নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডোন্ট টেক মোমেন্টস ফর গ্রান্টেড!

আমিনা মুন্নী

আমিনা মুন্নী › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুলশানে কূটনৈতিক এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা"- সরাসরি সম্পচার ব্যবসা বন্ধে নীতিমালা করা হোক!

০২ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩

আমাদের দেশের নিউজ মিডিয়া কতটা অবিবেচক ও দায়িত্বহীন এ বিষয়টি নতুন করে আরো একবার জনগণের সামনে প্রকাশ পেল। সরাসরি সম্প্রচারের ধারাবাহিকতায় এবারে গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার লাইভ টেলিকাস্ট শুরু করলেন উনারা।... কূটনৈতিক এলাকায় এ ধরনের হামলার মাধ্যমে কয়েকজন বিদেশী নাগরিককে জিম্মি করে রাখা নিঃসন্দেহে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত হুমকি সরূপ একটি ঘটনা। লাইভ টেলিকাস্টের নামে ছাতার মত গজানো টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সাংবাদিক আর ক্যামেরা ক্রুরা ভীড় করে পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। এরা কি এতোটাও নির্বোধ যে তারা জানে না তাদের এই অহেতুক কৌতুহল আর লাইভ টেলিকাস্টের নামে টিআরপি বাড়ানোর প্রচেষ্টা পুলিশের কাজ কে ভয়াবহ রকম বিলম্বিত করছে? জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে?
এই ধরনের সম্প্রচার যে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর, এসব সম্প্রচার যে অপরাধীদের পুলিশের অবস্থান ও plan of action সম্পর্কে আগ ভাগেই অ্যালার্ট করে দিচ্ছে সে বিষয়ে কি নিউজ চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এতটুুকুও সচেতন নন? এ ধরনের ঘটনায় নিউজ চ্যানেলগুলোর ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত সেইটুকু জ্ঞানও যদি উনাদের না থাকে তাহলে তো এসব চ্যানেলগুলো অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়া উচিত!

আমার জানামতে বাংলাদেশের প্রথম সারির নিউজ চ্যানেলগুলোতে বার্তাপ্রধান হিসাবে দেশের প্রথিতযশা ব্যক্তিরা রয়েছেন এবং এই ধরনের লাইভ টেলিকাস্ট এর বিষয়ে উনারা সরাসরি জড়িত। আমার প্রশ্ন হলো, জয় ই মামুন, মুন্নি সাহা এনাদের মত দায়িত্বশীল সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমরা কি এই ধরনের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজ আশা করি কেউ?
সাংবাদিকদের লাইভ সম্প্রচারের বাড়াবাড়িতে অতীষ্ট হয়ে RAB প্রধান ঠিক যেই মুহুর্তে তার rescue plan নিয়ে কাজ করার কথা সেই সময় বাধ্য হয়ে এসে সংবাদ সম্মেলন করলেন। মেসেজ একটাই, সোজা 'বাংলায় আপনারা যান। আপনাদের লাইভ সম্প্রচার আমাদের কাজে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। এটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য জন্য হুমকি।'....

অাফসোস! আবালের বাল সাংবাদিকগুলো এরপরও প্রশ্ন করে যাচ্ছেন...
'স্যার, এরপর আপনাদের plan of action কি?'
'ভেতরে কতজন বিদেশী আছে?'
'কারা এই আক্রমন করছে বলে আপনি মনে করেন?'
'এরপর আপনাদের ভূমিকা কি হবে?'
'পরবর্তী ব্রিফিং কখন পাবো?'....

ননসেন্স! রাবিশ!

মুন্নি সাহা, জয় ই মামুন, এই উনাদের সাংবাদিকতা ও অভীজ্ঞতালব্ধ দীর্ঘদিনের শিক্ষা? এটা কি দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা?
ক্রাইসিস মোমেন্টে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এসে বলার পর উনারা বুঝতে পারেন এই ধরনের ইনসিডেন্টের লাইভ সম্প্রচার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর? এটা কি উনাদেরই আগে বুঝতে পারার কথা না? এই ধরনের পাবলিসিটি প্রিয় অবিবেচক নিউজ চ্যানেল আর সাংবাদিকদের কাছ থেকে সাধারণ জনগণ কি আশা করতে পারে?!
লিডিং নিউজ চ্যানেল এটিএন নিউজ এর ব্রেকিং নিউজ: 'জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা ঘটনাস্থল থেকে সরাসরি সম্প্রচার করছি না'......
কি দুঃখ! কি দুঃখ! জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারছে না বলে তারা বেছে নিয়েছে আরো হাস্যকর পন্থা। তারা গুলশান ১ এ খাম্বার মত সাংবাদিক দাঁড় করিয়ে লাইভ টেলিকাস্ট করাচ্ছে। একই খবরের ত্যানা বারবার পেচাচ্ছে আর বেচারা ক্যামেরাম্যান সিগনালে আটকে থাকা গাড়ীগুলোর আরোহী আর ড্রাইভারদের close shot দেখাচ্ছে! Ridiculous! এটিএন নিউজ এর মতোন একটা লিডিং চ্যানেল কি করে এমন কাজ করতে পারে? টিআরপি কি জাতীয় নিরাপত্তার চেয়েও বেশী জরুরী? দেশের ক্রাইসিসেও মুন্নি সাহারা শুধু ব্যবসার কথাই ভেবে যাবেন???

আহত পুলিশ কর্মকর্তা রক্তাক্ত মাথায় চিকিৎসার জন্য হেঁটে যাচ্ছেন। গো-খাদ্য গেলা সাংবাদিকগুলো তাকে ঘিরে ধরলো।
'ভাই, গুলি খেয়ে আপনার অনুভুতি কি?'
'গুলিটা.... কোন পাশে লাগছে? ডান পাশে না বাম পাশে?'
'কি মনে হয়, পরিস্থিতি কেমন?'
'আগামীকাল রোজাটা রাখতে পারবেন???'........

ছাগল দিয়ে এদেশে এখন হাল চাষ করা হয়। কারণ বাজারে গরুর বড় আকাল। তাই মিডিয়ার মত শক্তিশালী একটা মাধ্যম এই সব ছাগল দিয়ে চালানো হচ্ছে। আর রামছাগলগুলো মিডিয়ার মাথা হয়ে বসে আছে। রানা প্লাজা, বিডিআর বিদ্রোহ সব ঘটনায় একই ব্যাপার ঘটে আসছে। আমার এখনোও মনে পড়ে চ্যানেল ২৪ এর একটি লাইভ এর ঘটনা। যেখানে সাংবাদিক ধ্বংসস্তুপের নীচে আটকে পড়া একজন মুমুর্ষ ব্যক্তি কে জিগেস করছে, 'আপনার নাম কি? বাড়ি কোথায়? আইডি নাম্বার কত? কিভাবে বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়লো? আপনি তখন কি করছিলেন? ধ্বংসস্তুপের নীচে আটকে পড়া মানুষটাকে এতটুকুও দেখা যাচ্ছিল না....হাতের আঙ্গুলগুলো বেড়িয়ে ছিল কেবল! সেই ছাগল সাংবাদিক ফোকরের ভেতর দিয়ে তাই মাইক্রোফোনটা ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছিল!

সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়টিও নীতিমালার অধীনে আনার সময় হয়ে গেছে এবং অতি সত্ত্বর তা করা উচিত! টিআরপির জন্য তো জনস্বার্থ উপেক্ষিত হতে পারে না এভাবে???
আমাদের নেতৃস্থানীয় সাংবাদিকরা যখন সরকারী সফরের ভ্রমনসঙ্গী হওয়া, প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেলফি তোলা, সরকারী বেসরকারী ও আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামগুলোতে দাওয়াত খাওয়া, আর টক শো নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকবেন, তখন সংবাদ মাধ্যমকে আরো কার্যকর, দায়িত্বশীল ও চৌকস করে তোলাটা যে তাদের কাছে গৌণ হয়ে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক। আর তারই ফলশ্রুতি সরূপ সাধারণ মানুষকে এই কান্ডজ্ঞানহীন সাংবাদিকতা ও কভারেজের নিশ্চুপ দর্শক হয়েই থেকে যেতে হবে।

সরাসরি সম্প্রসারের নামে নিউজ চ্যানেলগুলোর টিআরপি বাড়ানোর ব্যবসা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫

মহা সমন্বয় বলেছেন: সরাসরি সম্প্রসারের নামে নিউজ চ্যানেলগুলোর টিআরপি বাড়ানোর ব্যবসা অবিলম্বে বন্ধ করা হউক।

২| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:০৪

তাসজিদ বলেছেন: হারামজাদা রা শুধু বোঝে টিআরপি। লাথি মারা দরকার।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:০৩

বাংলার জামিনদার বলেছেন: ইহা সহি ইসলাম নয়, ইসলাম ইহা সমর্থন করেনা। যেই সব মোনাফেক এইসব কথা বলে জংগীদের কুকাম যায়েজ করার চেষ্টা করে, সবার আগে তাদের পিঠের চামড়া তোলা উচিৎ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.