নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমরা সবাই রাজা

বাবু>বাবুয়া>বাবুই

বাবু>বাবুয়া>বাবুই › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কোয়ান্টাম" নতুন রুপে লালসালু ।

০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:২৩

কোয়ান্টাম নিয়ে কয়েকদিন আগে একটি আর্টিকেল পড়ে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। কি হচ্ছে এই সব!!!!!! --- শেয়ার করলাম -

কোয়ান্টাম দাসত্বের মায়াজাল – প্রো-মাস্টার কোর্স (বায়াত)

ইসলামিক বিবেচনায় কিছু বলার যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু সাধারন হিসেব নিকেশে একটি সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোয়ান্টাম কতটুকু সততা ও স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করছে তা একটু বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করতে পারি।

কোয়ান্টামের আয় –

কোর্স – গ্রেজুয়েশান কোর্স – ৩৭০ টা ব্যাচ।
শেষ ১০০ ব্যাচ এ প্রতিব্যাচ এ গড়ে ১০০০ জন হলে ৯০০০ হাজার টাকা করে মোট আয় ১০০x১০০০x৯০০০ = ৯০০,০০০,০০০ (নব্বই কোটি টাকা)
আর আগের ১০০ ব্যাচ এ গড়ে ৬০০ জন করে হলে ৬০০০ টাকা করে মোট আয় ১০০x৬০০x৬০০০ = ৩৬ কোটি টাকা।
বাকি প্রথম দিকের ১৭০ ব্যাচ এ গড়ে ২০০ জন করে ৪০০০ টাকা করে মোট আয় ১৭০x২০০x৪০০০ = ১৩,৬০,০০,০০০
আর ৩৭০ টি ব্যাচ এ যারা কোর্স রিপিট করেছেন এদের কাছ থেকে আনুমানিক ১০ কোটি ধরলাম।

মোট আয় = ১৪৯,৬০,০০,০০০ টাকা অর্থাৎ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

প্রো-মাস্টার কোর্স – আনুমানিক ৮০০০ জন ৩০০০ টাকা করে = ২ কোটি ৪০ লাখ।

প্রথমায়ন, শিক্ষার্থী কোর্স, ব্যায়াম কোর্স, সাইকি কোর্স, হার্ট কোর্স, আইসিটি ইত্যাদি থেকে আনুমানিক ১৫ কোটি টাকা।

ম্যাটির ব্যাংক = গত ১১ বছরে গড়ে ৬ কোটি টাকা হিসেবে ৬৬ কোটি। গত বছর হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।

যাকাত – গত ১৪ বছরে গড়ে ১ কোটি টাকা হিসেবে ১৪ কোটি টাকা। গত বছর হয়েছে ৫ কোটি টাকা।

হিলিং থেকে দিনে ২০ হাজার টাকা করে গত ২১ বছরে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার মত হওয়ার কথা।

অনুদান – আনুমানিক গত ২১ বছরে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা। এইটি আর অনেক বেশি হতে পারে।

ব্লাড ব্যাংক – ১২ কোটি টাকা।

বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এবং সাপ্তাহিক, মাসিক এবং বাৎসরিক প্রোগ্রাম গুলো থেকে আরও ২০ কোটি টাকা।

প্রকাশনা – প্রকাশনা থেকে আয় আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা। কিন্তু আয় আরও অনেক বেশি হতে পারে। কারন গত ২১ বছরে প্রতি বছরে কোটি কোটি টাকার বই এবং অন্যান্য প্রকাশনা বিক্রি হচ্ছে।

সব মিলিয়ে আনুমানিক সর্ব মোট আয় – ৩৭৯ কোটি ৪০ লাখ।

খরচের খাত –

স্কুল – স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সর্ব উচ্চ ৭ কোটি (বাস্তবে আরও অনেক কম হবে)। জমি গুলো নাম মাত্র দামে কেনা।

গত ১১ বছরে গড়ে ৪০০ জন শিক্ষার্থীর জনপতি মাসিক খরচ ২ হাজার টাকা হিসেবে মাসে মোট খরচ ৮ লাখ ১২ = ৯৬ লাখ, ১১ বছরে মোট = ১০ কোটি ৫৬ লাখ। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রতিটি বাচ্চাদের পিছনে ২-৩ জন আত্মিক মা-বাবা আছেন যারা বাচ্চাদের এই খরচ চালিয়ে যান। অর্থাৎ কোয়ান্টামের মুল ফান্ড থেকে কোন খরচ এদের জন্য করা হয়না বরং ২-৩ জন আত্মিক মা-বাবা থাকায় টাকা আরও উদ্বৃত্ত থেকে যায়। অর্থাৎ মাটির ব্যাঙ্কের দান দিয়ে যে স্কুল চালনা হয় তা সত্য নয়।

আরও কার্যক্রমের মধ্যে আছে ১২ এতিম মেয়ে শিশুর ভরন পোষণ এবং , মাতৃ মঙ্গল কার্যক্রমে ৮০০ নারীকে সেবা দান যা খুব বেশী হলে ৩০ লাখ খরচ ধরলাম।

ব্লাড ব্যাংক ; প্রতিষ্ঠা করতে ধরে নিলাম আনুমানিক ৩ কোটি টাকা খরচ হয়। যা রক্ত বিক্রির (কোয়ান্টামের ভাষায় নুন্যতম প্রসেসিং ফি) পয়সা দিয়ে অনেক আগেই উঠে এসেছে। আর গড়ে মাসে সাড়ে ছয় হাজার ব্যাগ থেকে ৫০০ ব্যাগ যদি বিনা মুল্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে তবে ৬০০০ ব্যাগ থেকে যে আয় হয় দিয়ে ছয় মাসে প্রতি জেলায় একটি করে ব্লাড ব্যাঙ্ক করা যায়।
যাকাত – কোয়ান্টামের যাকাত দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে যা দেওয়া হবে তা ফেরত দিতে হবে। অর্থ ১০ হাজার টাকায় গরু কিনে দিলে তা যদি বড় করে ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয় তবে মুল লগ্নি ১০ হাজার কোয়ান্টামকে ফেরত দিতে হবে। প্রায় ক্ষুদ্র ঋণের মত। অর্থাৎ কোয়ান্টামের টাকা কোয়ান্টামেই রয়ে যায়। গত বছর কোয়ান্টাম যাকাত সংগ্রহ করেছে ৫ কোটি টাকার উপরে। আর বাংলাদেশের কয়টি পরিবার বলতে পারবে তারা কোয়ান্টাম থেকে যাকাত পেয়েছে! প্রতি বছর একটি ছবি ছাপা হয় কোয়ান্টাম প্রকাশনায় যে একটি সেলাই মেশিন আর একটি ইজি বাইকের ছবি দিয়ে যে শত শত পরিবারকে কোয়ান্টাম যাকাত দিচ্ছে। অথচ কোয়ান্টাম সদস্যরা নিজের পাড়া পড়শি ও নিকট আত্মীয়কে যাকাত না দিয়ে গুরুর নির্দেশে কোয়ান্টামে যাকাত দেন যার যাকাত দান প্রক্রিয়া মোটেই ইসলাম সম্মত নয়। আরও একটি প্রশ্ন উঠে কোয়ান্টাম কি যাকাত নিতে পারে? এই পর্যন্ত কোয়ান্টাম অসংখ্য কোয়ান্টাম সদস্যদের জিজ্ঞেস করেছি যে তাদের পরিচিত বা এলাকার কেউ কোয়ান্টামের কাছ থেকে যাকাত পেয়েছে কিনা। সবার উত্তর নেতি বাচক। অথচ রমজানের সময় গুরু বার বার তাড়না দিয়ে সদস্যদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেন কে কত বেশী যাকাত আদায় করে আনতে পারেন পরিচিত জনদের কাছ থেকে।
নলকুপ স্থাপন – বলা হয়ে থাকে এই পর্যন্ত প্রায় ১৮৪ টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে কোয়ান্টামের পক্ষ থেকে। এই সংখ্যা যাচাইয়ের বিষয়। কিন্তু এই ১৮৪ টি নলকূপ স্থাপন করতে কত খরচ হবে? ২০ লাখ টাকা বা ৩০ লাখ টাকা, এর বেশী কি?
কর্মচারীর বেতন ; কোয়ান্টামের প্রায় ৯৫% কর্মচারী মুলত স্বেচ্ছাসেবী। বেতন ভুক্ত যারা আছেন তাদের বেতন তুলনামূলক ভাবে অনান্য প্রতিষ্ঠান থেকে এতই নগণ্য যে অবাক হতে হয়।
খতনা কার্যক্রম এবং দাফন কার্যক্রম – এই গুলো মুলত যে স্থানে আয়জন করা হয় ঐখানের স্থানীয় সদস্যরাই খরচ বহন করে থাকেন। অর্থাৎ কোয়ান্টামের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে কোন টাকা আসেনা। ঔষধ বাবদ সারা বছরে ১ লাখ টাকার বেশী খরচ হওয়ার কথা না।
অফিস রেন্ট – কোয়ান্টামের কেন্দ্রীয় অফিস এবং সারা বাংলাদেশে কয়েকটি শাখা ছাড়া দেশ জুড়ে যত শাখা প্রি-সেল আছে এই গুলোর অফিস ভাড়া মুলত ঐ শাখা প্রি-সেলের স্থানীয় সদস্যরাই বহন করেন। সেই সাথে শাখা প্রি সেল গুলোতে যত রকম প্রোগ্রাম হয় তার সব টুকুই ঐ শাখা প্রি-সেলের স্থানীয় সদস্যরাই বহন করেন। কোয়ান্টামের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে কোন টাকা খরচ হয়না।

উপরোক্ত পরিসংখ্যান থেকে দেখতে পাই কোয়ান্টামের আয়ের বিপরীতে ব্যয় নগন্য। প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বিপরীতে ব্যয় কি ৪০ কোটি টাকা হয়েছে?

এইবার আসুন একটু নজর দেই এইটা আসলে কি সেবা নাকি ব্যবসা? কোয়ান্টাম ফাওউন্ডেশান এবং যোগ ফাওউন্ডেশান– কোয়ান্টাম ফাওউন্ডেশান একটি সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান। অন্য দিকে যোগ ফাওউন্ডেশান একটি লিমিটেড কোম্পানি যা একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এই দুই প্রতিষ্ঠানেরই মালিক শহিদ আল বোখারি এবং উনার স্ত্রী নাহার আল বোখারি। কেবল ম্যাটির বাঙ্কের টাকাই কোয়ান্টাম ফাওউন্ডেশানের আকাউন্টে জমা হয়। কোর্স ফি সহ যাবতীয় অন্যান্য আয় সব জমা হয় যোগ ফাওউন্ডেশানের একাউন্টে। কোর্স করতে গেলে দেখবেন বলা হচ্ছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশান আয়োজন করেছে। কোথাও যোগ ফাউন্ডেশানের নাম উল্লেখ নেই। কিন্তু টাকার রসিদ খেয়াল করে দেখবেন তা যোগ ফাউন্ডেশানের। শুভঙ্করের ফাঁকিটা এই খানেই। ব্যানার ব্যবহার করা হয় সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টামের আর টাকা জমা হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যোগ ফাউন্ডেশানে। ঐদিকে মুরিদ বা সদস্যদের আমল দেওয়া হয় প্রতি সপ্তাহে অন্তত একজন লোককে সাপ্তাহিক সাদাকায়নে (মোটিভেশন প্রোগ্রাম কোর্স করার জন্য) আনা আর পরিচিতদের মধ্যে ম্যাটির ব্যাংক বিতরণ। এম আল এম কোম্পানির মতই। কারন মুল ইনকাম ঐ কোর্স ফি এবং ম্যাটির ব্যাঙ্কের টাকা। মাটির ব্যাঙ্কের টাকায় কোয়ান্টামের সব কার্যক্রমের খরচ দেখানো হয়। আর যোগ ফাউন্ডেশানের টাকা রয়ে যায় পকেটে যার পরিমাণ শত শত কোটি টাকা। এখন কথা আসতে পারে পত্রিকায় এইটা নিয়ে লিখা লিখি করা হয়না কেন? শুনে অবাক হবেন অনেক আগে থেকেই কোয়ান্টামের রয়েছে দুইটি প্যানেল – সাংবাদিক প্যানেল এবং আইনজীবী প্যানেল। গুরু এদের সাথে সব সময় আলাদা সময় দেন এবং এরাই এই ব্যাপার গুলো জনসমক্ষে না আসার জন্য স্রবাত্মক সহযোগিতা চালিয়ে আসছেন।

আর একটি বিষয় অবতারনা করছি আত্ম স্বীকৃত পীর বা আধ্যাত্মিক গুরু “শহীদ আল বোখারী মহাজাতক”-এর ব্যাক্তিগত জীবনকে রহস্য আবৃত করে রাখা হয়েছে। যেমন -

১। মহাজাতকের জন্ম, শিক্ষা ও পেশা কোথাও উল্লেখ নেই। উনার পরিবারের কথা, মা-বাবা, ভাইবোনের কারও কথা আসেনা। সচেতন ভাবে এড়িয়ে চলা হয় পারিবারিক পরিচয়। পরিবারের কাউকে ফাউন্ডেশানে দেখা যায়না। কেন? কোন দিন উনি উনার কোন ছোট বেলার ঘটনা বা স্মৃতি বলতে সুনেননি কেউ। কারন কি? ঘটনা কি এই যে উনি দেশ প্রেম নিয়ে কথা বলেন কিন্তু উনার জন্মভুমি এই দেশ নয়? নামটাও “শহীদ আল বোখারী” বাঙ্গালী নামের সাথে যায়না। লামার যত স্থাপনা প্রায় সব গুলোর নামই আরবীতে। ব্যাপার গুলো ঠিক “লাল সালু” উপন্যাসের মত লাগে কি?

২। উনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কোথাও বলা নেই। কতটুকু পড়াশোনা করেছেন বা কোথায় পড়াশোনা করেছেন কখনও বলেননি।

৩।উনার স্ত্রী মাজী মাদাম (?) নাহার আল বোখারী – অত্যন্ত বদ মেজাজি এবং উনার কথা বার্তা মাঝে মাঝে শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। উনি প্রতি দিন নিত্য নতুন শাড়ি পড়েন, সারা গায়ে দেন নিত্য নতুন অলঙ্কার এবং কটকটে লিপস্টিক মেখে নারী পুরুষ সবাইকে নিয়ে আধ্যাত্মিক ধ্যান করান – অথচ উনি বলেন উনারা খুব সাধারন জীবন যাপন করেন। ডিজিটাল পীরের ডিজিটাল স্ত্রী।উনি কোয়ান্টাম ও যোগ ফাউন্ডেশানের চেয়ারম্যান। উনিও মানুষকে ধর্মীয় নির্দেশনা দেন এবং মানুষের ব্যাক্তিগত, পারিবারিক জীবনের সমাধান দেন। উনার উপদেশ নেওয়ার জন্য আগে থেকে বুকিং দিয়ে টিকেট নিতে হয়। গুরু সবাইকে শিষ্টাচার শেখান কিন্তু নিজের বউকে তা শেখাতে পারেন নি। গুরুজি মুরিদদের শেখান “রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন” কিন্তু উনার নিজের বউয়ের রাগ কমাতে পারেন নি গত অর্ধ শতাবধি ধরে। কোয়ান্টাম সেবকরা উনার রাগের কারনে সব সময় ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকেন।

৪। উনারা স্বামী-স্ত্রী দুই জনই হায় হায় কম্পাণী "যুবক"_এর পার্টনার ছিলেন।

মহাজাগতিক দাসত্ব -

এইবার আসি কোয়ান্টামের দ্বিতীয় পর্ব প্রো – মাস্টার লেভেলের কথায়। প্রথম কোর্স গ্রেজুয়েশান কোর্স যা কেবল জাগতিক উন্নতির জন্য। আর দ্বিতীয় পর্ব প্রো – মাস্টার কোর্স হল আধ্যাত্মিক সাধনার লেভেল যাতে প্রতিটা সদস্যকে গুরুর বায়াত হতে হয় এবং বলা হয় এই সাধনা অনন্য মানুষ হওয়ার সাধনা। প্রো-মাস্টার মানে প্রোপসড (proposed master) মাস্টার। অর্থাৎ মাস্টার বা অনন্য মানুষ হওয়ার আগের ধাপ।

প্রো-মাস্টার একটি দাস বানানোর প্রক্রিয়া মাত্র।বায়াতের নামে বিনা খরচে কর্মী বাহিনী বানানোর প্রক্রিয়া। বায়াতের নামে আজীবন দাসত্ব বরণ।অনেকেই উনাকে প্রশ্ন করেছিলেন – আপনি কি ধর্ম বিশেষজ্ঞ। উনি নিজেই বলেন উনি ধর্ম বিশেষজ্ঞ নন। কিন্তু উনি আবার সবার ধর্ম গুরু হন কিভাবে? ধর্ম বিষয়ে ভাল জ্ঞান না থাকলেও উনি ধর্মের ফতোয়া দেন, নির্দেশনা দেন। উনি নিজেকে দাবী করেন ধারা পরম্পরার প্রতিনিধি বা “উলিল আমর”। উনি প্রো-মাস্টার সেমিনারের মধ্যে মাউলানা সাইদুর রহমানকে দিয়ে বলান যে উনি নবীজির রওজায় গিয়ে উনার সাথে স্ব-শরীরে মোলাকাত করেছেন। প্রো-মাস্টার লেভেলে প্রতিদিন দুইবার মেডিটেশানের মাধ্যমে শপথ নেওয়া হয় – স্রস্টার কাজ আমার কাজ, গুরুর কাজ আমার কাজ, সঙ্ঘের কাজ আমার কাজ। অর্থাৎ গুরু যা করতে বলেন তাই স্রস্টার কাজ। গুরু যা বলেন তা করা অবশ্য পালনীয়। পালন না করা স্রস্টার নির্দেশ লঙ্ঘন। আর এইভাবেই কোয়ান্টামে সদস্যদের বিনা পয়সায় খাটিয়ে নেওয়া হয় বছরের পর বছর। উনার মতে বায়াত হওয়া ফরয। প্রো-মাস্টার হওয়ার সময় মেডিটেশান করানো হয় এই ভাবে (দেড় ঘণ্টার মেডিটেশান অতি সংক্ষেপে) – “আপনি হঠাৎ মারা গেলেন। কবর দেওয়া হল। অন্ধকারে আপনি কাঁদছেন। গুরুজি (মহাজাতক) সেই মাটি সরিয়ে আবার আপনাকে কবর থেকে তুলে এনে পুনর্জীবন দান করলেন।“ এইভাবে চরম মৃত্যু ভয় ডুকিয়ে মনটাকে দুর্বল করে দিয়ে অসহায় মানুষকে গুরুর উপর নির্ভরশীল করে ফেলেন মানসিক ভাবে। দেখা যায় প্রো- মাস্টারদের নিজস্ব চিন্তা ধারা লুপ্ত হয়।সব কিছুতেই গুরুর সহযোগিতা কামনা করেন। উনারা কেবল গুরুর নির্দেশকেই ফরয হিসেবে মেনে নেন। মুল ব্যাপারটা এইখানেই। মহাজাতক সাহেব উনার রপ্ত করা মেডিটেশান বা ধ্যান বিদ্যাকে প্রয়োগ করেছেন দারুন ভাবে। মেডিটেশানের হিপণোটিক্স শাখাতে উনার দক্ষতা চমৎকার। আর এইটাই ব্যাবহার করেছেন সফল ভাবে ধর্মের প্রলেপ দিয়ে। মাধ্যম হিসেবে মেডিটেশান খুব শক্তিশালী হাতিয়ার। চোখ বন্ধ করে প্রশান্ত মনে (আলফা লেভেলে) কাউকে যা দেখতে বলা হয় এবং যা শুনানো হয় তা মস্তিষ্কে স্থায়ী একটি প্রভাব ফেলে। বারবার একই কথার পুনরাবৃত্তি মস্তিকের প্রোগ্রাম স্থায়ী ভাবে বদলে দেয়। প্রো- মাস্টারের যত গুলো মেডিটেশান আছে তাতে বার বার উনার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করানো হয়। তাই মুরিদরা উনার বা কোয়ান্টাম সম্পর্কে কেউ যুক্তি দিয়ে কিছু বললেও তা উড়িয়ে দেন বা ক্ষেপে যান। এই ভাবেই জীবনের দুর্দশার বৃত্ত ভাংতে গিয়ে মানুষ ডুকে পড়ে আরেক মায়ার বৃত্ত কোয়ান্টামের দাসত্বের বৃত্ত যেখানে দিনের পর দিনে কাজ করে যায় আরেক জনের ব্যবসা আর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। “অনন্য মানুষ” বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তার অনন্যতা। একই ফ্যাক্টরিতে বানানো হচ্ছে সব একই ধরনের মানুষ। স্রস্টার অনন্য মানুষ পরিণত হচ্ছে জৈবিক রোবটে। বুদ্ধি দীপ্ত মানব সন্তান পরিণত হয় মহাজাগতিক কোয়ান্টাম দাসে

লেখাটি QCorner Bd ফেসবুক আইডি থেকে নেয়া

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:২৯

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আপনার হিসাবগুলো সবই তো মনগড়া মনে হচ্ছে...সবখানেই আপনি "ধরে নিচ্ছেন"!

২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: কোয়ান্টাম সদস্যরা নিজের পাড়া পড়শি ও নিকট আত্মীয়কে যাকাত না দিয়ে গুরুর নির্দেশে কোয়ান্টামে যাকাত দেন যার যাকাত দান প্রক্রিয়া মোটেই ইসলাম সম্মত নয়।

৩| ১৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: কোয়ান্টাম প্রতারণা আর শোষণের একটি হাতিয়ার হ’ল ‘মাটির ব্যাংক’। যে নিয়তে এখানে টাকা রাখবেন, সে নিয়ত পূরণ হবে। প্রথমবারে পূরণ না হ’লে বুঝতে হবে মাটির ব্যাংক এখনো সন্তুষ্ট হয়নি। এভাবে টাকা ফেলতেই থাকবেন। কোন মানত করলে মাটির ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। পূরণ না হলে অর্থের পরিমাণ বাড়াতে হবে। এখানে খাঁটি সোনার চেইন বা হীরার আংটি দিতে পারেন। ইমিটেশন দিলে মানত পূরণ হবে না (প্রশ্নোত্তর)। এর জন্য একটা গল্প ফাঁদা হয়েছে। যেমন, ‘মধ্যরাতে উঠে মাটির ব্যাংকে পাঁচশত টাকা রাখার সাথে সাথে মুমূর্ষু ছেলে সুস্থ হয়ে গেল’ (দুঃসময়ের বন্ধু..)। মাটির ব্যাংকের উপকারিতা সম্পকে কোয়ান্টাম প্রপাগান্ডা হচ্ছেঃ (১) আপনার টাকা হালাল করে (২) পাপ মুক্ত করে আপনার অন্তরে শান্তি আনবে! (৩)রোগ মুক্তিসহ আপনার সকল সমস্যার সমাধান করবে! (৪) আপনার মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা দূর করবে! (৫) আপনার জীবনে বয়ে আনবে সুখ, সাচ্ছন্দ এবং সুন্দর ভবিষ্যত!

মাজার ব্যবসা কে আধুনিক করার ডিগিটাল উপায় !

৪| ১৫ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: কোয়ান্টাম ক্যচাল : লিন্ক সমগ্র

view this link

১৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:০০

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: লিন্ক এর জন্য ধন্যবাদ।

৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

আর জে নিশা বলেছেন: প্রতারণার আরেক নাম “কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন” = ডেষ্টিনি ২০০০ লিঃ / ইউনিপে টু ইউ কোনো পার্থক্য আছে কি ?

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন
কোয়ান্টাম মেথড
কোয়ান্টাম ব্লাড ব্যাংক
কোয়ান্টম মাটির ব্যাংক

কে এই গুরুজি নামক বাটপার ? কি তার পরিচয় ? সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো এবং নানা প্রশান্তির কোর্স নামে, রক্ত দান নামে ভাওতাভাজী, ঠকবাজী আর প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় মানুষের অর্থ, আসলে কোয়ান্টাম হচ্ছে আরেক ডেষ্টিনি ২০০০ লিঃ, একই দাওয়া তবে ভিন্ন প্যাকেটে ইউনিপে টু ইউ ! আমাদের দেশের মানুষ কবে এই মাল্টি লেভেল মার্কেটিং নামের জোচ্চুরদের হতে মুক্ত হবে বলতে পারেন কি ?

জামাত ও শিবির এর আস্থানা এই কোয়ান্টাম মেথড - কোয়ান্টাম মেথডের গতিবিধি সন্দেহ জনক - এখনি সরকারের নজরদারিও আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি ।

ছেলে মেয়েদের ধ্যানের নামে চলে বদমায়েশী, তাই যারা কোর্স করেছে তাদের কাছে এই বদমায়েশী মারাত্বক মজাদার বিষয়, আর গুরুজী হচ্ছে সেই বদমায়েশীর লিডার ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.