নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁধার রাত

আঁধার রাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

শায়েস্তা খাঁর সস্তার আমলের সলুক সন্ধান

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

শায়েস্তা খাঁর সস্তার আমলের টাকায় ৮ মন চালের হিসাব।
প্রথমেই ৮ মন চাল উৎপাদনকে দুই ভাগে ভাগ করা যাক
১। ৮ মন চাল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় ধান উৎপাদন।
২। সেই ধান থেকে ৮ মন চাল উৎপাদন।
১। ৮ মন চাল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় ধান উৎপাদনের খতিয়ানঃ
১ মন চাল উৎপাদন করতে গড়ে ১ মন ২৮ কেজি ধান দরকার পড়ে। সেক্ষেত্রে আট মন চাল বানাতে ৫৪৪ কেজি ধান বা ১৩.৬ মন(৪০ কেজিতে এক মন ধরে) ধান লাগে।
সে আমলে উচ্চ ফলনশীল ইরি বিরি জাতের ধান ছিল না। অতি উর্বর একবিঘা জমি থেকে তিনমন থেকে সর্বোচ্চ চার মন ধান পাওয়া যেত।
গড়ে সাড়ে তিন মন ধরলে প্রায় চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করা লাগত।
চার বিঘা জমি ২ বার চাষ করতে দুই বলদ এক নাঙ্গল এক কৃষকের ৮ দিন সময় লাগত।
ধানের বীজ সংগ্রহ করে চারা উৎপাদন করতে হত।
বীজতলা তৈরী করতে হত।
চার বিঘা জমিতে ধানের চারা লাগাতে হত/বুনতে হত।
নিড়ানী, আগাছ পরিষ্কার, বালাই দমন সহ চার মাস নিবিড় পরিচর্যা শেষে ধান কাটতে হত।
কাটা ধান মাথায় করে বা গরুর গাড়ীতে বোঝাই করে বাড়ি আনতে হত।
গরু দিয়ে ধান মাড়াই করতে হত।
ঝাড়াই বাছাই করে চিটা থেকে ধান আলাদা করতে হত।
ধান রোদে শুকাতে হত।
ধান ৫৪৪ কেজি বা ১৩.৬ মন গোলায় তুলতে হত।

২। ৮ মন চাল উৎপাদনের খতিয়ান
এর পর বড় বড় পাতিলে ১৩.৬ মন ধান সিদ্ধ করতে হত।
সিদ্ধ ধান রোদে শুকাতে হত।
তারপর কোমর বাঁকা করে ঢেঁকিতে লাথি মেরে মেরে করে চাল বের করতে হত। তিনজন মহিলা সারাটা দিন ঢেঁকিতে লাথি দিয়ে দুই মন ধান থেকে চাল বের করতে পারত। ১৪ মন ধান ঢেঁকি ছাটা করতে ২১ টা শ্রমিক লাগত।
এরপর গরুর গাড়িতে বোঝাই করে হাটে/গঞ্জে নিয়ে বিক্রি করলে ১ টাকা পাওয়া যেত।
উপরোক্ত বর্ননার সকল শ্রমিকের পারিশ্রমিক ও কৃষকের লাভ সহ দাম ১ টাকা।
যে এক টাকার পেছনে এত শ্রম সে এক টাকা কোন অবস্থায়ই আজকের দিনের একটাকার মত সস্তা না। এ ক্ষেত্রে না চাল সস্তা না টাকা সস্তা । টাকার মুল্য সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না, টাকার মুল্য বিবেচনা করতে হবে তার অর্ন্তনিহিত শক্তি তথা ইনটেনসিক ভ্যালু দিয়ে।
সে সময় কাগজের টাকা ছিল না ছিল সোনা বা রুপার টাকা।
এ ১ টাকা কি তবে ২.৭৯ ভরির সোনার মোহর ছিল? সম্ভবত? ঐ সময়ে সোনার মোহরে ২.৭৯ ভরি সোনা থাকত বলে জানা যায়।
যদি তাই হয়ে থাকে তবে শায়েস্তা খাঁর আমল মোটেও সস্তার আমল ছিল না।ঐ এক টাকা যদি ২.৭৯ ভরির সোনার টাকা হয়ে থাকে তবে ৮ মন চালের দাম বর্তমান বাজার মুল্যে সোনার ভরি ৪৭০০০/- টাকা ধরে ১,৩১,১৩০/-টাকা। বর্তমান বাজার মুল্যে ঐ চালের দাম হচ্ছে ৪০৯. ৭৮ টাকা কেজি।
মোটেও সস্তা না।
তাই আমার মনে হয় শায়েস্তা খাঁর আমলের সস্তার গল্পটা গুড়ে অনেক বালি আছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আগে এটা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হোক যে এক টাকার মূল্যমান ২.৭৯ ভরির সোনা ছিল। তারপর বলা যাবে সস্তার গল্পটা আসলেও সস্তা নাকি ছেলেভোলানো গল্প।

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:১৪

আঁধার রাত বলেছেন: সে আমলে কাগজের টাকার প্রচলন ছিল না। টাকা বলতে সোনার টাকা অথবা রুপার টাকা। ৮ মন চালে যে হাঙ্গামা আর কর্ম তাতে রুপার টাকা হওয়ার কোন সুযোগই থাকে না। আর শায়েস্তা খাঁর আমলে সোনার টাকায় সোনার পরিমান ২.৭৯ ভরি সোনা ছিল।

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২০

ফেনা বলেছেন: হুম। আগে যাচাই হোন। ১ টকা = ২.৭৯ ভরি সোনা পাওয়া যেত।
সস্তা নাকি দামী সেটা পরে বিচার হবে।

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:২৫

আঁধার রাত বলেছেন: এত খাটাখাটুনীর দাম একটাকা!!!!!!!!!!! তা কেমনে সস্তা?

৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: আহ যদি টাইম মেশিনে করে শায়েস্তা খাঁর আমলে যেতে পারতাম।

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯

আঁধার রাত বলেছেন: আট মন চাল উৎপাদন করে ১ টাকা পাইতেন। তবে টাকাটা সোনার কয়েন

৪| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনার বক্তব্য কিছুটা অনুমান ভিত্তিক আবার টাকায় আট মন চালের গল্পটাও সম্ভবত অনুমান ভিত্তিক। তবে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ১৯৭০ সালে (আমি তখন কলেজের ছাত্র) আমি নিজে বাজার থেকে একজোড়া ইলিশ মাছ (একেকটা আনুমানিক দেড় সের/সোয়া কেজি) তিন টাকায় কিনেছি। এখন এই ওজনের দুটো ইলিশ মাছ নিশ্চয় তিন হাজার টাকার কমে পাওয়ার কথা নয়।
তবে তখন তিন টাকা রোজগার করাও কঠিন ছিল। বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেনির মানুষদের জন্য।

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:০৮

আঁধার রাত বলেছেন: তবে তখন তিন টাকা রোজগার করাও কঠিন ছিল। বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেনির মানুষদের জন্য।
আমার যুক্তিটা ঠিক আপনার এই লাইন থেকেই শুরু হয়েছে। বর্তমানে ঐ ইলিশের দাম আর শ্রমের দাম বিবেচনায় ১৯৭০ সালের ইলিশ জোড়ার দাম সস্তা ছিল না। আমি আপনার কথাই বলেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.