নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডোন্ট টেক মোমেন্টস ফর গ্রান্টেড!

আমিনা মুন্নী

আমিনা মুন্নী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট্ট আয়লানের মৃত্যু এবং মুসলিম বিশ্বের ভন্ডামির স্তব্ধতা

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫

ছোট্ট আয়লানের মৃত্যুতে স্তব্ধ পুরো পৃথিবী...'

এমন শিরোনামে ছেয়ে গেছে পত্রিকার পাতা আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো।
আমি স্তব্ধ হয়ে যাই নি। আমার কষ্ট হয়েছে। এর আগেও যেই কষ্টের তিক্ত স্বাদ আমাকে বহুবার আস্বাদন করতে হয়েছে। তবে আমি সত্যিই বিস্মিত হয়েছি পৃথিবী বাসির হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাস দেখে। আমার ধারণা ছিল তারা বধির হয়ে গেছে। তাদের দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নেয়া হয়েছে। কারণ আফ্রিকান শিশুদের কঙ্কালসার হাড় জিরজিরে শরীর, জ্বলজ্বলে চোখগুলো আর ক্ষুধায় চিৎকার করা কান্না তাদের চোখে পড়তে দেখিনি আমি। আরোপতি ও অযৌক্তিক যুদ্ধের ডামাডোলে যখন হাজার হাজার আফগান, ইরাকি, আর প্যালেস্টাইনি শিশুদের হত্যা করা হয়, তখন তাদের মর্ম পীড়া দেয় না। লক্ষ লক্ষ মুুসলিম শিশুর নির্বিচার হত্যাকান্ড যে পৃথিবীর মানুষগুলোকে প্রতিবাদী হতে শেখায় না, সেই পৃথিবীর মানুষগুলোয় কিনা এক ছোট্ট আয়নালের ছবি দেখে স্তব্ধ হয়ে গেল, এটাকে আসলে নিপাট ভন্ডামি ছাড়া আমার কাছে আর কিছুই মনে হয় নি।

তবে আয়নালের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে পুনরায় দেখিয়ে দিল, একবিংশ শতাব্দির সবচেয়ে বর্বর, স্বার্থপর ও নপুংশকতার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো মুসলিম বিশ্ব। যখন ইউরোপিয়ানরা নিজেদের স্বার্থে নিজেদের মধ্যেকার সকল শত্রুতা ভুলে গিয়ে পরম শত্রুকেও মিত্র বানিয়ে নিচ্ছে, যখন আমেরিকার মত পরাশক্তি চীন ও ভারতের দিকে ব্ন্ধুত্ত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়, সেখানে কিনা এক মুসলিম রাষ্ট্রের বিপদে আরেক মুসলিম রাষ্ট্র এগিয়ে আসে না, সেখানে একজন মুুসলিম শরনার্থীর জায়গা হয় না আরেক মুসলিম ভাইয়ের ভূমিতে।

শৌর্যে সমৃদ্ধশালী হওয়া সত্ত্বেও পশ্চিমাদের উপঢৌকন হিসাবে পাওয়া মদ, নারী আসক্তি আর বিলাসী জীবন তথাকথিত মুসলিম বিশ্বের নেতাদের মেধা, মনন ও পরাক্রমে খুউব চমৎকার ভাবে জং ধরিয়ে দিয়েছে। তাই মুসলিম ভাইয়ের রক্ত বা মুসলিম বোনের কান্না আজ আর তাদের ব্যথিত করে না। যখন বিদেশী আগ্রাসনে আক্রান্ত মুসলিম দেশের শিশুরা পিতার হাত ধরে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে এলো পাথাড়ি ছুটে বেড়ায়, প্রাণের ভয় তুচ্ছ করে বেঁচে থাকার আকুতি সাগরের ঢেউ আর শঙ্খচীলের শব্দকে হার মানিয়ে দেয়, তখন অভ্যন্তরীন সমস্যা বলে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের ঐতিহ্যবাহী কাপুরুষতার পরিচয় বারংবার তুলে ধরে। একই কারণে যখন পশ্চিমাদের প্রকাশ্য মদদে অন্যায় ভাবে ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করা হয়, তখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গতিতে বসে আঙুর বেদানা আর সুরার পাত্র সামনে রেখে পশ্চিমা বন্ধুদের সাথে এই মুসলিম নেতারা খোশগল্প আর আমোদে মেতে থাকতে পারে।

এখনকার মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের নপুংশক নেতাদের প্রসঙ্গে ইংরেজ আমলে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলের রাজা-বাদশাহদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। ভারতবর্ষে নিজেদের রাজ্বত্ত্ব কায়েম করতে ইংরেজদের আসলে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয় নি। বরং ইংরেজদের কুটনৈতিক চালে হার মেনে অনেক রাজা বাদশাহ নিজে থেকেই ইংরেজ অধীনস্ত থাকতে ও তাদের গোলামী করতে রাজী হয়েছে। কারণ তাদের কাছে পরাক্রম বা প্রজাবান্ধব উত্তম শাসক হওয়ার চাইতে নিরাপদ সিংহাসন, আমোদ, ফূর্তি আর নেশার সুরা অনেক বেশি লোভনীয় আর কাঙ্খিত ছিল। তাই ইংরেজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা তারা তো কখনো চিন্তায় করে নি, বরং ইংরেজদের খুশি করতে স্ব-দেশি ভাইদের বুকে ছুরি ধরেছে অবলীলায়।

বর্তমান মুসলিম বিশ্বের শক্তিধর রাস্ট্রসমূহের নেতাদের অবস্থা এদের চেয়ে উন্নত কিছু নয়, বরং আরো খারাপই বলা যায়। তাই এদের কাছ থেকে উত্তম কিছু পাওয়ার আশা না করে মুসলিম ভাইবোনদের উচিত ইসলামী রাস্ট্র পরিত্যাগ করে বরং অন্য কোন ধর্মপ্রধান রাষ্ট্রে গিয়ে বসবাস করা। অত্যন্ত এতে করে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে পারবে।

বাংলাদেশী মুসলিম সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এদেশের উদীয়মান সক্রিয় সুশীল সমাজের কর্ণধারেরা ক্রমাগত আক্রমনে যেভাবে এদেশের মুসলিমদের কোণঠাসা করে রেখেছে, তাতে করে আগে মুসলিম হিসাবে ভেতরে অনেক ক্ষোভ কাজ করতো। কিন্তু এখন মনে হয় মুসলিম নামধারী ওই কাপুরুষ শাসকদের অধীনে প্রজা হিসাবে বেঁচে থাকার চাইতে স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির লেবাসধারী বখাটেদের অত্যাচার সয়ে সোনার বাংলাদেশে বাস করা অনেক শান্তির ,অনেক নিরাপদ আর সম্মানের।

ইউরোপিয়ান আর পশ্চিমাদের দাসত্ব আজ মুসলিম বিশ্বের যে সকল নেতাদের মোহাবিষ্ট করে রেখেছে, খুব বেশি দিন আর নেই যখন তাদের দিকেও একই যুদ্ধ এগিয়ে আসবে। কিন্তু মদ আর নারীতে বুদ হয়ে থাকা এই সব নেতাদের মস্তিস্ক আর শরীর তখন এতটাই অকেজো হয়ে থাকবে যে কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর মত অবস্থাও তখন থাকবে না তাদের । সেদিন এই মুসলিম দেশগুলোর শিশুদের কান্না তীব্র থেকে তীব্রতর হবে, প্রতিটি শিশুর সফেদ পোশাক সেদিন রক্তে লাল হয়ে যাবে...অথচ ভোগী স্বার্থপর রাষ্ট্র নেতাদের শুধু চেয়ে দেখা ছাড়া সেদিন আর কিছুই করার থাকবে না।

সেদিন তারা এক কান দিয়ে নিজেদের শিশু সন্তানদের আর্তনাদ শুনবে, আর অপর কান দিয়ে অসংখ্য আয়নালের অট্টহাসি শুনতে পাবে... তারা হয়তো সেদিন সত্যিই বধির হতে চেয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবে, কিন্তু আফসোস! সেদিন সম্ভবত তাদের কানগুলোও তাদের বিরুদ্ধচারণ করবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৮

টাইম কম বলেছেন: :||

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৪

হিল্লো্ল বলেছেন: লেখাটি ভাল হয়েছে, দোয়া রইল।

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৩

আমিনা মুন্নী বলেছেন: ধন্যবাদ! :)

৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ুসলমানেরাই আজ মুসলমানদের শত্রুতে পরিনত হয়েছে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.