নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অন্য সবার মতো নই। কারন আমি অন্য সবদের দলে নেই। আমার পরিচয় যে আমি ই।

আহমদ আতিকুজ্জামান

শত সহস্র শ্রেষ্ট সব স্বত্ত্বার ভীড়ে আমি কেউ ই না। ভালোবাসি ফুটবল। ফুটবল ফ্যান- এটাই সময়োপযোগী সেরা পরিচয় ধরা যেতে পারে।

আহমদ আতিকুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ জন্মদিন পর্দার আড়ালে থাকা সত্যিকারের এক ফুটবল কিংবদন্তী.....

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০

যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে,মনে সামান্যতম ইচ্ছা পোষন করেন আর একটু ধৈর্য ধরেন তবে আসুন
আপনাদের আজ এক মহানায়কের
গল্প শুনাই।

নাহ! আমি আপনাদের নিকোলাস মেন্ডেলা, মহত্মা গান্ধী, চে গুয়েভারো বা দ্যা গ্রেট আলেক্সেডারের মত জাতীয় বীরদের গল্প শুনাবো না। আমি আজ আপনাদের একজন ফুটবল বীরের গল্প শোনাবো যিনি একাধারে ছিলেন একজন লড়াকু ফুটবলার,একজন দেশপ্রেমিক,একজন সফল রাজনীতিবিদ, একজন সমাজসেবী এবং সর্বপরি একজন
স্বাধীনতা আর গৌরবের জন্য লড়াই করা সাহসী যোদ্ধা।

আনসাং হিরোর সংজ্ঞাটাতো জানেন?
A person who makes a substantive yet unrecognized contribution; a person whose bravery is unknown or unacknowledged.

ফুটবলনইতিহাসের সামান্য কজন আনসাং
হিরোর একজনও বটে এই মহানায়ক! একজন গ্রেট ফুটবলার হয়েও জাতীয় দলের ঝুলিতে কোনো ট্রফি নেই.. এটা শুনতেও খারাপ লাগে।

তার নাম শুনে চোখ কপালে উঠলে বা চোখ উপচে কুটুরি থেকে বেরিয়েও আসতে পারে, হয়ত
অনেকের কাছে তার নামটাই অজানা। ফুটবলের এত এত মহারথীর ভিড়ে তার নামটি
হয়ত ম্লান হয়েই থাকবে কিন্তু তিনি ইউক্রেনের ফুটবল ইতিহাসের একটি স্বর্ণখচিত নামঃ ”আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো ”

ইউক্রেনেরই এক কৃষিসমৃদ্ধ নগরী কিয়েত রাজ্যের ইয়োহোটিন রেয়ন নামে এক ছোট্ট নাম না জানা অঞ্চলে ১৯৭৬ সালের ২৯ শে
সেপ্টেম্বর জন্ম নেন আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো। মিকোলা হিরোভিচ শেভচেঙ্কো নামের এক অভিজাত রাশিয়ান মিলিটারি বংশে জন্ম নেন
তিনি। ১৯৭৯ সালে তার পুরো পরিবার কায়েভের পাশ্ববর্তী নগরী অবলনে চলে যায়। ১৯৮৬ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সেই অলেক্সেন্দ্রো স্পিতে কোভের অধীনে একটি ফুটবল একডেমিতে নিজের নাম লিখান আর সেখানে
প্রথম সারির ফুটবলার হিসাবে নির্বাচিত হয়ে যান। কিন্তু চেরনবিল নিউক্লিয়ার দুর্ঘটনার দরুন ফুটবল একাডেমিটিকে শহর থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। ছোটবেলা থেকেই একজন ভাল বক্সার ছিলেন শেভচেঙ্কো,ইউক্রেইন জুনিয়র বক্সারদের একজন ছিলেন তিনি। কিন্তু ফুটবল যার প্রতিটি শিরা-উপশিরায় সে কি আর ফুটবল উপেক্ষা করে অন্য খেলায় মত্ত হতে পারে!

আর না ঘুরিয়ে পেচিয়ে সরাসরি একজন ফুটবল লেজেন্ডকে তার ফুটবলিয় দক্ষতা,সাহসিকতা,লড়াকু মন্মানসিকতা আর অর্জন দিয়েই বর্ণনা করা যাকঃ

ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ইউয়েফা ইউরোপিয়ান কম্পিটিশনের পাঁচজন টপ গোলস্কোরারের তালিকা করলে আন্দ্রেই শেভচেঙ্কোর (৬৭ গোল) নামও আসবে। ওলে ব্লখিন আর ইগোর বেলানভের পরে তৃতীয় ইউক্রেনিয়ান হিসাবে ২০০৪ সালে ফিফা
প্লেয়ারদের সবচেয়ে মর্যাদাজনক খেতাব ব্যালন ডি’ অর জেতেন। ২০০৩ এ মিলানের হয়ে জেতেন ক্লাব ফুটবলে ইউরোপের সবচেয়ে ট্রফি ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ।এছাড়াও ২০০৫ এবং ২০০৮ সালে যথাক্রমে মিলান আর চেলসির
হয়ে দুবার রানার্স আপও হন।

২০০৬ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই ইউক্রেন প্রথম এবং শেষবারের মত ফিফা বিশ্বকাপ খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলো এবং তার অসাধারন নৈপুণ্যে সেবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালেও ঠাই করে নিয়ে ফুটবল বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিলো ইউক্রেন। এমনকি ২০১২ সালে ইউক্রেনের ইউরো স্কোয়ডেও নাম
ছিল শেভচেঙ্কোর। ২০১২ সালের ২৮ শে জুলাই
ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে রাজনীতিতে যোগদান করেন শেভচেঙ্কো। ইউক্রেনীয় বিধানসভা নির্বাচনে সেবারই প্রথম্বারের মত মনোনীত হন তবে তার দল সেবার নির্বাচনে হেরে যায়।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারঃ

দেশের হয়ে ১১১ টি ম্যাচে ৪৮ টি গোল করেছেন আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো। তিনি ইউক্রেনের জাতীয় বীরের খেতাব পান মূলত ২০০৬ বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার
ফাইনালে পৌঁছে দেবার জন্যে কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করার জন্যে। ২০০৬ বিশ্বকাপের
কোয়ালিফাইং রাউন্ডে তিনি দেশের হয়ে ৬ টি গোল করে তিনিই মূলত দলকে বিশ্বকাপের
চুড়ান্ত পর্বে তুলেছিলেন। ২০১২ সালের ইউরোই ছিল শেভচেঙ্কোর জন্যে দেশের হয়ে সর্বশেষ আর চুড়ান্ত স্মরণীয় অধ্যায়। তার জোড়া হেডারে সুইডেনকে গ্রুপ স্টেজে ২-১ গোলে হারায় ইউক্রেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলের শোচনীয় পরাজয়ের পরে আন্তর্জাতিক
ফুটবলকে বিদায় জানান শেভচেঙ্কো। এমনকি ওই বছরের নভেম্বরে ইউক্রেন ফুটবল ফেডারেশন কতৃক প্রস্তাবকৃত প্রধান কোচের পদে দায়িত্বকে ফিরিয়ে দেন তিনি! যদিও চলতি বছরের ১৫ ই জুলাই ইউক্রেনের ম্যানেজার পদে
মিকাইলো ফোনেঙ্কোর স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।

অর্জনসমূহঃ

ক্লাবঃ

ডায়নামো কিয়েভঃ
Ukrainian Premier League:
1995, 1996, 1997, 1998, 1999
Ukrainian Cup: 1996, 1998, 1999
Ukrainian Super Cup: 2011
CIS Cup: 1996, 1997, 1998

এসি মিলানঃ
Serie A: 2003–04
Coppa Italia: 2003
Supercoppa Italiana: 2004
UEFA Champions League: 2003
UEFA Super Cup: 2003

চেলসিঃ
FA Cup: 2007
Football League Cup: 2007
FA Community Shield: 2009

ব্যক্তিগত অর্জনসমূহঃ

Ukrainian Footballer of the Year: (6) 1997, 1999, 2000,
2001, 2004, 2005
Ukrainian Sports 1999.
Commonwealth of Independent
States Cup Top Scorer: 1997
Commonwealth of Independent
States 1997 Team of the
competition
Ukrainian Premier League Top Scorer: 1998-99
Ukrainian Premier League
Player of the Year: 1997
Ukrainian Cup Top Scorer (2):
1994-95, 1997-98
ESM Team of the Year: (3)
1999-00, 2003-04, 2004-05
UEFA Champions League Top
Scorer: (2) 1998–99, 2005–06
UEFA Club Forward of the Year:
1998-99
UEFA Team of the Year: (2)
2004, 2005
UEFA Super Cup Man of the
Match (1): 2003
Serie A Foreign Footballer of
the Year: 2000
Serie A Goal of the Year: 2004.
[65] Serie A Top Scorer: (2)
1999–00, 2003–04
Supercoppa Italiana all-time
top Scorer
Best Player of Eastern Europe –
Focus Vest magazine Trophy:
2001
Baltic and Commonwealth of
Independent States Footballer
of the Year: (2) 2004, 2005
Ballon d’Or: 2004
Ballon d’Or: Third Place 1999,
2000.
2004 FIFA World Player of the
Year Third
Golden Foot award : 2005
FIFPro World XI: 2005
Ukraine all-time Top Scorer
with 48 goals.
Derby della Madonnina all-time
top scorer with 14 goals.
All time Milan’s Top goal
scorer in Champions League
with 33 goals.
All time FIFA World Cup
qualification European Top
Scorer.[66] with 26 goals.
FIFA World Cup qualification
2002 Top Scorer European with
10 goals.
FIFA 100
The World Team of the Decade
by Mirror Football: 2009
A.C. Milan Hall Of Fame.
UEFA awards 100 caps.
Pallone d’Argento 2003–04.
L’Équipe Team of the Year: (2)
2004, 2005.[71][72] Top scorer
in the history of football
Ukrainian with 374 goals.
Dynamo Kiev Top goalscorer
(4) .
A.C Milan Top goalscorer (2).
World Soccer’s 100 Greatest
Players of the 20th Century

ব্যালন ডি’ অরঃ

1998 – nominated (top 50)
1999 – 3rd
2000 – 3rd
2001 – 8th
2003 – 4th
2004 – 1st
2005 – 6th
2006 – nominated (top 50)

ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ারঃ

1999 – 7th
2000 – 5th
2001 – 9th
2003 – 10th
2004 – 3rd
2005 – 6th
2006 – 21st

ওয়ার্ল্ড সকার এওয়ার্ডঃ

1999 – 3rd
2000 – 3rd
2001 – 8th
2003 – 8th
2004 – 3rd
Decade – 13th

এইতো আর বেশি বাড়াতে চাই না, গল্পটির ইতি এখানেই টানা শ্রেয় হবে। গোবরে পদ্মফুলের মত
ফুটেছিলেন আন্দ্রেই মিকাইলোভিয়াস শেভচেঙ্কো। আসলেল ফুটবল জগতে, দেখলেন
ফুটবলকে,নিজের মহিমা ছড়ালেন ফুটবল বিশ্বে আর জয় করে নিলেন ফুটবলের প্রায় সবকিছুই।
ইউক্রেনের সর্বকালের সেরা ফুটবলার ত বটেই গোটা ফুটবল বিশ্বের হাতে গোণা কয়েকটি
নক্ষত্রের মধ্যেই তিনি জ্বলবেন স্বমহিমায় যতদিন থাকবে ১২০ গজের এই ফুটবল, যতদিন রবে আমার-আপনার মত কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী চোখ। :)

পোস্টে অনেক ভুল ত্রুটি থাকতে পারে, নিজের লোক মনে করে মাফ করে দিয়েন। :3

© আহমদ আতিকুজ্জামান।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
শেভচেঙ্কো কখনোই পর্দার আড়ালে পড়ে থাকা ফুটবলার ছিল না। ক্লাব ফুটবলে নিয়মিত খবর রাখা সবাই ই তার নামটা জানে। এসি মিলানের ফ্যানদের কাছেও খুব পরিচিত এক নাম।

সবাই তো পেলে, ম্যারাডোনা, মেসিদের মত বিখ্যাত হয় না।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭

আহমদ আতিকুজ্জামান বলেছেন: পর্দার আড়ালে কথাটা লিখতে বাধ্য হয়েছি। বর্তমান মিডিয়া মেসি নেইমার রোনাল্ডোকে যেভাবে ফলাও করে উচ্চারিত করে সেভাবে শেভাচেঙ্কো কে করেনি। তখন ব্রাজিলিয়ান রোনাল্ডো-দিনহো, ফিগো, টট্টি, বেকহ্যাম বালাকের সময় ছিলো, শেভচেণঙ্কোকে নিয়ে মাতামাতি কম হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.