নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমরা সবাই রাজা

বাবু>বাবুয়া>বাবুই

বাবু>বাবুয়া>বাবুই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মের মুখোশে মানুষ হত্যা করে সভ্য সেজেছে পশ্চিমারা

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩

আফগানিস্থান, ইরাক থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্চে যে যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে তার পেছনে রয়েছে ইউরপ-আমেরিকার অর্থনৈতিক উচ্চাভিলাষ তা আমরা বুঝি অথবা না বুঝে ধর্মকে সামনে নিয়ে আসি। তাদের এই উচ্চাভিলাষ পুরুন করতে তারা ধর্মীয় মতভেদ ও রাজতান্ত্রিক শাসন বাবস্থাকে ব্যবহার করে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে।তাদের এই যাত্রায় পুরোদস্তুর সমর্থন দিয়ে আসছে সৌদিআরব। মুলত এই চক্রটিকে শুধু ইউরপ-যুক্তরাষ্ট্র না বলে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র -সৌদিআরব বলাই ভাল।বর্তমান সিরিয়া মুলত এই চক্রের বাণিজ্যিক প্রতিহিংসার শিকার।
এই একই উপকুলেরই ফিলিস্তিনি শিশুদের ছিন্নভিন্ন লাশের ছবিও প্রকাশিত হয়েছে বহুবার, বোমার আঘাতে কাৎরানো আর রক্ত ঝরার ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে তবুও ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র একটু উহ শব্দটুকু করেনি।


(ছবিঃ মৃত আইলান)

আজ হঠাত আইলানের অক্ষত নিথর দেহটা পড়ে থাকতে দেখে মুসলিমদের জন্য তাদের মানবতা উথলে উঠল কি কারনে? সেটা একটা প্রশ্ন বটে। ইউরোপীয়রা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নামলো “অয়েল্কাম রিফুজি” আর পুরো উইরোপ মেতে উঠল রিফুজি দত্তক নিতে !!! জনগণ প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নামলেই ইউরোপীয় শাসকরা দাবি মেনে নেয় তা তো নয়। তাহলে ?



সিরিয়াতে গনহত্যা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই, কাওকে তো “স্টপ কিলিং ইন সিরিয়া” প্ল্যাকার্ড নিয়ে দেখা যায়নি। এই “অয়েল্কাম রিফুজি” সরকারি সংস্থার ইন্ধনওতো থাকতে পারে, তড়িঘড়ি করে প্ল্যাকার্ডের দাবি মেনে নিয়ে আসাদ সরকারকে বড় ভিলেন হিসেবে প্রচার করার চেস্টা থেকে।
কেউ কেউ বলছে ইউরোপ তাদের সস্তা শ্রমিকের অভাব পূরণ করবে, এইটাও একটা কারন হতে পারে। Force Labor ইউরোপেই বেশী আছে বলে জানি। এ বিষয়টি সিরিয় যুদ্ধের উপজাত রিফুজি সমস্যার সদ্ব্যবহার হতে পারে তবে প্রকৃত উদ্দেশের জায়গাটা আরেকটু আড়ালে।
ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র-সউদিআরব এই চক্রটি বিশ্ববাসীকে বুঝিয়েছে সিরিয়ার ১০% শিয়াদের শাসন সংখ্যা গরিষ্ঠ সুন্নিরা মানতে চায়না, সংখ্যা গরিষ্ঠ সিরিয়ানরা গনতন্ত্র চাই, কুর্দিরা তাদের আধিকার চাই নিজেদের মতো করে সাধিনভাবে বাঁচতে চাই। এই চাওয়া পাওয়া নিয়া এরা মারামারি কাটাকাটি করছে। মুসলিমরা খুব খারাপ খালি খুনাখুনি করে! আমরাও তাই বুঝে ধর্মকে গাল মন্দ করছি। কিন্তু কিসের টানে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র আর সউদি শাসকরা সিরিয়ার মুসলিমদের জন্য এতো দরদি হয়ে উঠলো একটু ঘুরে দেখা যাক-
সউদি এবং কাতার তাদের গ্যাস ইউরোপে রপ্তানী করতে চাই। এদিকে ইউরোপ তাদের জ্বালানির জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল থাকতে চাই না। আমেরিকা চাই না ইউরোপকে রাশিয়া কোনভাবে জিম্মি করে রাখুক কারন সে রাশিয়ার বিপরীতে এন্টি-মিসাইল প্রকল্প নিয়েছে ইউরোপে। এই অবস্থায় ইউরোপে তাদেরই আজ্ঞাবহ জ্বালানী সাপ্লায়ার দরকার। বর্তমানে ইউরোপের মোট চাহিদার ৩৯% জ্বালানী বিশেষভাবে গ্যাস রাশিয়া সরবরাহ করে আসছে। রাশিয়া থেকে এই গ্যাস ইউক্রেন ও বেলারুশ হয়ে ইউরোপে যায়।


(ছবিঃ গ্যাস পাইপ লাইন রাশিয়া-ইউরোপ)

রাশিয়ার প্রভাব মুক্ত হওয়ার জন্য ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র আর সৌদিআরব মিলে যে উপায় খুজে পেল তা’হলো কাতার থেকে পাইপ লাইনে গ্যাস যাবে ইউরোপে। কিন্তু সমস্যা হলো এক্ষেত্রে তাদেরকে সিরিয়ার ভুখন্ড ব্যাবহার করতে হবে।


(ছবিঃ গ্যাস পাইপ লাইন কাতার-ইউরোপ)

সিরিয়ার ভুখন্ড ব্যাবহারের প্রধান সমস্যাই হলো রাশিয়া। স্নায়ু যুদ্ধের প্রাক্কালে ১৯৭০ এর সময়ে সিরিয়া-সোভিয়েত রাশিয়া এক চুক্তির মাধ্যমে সিরিয়ান উপকুলে রাশিয়া নৌঘাঁটি স্থাপন করে।১৯৯১ -এ সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর এই নৌঘাঁটির সাইজ কিছুটা ছোট হয়ে আসলেও তা এখনো বর্তমান। আমেরিকা ২০০৮ সালের পর পোল্যান্ডে তার মিসাইল প্রতিরক্ষা বাবস্থা স্থাপন শুরু করলে রাশিয়া পুনরায় সিরিয়ার নৌঘাঁটি শক্তিশালী করা শুরু করে ২০০৯ সাল নাগাদ তারা এই ঘাঁটিতে নিউক্লিয়ার শক্তি সম্পন্ন জাহাজ মোতায়েনের উপযুক্ত করে তলে এমনকি আসাদ সরকার এই নৌঘাঁটিকে মদ্ধপ্রাচ্চে রাশিয়ার স্থায়ী ঘাঁটি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।


(ছবিঃ সিরিয়ান উপকুলে রাশিয়ান নৌঘাঁটি)

রাশিয়া কিছুতেই ইউরোপের জ্বালানির উপর তার কর্তৃত্ব নষ্ট হতে দিবে না বিধায় তার দোস্তো সিরিয়া গ্যাস সরবরাহের এই পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পে অস্বীকৃতি জানাই। উপায়ান্তর না দেখে ইউরোপ-আমেরিকার শাসকেরা সিরিয়াই গনতন্ত্ররের অভাব আবিস্কার করে। শুরু হয় বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহীদেরকে আস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করতে থাকে আমেরিকা আর অস্ত্রের দাম পরিশোধ করে সৌদি আরব, রাশিয়ার বন্ধু আসাদ সরকারকে সরিয়ে তাদের পুতুল সরকার বসানোর উদ্দেশে। হাজার হাজার মানুষ মরতে থাকে সিরিয়ায় আর তারা প্রচার করতে থাকে আল-আসাদ খুনি সুন্নি মুসলিমদের শত্রু।এই যুদ্ধকে তারা শিয়া-সুন্নি-কুর্দি ধর্মীয় মুখোশ পরাতে থাকে। খুনি আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য জাতিসঙ্ঘের কাছে শক্তি প্রয়োগের আনুমতি চাই যুক্তরাষ্ট্র । সাভাবিকভাবেই বাঁধ সাধে চীন-রাশিয়া, তারা ভেতো প্রয়োগ করে। যুক্তরাষ্ট্র মনঃক্ষুণ্ণ হয়ে ইউক্রেনে উত্তেজনা সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করে রাশিয়াকে ব্ল্যাকমেইল করতে চাই। রাশিয়া তার সৈন্য-সামন্ত নিয়ে ঢুকে পড়ে ইউক্রেনে, শুরু হয় যুদ্ধ, বাড়তে থাকে মানুষের লাশ।যুক্তরাষ্ট্র এখানেও বার্থ হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এতো সহজে ছাড়বার পাত্র তো নয়। তাইতো হঠাত গজীয়ে উঠলো আইএসআইএস। এতো অল্প সময়ে কিভাবে এতো সংগঠিত, এতো অস্ত্র সমৃদ্ধ একটি জঙ্গি সংগঠন আত্ম প্রকাশ করতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। আইএসআইএস নাকি ইস্লামিক স্টেট প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যদিও আমরা জানি মধ্যপ্রাচ্য মুসলিম বিশ্ব হিসেবেই পরিচিত। মজার ব্যাপার হলো এই সংগঠনটি যখন মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা করবে বলছে ঠিক তখনি ইস্রাইল বোমা মেরে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের উপর গনহত্যা চালাচ্ছে, অথচ ইস্রাইল নিয়ে তাদের কোন বক্তব্য নাই।এই আইএসআইএস নাকি বাংলাদেশকেও মাঝেমধ্যে হুমকি-ধামকি দেয়!! এবার জঙ্গি দমনে যুক্তরাষ্ট্রকে কে ঠ্যাকাই। তারা উপস্থিত হতে থাকে সিরিয়ায়, বাড়তে থাকে যুদ্ধ, বাড়তে থাকে লাশ, সৃষ্টি হয় আইলান।
এভাবেই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার আর অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য পশ্চিমা বিশ্ব মুসলিমদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ধর্মের মুখোশ পরিয়ে কলঙ্কিত করছে ইসলামকে। আর আমরা বোকার মতো তা’ই মেনে নিচ্ছি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বোকাই তো ! বোকা নয়!

এত্ত এত্ত কথিত মুসলিম দেশ ! কিন্তু দেখুন আত্ম মর্যাদা, স্বকীয়তা, সার্বভোমত্বের ওয়াহদানিয়াত বোধে একটাও আছে নাকি?

ইসলামের মৌল থেকে যোজন যোজন দূরে থেকে শুধু নাম আর লেবাসে চলছে। তাদেরই ক্রীড়নক হয়ে!

আপনার বিশ্লেষন তো একটা কার্যকারণ খুঁজে পেল। দেখুন আবার কোন এসাঞ্জ এলে আরও কত জঘণ্য নারখীয প্লান উদঘাটিত হয়!

তারা নাকি সভ্য!
আর সেই মডেল অনুসরনে বাকী বিশ্বের ইদুর দৌড়!! সবই কেমন খেলো!!!!

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: খলীফাদের সময়টুকু বাদ দিলে শাসকেরা চিরকালই ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চেয়েছে তাদের বিলাসিতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য। আমরা প্রতিনিয়ত " ইসলামিক রাষ্ট্র" এই ভুল শব্দ ব্যাবহার করছি । সাদ্দাম আর সৌদি যায় বলি এরা কেঊ ইসলামিক নয়, মুসলিম বলে তাদের প্রতি অন্য মুসলিমদের দুর্বলতা ছিল আছে, যেহেতু প্রতিপক্ষ বিধর্মী ছিল। রাজনৈতিক কটুচাল আর ধর্ম এক সাথে যায়না । পশ্চিমারা আমাদের ধর্মীয় দুরবলতার সুযোগ নিয়েছে সবসময়। এখনো নিতেই আছে।

২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: হুমমমম!

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।

৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

বিজয় নিশান ৯০ বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম। যাদের দরকার তারা কখনো এসব চিন্তা করে না

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: যত্রতত্র মুসলিমদের দোষ না দিয়ে একটু খোঁজখবর নেওয়া উচিত। আর সবাইকে জানানোও দরকার।

৪| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩

আকাশ আহমাদ বলেছেন: লেখক ভাই আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এই সত্যটাকে সবার সামনে আনার জন্য। কিন্তু আমরাওতো ঔই আমেরিকারই একজন। আমরাতো সিরিয়ার পক্ষে সাহস করে একটা কথা বলতেও পারি না। আমরা শুধু নামে মুসলিম কাজের সময় আমরা হয়ে যাই বির্ধমী। মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন সকল নির্যাতিত মুসলিম ভাই বোনদের রক্ষা করেন।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪২

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: এইতো বলছেন, এভাবেই সবাই বলতে শুরু করলে এক সময় পরিবর্তন আসবে। আমরা সিরিয়া বা আমেরিকা কারো পক্ষেই বলেতে চাই না আমরা কেবলই শান্তির পক্ষে বলবো। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলামকে কেউ কলঙ্কিত করতে চাইলে প্রকৃত সত্তকে সামনে নিয়ে আসা প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব।

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: @ বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন :------



বোকাই তো ! বোকা নয়!
এত্ত এত্ত কথিত মুসলিম দেশ ! কিন্তু দেখুন আত্ম মর্যাদা, স্বকীয়তা, সার্বভোমত্বের ওয়াহদানিয়াত বোধে একটাও আছে নাকি?
ইসলামের মৌল থেকে যোজন যোজন দূরে থেকে শুধু নাম আর লেবাসে চলছে। তাদেরই ক্রীড়নক হয়ে!
আপনার বিশ্লেষন তো একটা কার্যকারণ খুঁজে পেল। দেখুন আবার কোন এসাঞ্জ এলে আরও কত জঘণ্য নারখীয প্লান উদঘাটিত হয়!

তারা নাকি সভ্য!
আর সেই মডেল অনুসরনে বাকী বিশ্বের ইদুর দৌড়!! সবই কেমন খেলো!!!!



সহমত---------------

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.