নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি...খুব সাধারণ একটা ছেলে,নিরামিষ টাইপ। জন্মেছিলাম কোনো একদিন,এখন মৃত্যুর জন্যে নিজেকে তৈরী করছি। বুকের মধ্যে কোথায় যেন হাহাকার-মৃত্যু চিন্তার হাহাকার। এই হাহাকার আরো বেড়ে যায় জোছনা রাতে। মমতাময়ী জোছনা আর নিভু নিভু কিছু নক্ষত্রের রাতে নিজেকে খুব একা মনে হয়। গভীর একাকিত্ব গ্রাস করে আমাকে। আসলেই তো,আমার তো আসলেই কেউ নেই। আমার মতন অনেক নিরামিষ-মানুষ নিঃসঙ্গ,অনেকটা আকাশ ভরা তারার মতন। অযুত-কোটি তারার মাঝেও প্রতিটা তারার চোখ ভরা গভীর বিষাদ-একাকিত্বের বিষাদ। একদিন সেইখানে ওদের মাঝে চলে যাবো,তাই পৃথিবীতে আর এখন বিষাদ খুঁজি না। নিষ্পাপ শিশুর আদ্রতামাখা হাসিমুখ খুঁজে বেড়াই...এইতো আমি। আরো অনেক বিচিত্র \'আমি\' কে আমি চিনি। সেসব নাহয় অন্য কোনো দিন লিখতে বসব !
গতকাল দুপুর ১টা। সিএনজি ফিলিং স্টেশনে কমপক্ষে এক'শ গাড়ি লাইন করে দাঁড়িয়ে আছে। জেনারেটর নষ্ট,তাই গ্যাস দেয়া আপাতত বন্ধ। গাড়ি থেকে নেমে চানাচুরওয়ালার দিকে গেলাম। রোদে দাঁড়ায়ে চানাচুর চাবাচ্ছি,হঠাৎ মনে হল পায়ের মধ্যে কে যেন চাপ দিচ্ছে। তাকিয়ে দেখি ৩-৪ বছর বয়সের এক ছোট্টবন্ধু গভীর মনোযোগের সাথে আমার পায়ে পাড়া দিতে চাইছে। এক পা দিয়ে পারছে না তাই দুই পা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। চেষ্টা বিফলে গেল এবং সে 'ধপাস'। বললাম, কি বাবু,পাড়া দিতে চাও? সে মাটিতে শুয়েই হাত বাড়ালো- 'চামচুর' দে..! তাকে উঠিয়ে 'চামচুর' দিলাম।
১০ মিনিটে আমার সাথে তার ভালো খাতির জমে গেল, এরপর সেই সুবাদে সে বলে বসল- মোবাইল দে..। আল্লাহ্র নাম নিয়ে তার হাতে মোবাইলখানাও দিলাম। অতিরিক্ত সাবধানতা হিসাবে তার হাতটা ধরে রাখলাম। একটুপর খেয়াল হল,কোনো এক ভীষণ কৌশলে সে আমার কাছ থেকে ছুটে দৌড় দিয়েছে। ছুটলাম তার পেছনে। দেখলাম,লাইনে থেমে থাকা একটা মাইক্রোবাসে সে টুপ করে ঢুকে গেল। আমিও খোলা দরজা দিয়ে মাইক্রোবাসের ভিতরে উঁকি দিলাম।
উউরিব্বাসসস!!!
ভেতরে চোখ আটকে গেলো একজনের দিকে তাকিয়ে। চোখে গোলাপী ফ্রেমের চশমা, দুপাশে বেণী করা চুল,হাতে বই- da Vinci Code by Dan Brown। বইয়ের নাম দেখে আমার দুইচোখ কপাল ছাড়ায়ে চুলের মধ্যে হারায়ে গেল। যাইহোক, চোখ দুটা খুঁজে বের করে বইওয়ালির দিকে তাকালাম। পূর্নমনোযোগ দিয়ে সে বইয়ের পাতা ওলটাচ্ছে। তার পাশে বসে সেই ছোট্টবন্ধু আমার মোবাইলের জাত উদ্ধার করছে। দৃষ্টি আকর্ষনের জন্যে লম্বা চওড়া কাশি দিলাম। কাশি শুনে ছোট্ট বন্ধু আমার দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিলো- জেবা আপু আমার ‘পেন্দ’ !!!
বইওয়ালীর নাম জেবা। সে ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালো। বোকা হাসি দিয়ে বললাম, বাবুর কাছে আমার ফোনটা আছে। হে হে... বইওয়ালী ফের বইয়ের পাতায় ফিরে গেল। ফোন ফেরত পাবার আশা ফের মিইয়ে গেল। হতাশ গলায় বললাম- সোনাবাবু, আমার ফোনটা আমাকে দাও!! এটা শুনে সে অদ্ভুত ভঙ্গিতে আমার ফোনটা বইওয়ালীর পাশে রাখা ব্যাগের ভিতর ফেলে গাড়ি থেকে নেমে গেল। উপায়ান্ত না পেয়ে আবার নতুন উদ্যমে কাশলাম। বইওয়ালী নিতান্ত অনিচ্ছায় আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কি ব্যাপার? আপনি এখানে দাঁড়িয়ে কাশছেন কেন?
- ইয়ে,আমার ফোনটা...
- কোথায় আপনার ফোন?
- আপনার ব্যাগে।
- What the hell!! আমার ব্যাগে আপনার ফোন থাকবে কেন?
- আপনার ভাই...
- কি আমার ভাই? যানতো আপনি..!!
- আমার ফোন...
সে বিরক্ত হয়ে ব্যাগে খুঁজতে লাগলো।
- কোথায় ফোন? এখানে কোনো ফোন নেই। আপনি যান।
- আছে, ওই ব্যাগেই আছে। প্লিজ একটু দেখেন না..!!
- দেখলাম তো!! উফফফফ!! আপনি যাবেন?
নিরুপায় হয়ে সেখান থেকে চলে এলাম। মাথায় এয়ারটেল মার্কা বুদ্ধি খেলে গেল! হাতের তালুতে নাম্বার লিখলাম। বইওয়ালীর কাছে গিয়ে বিনীত ভঙ্গিতে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, এইযে আমার নাম্বার। মোবাইলটা খুঁজে পাচ্ছিনা। একটা কল দিবা?
হুট করে ‘তুমি’তে চলে যাওয়ায় তার ভ্রু আরো কুঁচকে গেল। কুঁচকানো ভ্রু নিয়ে সে নিজের ফোনে নাম্বার নিয়ে কল দিলো। ১০ সেকেন্ড পরেই ব্যাগের ভেতর থেকে বেজে উঠলো আমার চিরচেনা রিংটোন!! বিরক্তিমাখা দৃষ্টি নিয়ে সে ফোনটা আমার দিকে এগিয়ে দিলো। ফোন হাতে নিয়ে একদৌড়ে আমি ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন!!!
ফেরার পথে ছোট্ট বন্ধুর সাথে দেখা। আরো দশ টাকার চানাচুর কিনে দিয়ে বললাম, নে ব্যাটা ‘চামচুর’ খা!! তুই আসলেই একটা জিনিয়াস!
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৫৬
কাঁচের দেয়াল বলেছেন:
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৬
বটের ফল বলেছেন:
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫২
জটিল ভাই বলেছেন: গল্প? নাটক? নাকি সিরিয়াল??
৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১৫
মদন বলেছেন: চামচুর খাওয়াইতে মুঞ্চায়
৬| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২৮
মৈত্রী বলেছেন: গল্প
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৫৩
মুগ্ধ মাহি বলেছেন: হা হা হা হা হা
আসলেই জিনিয়াস