নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন জেনারেল ব্লগারের নিজের সম্পর্কে বলার কিছু থাকে না ।

আবদুর রব শরীফ

যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!

আবদুর রব শরীফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নষ্ট অভিভাবকের দুষ্ট ছেলে

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৪

আমার বাবা অত শিক্ষিত না তবুও পরীক্ষার সময় প্রতিদিন বলতেন, 'বাবা দরকার হলে ফেইল করিস্ তবুও কখনো নকল্ করিস্ না!'
.
তবুও,
.
গণিত বিষয়ে দুর্বল থাকার কারণে আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে অংক নকল করেও ফেইল করতাম! তখন হাতের তালুতে টোকেন সাইজ কাগজ রেখে নকল প্রচলিত ছিলো!
.
ফটোকপিওয়ালা এ4 সাইজের এক পৃষ্টা রচনা কম্পোজ করে হাতের তালুতে নিয়ে আসার মতো সাইজ করে দিতো!
.
অবস্থা বেগতিক দেখলে সেই কাগজ গিলে খেয়ে ফেলতে হতো! একবার কাগজ গিলতে গিয়ে স্যার নকলকারীর গলা চিপে ধরেছে! সে এখন কাগজটি গিলতেও পারে না ফেলতেও পারে না!
.
একটু আধটু নকলে ধরা খেলে তখন সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা হতো! সেদিন থেকে সে খবরের শিরোনাম হয়ে যেতো!
.
বাবা মা ছেলের লজ্জায় বাসা থেকে বের হতে দ্বিধাবোধ করতো! চারদিকে ছিঃ ছিঃ পড়ে যেতো! নকলে ধরা খাওয়ার পর আমার এক বন্ধু বাসা থেকে পালিয়ে তাবলীগে তিন চিল্লা দিয়ে এসে আবার আরেক স্কুলে ভর্তি হয়ে পরে চবিতে ভালো সাবজেক্টে চান্স পেয়ে রেকর্ড পরিমাণ মার্কসও অর্জন করেছিলো!
.
নকলে সাহায্য করার অপরাধে বহিষ্কৃত এক মেধাবী ছেলের বাবা চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছিলো ছেলের কর্মাকান্ড সহ্য করতে না পেরে!
.
এগুলো ২০০০ সালের প্রথম দিকের গল্প...এখনো কম্পোজ সাইজ লেখা কাগজ দেখলে ভয়ে হাঁটু কাঁপে! আশে পাশে তাকিয়ে দেখি আবছার স্যার নাই তো...!
.
আর এখন,
.
এই বছর গুগুল 'নিউজ’ বিভাগ সার্চে শীর্ষ দুইয়ে 'জেএসসি কোয়েশ্চেনস'
.
আবারো বলছি,
.
গুগুল 'নিউজ’ বিভাগ সার্চে শীর্ষ দুইয়ে 'জেএসসি কোয়েশ্চেনস'
.
অভিভাবকরা দল বেঁধে পিএসসি কোয়েশ্চেনও খুঁজে!
.
মাল আউটের আগে এই প্রজন্ম প্রশ্ন আউট কেমনে করে তা শিখে যায়!
.
ষোল শহর দুই নম্বর গেইট থেকে মেট্রো প্রভাতীতে উঠলাম পাশে বসা এক লোক হাতের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে ভাই আমার ছেলের জন্য জেএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন খুঁজে দিতে পারবেন?
.
তোরা যে যা বলিস্ ভাই আমার সোনার এ+ চাই!
.
দিন শেষে সেইই এক্কান মেধাবী ছেলে যদি আই এম জিপিএ ফাইভ কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মনে করে তাতে তার দোষ দিয়ে লাভ নেই!
.
সেদিন বেশী দূরে নেই যেদিন লক্ষ লক্ষ গোল্ডেনের ভীড়ে 'ওয়াও তুমি জীবনে ফেইল করেছো' বলে ভাইভা বোর্ডের সদস্য মন্ডলী তাকে দাঁড়িয়ে সেলুট করবে!
.
চাকরির আবেদনে লেখা থাকবে দুইটা থার্ড ক্লাস না থাকলে প্রার্থীর আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে!
.
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এক এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল করতে না দেওয়ায় শিক্ষকের পা ভেঙে দিয়েছিলেন অভিভাবক!
.
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় নওপাড়া কেন্দ্রে পিএসসি পরীক্ষায় নকল দেওয়ার প্রতিবাদ করায় দুই নারীকে লাঞ্চিত করে এক ছাত্রের অভিভাবক!
.
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নারুচি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন স্বয়ং অভিভাবকরা!
.
আমতলী এম ইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবককে নকল সরবরাহে বাঁধা দেওয়ায় কক্ষ পরিদর্শককে লাঞ্চিত করা হয়েছিলো!
.
শুধু বাংলাদেশে না ভারতেও নির্লজ্জভাবে বোর্ড পরীক্ষার সময় ছাত্র-ছাত্রীদের নকল সরবরাহ করার দায়ে অভিভাবকদের গ্রেফতার করে ১৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলো বিহারের পুলিশ প্রশাসন!
.
মূল কারণ গোল্ডেন এ+ আহারে গোল্ডেন এ+ না পেলে ছেলেটার জীবন অন্ধকার! সে ভালো কোন জায়গায় চান্স পাবে না!
.
দিনশেষে প্রশ্ন ফাঁসের জন্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে টাকলা বলে গালি দিলে দায় মুক্ত হতে পারবেন না! সর্ষের ভিতর ভূত ঢুকে গেছে! ঘরের মধ্যে ধর্ষক থাকলে আপনার মা বোন কেউ নিরাপদ থাকবে না!
.
হ্যালো অভিভাবক! শুনতে পাচ্ছেন কি?

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৩

আরাফআহনাফ বলেছেন: নাহ, আশে পাশে আবছার স্যার নাই! :D

ভাল লেখনী, বিদ্রোহীভাবটা বরাবরের মতো, পুরো লেখা জুড়ে।

ভালো থাকুন।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৩

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: যে যুগ আসছে এখন আফসার উল্টো স্কুল ছাত্র নেতাদের ভয় পাই!

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সবাই শুধু শিক্ষামন্ত্রীকে দোষারোপ করেন, আমি বলি, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার পেছনে অভিভাবকগণ অনেকাংশে দায়ী।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৩

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: লেখাটির মূল কথাটি এটা

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৫৮

অ্যাপল ফ্যানবয় বলেছেন: আপনি তো একদম আমার মনের কথাগুলো লিখেছেন ভাই । কি যে সমস্যা এটা, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায়না । আমি ২০১৭তে জেএসসি দিয়েছি, নিজের চোখে দেখেছি কিভাবে সবাই প্রশ্নের জন্য হুমড়ি খেয়ে পরে, আর না পেলে উন্মাদ হয়ে যায় । গোল্ডেন জিপিএ-৫ ই সব, অন্য কোনো কিছুর কোনো ভ্যালু নেই । সেজন্যেই গোল্ডেন না পেয়ে সবাই সুইসাইড না করলেও বেশিরভাগই সুইসাইড-অ্যাটেম্প্ট নেয় । সারাবছর ধরে তাদের দৈন্দিন রুটিনে লেখাপড়ার সময়সূচি হয় সকাল ৭টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত । আর ছাত্ররা পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে গেলেও বাবা-মায়েরা কোনোদিন বিরক্ত হননা ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৪

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: সহমত দিলাম

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:১৭

বেয়াদপ কাক বলেছেন: লেখাগুলি যেন খাপছাড়া তলোয়ার।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৪

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: একদিন সব কিছু উন্মক্ত হয়ে যাবে এভাবে

৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৩৬

ফ্রিটক বলেছেন: কথাগুলি বাস্তব, কিন্তু আমরা যেন নির্বিকার। হায়রে শিক্ষাব্যবস্হা!

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০৫

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আহারে শিক্ষা! আহারে শিক্ষিত!

৬| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫৮

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: মাল আউট হবার আগে প্রশ্ন আউট কি ভাবে করে ? কথাটা জব্বর একখান উপমা।

আপনার কথামতে- আগের প্রজন্ম আগে মাল আউট কিভাবে করে তা শিখত আর এই প্রজন্ম প্রশ্ন আউটের পরে মাল আউট নিয়ে ভাবে!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.