নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নকে পাথেয় ভাবি।

অলওয়েজ ড্রিম

"Only He Who Can See The Invisible Can Do The Impossible" Frank Gain আমার ইমেইল ঠিকানাঃ [email protected]

অলওয়েজ ড্রিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লগারদের সাথে একত্রে আড্ডাবাজি কিংবা যে ভাললাগার শেষ নেই - ৫

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫২

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,

(আমাদের পরবর্তী আড্ডা হওয়ার কথা ছিল আগামী কাল (০৪/০৩/১৬)। কিন্তু অনিবার্য কারণবশত। তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন তারিখ আগামী ১১/০৩/২০১৬ রোজ শুক্রবার, বিকাল চারটায় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে ক্যান্টিনের সামনে।)

শুভেচ্ছা সবাইকে। ২০১৩ সালে আমরা কয়েকজন ব্লগার মিলে শুরু করেছিলাম সাহিত্য নিয়ে এক আন্তরিক আড্ডানুষ্ঠানের। উদ্দেশ্য ছিল মহৎ। স্বপ্ন ছিল - হিমালয়ের চূড়া ছোঁব। মাঝেমাঝেই আমাদের আড্ডায় ছেদ পড়েছে; নিয়মিত আড্ডানুষ্ঠানটি হয়নি। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য ও স্বপ্ন আজও আগের মতোই অমলিন।
তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের পরবর্তী আড্ডা হবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে।

এবারের আড্ডায় মূল আলোচক এ টি এম মোস্তফা কামাল। আলোচিত হবে সাহিত্যের বিভিন্ন টার্ম নিয়ে যেমন – বাস্তবতা, অধিবাস্তবতা, যাদুবাস্তবতা ইত্যাদি। আলোচিত হতে পারে সাহিত্যের বিভিন্ন মতবাদ নিয়েও; যদি সময় থাকে কিংবা কামাল ভাই আলোকপাত করেন। আলোচিত হতে পারে আরও কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে।

মার্চের প্রথম শুক্রবার (০৪/০৩/১৬) বিকাল চারটায় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে ক্যান্টিনের সামনে আড্ডায় মিলিত হব। সকল আড্ডারুকে মিষ্টি সুরে ডাকছি। কু-উ-উ----
যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সাড়া দিতে প্রস্তুত –
অলওয়েজ ড্রিম – ০১৯১৮৮৮৬৯৬৭, ০১৮৪৭১৯১৯০৫
সাইফুল ইসলাম সজীব – ০১৮১৯৫১৮৯৩৪, ০১৬১৯৫১৮৯৩৪
আশরাফুল ইসলাম দুর্জয় – ০১৭২৪৬১৪২৫৬
এ টি এম মোস্তফা কামাল – ০১৫৫৮৩০৮৮৪৮

আমাদের আড্ডায় সাহিত্যানুরাগী যে কেউ উপস্থিত হতে পারেন।


আড্ডা বিষয়ক প্রথম যে পোস্টটি করেছিলাম তা নিচে দিয়ে দিলামঃ

সামুভিত্তিক আমাদের একটি সাহিত্য-গ্রুপ থাকা উচিত
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪১

সামুতে আমরা যারা কবিতা, গল্প লিখছি; আমাদের একটা গ্রুপ থাকা উচিত। গ্রুপের সদস্যরা মাসের একটা দিন নির্দিষ্ট কোথাও মিলিত হব নিজেদের লেখার পারস্পরিক সমালোচনার জন্য। ব্লগেও আমরা সমালোচিত হচ্ছি, কিন্তু তারপরও অনেকটা ঘাটতি থেকেই যায়। মুখোমুখি সমালোচনায় কেন ভাল লাগল না, কোথায় কোথায় সমস্যা, কোন জায়গাটায় পরিবর্তন করা দরকার, ইত্যাদি নিয়ে বিশদভাবে কথা বলা সম্ভব। যা নতুনদের জন্য অনেক দরকার।

তাছাড়া মাসে অন্তত একদিন মিলিত হলে সদস্যদের মধ্যে আন্তরিকতা, পারস্পরিক বোঝা-পড়া তৈরি হত। আর চেনাজানার পরিধি বাড়লে ক্ষতি হয় না বরং লাভই হয়।

কে কে রাজি আছেন?

ফেবুতে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছ। যারা ইচ্ছুক তাদেরকে যোগ দিতে অনুরোধ করছি।https://www.facebook.com/groups/sahitto.adda/
আপাতত ঢাকাভিত্তিকই থাকবে এই গ্রুপ। পরে উপযোগী হলে অন্য শহরগুলোতেও এই গ্রুপের শাখা-গ্রুপ চালু করা যেতে পারে।


আগামী শুক্রবার, ০৬/০৯/২০১৩ তারিখে আমরা প্রথমবারের মতো আড্ডা দিতে যাচ্ছি। প্রথম আড্ডায় ইতোমধ্যে উপস্থিত থাকার জন্য সম্মতি দিয়েছেন প্রিয় স্বপ্নবাজ অভি, কবি কুহক মাহমুদ, কবি মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব, কবি আশরাফুল ইসলাম দুর্জয়, অলওয়েজ ড্রিম, সেলিম আনোয়ার, মাহতাব সমুদ্র, এম মশিউর এবং আরও বেশ কয়েকজন। যে কেউ আমাদের সাথে ঐ দিন যোগ দিতে পারেন।

স্থানঃ ছবির হাট, শাহবাগ, ঢাকা।
সময়ঃ বিকাল চারটা।


নিচে দেখেন সেই পোস্টের কয়েকজনের মন্তব্যঃ

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সাধু! সাধু!

সাহিত্য চর্চায় আড্ডার বিকল্প নাই।

এমন কিছু করতে পারলে অবশ্যই হবে। অতীতের দিকে তাকাইলে দেখা যায়, আমাদের ওস্তাদরা নিয়মিত আড্ডায় শরিক হইতেন। পুরানো ঢাকার বিউটি বোর্ডিং কলকাতার কফি হাউজ আজ তাই ইতিহাসের অংশ।

লেখক বলেছেন: আসলেই আড্ডার বিকল্প নেই। এটা জোরে-সোরে শুরু করা উচিৎ। নিজেরা এতে প্রচণ্ড লাভবান হব।

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ঠিক এই রকম একটা কিছু আমি নিজে খুব মিস করছিলাম! আড্ডাবাজী না হইলে আবার সাহিত্যচর্চা কিসের! কবিতা লিখে যাদের শোনাতে অস্থির থাকি, তাদেরকে সামনাসামনি দেখতে, গল্প করতে দারুণ লাগবে। আমি এখন যশোর থাকি। ঢাকা আসা হয় কদাচিত। সাহিত্য সভা হইলে আমি যশোর থেকে এসেই যোগ দেব!

জায়গার সমস্যাও দেখিনা, উন্মুক্ত ঢাবি ক্যাম্পাসের সুবিধাজনক যে কোন জায়গায় আমরা বসতে পারি!

একজন কেউ বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধুক!

লেখক বলেছেন: আপনার সহমতের জন্য খুব ভাল লাগছে। আড্ডার জন্য জায়গার অভাব নেই। প্রয়োজন শুধু ইচ্ছার। দেখি আপাতত ঢাকায় যারা আছি তারা কোথাও মিলিত হয়ে নেই। তারপর আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা যাবে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়।
আপনার আগ্রহ সত্যি প্রশংসার দাবিদার। অনেক উৎসাহ পেলাম।

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ভাইডি, আমি তো পরবাসী, তবে গ্রুপের সঙ্গে আছি আন্তরিক ভাবে। যারা দেশে আছেন, তাদেরে নিয়ে কাজটা করতে পারেন। তার আগে কারা গ্রুপের সদস্য হবেন (দেশে আছেন এমন) তাদের কেউ একজন ফেসবুকে একটি সাহিত্য গ্রুপ (আলাদা একটা নাম প্রয়োজন পরিচিতির জন্য। এমন একটি আদর্শ আড্ডা ভিত্তিক সংগঠন ম্যাজিক লণ্ঠণ) পেইজ খুলতে পারেন। মাসে একটি আড্ডার আয়োজন করতে পারেন ঢাকা ভিত্তিক কোনো খোলা মাঠে। শাহবাগ, পা্বলিক লাইব্রেরি চত্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটমণ্ডল, ধানমণ্ডির লেকের পারে বা কোনো ছাউনিতে দিন তারিখ ঠিক করে অথবা মাসের নির্দিষ্ট কোনোদিন নির্ধারণ করা যেতে পারে। স্বরচিত কবিতা, গল্প, মুক্তগদ্য, ছোট আকারের প্রবন্ধ পাঠ ও সমালোচনার আয়োজন করা যেতে পারে ভাল লাগলে কেন বা খারাপ লাগলে কেন এমন বিষয়গুলোর মুক্ত আলোচনা হতে পারে।

হতে পারে সে আড্ডায় উপস্থাপিত বিষয় নিয়ে অনলাইন বুলেটিন। কাগজে ছাপা কিছু করতে হলে টাকা প্রয়োজন, সম্মিলিতভাবে তা বছরে একটি বা দুটি করা যেতে পারে। সদস্য সংখ্যা কম বেশি ক্ষতি নেই। মুক্ত আলোচনার সুযোগ থাকলে সাহিত্য চর্চায় সুফল আসবেই।

সুতরাং কাজ শুরু করতে হলে ফেসবুকে আগে একটি পাতা খুলতে হবে সবাইকে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে।

তো আড্ডার সূচনা হোক ফেইসবুকে একটি ওপেন পেইজ খোলার মাধ্যমেই।

শুভ কামনা সবার জন্যে।

লেখক বলেছেন: আপনি প্রবাসি তাই বলে যে আপনার প্রতি আমার ভাল লাগা হ্রাস পাবে তা কিন্তু নয়।

আপনি আমাদের প্রবাসি সদস্য। আপনার পরামর্শ সব সময় মর্যাদার সাথে মূল্যয়ন করা হবে। ভাল থাকবেন।

আড্ডা বিষয়ক ২য় পোস্টঃ

ব্লগারদের সাথে একত্রে আড্ডাবাজি কিংবা যে ভাললাগার শেষ নেই
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৭

এর আগের পোস্টে ব্লগারদের একত্রিত হওয়া নিয়ে একটা লেখা দিয়েছিলাম। যার শিরোনাম ছিলঃ
সামুভিত্তিক আমাদের একটি সাহিত্য-গ্রুপ থাকা উচিত

সেই সূত্রে আমরা কয়েক জন ব্লগার গত শুক্রবার একত্রিত হয়েছিলাম। আমি মনে করি ব্লগাররা অন্য আর দশটা মানুষের চেয়ে কিছুটা হলেও মানবিক। হয়ত এটা অন্ধবিশ্বাস। কিন্তু এই বিশ্বাসটাকে লালন করতে আমি পছন্দ করি।

ভার্চুয়াল জগতে অনেকের সাথেই ব্লগিং করতে গিয়ে পরিচয় হয়েছে। কিন্তু সেই লোকগুলো বাস্তবে কেমন, কিভাবে তারা কথা বলে, কতটা সহজে আমাকে তারা গ্রহণ করে এ ব্যাপারে কিছুটা টেনশন ছিল। কিন্তু সেদিনের পর আমার সব দ্বিধা, সংশয় কেটে গেছে। ব্লগাররা আসলেই ভাল মানুষ। বন্ধু-বৎসল। তাদের সাথে মাত্র কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে আমি মুগ্ধ। আড্ডার সময়টা কিভাবে যে দ্রুত শেষ হয়ে গেল, টেরই পেলাম না।

ব্লগারদের সাথে একত্রে আড্ডা দেয়ার রোমাঞ্চটাই আলাদা। অশেষ ভাল লাগায় সেই থেকে আমি আচ্ছন্ন হয়ে আছি। সামনের দিনগুলোতে ইনশাআল্লাহ আবারও আমরা মিলিত হব। হতেই হবে। আর যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই আড্ডার সূত্রপাত আশা করি সেটা দ্রুত সফল হবে। যারা আমার আগের পোস্টটি পড়েন নি তারা সেটা পড়ে নিলে আমাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আর সামনের আড্ডায় আপনাদের সবাইকে অগ্রিম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলাম।

গত শুক্রবারের আড্ডা থেকে ফিরে ফেবুতে সাহিত্য-আড্ডা গ্রুপ পেইজে একটি লেখা পোস্ট করেছিলাম। সেটাও এখানে দিয়ে দিলাম। আশা করি আপনাদের ভালই লাগবে।


প্রিয় বন্ধুরা,
আজ সাহিত্য-আড্ডার প্রথম আড্ডা অনুষ্ঠিত হল। দুপুরের প্রচণ্ড বৃষ্টি মনের মধ্যে ভয়ের বজ্রপাত ঘটাচ্ছিল আড্ডাটা শেষ পর্যন্ত হবে তো? আসতে পারবে তো সবাই? আবার এটাও ভাবছিলাম আমি যদি সবচেয়ে দূর থেকে আসতে পারি তাহলে অনেক কাছে থেকে অন্য সবাই নিশ্চয়ই পারবেন।
চারটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টি সময়টা পিছিয়ে দিল। এবং স্থানও বদলাতে বাধ্য করল। ছবির হাটের পরিবর্তে আজিজ সুপারে সবাই একত্রিত হলাম। পাঁচটার পরে একে একে সবাই আসতে শুরু করলেন। আমি তো তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষাচ্ছিঃ কেউ আসছে না কেন? পাঁচটার পরে প্রথম এলেন ব্লগার সাইফুল ইসলাম সজীব। আহ কী যে ভাল লাগল! নিশ্চিত হলাম, যাক অন্তত একজন হলেও কেউ এলেন শেষ পর্যন্ত।
এরপর একত্রে এলেন স্বপ্নবাজ অভি ও জাদিদ নামের একজন। তারপর এলেন মাহতাব সমুদ্র। এবার আজিজের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবাই রং চা খেয়ে নিলাম। তারপর ঠিক করলাম পাবলিক লাইব্রেরি চত্ত্বরে যাওয়ার। সেখানে বসার ভাল জায়গা আছে। এর আগে সবাইকে তো জানিয়েছিলাম আজিজে বসতে যাচ্ছি সবাই। তো কুহক ভাই তো তখনও আসেন নি। তাকে কিভাবে জানাই পাবলিক লাইব্রেরি চত্ত্বরে যাওয়ার কথা? তার ফোন নাম্বারও তো জানি না। ভাবলাম লাইব্রেরি চত্ত্বরে গিয়ে ফেবুতে তাকে জানাব।
পথে যাদুঘরের সামনে থেকে সিংগারা ও গরম জিলাপি খাওয়ালেন প্রিয় জাদিদ। আসলে শুধু প্রিয় নয় তাকে সুপ্রিয় বলা উচিত। যে খাওয়ায় তার জন্য ‘সু’টা বেশি বেশিই তো বরাদ্দ রাখা উচিত, নাকি? ওহ, প্রথম চাটা কিন্তু খাইয়েছিল আমাদের আরেক বন্ধু রাজিব। সে কোনো ব্লগার নয় কিন্তু আমার সকল ভাল উদ্যোগের প্রবল সমর্থক।

লাইব্রেরি চত্ত্বরে পৌঁছে যেই ফেবু খুলে লিখতে শুরু করেছি - কুহক ভাই, আমরা আপনার জন্য.... সাথে সাথে অপরিচিত নাম্বারের ফোন। হ্যালো আমি কুহক বলছি। আপনারা কোথায়?
বললাম, ভাই আমরা তো পাবলিক চত্ত্বরে।
কেন, আপনাদের না আজিজ সুপারে বসার কথা? আমি তো আজিজে এসেছি।

স্যরি ভাই। সবাই আসার পরে সিদ্ধান্ত নিলাম, লাইব্রেরি চত্ত্বরেই ভাল হবে। বসার ভাল জায়গা আছে।
ঠিক আছে থাকেন, আসতেছি।

আমাদের আড্ডা চলতে থাকল, হঠাৎ অভি জাদিদকে কা_ভা বলে ডেকে উঠল! টিনের চালে কাক আমি তো অবাক! খালি অবাক না হতবাক! এতক্ষণ ভাবছিলাম হয়ত অভির বন্ধু, কোনো একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। আমি বললাম কা_ভা মানে কাল্পনিক_ভালবাসা? বললেন, হ্যাঁ।

ধুরো মিয়া আপনার পানিশমেন্ট হওয়া দরকার। আমি ভাবলাম কে না কে? আরে ভাই সবাই তো কা_ভাকে চেনে, জাদিদকে কে চেনে?
অদ্ভুত সারল্যমাখা হাসিতে তিনি তাকে আগে না চিনতে পারার আফসোসটা ঘুঁচিয়ে দিলেন। লম্বা, স্বাস্থ্য ভাল, ফর্সা। সমগ্র অবয়বে তার সরলতা জড়ানো। দেখেই ভাল লাগে। বন্ধু ভাবতে ইচ্ছা হয়।
স্বপ্নবাজ অভি, খুবই রোমান্টিক চেহারার তরুণ। খোঁচা-খোঁচা দাড়িতে ধারাল চেহারার অভিকে চমৎকার লাগছিল। বেচারা বৃষ্টি দেখে ঘর থেকে প্যারাসুট টাইপ কাপড়ের একটা শার্ট পড়ে এসেছিল। বৃষ্টি তো পরে আর ছিল না। সুতরাং তার গরম লাগছিল এবং বেশ অস্বস্তিতে ভুগছিল। বললাম, বুতাম খুলে দেন। তিনি তাই করলেন।

শান্ত ও নিরীহ চেহারার আশরাফুল ইসলাম দুর্জয়। দেখেই মনে হয় নির্বিরোধী মানুষ। কোনো ক্যাচালে তিনি নেই।

মাহতাব সমুদ্র, ছিপছিপে লম্বা তালগাছের মতো। অনেক শুকনা। প্রপিকে তাকে এত শুকনা লাগে নি। কা_ভা বললেন, সমুদ্র আগের চেয়ে অনেক শুকিয়েছে। হা-হা-হা

সাইফুল ইসলাম সজীবকে দেখে আমার জীবনানন্দকে মনে পড়ে গেল। সজীবের অবয়ব, দেহের গঠন তাঁর মতোই কিছুটা। জীবনানন্দ ছিলেন গোলগাল গঠনের। সজীব তাঁর মতোই যেন কিছুটা নিভৃতি পছন্দ করেন। “সকল লোকের মাঝে বসে/ আমার নিজের মুদ্রাদোষে/ আমি একা হতেছি আলাদা” পুরোটা সময় তিনি আসলেই একটু যেন আলাদাই ছিলেন।

আর আমার বন্ধু রাজিব। আমি বলি পৃথিবীর সরলতম ছেলে। এত ভাল এত সরল হয় না আজকাল। তার এই সরলতায় চিরদিনের জন্য আটকে গিয়েছে সিলেটের মেয়ে লিপি। সে কথা আরেক দিন হবে।

ইতোমধ্যে বহু কাঙ্ক্ষিত কুহক ভাই চলে এলেন। দূর থেকেই আমার মনে হল, ইনি কবি কুহক হতে পারেন। পাজামা পানজাবি পড়ে, গলায় দুটি ক্যামেরা ঝুলিয়ে, লম্বা চুলে পিছনে ঝুঁটি বেঁধে প্রকৃত কবিসুলভ চেহারায় তিনি হাজির হলেন। তিনিও ছিপছিপে লম্বা, ফর্সা এবং খুবই সুন্দর মুখাবয়ব। তাকে দেখলেই মনে হয়, কবিদের তো এমনই হওয়া উচিত। তাকে দেখলে আপনাতেই কবি কবি বলে একটা আন্তরিক সম্ভ্রম চলে আসে। তিনি আমাদের সবার একত্রে ছবি তুললেন। ব্যস্ত মানুষ বেশিক্ষণ থাকতে পারলেন না। কা_ভা বললেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে যাওয়ার প্লান আছে। শুনে কুহক ভাই বললেন, অবশ্যই যেন তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনিও যাবেন।

অনেক মশা জ্বালাচ্ছিল। প্রত্যেকেই দুয়েকটি করে থাপড়িয়ে মেরে ফেলে ইতোমধ্যেই বীর সেজেছি। সুতরাং সিদ্ধান্ত হল, ছবির হাটে যাওয়ার। সেখানে যেতে না যেতেই মাগরিবের আজান দিল। আমি আর সজীব ভাই নামাজ আদায় করে আবার আড্ডায় সামিল হলাম।

নানাদিকে আড্ডার আলোচনা গড়িয়ে শেষে কিছু বিষয়ে আমরা একমত হলামঃ
১) সাহিত্য-আড্ডা গ্রুপের সদস্যগণ নিজেদের লেখার পারস্পরিক খোলামেলা সমালোচনা করবেন। সে সমালোচনাকে অবশ্যই ইতিবাচক ও গঠনমূলক হতে হবে।
২) গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ যারা লেখেন অর্থাৎ যারা সাহিত্য চর্চা করেন তারাই এই গ্রুপের সদস্য হতে পারবেন।
৩) সদস্যকে অবশ্যই সমালোচনা হজম করার মতো সাহস ও ইচ্ছা থাকতে হবে। কারণ সমালোচনা হবে কঠোর। মোটেই নরম ধরণের নয়। সুতরাং যার গন্ডারের চামড়া নেই তার এই গ্রুপের সদস্য হওয়ার প্রয়োজন নেই।
৪) মাসে অবশ্যই কমপক্ষে একদিন সাহিত্য-আড্ডার আড্ডা হবে এবং সেটা প্রতি মাসের শেষ শুক্রবারে। এছাড়াও আড্ডা হতে পারে যে কোনো দিনই। সদস্যদের কয়েকজন একত্রিত হতে পারলেই তারা সাহিত্য-আড্ডার ব্যানারে আড্ডা দেবেন এবং সে বিষয়ে গ্রুপে পোস্ট দেবেন। তবে মূল আড্ডা ঐ শেষ শুক্রবার।
৫) গ্রুপের সদস্যরা নিয়মিত গ্রুপে পোস্ট দেবেন। আগে থেকেই ঠিক করা থাকবে কে পোস্ট দেবেন। তিনি পোস্ট দিলে সবাই সেটার সমালোচনা করবেন।
৬) এই গ্রুপটা লেখার প্রশংসা অর্জনের জন্য নয়। এটা লেখার খুঁত খুঁজে বের করার জন্য। প্রশংসা আমরা অন্য জায়গা থেকে অর্জন করে নেব। এবং বাইরে থেকে প্রশংসা অর্জিত হবেও যদি সদস্যগণ সমালোচনার মাধ্যমে বের হয়ে আসা খুঁতগুলো দূর করে নিতে সচেষ্ট হন।
৭) এই গ্রুপ দলাদলির উর্ধ্বে থেকে কাজ করে যাবে। অর্থাৎ সাহিত্য-আড্ডা দলাদলিমুক্ত একটি দল।

আপাতত এই ছিল আমাদের সিদ্ধান্ত। পরে হয়ত আরও যোগ হবে।

একটা কথা বলতে ভুলে গেছি আমাদের সকলের প্রিয় পরিবেশ বন্ধু আড্ডার শুরুতেই ফোন করে আমাদের দোয়া দিয়েছেন, আড্ডার সাফল্য কামনা করেছেন। এবং কানেকানে জিজ্ঞেস করেছেন, পনি আপু কি আসবেন?
তাকে আমি আশ্বস্ত করলাম, আজ তিনি আসবেন না তবে সামনের যে কোনো আড্ডায় ঠিকই তিনি আসবেন। তিনি আমাদের অনেকের চেয়েই অনেক উৎসাহী ও উদ্যমী। (পনি আপু শুনতে পাচ্ছেন?)

আজকের আড্ডা থেকে আমরা একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরেছি – নিঃসন্দেহে শীঘ্রই আমাদের আড্ডা অত্যন্ত জমজমাট হয়ে উঠবে এবং এখান থেকে মানসম্মত সাহিত্যিক অচিরেই বাংলাদেশ কাঁপাবে, ইনশাআল্লাহ।

প্রণিধানযোগ্য একটি মন্তব্যঃ

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সাহিত্য আড্ডার বিকল্প নাই। এতে কেবল সাহিত্য বিষয়েই আড্ডা হয় না। কয়েকজন মানুষ এক জায়গায় জড়ো হলে আর তাদের হাতে সময় থাকলে হেন বিষয় নেই যা আলোচনায় উঠে আসে না। অনেক সময় দেখা যায় যে মানুষটি লেখালেখি নিয়ে কখনোই ভাবেন নাই, তিনিও দেখা গেল হঠাৎ একদিন একটি কাগজে কিছু লিখে নিয়ে চলে এলেন, যদিও তিনি লেখাটার কোনো সাহিত্যিক নাম দিতে পারেন নাই। কিন্তু আড্ডায় আলোচনায় ব্যাপারটি অবশ্যই পরিষ্কার হয়ে ওঠার কথা। আর নানা বিষয়ে আলোচনা (দোষ-ত্রুটি, লেখার মান এসব নিয়ে তো আলোচনা হবেই) করবার ফলে ভাবনার জগতেও নানাবিধ বিষয় সম্পর্কে বিচার-বিশ্লেষণের একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে। কাজেই আড্ডা তা যে কোনো বিষয়েই হতে পারে। তবে সম-মনষ্ক মানুষ হলে আর তারা যদি হন সাহিত্যের আলো-হাওয়ার প্রত্যাশী তাহলে তো কথাই নেই। কাজেই সাহিত্য সম্পর্কিত আড্ডায় কোনো বিষয়ে আলোচনা না হলেও অন্তত ব্যর্থ হবেন না। আর কিছু না হোক লেখালেখির মাল-মশলা তো পেয়েই যাবেন মনে টেবিলে।



আড্ডার সবার জন্য শুভ কামনা।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২

মহা সমন্বয় বলেছেন: দারুন উদ্যোগ.. এর সফলতা কামনা করছি।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ। আড্ডায় চলে আসেন। ভাললাগার গ্যারান্টি দিচ্ছি।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৩

গেম চেঞ্জার বলেছেন: বাহঃ দারুণ একটা উদ্যোগ। দেখি আসা যায় কি-না। হাঃ হাঃ হাঃ :)

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ। আড্ডায় চলে আসেন। ভাললাগার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪০

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: সুন্দর একটা উদ্যোগ।সফলতা কামনা করছি ।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৯

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ। আড্ডায় চলে আসেন। ভাললাগার গ্যারান্টি দিচ্ছি।

৪| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৪১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: যেতে পারবো না। কিন্তু আপনাদের আড্ডা সফল হোক

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:০৯

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনার শুভকামনা সাদরে গৃহীত হল। ধন্যবাদ।

৫| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৯

নেক্সাস বলেছেন: শুভকামনা

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: সময় করে আসবেন আশা করি। কামাল ভাইয়ের সাথে আপনার জমজমাট আলোচনা উপভোগ্য হবে।

৬| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: কখনও যাই নাই। আলস্য আর কিছুটা সংকোচে জড়ানো থাকে মন। আড্ডায় আমি কখনই সপ্রতিভ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হতে পারি নি।
তয় আসুম একটা শর্ত আছে। যদি পরিবেশ বন্ধুরে নিয়াইতে পারেন, তাইলে যামু। আমি তার বিশাাা:-/ল ফ্যান।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আড্ডায় ভাল শ্রোতারও দরকার আছে। আপনি যেহেতু সাহিত্যের একটা শাখায় ওস্তাদ আছেন সেহেতু আমরা আপনার কাছ থেকে কিছু নিতে পারতাম। আর যিনি ওস্তাদ তিনিও কিন্তু অন্যের কাছ থেকে সহজেই নিতে পারেন।

পরিবেশ বন্ধুরে আনতে পারি নাই কারণ তিনি শর্ত দিছিলেন পণি আপু, শায়মা আপু, আর অপর্ণা আপুকে উপস্থিত করার। আপনি যদি তাদেরকে উপস্থিত করতে পারেন তাইলে আমি পরিবেশ বন্ধুরেও পারুম। ;)

৭| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩

জেন রসি বলেছেন: সাহিত্যের বিকাশের জন্য আড্ডা আসলেই প্রয়োজনীয়। ফ্রাঞ্চে কফিশপ থেকে যেমন অনেক কালজয়ী ভাবনার জন্ম হয়েছে তেমনি আমাদের দেশের টি স্টলগুলোও অনেক সাহিত্য ভাবনার খোরাক জুগিয়েছে। ভালো উদ্যোগ। শুভকামনা রইলো। :)

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৪২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: খালি শুভকামনা জানালে হবে, আসতে হবে না?

ভাল থাকবেন ভাল গল্পকার।

৮| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: আশা রাখছি দেখা হবে। আমার সেই পুরনো আঙ্গিনায়।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:২৪

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনি আবার নিয়মিত হলে আমাদের সবার ভাল লাগবে।

৯| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪২

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ভালো উদ্যোগ।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:২৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ তনিমা। ঢাকায় থাকলে আসবেন আশা করি।

১০| ০১ লা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:


কাছাকাছি থাকার ভালো উপায়

০১ লা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:২০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনাকেও চাই।

১১| ০১ লা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এ পর্যন্ত কোনো আড্ডাতেই আসতে পারি নাই। ব্যক্তিগত কাজগুলো শুক্রবারের জন্যই তুলে রাখতে হয় কিনা!

০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:০৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনি কোন শুক্রবার আসতে পারবেন বলেন; সেই বারেই একটা আড্ডানুষ্ঠান করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.