নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছেলেটা খুব ভুল করেছে শক্ত পাথর ভেঙে..

কাঁচের দেয়াল

আমি...খুব সাধারণ একটা ছেলে,নিরামিষ টাইপ। জন্মেছিলাম কোনো একদিন,এখন মৃত্যুর জন্যে নিজেকে তৈরী করছি। বুকের মধ্যে কোথায় যেন হাহাকার-মৃত্যু চিন্তার হাহাকার। এই হাহাকার আরো বেড়ে যায় জোছনা রাতে। মমতাময়ী জোছনা আর নিভু নিভু কিছু নক্ষত্রের রাতে নিজেকে খুব একা মনে হয়। গভীর একাকিত্ব গ্রাস করে আমাকে। আসলেই তো,আমার তো আসলেই কেউ নেই। আমার মতন অনেক নিরামিষ-মানুষ নিঃসঙ্গ,অনেকটা আকাশ ভরা তারার মতন। অযুত-কোটি তারার মাঝেও প্রতিটা তারার চোখ ভরা গভীর বিষাদ-একাকিত্বের বিষাদ। একদিন সেইখানে ওদের মাঝে চলে যাবো,তাই পৃথিবীতে আর এখন বিষাদ খুঁজি না। নিষ্পাপ শিশুর আদ্রতামাখা হাসিমুখ খুঁজে বেড়াই...এইতো আমি। আরো অনেক বিচিত্র \'আমি\' কে আমি চিনি। সেসব নাহয় অন্য কোনো দিন লিখতে বসব !

কাঁচের দেয়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীন দেশ,রাসপুটিন ও অন্যান্য

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

-এ্যাই ছেলে এ্যাই !



আমি বিরক্ত হয়ে তাকালাম। আমার মুখভর্তি দাড়িগোঁফ। নিজেকে রাসপুটিন এর মত লাগছে। ফাল্গুনের ঝিম রোদে রাসপুটিন কে কেউ পিছন থেকে "এ্যাই ছেলে এ্যাই !' বলে ডাকছে-এটাই আমার বিরক্তির কারণ। রাসপুটিন যথেষ্ট বিরক্ত-এমন ভাব নিয়ে এগিয়ে গেলাম। যিনি ডাকছেন তিনি মধ্যবয়স্ক একজন মানুষ। চোখে সোনালী ফ্রেম এর চশমা। পান খাওয়া লাল দাঁত,ঠোঁতের এক কোণায় সাদা চুন লেগে আছে।



-নাম কি?

আমি জবাব না দিয়ে মধুর ভঙ্গিতে হাসলাম। ছোট্ট শিশুরা নাম জানতে চাওয়া হলে এই হাসি হাসে। এর অর্থ- বলব না ! নাম বলব না !!

-হাছস ক্যান ? নাম বল।

প্রশ্নকর্তা এখন 'তুই' তে চলে গেছেন। বিপদের আশঙ্কা।

-আমার নাম রাসপুটিন।

-কী!!

- 'রা-রা-রাসপুটিন/ লাভার অব দ্য রাশান কুইন।' গানটা শোনেন নি স্যার ? যে রাসপুটিনের চোখে জ্বলজ্বলে আভা, যার ভেতরে লুকোনো জাদু, যে শ্রেষ্ঠ প্রণয়যন্ত্র এবং যে রুশ রাজরানীর প্রেমিকপুরুষ...

-হারামজাদা অখন কিন্তক থাবড়া খাবি। তর ভিতর লুকাইন্যা জাদু ? কই যাস? ................



কথাবার্তার এই পর্যায়ে 'সাত্তার' নেমপ্লেটধারী এক 'পাতলা খান' টাইপ হাবিলদার ওয়াকিটকি হাতে ছুটে এলো। প্রশ্নকর্তার কানে কানে সে কি যেন বলছে। তাদের কানাকানির স্থায়ীত্ত্ব হলো দশ মিনিট। তারা দুজনেই চিন্তিত। বুঝলাম প্রশ্নকর্তা পুলিশের বড় কেউ... অতঃপর সাত্তারের প্রস্থান। প্রশ্নকর্তা আমার দিকে উদাস নয়নে তাকালেন।



-এইবার তোর সমেস্যা বল।



বুঝলাম এই তাঁতানো রোদে স্যারের মাথা কিঞ্চিৎ শর্ট সার্কিট। নিজেই ভুলে গেছেন তিনিই আমাকে থামিয়েছেন।



-স্যার আমার সমস্যাটা একটু ক্রিটিক্যাল স্যার। আমাকে বাসা থেকে ২৫ টাকা ধরায়ে দিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে। ক্লিন শেভড উইথ কদমা মাথা না নিয়ে বাসায় প্রবেশ নিষিদ্ধ।

-তো কি হইছে ? (কপালে বিরক্তির রেখা)

-স্যার সমস্যা হল ঢাকা শহরের কোনো সেলুনে মাত্র ২৫ টাকায় এই কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে না।

-তো চুল-দাঁড়ি কাটার দরকার টা কি? বিদায় হ,ত্যাক্ত করিস না। (মুখে পান নিতে নিতে)

-কি বলেন স্যার ! আম্মু বলেছে, "চুল-দাঁড়ি বড় থাকলে রাস্তায় পুলিশ মামারা তোকে ধরবে ! বলবে 'তুই শিবির... তুই রাজাকার।' তারপর অনেক মারবে,গাড়িতে উঠায়ে অনেক দূরে নিয়ে যাবে..তোকে আর খুঁজে পাবো না বাবা !"



পুলিশ সাহেব আমার দিকে ভস্ম দৃষ্টিতে তাকালেন। তিনি একই সাথে ক্রুব্ধ এবং বিভ্রান্ত। ভস্মীভূত হবার আগেই মিষ্টি হাসি দিয়ে আমি হাঁটা ধরলাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে পেছন থেকে কোনো ডাক এলো না।



আমি সেদিন সেলুনে যাইনি। শাহবাগ আর বইমেলাতে ঢুঁ মারলাম। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিলো কেউ আমাকে দেখে ভয় ভয় চোখে বলবে, 'ঐ দেখ শিবির...ঐ দেখ রাজাকার..!'



ভাই থামেন !! আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ।আপনাদের ভয়ে আমি রাসপুটিন থেকে গোপাল ভাঁড় হয়ে ঘুরতে পারবো না..একাত্তরে দেশ স্বাধীন হইসে রাস্তাঘাটে নোংরা রাজনীতির বলী হবার জন্যে না..

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

আমিই সেই বাউন্ডুলে বলেছেন: বেশ ভালো লাগলো ভাগনে.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.