নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুখচোরা স্বভাবের মানুষগুলো সবসময় আড়ালে থেকে যায় ।
এরা জীবনের একটা পর্যায়ে এসে দেখে তার সাথের মানুষরা অনেক অনেক উপরে উঠে গেছে । উপর থেকে তারা আর তাকে টেনে তুলছে না।
এরা ভীড় পছন্দ করে না ।আবার একলা থাকতেও চায় না । চারপাশে সব অপরিচিত মানুষ দেখলে এরা নিজেদের অসহায় শিশু মনে করে । এরা আসলে সব পরিচিতদের মাঝে একলা থাকতে চায় ।
এদের আবেগ থাকে খাঁচার ভেতর বন্দী পাখির মতো । শুধু খাঁচাটা খোলার অপেক্ষায় আছে...
এরা নিজেকে লুকাতে পছন্দ করে । তারা লজ্জাবতী গাছের মানুষ ভার্সন ।
পৃথিবীর কোন মানুষের সামনেই এরা নিজেদের প্রকাশ করতে চায় না । খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছেও তারা কিছু একটা গোপন রেখে দেয় । তারা এরকম অনেক গোপন কথা,অনুভুতি তাদের মনের কোন এক অন্ধকার গহ্বরে লালন করতে থাকে । আর এভাবেই খুব কাছের মানুষের মাঝেও তারা একটা দেয়াল তুলে দেয় ।
এসব মানুষ ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এসে নিজেদের চেইঞ্জ করার জন্য প্রথম প্রথম কিছু বন্ধু (!) বানায় ফেলে । কিছুদিন পরেই তারা বুঝতে পারে এরা আসলে বন্ধু না। মুখোশধারীও না,এরা মুখোশ ।
এরা দূর থেকে নিজেদের ভালোবাসাকে বড় করে । কি বলবো,কি বলে শুরু করবো এসব ভাবতে ভাবতে তাদের নতুন দিন আসে । আর নতুন দিনে তারা দেখে তাদের ভালোবাসার হাতে আরেক জনের হাত !
এদের আত্মবিশ্বাস খুব কম থাকে । এরা সবক্ষেত্রে অন্যদেরকে নিজের চেয়ে যোগ্য মনে করে ।
এরা চক্ষুলজ্জাকে ভয় পায় । মাঝেমাঝে এদের চোখ ছলছল করে,কাঁদতে চায়,কিন্তু কাঁদে না। এদের মাঝে যারা বেশি আবেগী হয় তাদেরকে বাথরুমের দরজা লাগিয়ে টেপ ছেড়ে কাঁদার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে দেখা যায় । কিন্তু কাঁদে না । যদি চোখ লাল হয়ে যায় !!?
সমবয়সীরা যখন আড্ডা,পার্টি,ট্রিটে মশগুল তখন তারা বারো ফিট বাই বারো ফিটের একটা রুমে পাচ ফিট বাই সাত ফিটের খাটে শুয়ে বারবার ফেসবুকের হোমপেজ রিফ্রেশ করতে থাকে । আর বন্ধুদের সেই পিকগুলো দেখে ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস ছারে ।
এদের আসলে তেমন খুব একটা বন্ধুই থাকে না । এদের কোন বার্থডে উইশ থাকে না । এরা অসুস্থ হলে তাদের দেখতে আসা দূরে থাক, তাদের খোঁজ খবরও কেউ নিতে চায় না ।
সবার সামনে কথা বলতে তাদের যেন কোথায় বাঁধে ! কথা বলার সময় সব গুবলেট পেকে যায় ।বলতে চায় একটা কিন্তু বলে আরেকটা । তাদের কেউ আবার খুব বেশি সাহস করে ফেললে কিছু বলার জন্য গলা খাকারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আবার বসে যায় ।
তারা সব কিছুতে ইতস্তত বোধ করে । তাদের কাছে মনে হয় কারা যেন তাদের দেখছে। কোন ভুল হলেই সেই সব মানুষগুলো হো হো করে হেসে উঠবে ।
এসব মানুষ আড়ালে থাকতে পছন্দ করে । এরা দিনের পর দিন,পাতার পর পাতা গল্প,কবিতা লেখে যায় । কিন্তু কখনো প্রকাশ করতে চায় না । 'মানুষ কি ভাবলো, সবাই মনে হয় আমার লেখা পড়ে হাসাহাসি করবে' এই চিন্তা থেকে তাদের গল্প,কবিতা ডায়েরি বা অনলি মি স্টয়াটাসে জায়গা করে নেয় । আর মানুষজন তাদের টাইমলাইনে এসে ধূ ধূ মরুভূমি দেখে ফিরে যায় ।
তাদের কোন গ্যাং থাকে না ।বন্ধুই যেখানে নেই সেখানে গ্যাং থাকা তো বহুত দূর কি বাত ! সে কারনে তারা কোচিং,রাস্তা ঘাট এমনকি ফেসবুকেও থাকে সঙ্গীহীন ।
কোচিং,কলেজ,ভারসিটি,রাস্তা ঘাটে এদের একলা একলা হেঁটে যেতে দেখা যায় । তাদের পাশ দিয়ে ফাজলামি করতে থাকা ফ্রেন্ড সার্কেলকে দেখা যায় । আর মুখচোরারা শুধু সেখান থেকে নীরবে হেঁটে যায় । হাঁটার জন্য পাশের রাস্তাটা তখন তাদের কাছে অনেক অনেক বড় মনে হয়,পৃথিবীটাও ।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৯
যাযাবর শিহাব বলেছেন: মনে হয় ।
২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৫৯
দীপংকর চন্দ বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো।
শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ। সবসময়।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫০
যাযাবর শিহাব বলেছেন: ধন্যবাদ ।
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:২২
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার লেখাটা আমার প্রিয় তালিকায় আছে.... বুঝতে পারলেন তো আমি কোন দলে!!!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৩
খেলাঘর বলেছেন:
আপনি কি মুখচোরা?