নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডোন্ট টেক মোমেন্টস ফর গ্রান্টেড!

আমিনা মুন্নী

আমিনা মুন্নী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিন্দি ভাষায় সাক্ষাৎকার প্রদানঃ ধৃষ্টতা নাকি অজ্ঞতা??

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৪

বিবিসি লাইভ হিন্দি থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটা সাক্ষাৎকার নেয়া হয় সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার বিষয়ে। অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় এই যে স্বাভাবিক সৌজন্যবোধের সীমা ছাড়িয়ে সাক্ষাৎকার প্রদানকারী ছাত্রছাত্রীরা সবাই এখানে হিন্দি তে সাক্ষাৎকার দিয়েছে।

ভারতীয় সংস্কৃতির অবাধ বিচরণ এবং ২৪ ঘণ্টা স্টার আর জি নেটওয়ার্কের কল্যাণে আজ হিন্দি ভাষায় আমরা সবাই কম বেশি কথা বলতে জানি। কিন্তু এই জানাটাকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমে হিন্দি ভাষায় সাক্ষাৎকার দেয়ার মত বিষয় টি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়! কারণ হিন্দি আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত বা আমাদের রাষ্ট্র স্বীকৃত ভাষা নয়। সাক্ষাৎকার প্রদানকারী স্টুডেন্টরা চাইলেই যেখানে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে গ্রহণযোগ্য ইংরেজিতে কথা বলতে পারত, সেখানে হিন্দি তে সাক্ষাৎকার দেয়া কেন? আমি অনেক ভালো হিন্দি বলতে পারি সেটা জাহির করার জন্য নাকি ইংরেজির দুর্বলতা ঢাকার জন্য!? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিরেকে অবশ্যই এই সাক্ষাৎকারটি নেয়া হয় নি এবং ভার্সিটির পিআর রিপ্রেজেনটেটিভ সেখানে নিশ্চয় উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের উপস্থিতিতে হিন্দি তে সাক্ষাৎকার দেয়ার এ ধরনের বিষয় অনুমতি পায় কি করে?

অতি সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রীর হিন্দিতে সাক্ষাৎকার দেয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেকে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। তারপরও একই ঘটনার পুনরাবৃত্ত্বি কে নিতান্ত ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক এবং রাজনৈতিক ইস্যুগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র ছাত্র যে ধরনের প্রগতিশীল ভূমিকা পালন করে থাকে, সেই হিসাবে তাদের কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ সবাই প্রত্যাশা করে। জাতি হিসাবে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধ। আর ভাষার ইতিহাসের তো আমরা সবার সেরা। সে ভাষা নিয়ে আমাদের এত গর্ব, এত অহঙ্কার, এই ধরনের সেন্সলেস কর্মকাণ্ড সেই ভাষার মর্যাদা কে ক্ষুন্ন করে। এতে করে ভাষা শহীদদের প্রতি অসম্মান জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ টা কিন্তু একটা প্রতীকী সম্মান জানানোর প্রক্রিয়া। আমি নিশ্চিত ভাবে জানি হিন্দিতে গড়গড় করে সাক্ষাৎকার দেয়া ছেলেমেয়েগুলো নিশ্চয়ই ২১ শে ফেব্রুয়ারি তে প্রভাত ফেরিতে যায়। মাতৃভাষা দিবসে স্ট্যাটাস দেয়, প্রোফাইল পিকচার চেঞ্জ করে। অথচ এই ছেলেমেয়েগুলোই এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে নিজের মাতৃভাষার প্রতি অবহেলা দেখাল! অথচ চাইলেই একজন দো-ভাষীর মাধ্যমে অথবা ইংরেজিতে সাক্ষাৎকার টি দেয়া যেত।

এই ধরনের দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরণের মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয় আমাদের সচেতনতা, দায়িত্ববোধ এই সব কিছু হয়ে গেছে সামাজিক মাধ্যম ভিত্তিক, লোক দেখানো। মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা, নিজের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্তের প্রতি শ্রদ্ধা এই বিষয়গুলো আমরা এখনও ঠিকভাবে রপ্ত করে উঠতে পারি নি। যারা এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রচার মাধ্যম সবার বোধ করি এই বিষয়টিতে নজরদারী করার প্রয়োজন আছে। তা না হলে অদুর ভবিষ্যতে এর চেয়ে লজ্জাজনক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হতে হবে আমাদের!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৫২

শার্লক_ বলেছেন: আচ্ছা যদি বিবিসি মিয়ানমার সাক্ষাৎকারটি নিত তাহলে ওরা কি বার্মিজ ভায়ায় কথা বলতো? এইসব ব্রেইন ওয়াশড পোলাপান দেশের মান সম্মান রাখলো না। রাগ হয় খুব।

০১ লা আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

আমিনা মুন্নী বলেছেন: সেটাই। ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে মেয়ের ভেতর যদি এটুকু সেন্স না থাকে তাহলে এদের কাছ থেকে আর কি আশা করা যায়!

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮

পিলিয়ার বলেছেন: তারা বুঝাল আমদের বাংলাদেশ এ .... হিন্দি কত গভীর এ ....প্রবেশ করে গেছে ।

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: এখন বর্তমান পরিস্থিতি এমন যে ছোট ছোট বাচ্চারাও অনর্গল হিন্দিতে কথা বলছে। আমার নিজে চোখে দেখা, স্টার কিংবা জি নেটওয়ার্ক ছাড়াও ডোরেমন ও অগি নামক একটা কার্টুন দেখে বাচ্চারা হিন্দি ভাষার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমমেয়েদের কাছে এখন হিন্দিতে কথা বলাটা একটা স্টাইল বা ফ্যাশন। ভবিষ্যত অন্ধকারের দিকেই যাচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.