হবে চিন্তাতেই ছিল না। নতুন ব্লগের জন্য প্রচুর পড়তে হবে।

আব্দুল্যাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭.৫% ভ্যাট প্রত্যাহার, একটি বড় সফলতা ও কিছু কথা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২১

প্রথমেই ৭.৫% ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে, আমাদের এই সফলতার অংশীদার সকলকেই অভিনন্দন জানাই। শিক্ষাখাতে আরোপিত এই ভ্যাট প্রত্যাহের দাবীর শুরু থেকে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছি, ঘটে গেছে অনেক অপ্রিতীকর ঘটনা। আজকের এই পোস্ট টি সেই সকল ঘটনা ও কিছু কথার জন্যই।

০১
২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল। যা পরবর্তীতে কমিয়ে ৭.৫% করা হয়। ভ্যাট আরোপের শুরু থেকেই তা বাতিলের দাবি কথা বলে আসছি আমরা। রমযানের সময়ও কিছু বিক্ষোভ হয়েছে তবে আশার বানী শুনে তখনও কিছুটা শান্ত ছিলাম, নানা জায়গায় দাবী জানাতে গিয়ে পুলিশের হাতে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে রমযানে ও তারা আগে।
আমাদের সুশীল সমাজের দুই একজন ভ্যাট বাতিলের পক্ষে থাকলেও খুব বেশী জোরালো দাবী ছিলনা কারও।

০২
গত ৯ই সেপ্টেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট এর শিক্ষার্থীরা রামপুরা ব্রিজের কাছে রাজপথ দখন করে আন্দোলন করে। দাবী ছিল ভ্যাট বাতিলের, শিক্ষার্থীরা কেউ কোন অস্ত্র নিয়ে নামেনি বরং অনেকের কাছেই পাঠ্যপুস্তক ছিল। সেই দাবীতে পুলিশের হামলাই আমাদের সবাইকে রাজপথে নামিয়ে এনেছে।
দেশের পরিস্থিতি সবাই জানি, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি যে ছাত্রদের হটানোর জন্য জল কামান আনতে হবে বা রাবাার বুলেট ছুড়তে হবে। কিন্তু পুলিশ সেই কাজটিই করেছে, ছাত্রদের উপর হামলা করে কিছুটা অন্যায় করেছে। যার ফলস্বরূপ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্ররা দখল দিয়ে যান চলাচল আটকে দেয়। সেদিনও পুলিশ প্রশাসন নেমেছিল, কিন্তু তাদের তরফ থেকে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা না ঘটলেও রাতে ড্যাফোডিল বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর 'জয় বাংলা' বলে একদল যুবক হামলা করে। সেই ঘটনা পুলিশ তাকিয়ে দেখেছে, কিছুই বলেনি। বরং ছাত্ররা নিজেরা মারামারি করেছে বলে তারা নাকি চূপ ছিল!

০৩
দেশে নানা সময়ে হরতাল, ধর্মঘটসহ অনেক আন্দোলন হয়েছে। দেখতে গেলে তার সবই সহিংস আন্দোলন ছিল। সর্বশেষ ০৮-০৯ এর তত্বাবধায়ক এর আমলে সেনাবাহিনী-ছাত্র সংঘর্ষের আন্দোলনটিও সহিংসই ছিল। আমাদের দেশে রাজপথে আন্দোলন মানেই গাড়িতে আগুন দেয়া, গাড়ি ভাংচুর করা ছিল, যা আমরা ভূল প্রমাণ করেছি।

০৪
দেশের সবাই জানে আন্দোলন চলছে, রাজপথ ছাত্রদের দখলে। সেই হিসাবে তো অনেক সহিংসতা হবার কথা ছিল, হয়নি কারণ আমরা একে অপরকে না চিনলেও ঢাকার সকল জায়গায় একই নিয়ম মেনে চলেছি। আমরা সকল যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছিলাম শুধু বিশেষ কিছু বাদ দিয়ে।
*অ্যাম্বুলেন্স
*রোগী বহনকারী যেকোন পরিবহন
*স্কুল/কলেজ বাস
*আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি

আমরা জানি আমাদের এই আন্দোলনে অনেকরই কষ্ট হয়েছে। প্রায় সবাই দীর্ষ পথ হেটেই পাড়ি দিয়েছেন, অনেকে নিজের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় আটকে থেকেছেন। এরই মাঝে অনেকেই আমাদেরই সমর্থন জানিয়েছেন, এতো কষ্টের পরও তারা সাহস জুগিয়েছেন।

০৫
আন্দোলনের মাঝে একটি মূল শ্লোগান ছিল। যা প্রথম থেকেই রাজপথের বিভিন্ন অংশে লেখা ছিল, দেয়ালে জায়গা করে নিয়েছিল। শেষ দিকে পাবলিক গাড়ীতেও কেউ লিখেছে আবার অতিরঙ্জিত হয়ে ব্যাক্তিগত গাড়ি/প্রইভেট কারেও লিখেছে আমাদেরই কিছু ভাই। জানি ঠিক হয়নি, কিন্তু খুন বেশী খারাপ কিছু করেছে কী? এই কারণেই আন্দোলনকারীদের চরিত্র ও ব্যবহার নিয়ে আপনারা কথা বলতে পারেন না।


এই গাড়ির মালিক আন্দোলনকারীদের ব্যবহারে খুবই অতিষ্ঠ।
ভাই/স্যার,
কিছু মনে করিয়েন না, আজ যদি এটা কোন রাজনৈতিক আন্দোলন হতো। তবে এই আন্দোলনের মাঝে হয়তো আপনার গাড়ির কিছুই বাকী থাকত না। রাজপথের কোন গাড়ি অক্ষত থাকত না। আমি বলছি না কাজটা ঠিক হয়েছে, কিন্তু আপনি কী তাদের একটু অনুরোধ করতে পারেন নি? যদি না শুনে থাকে তবে আসলেই অন্যায় করেছে, তবে শুধু এই কারণে আপনি এই আন্দোলনের সবাইকে গালি দিতে পারেন না।
অনকে কেন রাস্তা দখল করেছি তার জন্য গালি দিয়ে সন্মানের সহিত চলে গেছেন। আর যাই হোক অন্য কোন আন্দোলন হলে এমনটা ঘটত না বলেই আমার বিস্বাস। আমরাতো এখনও ছাত্র, দুনিয়া দেখার অনেক বাকী। আপনিতো দেখেছেন, তারপরও যদি মনে হয় আন্দোলনের মাঝে আপনার গাড়ির এই অবস্থার জন্য আমাদের গালি দেওয়া দরকার তবে দেন। আমরা আসলেই ভূল করেছি, তবে আমাদের চেয়ে দলীয় লোকেরাই আপনাদের কাছে ভালো।


০৬
অনেক মাধ্যমই গতকাল একটি অ্যাম্বুল্যান্সের খবর বিশেষ করে ছেপেছে, যেখানে একজন অসুস্থ পিতার জন্য মেয়ে খুব চিন্তিত ছিল। আমি আগেই বলেছি অ্যাম্বুলেন্স বা কোন রোগী বহনকারী গাড়ীকে আমরা আটকাই নি বরং তাদের সাইট দিয়ে পার করে দেবার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রাজপথ দখল ছিল, মানে রাস্তার একপাশ খালি থাকার কথা ছিল। হিসাব অনুযায়ীতো রাস্তার একদিক ফাকা থাকার কথা, সেখানেও যদি আপনি আপনার বিলাশবহুল গাড়ি খানা দাপটের সাথে ঢুকিয়ে দেন, রাজপথের রাজা হিসাবে পরিচিত দুইচাকার বাহনটি নিয়ে দাড়িয়ে থাকেন তবে মূর্খ, অশিক্ষিত, অসচেতন বা পশুবিষয়ক যে গালিগুলো আমাদের দিকে ছুড়ে দিচ্ছেন তা শুধু ও শুধু আপনারই জন্য প্রযোজ্য।
আপনাদের যখন মাঝপথে আটকে রাখা হয় শুধু ভিআইপি যাবে বলে, তখন একটি প্রসুতি মায়ের কী দষা হয়, মৃতপ্রায় লোকটি কী অবস্থায় থাকে তা কখন কী ভেবে দেখেছেন? এভাবে ভিআইপি যাবার কারণে কোর রোগীর মৃত্যুও তো আপনাদের সংবাদ মাধ্যমে আসে না, অথচ গতকালকে অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতাল থেকে রোগীকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি.

০৭
রাজপথে আন্দোলনের প্রথম দিন থেকে আমরা সকলের সহযোগীতা চেয়ে আসছি। আপনাদের কষ্টের জন্য ক্ষমা চেয়ে আসছি, আমাদের সাপোর্ট করার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে আসছি। তারপরও আপনাদেরই কেউ যখন "আমাদের কষ্টের জন্য কেউ একটু ক্ষমা চাইল না" বলে মন্তব্য করেনতখন অবাকই লাগে।
শুধু যে ভদ্রভাবে রাজপথে ছিলাম তা নয়, আমরা অনেকের ব্যাগ হাতে পার করে দিয়েছি। রোগী আছে রিক্সা ঠেলে পার করে দিয়েছি।হজ্জের এই মৌসুমে হজ্জযাত্রী বহনকারী বাস পার করতে গিয়ে ট্রাফিকের মতো কাজ করেছি, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য রাস্তা ফাকা রাখতে প্রতি ঘন্টায় আপনাদের মতো ধনী ও শিক্ষিত কারওয়ালাদের সরাতে হয়েছে। এর কী তেমন কোন দরকার ছিল, অ্যাম্বুল্যেন্সে থাকা কেউ দুরের সম্পর্কেরও কেউ ছিল না। শুধু তাই নয়, গর্ভবতী মা দেরও ছেড়ে দিয়েছি।
আমাদের গালি দেবার আগে একবার বলুন, যারা অ্যম্বুলেন্সে করে রাস্তা পাড়ি দিয়েছেন তারা কী? আর এমনটা যে ঘটেছে তার সাক্ষী আমি নিজেই।

০৮
সর্বোপরি আবারও আপনাদের কষ্টের জন্য আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
আজকের ভ্যাট পত্যাহারে মাঝ দিয়ে ইতিহাসের একটি অসহিংস ছাত্র আন্দোলনের জন্ম হলো। আর আমি গর্বিত এমন একটি আন্দোলনের অংশ হতে পেরে।
ধন্যবাদ সবাইকে, সেই সাথে আবারও সাময়িক কষ্টের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৪

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আন্দোলন সফল হয়েছে এটাই বড় কথা!
তবে এটা যেন ছাত্র-রাজনীতির সূচনা না হয়!!

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬

আব্দুল্যাহ বলেছেন: নজরটা আমাদেরই রাখতে হবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.