নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডোন্ট টেক মোমেন্টস ফর গ্রান্টেড!

আমিনা মুন্নী

আমিনা মুন্নী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতায় এদেশে জঙ্গীবাদ উত্থানের অন্যতম কারণ: মূল দায়িত্বটা পরিবারের!

০৩ রা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৩২


আইএস, আনসারুল্লাহ্ বা আল-কায়েদা, এরা সবাই মনে হয় শাহরিয়ার কবির এবং উনার মতো রামছাগলগুলোর নিকট আত্মীয়। 'জঙ্গী' শুনলেই উনি এবং উনার মত কথাকথিত প্রগতিশীল মানুষেরা মাদ্রাসার শিক্ষা আর ছাত্রদের টার্গেট করে মিডিয়ার প্রচারণা পাওয়ার জন্য চাপাবাজী শুরু করে দেন... অথচ ব্লগার হত্যাকান্ড থেকে সব জঙ্গী আক্রমনে সম্পৃক্তদের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এরা উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী ও স্বচ্ছল পরিবারে সন্তান। এবং এরা নর্থ সাউথ, স্কলাসটিকার মত নামকরা প্রতিষ্ঠান থেকেই পড়াশুনা করে আসছে।....মাদ্রাসার শিক্ষা এবং এখানকার শিক্ষর্থীদের তাই এ বিষয়ে একচেটিয়া দায়ী করা একান্তই অমূলক।

অামি জানি না জঙ্গীদের কি দিয়ে কি বলে বা কি দেখিয়ে মাথা ওয়াশ করানো হয়। তবে স্বয়ং কোরআন যাদের সামনে আছে, তাদের সামনে আসলে পথভ্রষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেই আমার বিশ্বাস। কারণ কোরআন একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। যে কোরআনের গাইড লাইন অনুযায়ী জীবন যাপন করে, বা যে কুরআনের বিষয়ে ওয়াকিবহাল আছে তার বা তাদের পক্ষে খুন খারাবীর রাস্তা বেছে নেয়া সম্ভব না। কারণ ইসলাম এটাকে হারাম করেছে। জঙ্গীরা কেন বুঝতে পারে না যে ইসলামের নামে তাদের ব্রেইন ওয়াশ করে ইসলাম ধ্বংস করতেই তাদের সিনিয়ররা তাদের ব্যবহার করছে আমি জানি না। তবে এটুকু বুঝতে পারছি যে এরা যেসব পরিবার থেকে এসেছে যে সব পরিবারে ইংরেজী শিক্ষা ঠিকমত দেয়া হলেও ধর্মীয় বা ইসলামের শিক্ষা ঠিকমত দেয়া হয় নি। যদি দেয়া হতো তাহলে এরা জানতো যে আমাদের প্রিয় নবীকে পাথর ছুড়ে পাগল বলে রক্তাক্ত করা হতো এবং তবু তিনি তাদের অভিসম্পাত করতেন না। মক্কা বিজয়ের পর তিনি জুলুমকারীদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আমরা মহাত্মা গান্ধীর নির্বিবাদী আন্দোলনের খবর রাখি, অথচ আল্লাহ্ স্বয়ং যাকে আমদের নেতা করে পাঠয়েছেন সে কিভাবে সারা দুনিয়ায় ইসলাম কে শান্তির ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছে যে খবর রাখি না। আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত ইন্টেলেক্টরা ইন্সপায়ান্ড হয় চে'গুয়েভারাদের দ্বারা, অথচ নবীজীর জীবনের স্ট্রাগলিং, বীরত্ব আর সাফল্যের কাছে এসব চে'গুয়েভারার কোন অস্তিত্বই নেই.....
যে মানুষটা কোনদিন পরিবারের কাছ ইসলাম ধর্মের যথাযথ শিক্ষা পায় নি, যে মানুষটার কাছে ইসলাম মানে কেবলমাত্র জুম্মার দিনে নামায পড়তে যাওয়া, রমজান মাসে রোজা করা, হিজাব করা, ঈদ করা আর পাসপোর্টে Religion এর জায়গাটাতে ইসলাম লেখা তাকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলে ব্রেইন ওয়াশ করাটা জঙ্গীদের জন্য অনেক সহজ। কিন্তু এই ছেলেটিই যদি পরিবার থেকে ইসলামের শিক্ষাটা যথাযথ ভাবে পেত যদি গল্প শোনাবার ছলেও নবীজি বা খলিফাদের স্ট্রাগলিং এবং তাদের, ক্রোধ সংবরণ এবং ক্ষমাশীলতার ইতিহাসগুলো তাদের সাথে শেয়ার করা হতো তবে তার ব্রেইন ওয়াশ করে জঙ্গীবাদের রাস্তায় আনা এতোটা সহজ হতো না।

পরিবার শিক্ষাদানের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আজকালকার অভিভাভকরা সন্তানকে কেবলমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেয়ার প্রতিই নজর দেন। ধর্মীয় শিক্ষা প্রায় দেন না বলেই বলেই চলে। হয়তো এদের অধিকাংশই এটাকে গুরুত্বপূর্ণ বল মনে করেন না। আর সে কারণেই মেধাবী এই ছেলেগুলোকে বিপথগামী করা জঙ্গীদদের জন্য আরো সহজ হয়ে যায়।

ইসলাম মানে কেবল মাত্র হিজাব করা, নামায পড়া, রোজা করা, যাকাত দেয়া না...এগুলো ইসলামের অবশ্য করণীয়। এগুলো ফরয যা প্রতিপালকের সন্তুষ্টির উদ্দেশে আমাদের করতেই হবে। ইসলাম সুদ হারাম করেছে, মিথ্যা কে হারাম করেছে, মানুষ কে হত্যা করা, রক্তপাত, অন্যের হক মেরে খাওয়া, ক্রোধ, মানুষকে আঘাত করা, মনে কষ্ট দেয়া, গীবত করা হারাম করেছে। ইসলাম ধনীর সম্পদে যাকাতের মাধ্যমে দরিদ্রের হক নিশ্চিত করেছে। মা-বাবা, আত্মীয় স্বজন আর প্রতিবেশীর হক নিশ্চিত করেছে। ইসলাম বলেছে এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। ইসলাম কণ্যা কে পিতার সম্পদের হকদ্বার করেছে.... ইসলাম বলেছে জুলুমকারী শাসকের জন্য আল্লাহ জাহান্নাম নির্ধারণ করে রেখেছে। ইসলাম বলেছে জুলুমকারীর কোন ক্ষমা আল্লাহর কাছে নেই। আল্লাহর নবীর প্রাণ প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন কে জবাই করে হত্যা করে নবীজীকে নির্বংশ করা হয়েছিল। আপনি একজন মুসলিম হয়ে তবে কি করে বিশ্বাস করতে পারেন যে জঙ্গী মুসলিম পরিচয়ে জবাই করে আরেকজন মুসলিম ভাইকে হত্যা করেছিল সে আসলেই মুসলিম বা সে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য এসব ঘটাচ্ছে? আমরা ব্রিটেনের ইতিহাস জানি, সোভিয়ত ইউনিয়নের ইতিহাস জানি, মোগল থেকে শুরু করে নবাব সিরাজউদ্দোলার ইতিহাস জানি, লেলিন জানি, নেপোলিয়ন জানি, ট্রয় জানি, চে'গুয়েভারা জানি। কয়জন ইসলামের ইতিহাস জানি? কয়জন বদর যুদ্ধ বা উহূদের যুদ্ধের ইতিহাস জানি? যদি জানতাম, যদি অামদের কোমলমতি ভাইদের জানাতাম বা জানার সুযোগ করে দিতাম, তবে তারা অবশ্যই ইসলামের ইতিহাস থেকে জানতো টেররিজম করে নবীজী ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন নাই। বরং তিনি এবং অনুসারীরা ইতিহাসের বর্বরতম শাস্তির স্বীকার হয়েছেন। তবুও এমন নির্বিচার অকারণ হত্যার জন্য হাতিয়ার তুলে নেন নাই কখনও।

অভিজিৎ, হিমাদ্রী....হত্যাকান্ডের আগে আদৌ কি এদের কেউ চিনতো? চিনতো না। হঠাৎ একদিন এরা খুন হয়ে গেল। আমরা জানলাম এরা ইসলামের বিরুদ্ধে লিখতো। অথচ যাদের আমরা চিনি এই শাহরিয়ার কবির, সুলতানা কামাল, আসিফ মহিউদ্দীন, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং এদের মত আরো অনেকে যারা দিনের পর দিন প্রকাশ্যে ইসলাম নিয়ে, আল্লাহ নিয়ে, মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে, হিজাব নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেনন তাদের কে কিন্তু জঙ্গীরা হত্যা করছে না।তথাকথিত টেররিস্টরা নির্বিবাদী মানুষদের রেস্টুরেন্টে যেয়ে মানুষ হত্যা করছে কিন্তু মেয়েমানুষ নিয়ে যে সমস্ত জায়গায় পুরুষ মানুষেরা পার্টির নামে বেলেল্লাপনা করছে, মদ খাচ্ছে সেখানে গিয়ে হামলা করছে না...
শাহরিয়ার কবিররা স্পেশাল প্রটেকশন নিয়ে চলেন না। পার্টির নামে যে জায়গাগুলো কে মদ খাওয়া আর মেয়ে মানুষ নিয়ে ফুর্তি চলে সেখানেও কোন স্পেশাল ফোর্স সিকিউরিটির দায়িত্ব পালন করেরে না। জঙ্গীরা এসব জায়গায় হামলা করে নি কখনো। হামলা করেছে একটা সাধারণ রেস্টুরেন্টে। জঙ্গীরা শাহরিয়ার কবিরদের ক্ষমা করে দেন, কিন্তু অপরিচিত অভিজিৎদের জঙ্গীরা কোন ছাড় দেন না....খুউব বেশী অদ্ভুত নয় কি জঙ্গীদের এই মানসিক আচরণ?

খবর পড়ে জানতে পারলাম যারা কলেমা পড়তে পেরেছে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের সাথে ভালো আচরণ করা হয়েছে। ৩ জন মুসলিম বাংলাদেশী যাদের হত্যা করা হয়েছে, তারা কি তবে কলেমা জানতেন না? এদের সবাই খুউব সম্ভবত মুসলিম পরিবারে বেড়ে উঠেছেন এবং তারা উচ্চ শিক্ষিতও ছিলেন। উচ্চ শিক্ষিতরা অনেক বিষয়ে জ্ঞান রাখেন। ধর্ম, আর্ট, সমাজ, বিজ্ঞান সবকিছুতেই তাদের কিছু বেসিক জ্ঞান থাকে। সেই সাধারণ জ্ঞানের জায়গা থেকেও কি একজন মুসলিম হিসাবে সামান্য কলেমা জানাটা তাদের কাছে এতোটা অপ্রয়োজনীয় ছিল? একজন মুসলিম কলেমা পড়তে জানে না বিষয় টি আমার কাছে খুউব অদ্ভুত লেগেছে। কারণ আমার অমুসলিম বন্ধুটিও সম্ভবত মুসলিমের কলেমা জানে ও বলতে পারে ঠিক যেমন আমি তাদের 'ওম জয় জগদীশ হরে' জানি। তথাপিও আমি বিশ্বাস করি না কোন মুসলিম কলেমা বলতে না পারার অপরাধে কাউকে খুন করতে পারে। আর যারা এই কাজ করে তারা আর যাই হোক ইসলামের মঙ্গলের জন্য এসব করছে না।

জঙ্গীবাদের এই উত্থানের মূল কারণটা আমাদের গোড়ায়। পরিবারগুলো সন্তানদের প্রতি সঠিক দায়িত্বপালন করলে, প্রপার ধর্মীয় শিক্ষা দিলে এবং তাদের প্রতি অধিক মনোযোগী হলে এত সহজে এদের ব্রেইন ওয়াশ করা সম্ভব হতো না। জঙ্গীবাদের এই উত্থান এড়াতে পরিবার নামের এই প্রতিষ্ঠানটিকেই তাই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
আইএস, আনসারুল্লাহ্ বা আল-কায়েদা, এরা সবাই মনে হয় শাহরিয়ার কবির এবং উনার মতো রামছাগলগুলোর নিকট আত্মীয়। 'জঙ্গী' শুনলেই উনি এবং উনার মত কথাকথিত প্রগতিশীল মানুষেরা মাদ্রাসার শিক্ষা আর ছাত্রদের টার্গেট করে মিডিয়ার প্রচারণা পাওয়ার জন্য চাপাবাজী শুরু করে দেন... অথচ ব্লগার হত্যাকান্ড থেকে সব জঙ্গী আক্রমনে সম্পৃক্তদের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এরা উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী ও স্বচ্ছল পরিবারে সন্তান। এবং এরা নর্থ সাউথ, স্কলাসটিকার মত নামকরা প্রতিষ্ঠান থেকেই পড়াশুনা করে আসছে।....মাদ্রাসার শিক্ষা এবং এখানকার শিক্ষর্থীদের তাই এ বিষয়ে একচেটিয়া দায়ী করা একান্তই অমূলক।

অামি জানি না জঙ্গীদের কি দিয়ে কি বলে বা কি দেখিয়ে মাথা ওয়াশ করানো হয়। তবে স্বয়ং কোরআন যাদের সামনে আছে, তাদের সামনে আসলে পথভ্রষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেই আমার বিশ্বাস। কারণ কোরআন একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। যে কোরআনের গাইড লাইন অনুযায়ী জীবন যাপন করে, বা যে কুরআনের বিষয়ে ওয়াকিবহাল আছে তার বা তাদের পক্ষে খুন খারাবীর রাস্তা বেছে নেয়া সম্ভব না। কারণ ইসলাম এটাকে হারাম করেছে। জঙ্গীরা কেন বুঝতে পারে না যে ইসলামের নামে তাদের ব্রেইন ওয়াশ করে ইসলাম ধ্বংস করতেই তাদের সিনিয়ররা তাদের ব্যবহার করছে আমি জানি না। তবে এটুকু বুঝতে পারছি যে এরা যেসব পরিবার থেকে এসেছে যে সব পরিবারে ইংরেজী শিক্ষা ঠিকমত দেয়া হলেও ধর্মীয় বা ইসলামের শিক্ষা ঠিকমত দেয়া হয় নি। যদি দেয়া হতো তাহলে এরা জানতো যে আমাদের প্রিয় নবীকে পাথর ছুড়ে পাগল বলে রক্তাক্ত করা হতো এবং তবু তিনি তাদের অভিসম্পাত করতেন না। মক্কা বিজয়ের পর তিনি জুলুমকারীদের সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আমরা মহাত্মা গান্ধীর নির্বিবাদী আন্দোলনের খবর রাখি, অথচ আল্লাহ্ স্বয়ং যাকে আমদের নেতা করে পাঠয়েছেন সে কিভাবে সারা দুনিয়ায় ইসলাম কে শান্তির ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছে যে খবর রাখি না। আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত ইন্টেলেক্টরা ইন্সপায়ান্ড হয় চে'গুয়েভারাদের দ্বারা, অথচ নবীজীর জীবনের স্ট্রাগলিং, বীরত্ব আর সাফল্যের কাছে এসব চে'গুয়েভারার কোন অস্তিত্বই নেই.....
যে মানুষটা কোনদিন পরিবারের কাছ ইসলাম ধর্মের যথাযথ শিক্ষা পায় নি, যে মানুষটার কাছে ইসলাম মানে কেবলমাত্র জুম্মার দিনে নামায পড়তে যাওয়া, রমজান মাসে রোজা করা, হিজাব করা, ঈদ করা আর পাসপোর্টে Religion এর জায়গাটাতে ইসলাম লেখা তাকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলে ব্রেইন ওয়াশ করাটা জঙ্গীদের জন্য অনেক সহজ। কিন্তু এই ছেলেটিই যদি পরিবার থেকে ইসলামের শিক্ষাটা যথাযথ ভাবে পেত যদি গল্প শোনাবার ছলেও নবীজি বা খলিফাদের স্ট্রাগলিং এবং তাদের, ক্রোধ সংবরণ এবং ক্ষমাশীলতার ইতিহাসগুলো তাদের সাথে শেয়ার করা হতো তবে তার ব্রেইন ওয়াশ করে জঙ্গীবাদের রাস্তায় আনা এতোটা সহজ হতো না।

পরিবার শিক্ষাদানের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আজকালকার অভিভাভকরা সন্তানকে কেবলমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দেয়ার প্রতিই নজর দেন। ধর্মীয় শিক্ষা প্রায় দেন না বলেই বলেই চলে। হয়তো এদের অধিকাংশই এটাকে গুরুত্বপূর্ণ বল মনে করেন না। আর সে কারণেই মেধাবী এই ছেলেগুলোকে বিপথগামী করা জঙ্গীদদের জন্য আরো সহজ হয়ে যায়।

ইসলাম মানে কেবল মাত্র হিজাব করা, নামায পড়া, রোজা করা, যাকাত দেয়া না...এগুলো ইসলামের অবশ্য করণীয়। এগুলো ফরয যা প্রতিপালকের সন্তুষ্টির উদ্দেশে আমাদের করতেই হবে। ইসলাম সুদ হারাম করেছে, মিথ্যা কে হারাম করেছে, মানুষ কে হত্যা করা, রক্তপাত, অন্যের হক মেরে খাওয়া, ক্রোধ, মানুষকে আঘাত করা, মনে কষ্ট দেয়া, গীবত করা হারাম করেছে। ইসলাম ধনীর সম্পদে যাকাতের মাধ্যমে দরিদ্রের হক নিশ্চিত করেছে। মা-বাবা, আত্মীয় স্বজন আর প্রতিবেশীর হক নিশ্চিত করেছে। ইসলাম বলেছে এক মুসলিম আরেক মুসলিমের ভাই। ইসলাম কণ্যা কে পিতার সম্পদের হকদ্বার করেছে.... ইসলাম বলেছে জুলুমকারী শাসকের জন্য আল্লাহ জাহান্নাম নির্ধারণ করে রেখেছে। ইসলাম বলেছে জুলুমকারীর কোন ক্ষমা আল্লাহর কাছে নেই। আল্লাহর নবীর প্রাণ প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন কে জবাই করে হত্যা করে নবীজীকে নির্বংশ করা হয়েছিল। আপনি একজন মুসলিম হয়ে তবে কি করে বিশ্বাস করতে পারেন যে জঙ্গী মুসলিম পরিচয়ে জবাই করে আরেকজন মুসলিম ভাইকে হত্যা করেছিল সে আসলেই মুসলিম বা সে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য এসব ঘটাচ্ছে? আমরা ব্রিটেনের ইতিহাস জানি, সোভিয়ত ইউনিয়নের ইতিহাস জানি, মোগল থেকে শুরু করে নবাব সিরাজউদ্দোলার ইতিহাস জানি, লেলিন জানি, নেপোলিয়ন জানি, ট্রয় জানি, চে'গুয়েভারা জানি। কয়জন ইসলামের ইতিহাস জানি? কয়জন বদর যুদ্ধ বা উহূদের যুদ্ধের ইতিহাস জানি? যদি জানতাম, যদি অামদের কোমলমতি ভাইদের জানাতাম বা জানার সুযোগ করে দিতাম, তবে তারা অবশ্যই ইসলামের ইতিহাস থেকে জানতো টেররিজম করে নবীজী ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন নাই। বরং তিনি এবং অনুসারীরা ইতিহাসের বর্বরতম শাস্তির স্বীকার হয়েছেন। তবুও এমন নির্বিচার অকারণ হত্যার জন্য হাতিয়ার তুলে নেন নাই কখনও।

অভিজিৎ, হিমাদ্রী....হত্যাকান্ডের আগে আদৌ কি এদের কেউ চিনতো? চিনতো না। হঠাৎ একদিন এরা খুন হয়ে গেল। আমরা জানলাম এরা ইসলামের বিরুদ্ধে লিখতো। অথচ যাদের আমরা চিনি এই শাহরিয়ার কবির, সুলতানা কামাল, আসিফ মহিউদ্দীন, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং এদের মত আরো অনেকে যারা দিনের পর দিন প্রকাশ্যে ইসলাম নিয়ে, আল্লাহ নিয়ে, মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে, হিজাব নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেনন তাদের কে কিন্তু জঙ্গীরা হত্যা করছে না।তথাকথিত টেররিস্টরা নির্বিবাদী মানুষদের রেস্টুরেন্টে যেয়ে মানুষ হত্যা করছে কিন্তু মেয়েমানুষ নিয়ে যে সমস্ত জায়গায় পুরুষ মানুষেরা পার্টির নামে বেলেল্লাপনা করছে, মদ খাচ্ছে সেখানে গিয়ে হামলা করছে না...
শাহরিয়ার কবিররা স্পেশাল প্রটেকশন নিয়ে চলেন না। পার্টির নামে যে জায়গাগুলো কে মদ খাওয়া আর মেয়ে মানুষ নিয়ে ফুর্তি চলে সেখানেও কোন স্পেশাল ফোর্স সিকিউরিটির দায়িত্ব পালন করেরে না। জঙ্গীরা এসব জায়গায় হামলা করে নি কখনো। হামলা করেছে একটা সাধারণ রেস্টুরেন্টে। জঙ্গীরা শাহরিয়ার কবিরদের ক্ষমা করে দেন, কিন্তু অপরিচিত অভিজিৎদের জঙ্গীরা কোন ছাড় দেন না....খুউব বেশী অদ্ভুত নয় কি জঙ্গীদের এই মানসিক আচরণ?

খবর পড়ে জানতে পারলাম যারা কলেমা পড়তে পেরেছে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের সাথে ভালো আচরণ করা হয়েছে। ৩ জন মুসলিম বাংলাদেশী যাদের হত্যা করা হয়েছে, তারা কি তবে কলেমা জানতেন না? এদের সবাই খুউব সম্ভবত মুসলিম পরিবারে বেড়ে উঠেছেন এবং তারা উচ্চ শিক্ষিতও ছিলেন। উচ্চ শিক্ষিতরা অনেক বিষয়ে জ্ঞান রাখেন। ধর্ম, আর্ট, সমাজ, বিজ্ঞান সবকিছুতেই তাদের কিছু বেসিক জ্ঞান থাকে। সেই সাধারণ জ্ঞানের জায়গা থেকেও কি একজন মুসলিম হিসাবে সামান্য কলেমা জানাটা তাদের কাছে এতোটা অপ্রয়োজনীয় ছিল? একজন মুসলিম কলেমা পড়তে জানে না বিষয় টি আমার কাছে খুউব অদ্ভুত লেগেছে। কারণ আমার অমুসলিম বন্ধুটিও সম্ভবত মুসলিমের কলেমা জানে ও বলতে পারে ঠিক যেমন আমি তাদের 'ওম জয় জগদীশ হরে' জানি। তথাপিও আমি বিশ্বাস করি না কোন মুসলিম কলেমা বলতে না পারার অপরাধে কাউকে খুন করতে পারে। আর যারা এই কাজ করে তারা আর যাই হোক ইসলামের মঙ্গলের জন্য এসব করছে না।

জঙ্গীবাদের এই উত্থানের মূল কারণটা আমাদের গোড়ায়। পরিবারগুলো সন্তানদের প্রতি সঠিক দায়িত্বপালন করলে, প্রপার ধর্মীয় শিক্ষা দিলে এবং তাদের প্রতি অধিক মনোযোগী হলে এত সহজে এদের ব্রেইন ওয়াশ করা সম্ভব হতো না। জঙ্গীবাদের এই উত্থান এড়াতে পরিবার নামের এই প্রতিষ্ঠানটিকেই তাই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.