নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভালোবাসার উপহার
স্বর্গের পরী ফুল
বিচিত্র এই জগৎ। বিচিত্র এই সংসার। বিচিত্র ও রহস্যেঘেরা এই জগত সংসারে বিচিত্র মানুষের জীবন কাহিনী। তার চেয়েও বিচিত্র মানুষের মন। বিচিত্র এই পৃথিবীর সুবৃহৎ বলয়ে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা নয়নাভিরাম ছবির মত অপরূপ রূপের বিন্যাসে বিন্যস্ত মনোহর পল্লী বাংলার একটি ক্ষুদ্র পরিসর গ্রাম দৌলতপুর। অতীতের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস হতে অবগত এক কালে এই গ্রামে ছিল ধন-দৌলত অর্থ-সম্পদ আর আভিজাত্যে পরিপূর্ণ যার ফলশ্রুতিতে এই গ্রামের নামকরণ হয়েছে দৌলতপুর। জেলা শহরের সাথে রয়েছে গ্রামের নিবিড় সম্পর্ক এখানে সাহিত্য ভবন বলে যে জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ লাইব্রেরি রয়েছে তা খলিফা হারুনুর রশিদের বায়তুল হিকমা কে স্মরণ করিয়ে দেয়। গ্রামের দক্ষিণ সীমানা দিয়ে মনোমুগ্ধকর একটি ছোট্ট নদী প্রবাহিত। এই গামে যে একটি শালবন রয়েছে তা বাংলার চলচ্চিত্র জগৎকে সমৃদ্ধ করেছে। এখনো এই গ্রামের আম আর আম বাগান গুলো বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রশংসার দাবি বহন করে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে যে সবুজের সমারহ বিরাজ করে তা প্রকৃতিপ্রেমিক ভাবুক কবিদের মনঃক্ষুধা পূর্ণ করে। বিলে ঝিলের মায়াবী রুপ মনোহর ও বর্ণনাতীত। হয়তো মাছে ভাতে বাঙালি প্রবাদ বাক্যটি এ গ্রাম হতেই উৎপত্তি হয়েছে। দেশের বড় বড় ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার কবি-সাহিত্যিক তথা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এ গ্রামেরই অবদান। বহু জ্ঞানীগুণী ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী পন্ডিত ব্যক্তিগণ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। ধর্মীয় কুসংস্কার মানুষের হৃদয়কে আচ্ছন্ন করে রাখতে পারেনি। ধর্মের মহান জ্ঞানে আলোকিত মানুষের জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে। সত্যিই এমন দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে বিরল। এটা যেন অনুকরণের এক অনন্য মাইলফলক। সুখে দুখে বিপদে অাপদে অভাব অভিযোগে একে অপরের বন্ধুর মতো সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসে । একে অপরের জীবন প্রণালী যেন একই সূত্রে গ্রন্থিত। মসজিদে আজান ধ্বনির সাথে সাথে আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই মসজিদের পানে ছুটে আর মহিলারা আপন আপন ঘরে নামাজ কায়েম করে। ভোরের নির্মল বায়ু পাখির কলকাকলি আর আযানের ধ্বনি হৃদয় ~ মনকে করে পুতঃপবিত্র। অতুলনীয় ভালো লাগার অনুভূতিতে হৃদয় নেচে ওঠে এই গ্রামে রাস্তার দু'পাশে বাবলারি পথ-পথিক কে ছায়া দান করে ফসলের মাঠে বটবৃক্ষের ছায়ায় ছায়ার নিচে ক্লান্ত রাখাল ছেলে ঘর্মাক্ত এসে ক্লান্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। দখিনা পবনে খুঁজে নেয় শান্তির শীতল পরশ। এই গ্রামের সব কিছুই যেন হৃদয় নিয়তির আপন হাতের ইশারায় সৃষ্টি।
কুসুমের চেয়ে মসৃণ, মনোলিসার চেয়ে রূপসী , স্বর্গের পরির চেয়েও অপরূপা , পাখির কন্ঠে চেয়েও সুললিত তার কন্ঠ জান্নাতের নিষ্পাপ উর্বর্শী, অন্তরাত্মা সাগরের চেয়ে গভীর হৃদয় খানি শিশির বিন্দুর চেয়েও সজীব প্রাণবন্ত লাবণ্যময়ী হয়ত পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার আপন মনের মাধুরী মিশায়ে নির্জন প্রহরে বসে রুপের পরশ আর গুণের ভাণ্ডার দিয়ে সৃষ্টি করেছেন সুমনা নামের মেয়েকে। এই গুণের এই রূপের কোন তুলনা নেই । নেই কোন পরিসমাপ্তি । দূর আকাশের অগুনিত তারকারা মাঝে মনে হয় পূর্ণিমার জোস্না। যার চোখ একবার তার দিকে তাকিয়েছে তার চোখ আর অন্য কিছুই দেখতে চাইনি। যে একবার ভুল করে তাকে ধর্ষণ করেছে সে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেছে। সুমনাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে কতজনের রজনীতে নিদ্রা হয়নি। কতজন বিয়ে করার জন্য তপস্যা করেছে। কতজন আবার কবিরাজের নিকট হতে তাবিজ করেছে তার এক বিন্দু প্রেম ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। কতজন সুমনার তনু মনের রূপের সৌন্দর্য গুণের মহিমা অনুপমা দেহের গঠনে বিমোহিত হয়েছে। বংশ মর্যাদা অার আভিজাত্যে পরিপূর্ণ এই মেয়েটি সুমনের সাথে পড়াশোনা করে । তাকে একপলক দেখার জন্য রাস্তার দু'পাশে মানুষ দাড়িয়ে থাকত। হয়ত সৃষ্টিকর্তা সুমনা নামের মেয়েটিকে সৃষ্টি না করলে হয়ত বিশ্বভুবন এত সুন্দর আকর্ষণীয় আর মোহনীয় করে সৃষ্টি করা হতো না। কবির কণ্ঠে তাই হয়ত ঘোষিত হয়েছে "ওগো নারী শ্রেষ্ঠ তুমি অবনীর গোলাপে গঠিত যেন ভেতর বাহির মাঝে মাঝে তাই স্ববিস্ময়ে মনে হয় তুমি তো গোলাপ ছাড়া অন্য কিছু নয়"
দৌলতপুর গ্রামে পিতা-মাতাসহ সুমনের তিন ভাই বাস করে। বড় আপা অনন্যা নীলিমার বিয়ে হয়ে গেছে সুমনের জন্মের পূর্বে। সুমনের আরও তিনটি ভাই জন্মের পর পর পৃথিবী হতে চির বিদায় নেয়। সুমনের মা অনন্যা পারুলের সন্তানহারা মাতৃত্বের হাহাকার যখন আকাশ বাতাস ও খোদার আরশ পর্যন্ত নাড়া দিয়ে উঠছিল তখন মানত করে পীর দরবেশ কবিরাজি তাবিজ করে ওষুধ খেয়ে পরিশেষে খোদার নিকট ভিক্ষা চেয়ে তিনটি সন্তান উপহার পেয়েছে। গরীবের সংসারে সুমনের মা একা কেউ নেই সুমনের পিতা চাকরির কারণে বাইরে থাকেন। অবশ্য প্রতি সপ্তাহে দুই একবার বাড়িতে আসেন। এরপর এ সুমনের দাদা দাদী মারা যান উপায়ন্তর না থাকায় সুমনের পিতা বাড়িতে এসে সংসার পরিচালনা করেন। অনভিজ্ঞ তাই সংসারের হাল ধরা বড়ই কঠিন । সুমনের দাদা নজিবুর রহমান ছিলেন খুব ধর্মপরায়ন মানুষ। অনন্য রহমানকে কখনও দুঃখ কষ্টের ছোঁয়া পেতে দেননি । সীমাহীন আদর অফুরন্ত ভালোবাসা অপরিসীম যত্ন আর অপরিমেয় স্নেহের পরশ বুলিয়ে ছেলেকে লালন-পালন করে বড় করে তুলেছিলেন। দুঃখ কষ্ট ব্যাথা বেদনার সীমাহীন সীমানা পেরিয়ে সুখের আঙিনায় পা পড়তে না পড়তেই নিষ্ঠুর নিয়তির চক্রে আর ভাগ্যের নির্মম নিষ্ঠুর পরিহাস প্রভু তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সেইসাথে জীবনে নেমে আসে দুখের করাল স্রোত। নজিবুর রহমান ছিলেন আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী তাই তিনি বেঁচে থাকতে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে সাহস পায়নি । তিনি ইচ্ছে করলেই পুত্রের জন্য সমস্ত কষ্টময় পথকে পরিষ্কার করে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। যার ফলে সবাই শুরু করেন অকথ্য অত্যাচার আচরণ। ফলশ্রুতিতে চাকরি রিজাইন দিয়ে এসে সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু মন~মানসিকতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও পরিস্থিতি মানুষকে অনেক কিছু করতে বাধ্য করে। সুমনের বড় ভাই সুভাষ যখন জন্মগ্রহণ করেছিল তখন হিংসুটে মানুষ গুলোর মধ্যে অনেকে বলেছিল লাঙ্গল জোয়াল ঘরের দরজায় দাও। সুমন এর বেলায়ও বলেছিল ভিকারীর ঝোলা দাও। তীক্ষ্ম ব্যঙ্গাত্মক কথা যেন তীরের আঘাত। যেন ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায় বুকের পাজর। সুমনের বাবার প্রতিবাদহীন কষ্টকে বুকে চেপে আল্লাহর নিকট করজোড়ে মিনতি করেছিলেন আমার ছেলেদের ওপর কটাক্ষ অভিশাপ তুমি বাতাসে উড়িয়ে দিও প্রভু । এমনি করে সন্তুর জন্মের প্রাক্কালেও হাজার মর্মবেদনা দেয় কথা নিরবে নিভৃতে শুনতে হয়েছে। শত দুঃখ কষ্ট অভাব-অনটন অভিমান অভিযোগ অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে সপরিবারে দেশ হাসি আনন্দের মধ্যে দিনাতিপাত করছিলেন । সুভাষ বড় হয়েছে বাবা মায়ের দুঃখ কষ্টকে উপলদ্ধি করতে শিখেছে। সুমন বাবার কোনো কাজে সহায়তা করতে ইচ্ছে পোষণ করলে বাবা রাজী হয়না কোনো কথা স্পষ্ট করে বল না। শুধু বাবার মুখে অনিশ্চিত আবেগের দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসত। তোমাদেরকে আদর্শ মানুষ হতে হবে। সুমন এর পিতার ভাই ভাবীরা জমা জমি ধন-সম্পদ অনেক কিছু আত্মসাৎ করেছে ফলে সুমনের পিতার অবস্থা শোচনীয়। বাবার কষ্টের পরিধি আর মায়ের চোখের জল দেখে নীরব থাকতে পারে না সুভাষ। ভয়ে ভয়ে ক্ষীণ আশা সাহস বুকে নিয়ে বলে ফেলল বাবা আমি একটা ছোট দোকান করবো যার মধ্যে তিনি যে পড়াশোনা খরচ চালাতে সুবিধা হতে পারে । এবং আপনাদের উপকারে আসতে পারে। সুমনের বাবা বললেন তোমার পড়াশোনার ক্ষতি বা তোমার ক্ষতি হবে আমি তোমাকে চায় না তা তুমি ভালো করেই জানো বাবা বলেন দুঃখ কষ্ট আর অত্যাচার সহ্য না এই দিনটি শুরু হয়েছে যেদিন আমার জা মাতা পিতা আমাকে একা করে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন আর আমি ঠিক এই জীবনের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন সাধনা ব্যর্থ হয়ে গেছে। আর এখন আমার সে অব্যক্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা তোমাদের দ্বারা পূর্ণ করতে চায়। এতে আমার দুঃখ লাঘব হবে। মরে গিয়ে আত্মা শান্তি পাবে। সুবাস এবার সহ্য করতে না পেরে বাবাকে বলেন প্লিজ বাবা প্লিজ এসব কথা বলবেন না। আমাদের অভাব অভিযোগ সেটা তিল তিল করে উপলব্ধি করতে শিখেছি। সব আশা একদিন পূর্ণতায় ভরে উঠবে বাবা। আপনি মনে রাখবেন আমি অাপনাদের মাঝে হাসি ফোটাতে পারবো কিনা জানিনা তবে চেষ্টা করব। বাকিটুকু আমার ভাগ্য আর খোদার ইচ্ছে। বাবা আমি যা বলতে চাচ্ছি আপনি তা অমত করবেন না। আশা পাটিস শুভঃ তো দোকান করে পড়াশোনা করে বাবা অনিচ্ছাসত্ত্বেও হলো সন্তানের আগ্রহ দেখে রাজি হলেন চতুর্থ শ্রেণীর পড়াশোনা অবস্থায় দোকান শুরু করে অল্প দিনে দোকানে বেশি লাভ হতে থাকলো ।দুঃখের পাহাড় দারিদ্রতা আসতে আসতে সমাধান হতে চলল । ব্যবসায় মনোযোগ দিতে গিয়ে পড়াশোনা একটু ক্ষতি হচ্ছিল। সুভাষ জানে চেষ্টার অসাধ্য কিছুই নেই । ছাত্র হিসাবে সুভাষ মেধাবী নয় আবার খুব খারাপও না। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। জীবনে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন আপ্রাণ চেষ্টা অক্লান্ত পরিশ্রম বিরামহীন সাধনা।
দেখতে দেখতে সময় অতিবাহিত হয় । বছরের সীমিত গণ্ডি ভেঙে ভেঙে সুবাস দশম শ্রেণীর শেষ প্রান্তে উপনীত হয়। আর সময়ের গতিধারায় সুমনও ৫ম শ্রেণীতে শুভ সূচনা করে। সুমন ছাত্র হিসেবে বেশ ভালো। আচার-ব্যবহারে ভদ্র । চরিত্রের অমায়িক মাধুর্য সবাইকে আকৃষ্ট করে। কি সুন্দর অপরূপ চরিত্র। তাইতো সবাই তার প্রশংসা করে ভালবাসে। স্নেহ করে কাছে টানে আদর করে বুকে টেনে নেয় । মায়াময় চেহারার প্রতি মায়ার পরশ বুলায়। বাবা মা
শিক্ষিত বিধায় সুমনের ভালো ছাত্র হিসেবে গড়ে উঠতে তেমন অসুবিধা হয়না। শিক্ষকের অপরিসীম স্নেহ ভালবাসায় সুমনের জীবনটা ফুলের মত পবিত্র ও বিকশিত হয়ে উঠতে থাকে । শিক্ষকের আদেশ-উপদেশ আদর্শ কথা সবই অক্ষরে অক্ষরে পালন করে । বড় ভাইয়ের এস এস সি পরীক্ষার জন্য লেখাপড়ায় চাপ পড়ে অপরদিকে গুটিগুটি পায়ে সমনও বড় হতে থাকে। সুখ দুঃখ হাসি কান্না বুঝার ক্ষমতা তার যথেষ্ট হয়েছে। একদিন সকালে সুমন বললো ভাইয়া ডাকা আমাকে কিছু দাও বহন করে। সুভাষ বলল ভাই সুমন তুই যা বলতে চাচ্ছি আমি বুঝেছি। কিন্তু এটা অল্প বয়সী তোমার উপর এত বড় বোঝা দায়িত্ব দিতে চায় না। সুমন বল কেন হয় আমি কি না মধ্য হতে আলাদা। আমাদের শরীরে একই রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে । বাবার আদর্শ প্রতিফলিত হচ্ছে না । ভাইয়া আপনি ভাবছেন আপনার কষ্ট ভোগ করে জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে পারবো না । কিন্তু আপনার ধারনা ভুল। সে ভাবনা এবার বড় ভাই বললেন না। না তা হবে কেন । আমি ভাবছি তুমি ভালো ছাত্র আরো ভালো হও। আমিতো জানি এতে তোমার লেখাপড়ায় ক্ষতি হবে। সুমন বললো ভাইয়া যে ক্ষতি হবে তা অামি পুশিয়ে নিতে পারব। সুমন ছোটবেলা হতেই ক্লাসের পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের বইপত্র পড়ে এবং তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা। বিখ্যাত ব্যাক্তিদের বড় বই পড়ে আজীবন কাহিনী শুনে তাদের জীবন কাহিনী শুনে বুদ্ধিমান বাস্তববাদী । সুমনের জীবন ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে তারা জীবনে কত কষ্ট করছেন মানুষ ইচ্ছে করলে সব পারে।।
অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে সুমনের আগ্রহ অদম্য ইচ্ছা যুক্তিপূর্ণ কথা দিকোট সভায় হার মানে দায়িত্ব তুলে দেন তার হাতে অতি অল্প দিনে সে ও দক্ষতার পরিচয় ।শুভ যখন এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাস করল তখন সবার মাঝে আনন্দের বার্তা পরিলক্ষিত। সব পরিবারের সাথে স্বীয় আনন্দিত মুখরিত হয় সেদিন সবার অলক্ষ্যে দু ফোটা অশ্রু ফেলে দেয়া মায়ের নিকট বাবা প্রার্থনা করছি হে আল্লাহ তুমি আমাদের দিকে এভাবে নাচরে বাবা ফজলে রাব্বানি সুভাষকে পড়াশোনার জন্য শহরে নিয়ে যায় ।
সাগরে স্রোতের মতোই সময় আপন গতিতে প্রবাহিত হয় জীবন ও তার নিজস্ব গতিতে বয়ে চলে। জীবনে চলার শেষ কবে কখন তা বলা বড়ই কঠিন ।এই চলার কোন বিশ্বাস নেই শেষ নেই কোন সীমানা। তবুও মানুষ আশায় বুক বেঁধে সমূহের পানি এগিয়ে চলছে চলবে । জীবনের চলমান গতিপ্রবাহে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে সুমান দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়েছে। চিরন্নে নিয়ম অনুসারে দায়িত্ব নিতে হয় বাবা-মায়ের ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন প্রদর্শিত হতে পারে না । আপন মনের আনন্দে সেদিন হয়তো সুখ দুঃখ যার প্রকৃত অনুভূতি তার হয়নি রাগ অভিমান একটু বেশি বুদ্ধি হলে বুঝতে শিখলে ভালো হবে একসময় সত্যি সত্যি তাই হলো ভাবতে অবাক লাগে যে অপরিসীম পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় তা বিস্ময়কর ব্যাপার এখন পরিবারের সাহিত্য তার অত্যাবশ্যকীয় করনীয় ভাবে সম্পাদন করে চলেছেন।
স্কুলে গিয়ে হাসিন সুমনাকে বলল আজ তোকে আমাদের বাড়িতে যেতে হবে । অাম্মু তোকে নিয়ে যেতে বলেছেন । আমার জন্মদিনের তুই না থাকলে আমার জন্মদিনের আনন্দটাই বৃথা হয়ে যাবে। সুমনা হাসিনা অন্তরঙ্গ বান্ধবী । অংশ আধুনিক শিক্ষাগত জীবনে এ সুমনের বাড়ির নিকট দোলনের বাড়ি দোলন রে সং জাতীয় চার জনের সামনে সেখানে যাই সেই সূত্র ধরেই সুমনের বাবা মায়ের সাথে তাছাড়া আমার বড় ভাই অটল অনন্ত অনিষ্ট বন্ধু মনের মাঝে মাঝে নিজের মেয়ের মত আদর করেন স্কুল ছুটির পর শামীমা সুমনের বাড়িতে এসে মায়ের অনুমতি নিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। জন্মদিনের আনন্দ উৎসবের পর তারা ঘুমাতে যাই সুখ-দুঃখ হাসি-কান্নার অনেক গল্প শুরু করে। অল্প শান্তি শান্তি সোনা ঘুমিয়ে পড়ে রাত্রি দ্বি-প্রহরের পর স্বামীকে ডেকে বললো এই সোনা একটু দরজা বন্ধ করে খাও সোনা বলে স্বীকৃতি কথা যা বললো আমি যাব আর আসব শুনেছি তারা অসুখ বেড়ে গেছিস মনে পরল না না আর ভয় করছে সে বলল কোন ভয় নেই। সাবিনা চিন্তা কোন কারণে বহু বার গিয়েছি। যে মনের মানুষকে কাছে পেতে পাশে বসে গল্প করতে তো সবার ইচ্ছে করে । চন্ডীদাস রজকিনী দেবদাস পার্বতী ওরা কি রাতের আধারে কাছে আসেনি। ওরা কি কোন ভয়ে পিছিয়ে গিয়েছে। সুমনা বলল তোর অত সব বক্তব্য শুনতে চায় না।র প্রিয় বান্ধবীর কথা কেউ কি অমান্য করতে পারে । যা তাড়াতাড়ি যা । আবার যেন নষ্ট হয়ে না আসিস। ভাবিস না আমাদের অরুপ মন মানসিকতা। তাড়াতাড়ি আসিস কিন্তু শামীমা অবশ্যই সময়ই বা দরজা বন্ধ করে হাজার রকম চিন্তা করতে শুরু করে। আপনার আম্মুকে একদিকে বিপদের ভয় অন্যদিকে সেও তো যৌবনবতী যুবতী নারী তারা তো যৌবনের উত্তেজনা। এতদিন পরে মনের মাঝে পুষে রাখা কল্পনাগুলো পাখনা মেলে দূর আকাশে মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়ে বেড়াতে চেষ্টা করে জনমানবহীন নিস্তব্ধ রজনী একাকী ঘরে সুষনা হারিয়ে যাই কল্পনার পাখনা মেলে সুমনের সাথে। আসলে সুমনকে সে নয়টি বছর শুধু অনুভব করেছি তাকে নিয়ে রঙ্গিন স্বপ্ন রচনা করতে চেয়েছে । কিন্তু তার নিজের মনে একান্তে সংগোপনে। বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত এর প্রশ্ন বাণে বিদ্ধ হয় সুমনঅ। আর ভাবে যাকে নিয়ে এত স্বপ্ন দেখি যাকে পাওয়ার জন্য জন্ম জন্মান্তর সাধনা করি। আল্লাহর নিকট নামাজ পড়ে দোয়া করি। যাকে নিয়ে ঘর বাঁধার অনাবিল সাধনায় রত থাকি। সে হৃদয়ের স্পন্দন প্রাণের উচ্ছ্বাস অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু। সে যদি আমায় নিয়ে স্বপ্ন না দেখে । তার তো একটা নিজস্ব স্বাধীনতা আছে। নিজস্ব চাওয়া-পাওয়া অাছে। নিজস্ব পৃথিবী রয়েছে । এসব ভাবতে ভাবতে হৃদয়টা বিষন্নতায় ভরে যায়। হৃদয রাজ্য জল্পনা-কল্পনা আশা-ভরসা তছনছ হয়ে যায়। কিন্তু আবার ভাবি না তা হতে পারে না কখনো আমার যাওয়ার মাঝে তো কোন পাপ নেই। হৃদয়ের নিখুঁত কল্পনার রং তুলিতে যাকে সারাক্ষণ অনুভব করে তাকে চাওয়া তো কোন অন্যায় নয়। আর সেখানে পাপ ও অন্যায় স্পর্শ করে না সেখানে ভালোবাসার মৃত্যু হতে পারে না।
একদিন স্কুল হতে এ সুমন ও তার চাচাতো ভাই সুপ্রভাত বাইসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিল। আউটের সময় না তাদের আগমনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিল। নিকটে আসলেই সুমনা সুপ্রভাত কে বলল আজ কি সব ক্লাস হয়েছে ভাই । সুপ্রভাত জবাব দিল চারটে ক্লাশ হয়েছে তারপর ছুটির সংকেত বলল সুমন বললো স্কুলে যাওনি কেনো সুমনা এমনি ভালো লাগছে না তাই জানি অসুখ করেনিতো সুমন আর শুধুই মিষ্টি হাসি হাসল কিছু বললে না এমন সময় বাড়ির ভিতরে হতে সুমনের মা বাইরে আসলেন । সুমন সাইকেল সামনে পানি গমনের পুরো বাঁশ দিলো। সুপ্রভাত বললো ওয়াই কিরে সুমনা ততক্ষণ চলে যাব আর গোপনে দিল।
তারা চলে গেল একদিন সোনা ঝরা পড়ন্ত বিকেলে সুমন স্কুল হতে ফিরে ফসলের মাঠে অপরূপ সবুজের সমারহ দেখতে গিয়েছিল। ফিরে আসার সময় সুমনের সাথে সাক্ষাৎ । পরীক্ষার জন্য কদিন স্কুলে যায়নি, সুমনা। সুমনের সঙ্গে সুমনা দেখা হলে সুমনা বললো কেমন আছো সুমন বললো ভালো সুমন এবার বলো তুমি কেমন আছো। পরীক্ষা কেমন হয়েছে কোথায় যাবে প্রথম দুটির উত্তর ভালো দ্বিতীয় তোমার ওখানে তোমার কাছে এসেছি আমার এখানে হ্যাঁ তোমার ওখানে তোমার আম্মা বললেন তুমি মাঠে বেড়াতে গিয়েছো। আচ্ছা কেন এসেছিলাম কি চুপ করে রইলে কেন ।কেন এসেছিলে। এসেছিলাম ইস্কুলে পড়াশোনা সম্পর্কে জানতে। একই গ্রামের বাসিন্দা প্রাইমারি জীবন হতে তারা একই সাথে অধ্যয়নরত। কোনদিন ভুল করে কোনো কথা বলেনি সুমনা। সুজন সুপ্রভাত মিজান আরো অনেকে পড়াশোনার জন্য সুমনের পিতার কাছে গিয়েছে এস কারণে অকারণে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিশেষ করে শিশু করে প্রাইমারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষা। সুমন সুজন সুপ্রভাত কে নিয়ে সবসময় গর্ববোধ করেন তাদের প্রশংসা করেন তাদের কথা কর্ম অমায়িক ব্যবহার ও পড়াশোনায় মুগ্ধ হয়ে শিক্ষকের তিনজনকে আলাদা ভাবে প্রায়ই বলতেন আমাদের শিক্ষকতার জীবনে তোমাদের মত নম্র-ভদ্র মেধাবী ছাত্র পায়নি। হয়তো ভবিষ্যতে পাবো না আমাদের ভবিষ্যৎ দেশ ও জাতির কর্ণধার আমাদের অহংকার। যেখানে যাও যত বড় হোক আমাদের কথা মনে রাখবে। স্কুলের সম্মান রাখতে সুমন সুমন আর লাজুক চরিত্রের অধিকারী সর্বোত্তম কথা বলায় যেন তার চরিত্রের অন্যতম লক্ষণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না।অসৎ চিন্তা তার পবিত্র হৃদয় কে স্পর্শ করে না ।সৎ চিন্তা ও মহৎ পরিকল্পনায় উদ্ভাসিত তার অন্তরাত্মা সামান্যতম শয়তানের ছোঁয়া তাঁর জীবনের প্রশ্রয় পায় না। মা-বাবা পরিবার আত্মীয়-স্বজন কে খুশি করার জন্য তার একমাত্র উদ্দেশ্য । এত অল্প বয়সে ছেলে না দেখলে বিশ্বাস হবার কথা নয়।ড় এতটুকু ছেলে বাবার কাছে সাহায্য করা মায়ের কাজে সহায়তা করে ছোট একটা দোকান করে নিজের পড়াশোনা করার জন্য ভাবতে অবাক লাগে শুভ্রর জীবনের সফলতার মধ্যেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে কিন্তু নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে তার জীবনের পরিবর্তন হতে শুরু করে।
একদিন স্কুল হতে এ সুমন ও তার চাচাতো ভাই সুপ্রভাত বাইসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিল। আউটের সময় না তাদের আগমনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিল। নিকটে আসলেই সুমনা সুপ্রভাত কে বলল আজ কি সব ক্লাস হয়েছে ভাই । সুপ্রভাত জবাব দিল চারটে ক্লাশ হয়েছে তারপর ছুটির সংকেত বলল সুমন বললো স্কুলে যাওনি কেনো সুমনা এমনি ভালো লাগছে না তাই জানি অসুখ করেনিতো সুমন আর শুধুই মিষ্টি হাসি হাসল কিছু বললে না এমন সময় বাড়ির ভিতরে হতে সুমনের মা বাইরে আসলেন । সুমন সাইকেল সামনে পানি গমনের পুরো বাঁশ দিলো। সুপ্রভাত বললো ওয়াই কিরে সুমনা ততক্ষণ চলে যাব আর গোপনে দিল।
তারা চলে গেল একদিন সোনা ঝরা পড়ন্ত বিকেলে সুমন স্কুল হতে ফিরে ফসলের মাঠে অপরূপ সবুজের সমারহ দেখতে গিয়েছিল। ফিরে আসার সময় সুমনের সাথে সাক্ষাৎ । পরীক্ষার জন্য কদিন স্কুলে যায়নি, সুমনা। সুমনের সঙ্গে সুমনা দেখা হলে সুমনা বললো কেমন আছো সুমন বললো ভালো সুমন এবার বলো তুমি কেমন আছো। পরীক্ষা কেমন হয়েছে কোথায় যাবে প্রথম দুটির উত্তর ভালো দ্বিতীয় তোমার ওখানে তোমার কাছে এসেছি আমার এখানে হ্যাঁ তোমার ওখানে তোমার আম্মা বললেন তুমি মাঠে বেড়াতে গিয়েছো। আচ্ছা কেন এসেছিলাম কি চুপ করে রইলে কেন ।কেন এসেছিলে। এসেছিলাম ইস্কুলে পড়াশোনা সম্পর্কে জানতে। একই গ্রামের বাসিন্দা প্রাইমারি জীবন হতে তারা একই সাথে অধ্যয়নরত। কোনদিন ভুল করে কোনো কথা বলেনি সুমনা। সুজন সুপ্রভাত মিজান আরো অনেকে পড়াশোনার জন্য সুমনের পিতার কাছে গিয়েছে এস কারণে অকারণে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিশেষ করে শিশু করে প্রাইমারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষা। সুমন সুজন সুপ্রভাত কে নিয়ে সবসময় গর্ববোধ করেন তাদের প্রশংসা করেন তাদের কথা কর্ম অমায়িক ব্যবহার ও পড়াশোনায় মুগ্ধ হয়ে শিক্ষকের তিনজনকে আলাদা ভাবে প্রায়ই বলতেন আমাদের শিক্ষকতার জীবনে তোমাদের মত নম্র-ভদ্র মেধাবী ছাত্র পায়নি। হয়তো ভবিষ্যতে পাবো না আমাদের ভবিষ্যৎ দেশ ও জাতির কর্ণধার আমাদের অহংকার। যেখানে যাও যত বড় হোক আমাদের কথা মনে রাখবে। স্কুলের সম্মান রাখতে সুমন সুমন আর লাজুক চরিত্রের অধিকারী সর্বোত্তম কথা বলায় যেন তার চরিত্রের অন্যতম লক্ষণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না।অসৎ চিন্তা তার পবিত্র হৃদয় কে স্পর্শ করে না ।সৎ চিন্তা ও মহৎ পরিকল্পনায় উদ্ভাসিত তার অন্তরাত্মা সামান্যতম শয়তানের ছোঁয়া তাঁর জীবনের প্রশ্রয় পায় না। মা-বাবা পরিবার আত্মীয়-স্বজন কে খুশি করার জন্য তার একমাত্র উদ্দেশ্য । এত অল্প বয়সে ছেলে না দেখলে বিশ্বাস হবার কথা নয়।ড় এতটুকু ছেলে বাবার কাছে সাহায্য করা মায়ের কাজে সহায়তা করে ছোট একটা দোকান করে নিজের পড়াশোনা করার জন্য ভাবতে অবাক লাগে শুভ্রর জীবনের সফলতার মধ্যেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে কিন্তু নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে তার জীবনের পরিবর্তন হতে শুরু করে।
সেই বসন্ত ভরা দিনগুলোতে এ সুমনের আগমন কতবার করেই না ঘটতো তার হিসেব নেই। দিনের মধ্যে অন্তত একবার আসতেই হবে । জীবনের গতি তারা এমন ভাবে পরিবর্তন হয়েছে ভাবতে অবাক লাগে। সুমনের জীবনের কত কিছুই লোক আয়না কখনো মিথ্যে বলেনা লুকোচুরি করেনা নে এখন শিশুমনে কত রকম ছলচাতুরি করে। কত রকম মিথ্যে বলে কত রকম ছেল চাতুরী করে । দিতে চাই পরিবারের নিষেধ অমান্য করে সকল বাধাকে উপেক্ষা করে সুমনের সাথে একটু কথা বলার জন্য । পল্লী বংলার গ্রামগুলোতে বড়ই অদ্ভুত । ভালো সহ্য করতে পারে না। সত্য সুন্দরকে সহ্য করতে পারেনা। তাই তো অসীম মিয়া নামে একজন লোক যার বাইরে আদর্শের বলি ভিতরে শয়তানের ঝুলি । ক্রিমিনাল অতুলের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বয়সের ব্যবধান থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান ম্যাডাম এর যাবতীয় খবর অসীম এর মধ্যে থাকে। শীতের আমেজ ওই অমৃত মনে হয় শরীর তাই বিকেল বেলায় অতুল গিয়ে বসলো খোলা মাঠে সুখ-দুঃখ আনন্দ বেদনা ভালো মন্দির অনেক আলাপ এর পরে অসীম অতুল বন্ধু আজ তুমি কেমন একটা ব্যাপারে কিছু বলব যেটা তুমি বিশ্বাস করবে কিনা কিংবা কিভাবে গ্রহণ করে তা জানি না তবে যেভাবেই নাও না কেন আমাকে জানানো আমার দায়িত্ব বলে মনে করে আমি চাই না তোমাদের বংশ মত চাঁদের কলঙ্কের কাদা লিফটে যাক হতেল একটু খোলো তো সে বললো কি বলতে চাচ্ছো । বন্ধ ওয়াসিম তোমাদের আদর্শ প্রতীক রূপে সুমনা অতুল বলল আরো ফালতু নি অসীম কে বলল কি হয়েছে শুভ না না তেমন কিছু না সুমনের সুমন হয়তো ভালোবাসার গভীর বন্ধন উচিত আর একইসাথে স্কুলে যায়-আসে অগ্নি শর্মা হয়ে ও জিজ্ঞেস 16 কি বললে আসলে শুধু তাই নয় বেশ কিছুদিন সময় বাড়িতে সুমনের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কথা বলে আলাপ করে। তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো বাড়িতে। এসে মাকে জিজ্ঞেস করল মা সুমনের এখন রোজ বিকেলে কোথায় যায় ।কেন যায় জানা প্রয়োজন বোধ করে না মা বললেন কেন বাবা কি হয়েছে এমন কথা বলছো। কেন সুমনা তো বলে আমাদের খালার বাসায় যাবে দেখি হাতে বই খাতা কলম থাকে প্রাইভেট পড়তে যাবে ।কোচিং কে যাবে না মা সুমন মিথ্যে বলে সে নাকি সুমনের বাসায় যায়। কিন্তু আমি জিজ্ঞেস করলে সে তো অস্বীকার করে ও রূপকথা তো আমি শুনেছি বাবা বলে আর তুমি আপনি বিশ্বাস করো মা কেন বিশ্বাস করো বা না বাবা সুমন একই আমাজে মিথ্যে বলেছে। কখনো কোনদিন এখনো মানুষ সব সময় এক ওরকম থাকেনা জীবন মানুষ জীবন তো মানুষ লাই সময় বদলায় আর মানুষ পথে যাই জীবন্ত মানুষ পচে যায় তার দিকে নজর রাখা
শীতের রিক্ততা শেষে সুন্দরের পসরা সাজিয়ে ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে প্রকৃতির উদার প্রান্তরে । প্রকৃতিতে বিরাজ করছে অনাবিল বৈচিত্র । ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্র মুকুলের সৌরভে চারিদিক মুখরিত । আমোদিত বিমোহিত বাতাবি লেবুর সুগন্ধ আর ভ্রমরের গঞ্জন প্রকৃতি মহিত যেন ব্যাকুল করা ধরাতল । বিহঙ্গের কন্ঠে গানে গানে ভুবনে ভুবনে যেন মুখরিত পুষ্পে পুষ্পে সুসজ্জিত সুষমামন্ডিত। বসন্তের এই মন মাতানো পরিবেশে বেড়ে ওঠা মানুষের জীবনের নতুন বার্তা নিয়ে আসে এ সময় মনের মুকুরে হৃদয়ের মন্দিরে কল্পনা সাজাতে থাকে সুমনের জীবনেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। একদিন সুমনের সঙ্গে দেখা মাত্র কেমন আছে না বলে বলল তোমাকে আমাদের বাড়িতে যেতে বলেছিলাম না। প্রতিত্তরে সুমন বলল কেন যেতে বলেছিলে এটা না বললে আমি তো আমি যাবো না । সুমনা তা যদি রাস্তায় বা যেখানে সেখানে বলা যেত তাহলে বলে ফেলতাম তোমাকে যেতে বলতাম না সুমন হঠাৎ কি এমন কথা বলবে যার জন্য তোমাদের বাড়িতে যেতে হবে সুমনা। তুমি এক এমনই এক কথায় সুমনা চেষ্টা করবো আসলে অনেকদিন হলো তোমাদের ওখানে যায়নি তো তাই বুঝি লজ্জা পাচ্ছ না। না তা হবে কেন মনটা ভালো না। বেশ কিছুদিন থেকে তাছাড়া সময় পায়না ভালো লাগেনা। জানোই তো গরীবের সংসার হলে যা হয়। দেখি এবার যদি সময় পাই নিশ্চয় যাব আচ্ছা তুমি কি ভয় পাও না সময় পাও না। ভয় তো থাকা স্বাভাবিক কেন বলতো কারন তুমি তো একটু ব্যতিক্রমী চরিত্রের অধিকারী। অধিকারী নেই কেমন ব্যতিক্রমী এই যেমন তুমি নাকি সবার কথা বাবা মাকে বলে দাও কি সেই কচি খুকির মত রয়েছো ।তুমি নাকি তোমার নিকট কেউ পাত্তা দিলে তাও দেখা প্রয়োজন হলে দেখাবো। ততক্ষণে সুমনের মা বাড়ি ফিরে এস বাবা সুমন তাড়াতাড়ি বাজার হতেল এখন সময় কথা বলে গেল আর বলল সুমন কে দেখে বলল কেমন আছো সুমনা সুমনা মুক্ত যারা স্নিগ্ধ হাসি হেসে বলল ভালো খুবই ভালো ।এই সময় সুমন ওই সময় বুঝি আসতে নেই সুপ্রভাত। আমি বলছি তাহলে কি বোঝাতে চাচ্ছে সুপ্রভাত । কি আর বোঝাবো বল দেখা না হলে তো মনটা ছটফট করে তাই ।অসব বলে আমাকে লজ্জা দিলে আমি চলে যাও আরে তুমি তো যাবেই তোমাকে বেঁধে রাখার সাধ্য আমার নেই । অন্য কারো থাকতে পারে আর না থাকলে অধিকার দিবে না। দিলেও তা আমি নিব না এই প্রবাদ তাই তুমি কেন জানি পরিবার থানার জনমনে একটু টি পরিবর্তনশীল। আমি কি মানুষ নাকি বললে না না আমি তো একটুও বদলায়নি। বদনী তোমার মত পরিবর্তন জীবনে কম দেখেছি তোমার সাথে দেখা হলে তুমি কি ক্ষুদার্থ বাঘের মুখে থেকে ঘুরে নির্মলা এর মত দৃশ্য ঘটাতে থাক সেকথা তুমি একটা সত্যি কথা বলবে তুমি এমন কিছু বলবে না জে ও উত্তর দিতে আমার আমি শামীম শামীম এদের কথা বলছি ওদের ব্যাপারে কি জানো মিথ্যে বলবে না বললেও মহা পাপ পড় নাই সেটা নিশ্চয়ই জানো আর আমাদের চেয়ে শামীমা বেশি আপন হওয়ার কথা না তুমি চেয়ে ব্যাপারটা এড়িয়ে যেতে চাইছ সেটা চোখমুখ দেখেই পষ্ট বোঝা যায় তাছাড়া চেনে প্রকাশ না তা হবে কেন আসলে তারা হচ্ছে পবিত্রতার প্রতীক ও তার নোংরা রোগ বলে রাতের ঘটনা বলল
কতকিছুই বদলে যায় সময় বদলের সাথে সাথে। কিন্তু বদলায় না মানুষের মন। যেমন বদলে যেতে পারেনি অামার প্রিয় বন্ধু নিয়ন। দু'দশক অাগের কাহিনী। প্রখর মেধাবী ছাত্র ছিল নিয়ন। অহংকারের লেশমাত্র ছিলনা তার মাঝে। তবে প্রচন্ড জেদী ছিল। জ্যোতি ছিল তার থেকে একক্লাশ অাগে।একই গ্রামে ছিল ওদের বাস। একবার ১ম হতে পারেনি বলে জ্যোতি ক্লাশ নাইনে না উঠে এইটে রয়ে যায়। নিয়ন ক্লাশ এইটে উঠলে শিক্ষক শিক্ষিকা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে কৌতুহল বেড়ে যায়। অালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে এসে যায় নিয়ন অার জ্যোতি। সে সময় ফলাফল ১ম ২য় ৩য় পর্যায় ক্রমে ঘোষনা করা হতো। নিয়ন অামার প্রানের বন্ধু অার জ্যোতি অামার মামাতো বোন। তাই সবার চেয়ে অামার ভাবনাটাই বেশি। জ্যোতি যদি ১ম হতে না পারে তাহলে হয়ত সে পড়াশুনাই বন্ধ করে দিবে অার নিয়ন যদি ১ম হতে না পারে তাহলে সেও জীবন থেকে একবছর হারাবে। অামি কৌশলে নিয়ন অার জ্যোতিকে সন্তুষ্ট রাখার উপায় অাবিস্কারের চেষ্টা করতে থাকলাম। অামি জ্যোতিকে বললাম তুমি শহরে চাচার বাসায় গিয়ে নামকরা স্কুলে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা কর। জ্যোতি রাজি না, অামি বললাম তাছাড়া দু'বছর পরে এস এস সি পাসের পরতো ঢাকা যাবেই। জ্যোতির স্পষ্ট কথা অামি এমনিতেই হার না মানাহারে পরাজিতা অাবার নিয়নের কাছে পলায়ন পরাজয় অামি মেনে নিতে পারবনা। নিয়নকে বললাম বন্ধু শহরে গিয়ে ভালো স্কুলে ভর্তি হব নিয়নও রাজিনা । অামি ভাবতে থাকলাম। মনে হলো নিয়নকে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে বললাম অার জ্যোতিকে বললাম বার্ষিক পরীক্ষা দিতে। নিয়ন বৃত্তি পেল অার জ্যোতি ১ম হয়ে ৯ ম শ্রেণীতে উঠল। যেকজন বৃত্তি দিয়েছিল তাদের রেজাল্ট হয়েছিল ১ম ২য় সাময়িক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে হলো। এতে নিয়নের রোল নং হয়েছিল ৯। কিন্তু এবার বিপত্তি হলো নিয়ন এইটে থাকবে। অামি বললাম। এক বছর জীবন থেকে নষ্ট করার কোন মানে হয় না। নিয়ন রাজি হল ঠিকই কিন্তু ক্লাসে উপস্থিতি দেয় না। বিপত্তি তো রয়েই গেল। বিষয়টি গভীরভাবে জ্যোতি পর্যবেক্ষণ করার পর নিয়নকে ডেকে বলল অাচ্ছা নিয়ন তুমি ক্লাসে উপস্হিতি দাওনা কেন? অামি যদি জানতাম নিয়ন তুমি কষ্ট পাবে তাহলে অামি পরীক্ষা দিতাম না। ক্লাসে থেকে উপস্থিতি না দিলে বিষয়টি অশোভন লাগে। অার তুমি যদি বল তাহলে অামি হেডস্যারকে বলে অামার অাসনটি তোমার করে দেব। নিয়ন এবার বলল অামি তোমার চেয়ে কম বুঝিনা। নিয়নকে করুনা দেখাতে এসোনা উপদেশ দিতে এসো না। অামি কি করব তা অামিই ভালো জানি। জ্যোতি বলল নিয়ন তুমি কেন রাগ করছ? অামি তোমার বন্ধু হিসেবে বলছি। সত্যিকার অর্থে তুমি যদি অামাকে বন্ধু মনে কর, শুভাকাঙ্খী ভেবে থাক, না হয় সহপাঠি মনে করে থাকো তাহলে অামার কথা রাখরে। অার যদি কথা না রাখ, অনুরোধ টুকু না শোন তাহলে অামিও পড়াশুনা বন্ধ করে দেব। নিয়ন কথা রাখেনি। জ্যোতিও কিছুদিন পর স্কুলা বন্ধ করে দেয়। ব্যাপারটি অামার মাঝে ভীষন পীড়া দিতে অারম্ভ করে। দু'টি সম্ভাবনাময় জীবন এভাবে ধ্বংস হবে অার অামি বন্ধু হিসেবে অাত্নীয় হিসেবে নীরব দর্শক হয়ে চেয়ে থাকব তাতো হতে পারে না। অামি দু'জনকে অালাদা ভাবে বললাম তোমারা যদি জিদের উপর দাঁড়িয়ে থেকে নিজেরা নিজেদের জীবন নষ্ট কর অামি তোমাদের মাঝ হতে চিরতরে হারিয়ে যাব। স্রষ্টার দয়া নিয়ন পরিবর্তন হতে থাকে। কিন্তু টেস্ট পরীক্ষার পর দেখা দেয় অাবারও জটিলতা। ১নং এর জন্য নিয়ন ১ম হতে পারেনি বলে সে অার পড়বেনা, পরীক্ষাও দিবে না । যেহেতু পড়বেনা সেহেতু পরীক্ষা দেবার প্রশ্নই অাসে না। অামি নিয়নকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম এখন পাগলামী করার সময় না । তোমার জন্য যতি যথেষ্ট করেছে যথেষ্ঠ উদার একটা মন অাছে ওর। ওর প্রশংসা অামি শুনতে চাই না। অামি প্রসংশা করছিনা সাফাইও গাচ্ছি না। অামি তোমাকে বলব তুমি যদি এরুপ কর তাহলে জ্যোতিও পরীক্ষা দিবে না। নিয়ন বলল ও পরীক্ষা দিলে কি ! না দিলেই কি? অামি বললাম নিয়ন তুমি অাসলেই একজন স্বার্থপর মানুষ। তুমি অাবারো এমন করবে জানলে জ্যোতি হয়ত টেস্ট পরীক্ষাও দিত না। তোমার কি মনে অাছে মোমিন চ্যালেন্জ করে বলেছিল তোমাদের দু'জনকে এবার পিছনে ফেলে সে ১ম স্থান অধিকার করবে। যদি মোমিন এমন কথা না বলত তাহলে জ্যোতি হয়ত অত ভালো করে পরীক্ষা দিতো না। নিয়ন অামাকে বলল তোমার বোন তো তাই তার পক্ষেই কথা বলবে। অামি অন্তত তোমার চেযে ভালো বুঝি। অামি মনে মনে ভীষন কষ্ট পেলেও নিরাশ হলাম না। অামি ভাবতে থাকলাম কি করা যায়। মাথায় বুদ্ধি এলো অাগামী সপ্তাহে অামার জন্মদিনে সবাইকে দাওয়াত করব। জন্মদিনে লাবনী,শিউলী,রেহেনা,বকর,মমিন, জয়নাল,বেলাল প্রায় সবাই এসেছিল। নিয়ন এসেছিল সবার শেষে। অামি, বকর,নিয়ন,নাজিম. কাজলী,জ্যোতি, অত্রি সারা রাত জেগে অানন্দ করে ও ভবিষ্যত স্বপ্ন সাধনার অালাপ অালোচনা করে কাটিয়ে দিলাম। অামাদের জীবনে স্নৃতিময় রাত বলতে অামরা একবাক্যে সে রাতটিকেই স্মরন করি। সে রাতে জ্যোতি নিয়নের হাত ছুঁয়ে বলেছিল নিয়ন তুমি পাগলামী করনা। তুমি যদি চাও সারা জীবন তোমার পাশে থাকব। কথা দাও তুমি অামাকে কখনো কষ্ট দিবেনা, অামাকে একা ফেলে দূরে কোথাও চলে যাবেনা। নিয়ন কথা দিয়েছিল রাখতে পারেনি। বকর বলেছিল এভাগ্য ক'জনার হয়। সাথী বলেছিল সবার হয়না তবে কারো কারো হয়। এস এস সি'র রেজাল্ট হলো ২/৩ বিষয়ে লেটার মার্কস নিয়ে বকর বাবু নিয়ন জ্যোতি প্রীতি পাস করল। সবাই অামরা ভালো ফলাফল করলাম। জ্যোতি ঢাকায় চাচার বাসায়, নিয়ন যশোর মামার বাসায়। বকর রাজশাহীতে ভর্তি হলো। পত্র বিনিময়ের মাধ্যমে সবার বন্ধুত্বই অটুট ছিল। সাথী বকরের ভালোবাসার সুতীব্র অাকর্ষণ পড়াশুনা শেষ করার পূর্বেই পরিণয় সূত্রে বাঁধা পড়ল। এইচ এস সি'র পর হতে নিয়ন অার জ্যোতির সম্পর্ক ধীরে ধীরে শিথিল হতে লাগল। স্পষ্ট করে নিয়ন কিছুই বলে না। জ্যোতির মাঝেও পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। যে অামিই এক সময় নেটওয়ার্কের মতো ছিলাম সে অামিও বদলে যেতে থাকলাম। বাবা অসময়ে চলে গেলেন সবাইকে কাঁদিয়ে। সেই থেকে অামিও এলোমেলো। অার অামার এলোমেলোর খেসারত দিতে হল নিয়নকে। অামি গ্রামের ছেলে গ্রামে থাকি। নিয়ন বকরকে ল্যান্ডফোনে জানিয়েছে অার বকর রাজশাহী হতে লোক মারফত অামাকে চিঠি দিয়েছে। অামার অার্থিক অনটন থাকলেও অামি নিয়নের করুন অনুরোধে সাড়া দিলাম। যেদিন যেতে বলেছে তার অাগের দিন অামি নিয়নের কাছে গেলাম। নিয়নের চোখে মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছিল। রাতে নিয়ন অামাকে বলল তুমিতো জানো বন্ধু ক' মাস ধরে জ্যেতির সাথে অামার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। অামার সময়টাও বেশ খারাপ। তোমার অনাকাঙ্খিত জীবনের ঘটনায় এমনিতেই তুমি দুমড়ে মুচড়ে খড়কুটোর মতই অগোছালো। অপ্রত্যাশিত ভাবে অসময়ে বাবাকে হারালে প্রিয় বোনটাও তোমাকে একা করে নৈ:শব্দের পৃথিবীর স্থায়ী বাসিন্দা হলো। তুমিও কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙ্গে চুড়ে চুরমার হয়ে গেলে। সংসারের দায়িত্ব তুলে নিলে। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় । সময়ের কাছে হার মানলে অনেক কিছু থেকে। জ্যোতির সাথে অনার্সের ৩য় বর্ষ পর্যন্ত সম্পর্ক ভালোছিল কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই তার সাথে সম্পর্কে চিড় ধরে। অনতিক্রম্য দূরত্বের পাহাড় সৃষ্টি হয়। বিরহতপ্ত যন্ত্রনার করুন অাকুতি অামার ভিতর বাহির প্রতিনিয়ত কুড়েকুড়ে খাচ্ছে। অামি হারিয়ে যাচ্ছি অনাগত ধ্বংসের অতল গহ্বরে। উপায়ন্তর না পেয়ে তোমাকে অাসতে বলা। তাছাড়া অাগামী ৭ তারিখ জ্যোতি বসুন্ধরা সিটি মার্কেটে দেখা করতে বলেছে। ভাবলাম তোমাকে সাথে করে নিয়ে যাব। তাই তোমাকে অাসতে বলা। সিটি মার্কেটের গেটে অাগের থেকেই জ্যোতি অপেক্ষা করছিল। অামাদের দু' জনকে একসাথে দেখে জ্যোতি কিছুটা অবাক হলেও স্বাভাবিক ভাবে বলল কেমন অাছ? অামি বললাম কেমন অাছি তা হয়ত তোমার জানার বাহিরে নয়। জ্যোতি নিয়নের দিকে উপহারের প্যাকেটটি বিষন্ন দৃষ্টিতে বাড়িয়ে দিয়ে কিছু না বলে চলে গেলো। অামরা অসহায় স্হির হয়ে দেখলাম জ্যোতি গাড়িতে উঠে চলে গেলো। অামরা বাসায় এসে প্যাকেট খুলে দু'টি ডাইরী পেলাম। একটি ফাঁকা অন্যটি অাদ্যপ্রান্ত পরিপূর্ন। শুরুর দিকে ভালোবাসার পাঁপড়ি মেলা স্বর্গিয় অনুপম সৌন্দর্যের মাধূর্য শেষের দিকে বেদনার মহা কাব্য। ডাইরী হতে জানা যায় জ্যোতির বাবা সিহাব চৌধুরী মেয়ের হাত ধরে মিনুতি করে বলেছিল মারে তুমি নিয়নকে ভুলে যাও। তোমার চাচা তানভীর চৌধুরী অামেরিকা প্রবাসী ছেলে এজাজ চৌধুরীর সাথে তোমার বিয়ের পাকা কথা দিয়ে রেখেছে। জ্যোতি বলল না বাবা তুমি নিয়নকে ভুলে যেতে বলনা। ওকে ভুলে যাওয়া সম্ভব না । নিয়নই যদি তোমার তোমার সবকিছু হয় তাহলে নিয়নের কাছে চলে যাও। অশ্রুভরা ঝাপসা চোখে জ্যোতি বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। বাবা মেয়ের হাত টেনে নিয়ে মাথায় স্পর্শ করে বলে । অাজকের পর হতে তুমি অামাকে বাবা ডেকোনা অামি তোমার বাবা না অামি মারা গেলেও তুমি অামার মুখ দেখনা। জ্যোতি একথা শুনার পর অার স্হির থাকতে পারেনা। বাবাকে জড়িয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে এমন কথা তুমি কখনো বলোনা বাবা। তুমি অামার বাবা না হলে স্বর্গের মহিয়সী মা যে অামায় ক্ষমা করবেন না। তুমি যা বলবে অামি সব শুনব বাবা। কিছুদিন পর স্রষ্টার চিরন্তন সত্যের জগতে পাড়ি দেন বাবা। বাবার কথায় বাবার মাথায় হাত রেখে জ্যোতি কথা দিয়েছিল। কিছুদিন পর জ্যোতির বাবা স্রষ্টার ডাকে সাড়া দেন। চোখের জল শরীরের রক্ত অার কলমের কালিতে লেখা জ্যোতির ডাইরী হতে অনেক কিছুউ জানা যায় । সৃষ্টিকর্তাকে স্বাক্ষী রেখে এক জায়গায় লেখা অাছে নিয়ন অামি যদি কোনদিন অদৃষ্টের বিড়ম্বনায় কিংবা ভাগ্যের নিমর্ম পরিহাসে হেরে যায় কিংবা তোমার থেকে দূরে চলে যায় তখনো কি তুমি এমনি করে অামাকে ভালোবাসবে অামাকে কি তোমার হৃদয়ের মনিকোঠায় সারা জীবন ধরে রাখবে। ঘটনা ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকে অার নিয়নের জীবনে স্বাক্ষী হয়ে থাকে ডাইরী। অামি নিয়নকে বললাম বন্ধু অনেক দিনতো হলো অামি বাড়িতে যায়, নিয়ন রাজিনা। বলল যেদিন জ্যোতি অামেরিকা যাবে সেদিন দু'বন্ধু এক সাথে বাড়িতে যাব।অামি মনে মনে ভেবেছিলাম নিয়নের কাছে বাড়ির কথা বলে জ্যোতির সাথে দেখা করব কিন্তু সেটা হলোনা। অামি একদিন অসুস্থ হলে নিয়নের সাথে ঘুরতে বের না হয়ে রুমে শুয়ে ছিলাম ছারপোকা বা পিঁপড়ার কামড়কে প্রতিরোধ করার জন্য বিছানা উল্টাতেই একটা ডাইরী অার অনেকগুলো ঘুমের ট্যাবলেট অামাকে ভাবিয়ে তুলল। এর মধ্যে অাবার জ্যোতির ফোন ১ তারিখে দেখা করতে হবে বিমান বন্দরে । অামি বি:বন্দরে নিয়নকে নিয়ে যাবার সমস্ত চেষ্টা অনুরোধ ব্যর্থতায় রুপান্তরিত হলো। এজাজ চৌধুরী জ্যোতিকে নিয়ে যাবার অাগে জ্যোতির মামা তানভীর চৌধুরী একমাত্র ভাগ্নি জ্যোতিকে অামেরিকা নিয়ে যায়। জ্যোতিকে বলে তুমি এজাজকে ভালোভাবে চিনো জানো কারন চেনা অার জানার মাঝে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে । যেদিন তুমি তোমার মতো করে এজাজকে চিনতে জানতে বুঝতে পাররে সেদনিই তোমাকে তার ঘরে তুলে দিব। ফ্রি স্বাধীন দেশে জ্যোতি এজাজের সাথে মিশে পর্যবেক্ষন করতে থাকে। এজাজ ক্লাবে যায় গার্লফেন্ডের সাথে মিশে । জ্যোতির এসব ভালোলাগে না। একদিন ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে জ্যোতির সামনেই গালর্ফন্ডকে কিস করে, জ্যোতিকে বসিয়ে রেখে ঘন্টাখানেক পরে এসে সরি বলে। নির্জনে গার্লফেন্ডের সাথে সময় কাটানোর কষ্টের রাগ অভিমানে ক্ষোভে এজাজকে বলে অাজকের পর হতে তুমি যদি সত্যিকার বাঙালী পুরুষ হয়ে অামার কাছে অাসতে পার এসে । জ্যোতি যখন দেখল মুখোশের অাড়ালে এজাজ পরিবর্তন হচ্ছেনা তখন মামাকে বলে জ্যোতি দেশে চলে অাসে। হঠাৎ বাবুলের ফোনে জানতে পারে জ্যোতি ঢাকায় । বাবুল সব অামাকে বলে অামি নিয়নকে বললাম চল ঢাকা যায় । নিয়ন বেঁকে বসল । নিয়নের কথা। জ্যোতি অামাদের কিছু না বললে অামি কিছু বলবনা । অামি বললাম হয়ত লজ্জায় বলেনি। জীবনে প্রথম বন্ধুর কথা অমান্য করে গোপন অভিযানে নেমে পড়লাম । মখোমুখি হলাম জ্যোতির। ঘটনা সত্য জেনে জ্যোতিকে বললাম তুমি এখন কি করতে চাও বোন? সে বলল অামি এজাজের জন্য অপেক্ষা করব। অামি বললাম এজাজ যদি ভালো না হয়,ফিরে না অাসে? জ্যোতি বলল অামি বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গতে পারব না। অামি জ্যোতিকে বললাম জানো জ্যোতি অাল্লাহ পাক রব্বুল অালামিন পবিত্র কোরঅানে স্বয়ং ঘোষনা করেছেন অামার নাম ব্যতীত কোন কিছুতে শপথ করা যাবে না তাহলে সেটা শিরকের পর্যায়ে পড়ে যায়। এর কয়েকদিন পর গভীর ভাবনার পর্যবেক্ষনী সিদ্ধান্ত নিয়ে জ্যোতি নিয়নের কাছে পত্র লিখে। প্রিয়তম জান অামার, শুভ কামনা জানানোর নি:শেষ অধিকার টুকুও হয়ত অামার নেই তবুও এ অাশায় লিখছি যে এ বিশাল পৃথিবীর বুকে অামার যে অার যাবার কোন জায়গা নেই। ভালোবাসার কাছে অামি কত অসহায় ! অামি ভাগ্যের ঘুর্নিপাকে পরাজিতা ধুতরা ফুলের মত বারবার হেরে গিয়েও ফকিরের মত তোমার ভালোবামায় সিক্ত হতে চেয়েছি। কি অার বলব জান কিভাবে তোমাকে বুঝাব! কি সৌভাগ্য অামার জীবন নাট্যের জটিল প্লাটফর্মে সকল ক্যালকুলেশানকে তাচ্ছিল্যের বাতাসে উড়িয়ে, সকল সমীকরনকে কবর দিয়ে, অবিচেছদ্য সম্পর্কের মোহনীয় বন্ধনকে নীরব তলোয়ারে কতল করে অামি ভুল করেছি নিয়ন। জানো এখন অার কোন যুক্তিতেই অামার মুক্তি মিলেনা, কোন ভাষাই অার অামাকে সান্ত্বনা দিতে পারে না। অামি কি কেবলই স্রষ্টার খেলার পুতুল মাত্র। কি দোষ অামার ,কি অপরাধ অামার, কি ভুল অামার। খুব জানতে ইচ্ছে করে কতটুকু স্বপ্ন সুখের হাত ছানিতে,কতটুকু বিলাসী জীবনের লোভনীয় অভিসারে মানুষ বদলে যেতে পারে? অপরাধের কাঠগড়া অার ভুলের সিড়িতে দাঁড়িয়ে অনুশোচনার অশ্রুকালিতে শেষ বারের মত তোমাকে লিখছি। তুমি ভালো অাছতো? বিবেকের দংশিত বিষে অাজ অামি নীলকন্ঠ। কষ্টের যাঁতাকলে পিষ্ট অাবেগের বোবা কান্না ঝরে পরে অামার নিস্ফল জীবনের অক্ষম অাঙ্গিনায়। এখন অামি ক্লান্ত ভীষন ক্লান্ত ভীষণ ক্লান্ত। অনুভূতিহীন জড় পদার্থের মত একরাশ শূন্যতার পানে চেয়ে বেঁচে অাছি। এই হয়ত অামার নিয়তি। নিয়ন নোংরা ভালোবাসার এ পৃথিবীতে যদি তোমার অামার পবিত্র ভালোবাসার ফসল রেখে যেতে পারি তাহলে কেষ্টের পরিধি একটু হলেও কমতে পারে। অামি শুধু বাঙালী বধু হয়ে তোমার বুকে রয়ে যেতে চাাই। অাজই ডির্ভোস লেটার ডা: এজাজের নামে পাঠিয়ে দিয়েছি। সত্য বলতে কি নিয়ন স্বপ্নের একটু বিলাসী সাধ অামাকে হাতছানি দিয়ে ডেকেছিল। অামার পবিত্র প্রেমের অমূল্য সম্পদ এখোনো তোমার জন্য অক্ষত রয়েছে। তুমি বিশ্বাস কর নিয়ন অামি তোমার ছিলাম তোমার অাছি তোমারই রব। অামায় ক্ষমা করে তোমার বুকে একটু ঠাঁই দাও। তোমার স্ত্রী হয়ে তোমায় ভালোবেসে অামার ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে দাও। অনেক কষ্ট অামি তোমাকে দিয়েছি কিন্তু তার চেয়ে বেশি কষ্ট অামি পেয়েছি নিয়ন। এ পৃথিবীতে সত্য বলে যদি কিছু থেকে থাকে তোমাকে ভীষন ভালবাসি এটাই চিরন্তন সত্য। অামি অার এ দহন জ্বালা সহ্য করতে পারছিনা।শেষ বারের মতো ভালবাসার অাঁচল পেতে তোমাকে ভিক্ষে চাচ্ছি। ভালো থেকো। ইতি প্রতীক্ষার চাতকী জ্যোতি। চিঠি পাঠিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে জ্যোতি। ওদিকে জ্যোতির চিঠি পৌছার একদিন অাগে হৃদয় বিদারক রোড একসিডেন্টে নিয়ন মারা যায়। চিঠিটি রাতের অাধাঁরে নিয়নের কবরে দিয়ে অাসি অামি।ছুটে যায় জ্যোতির কাছে ঢাকায়। জ্যোতি সব শুনে পাথরের মতো স্তব্দ হয়ে যায়। অামি জ্যোতিকে অার কখনোই স্বাভাবিক করতে পারিনী। নিজেকে একটা প্রচন্ড অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকলাম..,,
©somewhere in net ltd.