নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানলা আমার মানেনা আজ ধর্মের বিভেদ/জানলা জাতীয়তাবাদের পরোয়া করে না

অঞ্জন ঝনঝন

অঞ্জন ঝনঝন আমার আসল নাম না। আমি সামুর নিয়মিত ব্লগারও না। মাঝেমধ্যে ঘুরে যাই ভাল্লাগে।

অঞ্জন ঝনঝন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাশরাফির এমন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণ কি? একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৪

খেলা হিসেবে ক্রিকেট ও ব্যক্তি বা খেলোয়াড় মাশরাফির প্রতি আমার কোন ধরণের বিদ্ধেষ নেই। আমার শৈশব কৈশোরের অসাধারণ কিছু স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই ক্রিকেটের সাথে। শৈশবে যখন প্রথম পেস বল করা শিখছি তখন বল করার সময় আগে জামার কলার উঁচু করে নিতাম এরপর মাথা নিচু করে দৌড় শুরু করতাম। বুঝতেই পারছেন এসবই করতাম মাশরাফির অনুকরণে। আমি তখন ওর রীতিমতো ভক্তই ছিলাম বলা যায়। এরপর অনেকটা সময় চলে গেছে, বাংলাদেশে ক্রিকেট তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অথচ আমার আগ্রহে ভাটা পড়ছে।

যাহোক লেখার বিষয়ে আসি, বর্তমান বাংলাদেশে কিশোর, তরুনদের মধ্যে মাশরাফির মতো জনপ্রিয় আর কেউ আছে কিনা আমার জানা নেই। তিনি কতটা জনপ্রিয় তা বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশে থাকলে, বা সোশ্যাল মিডিয়া ঘুরলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। এখন আসুন একটু বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করি মাশরাফির এতটা জনপ্রিয়তার কারণ কি?

শৈশবের নায়ক

বর্তমানে যারা  কলেজ- ভার্সিটিতে পড়াশুনা করে বা পড়াশুনা শেষ তাদের শৈশব কৈশোরেই প্রথম বাংলাদেশ  ক্রিকেটে একটু আধটু জয়ের দেখা পাওয়া শুরু করছে। হোক তা জিম্বাবুয়ে, কেনিয়ার সাথে। তখন ক্রিকেটও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সেসময় তাদের নায়ক ছিল আশরাফুল,  মাশরাফি, আফতাব, শাহরিয়ার নাফিসরা। সাকিব, তামিমরা তখন সবে এসেছেন, তারকা হয়ে উঠতে পারেননি। এই তখনকার নায়কদের মধ্যে এখনো টিকে আছেন কেবল মাশরাফিই। আর লক্ষ্য করলে দেখবেন এই প্রজন্মের মাঝেই মাশরাফির জনপ্রিয়তা বেশী। শৈশবে, কৈশোরে মনে যে ছাপটা পড়ে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আবেগের বহিঃপ্রকাশ।

বাঙ্গালি আবেগপ্রবণ জাতি। তারা আবেগের প্রকাশ দেখতেই পছন্দ করে। আর মাশরাফি এটা খুবই ভাল করেন। তাসকিন নিষিদ্ধ হওয়ায় তার চোখে পানি চলে আসে, তিনি "শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও খেলে যাব" এ ধরণের আবেগী কথাগুলো আওড়ান, কখনো ভীষণ আবেগে চুমু খান মুস্তাফিজের কপালে। এই আবেগের প্রকাশগুলো মাশরাফির জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রে বেশ বড়সড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। আর ঠিক একই কারণে মানে এই আবেগের বহিঃপ্রকাশ তেমন না করায় সাকিবকে অনেকে অপছন্দ করেন। বলেন "ও টাকার জন্য খেলে। দেশের প্রতি কোন টান নেই"

ইঞ্জুরি থেকে সিম্প্যাথি, ইন্সপাইরেশন।


মাশরাফির দুই হাঁটুতে একগাদা সার্জারি করতে হয়েছে।  সঠিক সংখ্যাটা আমার জানা নেই কোথাও দেখি লেখা সাতটি কোথাও দশটি ইত্যাদি। প্রায়ই দেখা যায় ব্যাথায় তার নাক মুখ কুঁচকে যাচ্ছে তবুও তিনি বল নিয়ে ছুটছেন। এসব বিষয়গুলো বাঙ্গালিকে নাড়া দেয়। কারণ তারা একে  প্রোফেশনাল দৃষ্টিকোন থেকে না দেখে আবেগের দৃষ্টিকোন থেকেই দেখেন। এর ফলে তাদের চোখ এড়িয়ে যায় যে মাশরাফি আসলে ভীষণ সাধারণ মানের একজন খেলোয়াড় যেকিনা এই ১৪০ কিমি.+ এর যুগে ১৩০ এর আশেপাশে বল করছে।

অধিনায়ক হিসেবে অভাবনীয় সাফল্য।

সাফল্য না থাকলে শুধু শুধু এইসব হামজাম ফ্যাক্টর গুলা কোন কাজই করতে পারতনা। এই ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের যখন ভরাডুবি অবস্থা তখনই মাশরাফি অধিনায়ক হিসেবে আসেন আর সব ভোজবাজির মতো বদলে যায়। দর্শকরা বিষয়গুলোকে এভাবেই দেখেন। বা সাংবাদিকরা এভাবেই দেখান। তারা ভুলে যায় এসময় বাংলাদেশ পেয়েছে সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার,  মুস্তাফিজদের মতো প্রতিভাবানদের। এসময় তাসকিন আরো ধারালো হয়েছে, মাহমুদুল্লাহ ছিল ক্যারিয়ার সেরা ফর্মে। বাংলাদেশের আর কোন অধিনায়ক এমন অসাধারণ একটা দল পায়নি। কিন্তু দর্শকরা মোটা দাগে দেখার সময় বেশীরভাগ কৃতিত্বটাই মাশরাফিকে দিয়ে ফেলেন।

সাংবাদিকদের সাথে সখ্যতা

এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।  মাশরাফির মতো সাংবাদিকদের সাথে এতটা সখ্যতা সম্ভবত আর কোন খেলোয়াড়ের নেই। আর দর্শকদের মন মানসিকতা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের চেয়ে বড় ফ্যাক্টর ও নাই। মাশরাফিকে কিংবদন্তি বানিয়ে দিতে পারলে সাংবাদিকদেরই লাভ। এই যেমন কিছুদিন আগে সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় মাশরাফির জীবনী বের করল। এত দামী একটা বই হু হু করে বিক্রি হতে থাকলো। যেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অস্বাভাবিক বিষয়। তাই মাশরাফিকে জনপ্রিয় করা তাদের একটা মার্কেটিং পলিসিও। দেবব্রত এবং তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সাংবাদিক আরো বছর খানেক আগ থেকে মাশরাফিকে নিয়ে নিয়মিত আবেগী সব লেখালেখি করে আসছেন।  আপনি ওনাদের কোন খেলায়  আতস কাঁচ দিয়েও মাশরাফির সমালোচনা  খুঁজে পাবেন না। অথচ দর্শকদের চোখেই ওর কত বাজে সিদ্ধান্ত ধরা পড়ে। কিন্তু এসকল সাংবাদিকরা কিছু লেখেন না বলে কেউ সাহস করে বলতেও পারেনা। অনেকসময় ওনারা এসব ভুল সিদ্ধান্ত গুলো কোন একটা ব্যাখ্যা দিয়ে দেন। যার ফলে মাশরাফি এখন সব ভুলের উর্ধে উঠে গেছে। আর এতে সাংবাদিকদের লাভ তো আগেই বলছি। মাশরাফিকে নিয়ে কিছু লিখলেই হিট।

যাহোক এগুলো মোটামুটি প্রধান ফ্যাক্টর। এছাড়াও আরো কারণ আছে। যেগুলো সাংবাদিকরা দর্শককে জানিয়ে তার প্রতি সবাইকে মুগ্ধ করেন। যেমনঃ তার সাধারণ লাইফস্টাইল, আড্ডাবাজ আমুদে আচরণ ইত্যাদি।

সবশেষে আজ জন্মদিনে মাশরাফির জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

ঢে্উটিন বলেছেন: বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সমালোচনা করে ফেল্লেন।

মাশরাফি আসলে ভীষণ সাধারণ মানের একজন খেলোয়াড় যেকিনা এই ১৪০ কিমি.+ এর যুগে ১৩০ এর আশেপাশে বল করছে।

তার ক্যারিয়ার স্ট্যাটিকস টা এখান থেকে দেখে নিন view this link

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আপনার লিংকটা কাজ করছেনা। আমি আগের কথা বলিনি। এখন তার এভারেজ গতি ১৩০ এর কাছাকাছিই

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৬

ঢ্যাঙা মোস্তাফা বলেছেন:


শিরোনাম দিয়েছেন নিরপেক্ষ কিন্তু বাদ দিয়েছেন অনেক কিছু। এখনকার পেসারদের প্রথম অনুপ্রেরণা ছিল মাশরাফি, মাশরাফিই প্রথম ১৪০ এর উপর বল করে দেখিয়েছিল বাংলাদেশে। আমাদের তারকা খেলোয়াড়রা (সাকিব বাদে) কেউই বাইরের তারকাদের সাথে তুলনায় অত বেশি যায়না, মাশরাফির সবচেয়ে বড় সাফল্য হল সবার ভেতর থেকে সেরাটুকু আদায় করে নেয়া। মাশরাফির গতি এখন কম, উইকেট কম, সেটার কারণটা উল্লেখ করলেন না? মাশরাফি যখন প্রথম জাতীয় পর্যায়ে খেলা শুরু করে এই মাপের পেসারের জন্য উপযুক্ত ফিজিও ছিল না, যে কারণে বারবার আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে, নিজের সম্পূর্ণটুকু দেয়া ডাক্তাররাই না করে রেখেছে মাশরাফির জন্য। সাংবাদিকদের সাথে মাশরাফির সম্পর্ক একেবারে সঠিক, এরচেয়ে কম হলে তাকে অসামাজিক বলতে হবে আর বেশি হলে আরেকটা আশরাফুলের ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে না। মুস্তাফিজের মাথা যেন উৎপল গং না খায় তার জন্য মাশরাফির কৃতিত্ব সবচেয়ে বেশি। আশরাফুলকে ভুলে গেছেন? আর ঘরোয়া মাঠে যত বড় প্রতিভাই হোক, খেলায় গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে নতুনদের ব্যবহার করার সাহসটুকু কে দেখায়? আপনার বলা বাঙালির আবেগ? সাকিব আশরাফুল মুশফিকুর মাহমুদুল্লাহ তো এক সাথে খেলেছে, নতুন তিন পেসারই তাহলে সব বদলে দিয়েছে? নাকি দলগত?

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: এইযে আপনিই আবেগী হয়ে গেলেন ডাক্তাররা না ককরুক আর যেই করুক আসলে পয়েন্ট হচ্ছে মাশরাফি এখন প্লেয়ার হিসেবে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারতেছেনা। আর মাশরাফির সাথে সাংবাদিকদের সম্পর্ক একটু বেশীই ভাল। যদি দেবব্রত, আরিফুল ইসলাম রনি এদের ফলো করে থাকেন বুঝবেন। এছাড়া সাকিব - মুশফিক -মাহমুদুল্লাহ-আশরাফুল দের একসাথে খেলার কথা বলছেন। আচ্ছা জবাব টা আপনিই দেন। তখন মাহমুদুল্লাহ তেমন উলেখ করার মত ব্যাটসম্যান ছিল? তখন বোলিং এটাক কেমন ছিল? দলে নিয়মিত পারফর্মার ছিল?

৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩৭

ঢ্যাঙা মোস্তাফা বলেছেন: ঠিকাছে এইডি সবডি আপনের

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:০৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: ছবিটা ভাল।

৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:১১

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: ঝনঝন সাহেব, নামের মতই আপনি খুবই ঝনঝনে। মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা আপনার অতি নিচু মানের।

প্রথমত, আপনি মিথ্যাবাদী। আপনি আপনার জীবনে কখনোই মাশরাফিকে অনুকরণ করেননি। শুধু আপনার লেখার শিরোনামের 'নিরপেক্ষ' শব্দটার কোন মানে রাখার জন্য এইটুক ব্যবহার করেছেন।
দ্বিতীয়ত, আপনার ক্রিকেট জ্ঞানও কম। তাই আপনি খেলোয়ারের মাঠে প্রভাব না দেখে শুধু পরিসংখ্যান ও সংখ্যা দেখেন।

আচ্ছা, প্রথমে পরিসংখ্যান দিয়েই আপনার পোস্টকে অনর্থক প্রমাণ করি।
ওয়ানডে ক্রিকেটে পেস বোলারদের মেইডেন নেওয়া খুবই বিরল। সেই ৮০/৯০ এর দশকের পর থেকে পেসারদের মেইডেন পাওয়ার হার কমে গেছে। এই টি-টুয়েন্টি আসার পর থেকে মেইডেন নেওয়ার চল একদমই উঠে গেছে বলা যায়। বিশেষ করে, পেসারদের উপরই এই অত্যাচার যায়। পেসারদের বলের গতি কাজে লাগিয়েও ব্যাটিং শিখে গেছে অনেকে।

এই আধুনিক কালে ওয়ানডেতে ১০০ মেইডেন ওভার নেওয়া একমাত্র পেসার এই মাশরাফিই। সর্বকালের না, আধুনিক কালের বলেছি। মেইডেন নেওয়া বোলারদের তালিকা দেখলে সেখানে শন পোলক, গ্লেন ম্যাকগ্রা, চামিন্দা ভাসের নামই উপরে দেখবেন। কিন্তু তারা তাদের ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছে টি-টুয়েন্টি যুগের আগে। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত এক ম্যাকগ্রা ছাড়া অন্য দুইজন খুব একটা ভাল সময়ও কাটাতে পারেনি। ২০০৬ এর পর থেকে ব্যাটসম্যানদের ডট বল দেওয়ার প্রবণতাও কমে যাওয়ায় তাদের মেইডেন ওভারের সংখ্যাও খুব বাড়তে পারেনি। সেইখানে মাশরাফি সেই ২০০৬ এর পরই বেশির ভাগ মেইডেন নিয়েছে। সেটাও মাত্র ১৬০+ ম্যাচ খেলে। যেখানে ডেল স্টেইন অনেক বেশি ওয়ানডে খেলেও ১০০ মেইডেন নিতে পারেনি।

পয়েন্ট টু বি নোটেড - পোলক, ম্যাকগ্রা, ভাস - এদের কেউই জীবনে ১৪০ কি.মি. বেগে বল করেনি। এদের অ্যাভারেজ গতি ছিল ১২৫-১৩০ এর মাঝে। সর্বোচ্চ গতিই আসলে একটা পেসারের মূল হাতিয়ার না। মূল হাতিয়ার হল তার বলের উপর নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা। এমন নিয়ন্ত্রিত পেস বোলারের সংখ্যাও এখন খুব কম। মাশরাফি সেই কম সংখ্যক পেস বোলারদের একজন। গতি নিয়ে আরেকটা উদাহরণ দেই - এখনকার সবচেয়ে সেরা সেনসেশন মুস্তাফিজুর রহমান কিন্তু তার দ্রুতগতির বলের থেকে কম গতির বলেই বেশি সফল। ক্রিকেটীয় পরিভাষায় যেটার নাম স্লোয়ার। এবং স্লোয়ারে এখন আরেকটা সেরা বোলার হল ভুবনেশ্বর কুমার। ভারতের বোলার হওয়ায় আমরা তাকে অতটা গ্রহণ করতে চাই না। তবুও এটাই সত্য।

পেস বোলারদের সেরা অস্ত্র যেখানে স্লোয়ার, সেখানে মাশরাফি জেনুইনলি স্লোয়ারই দেয়। সাথে থাকে নিয়ন্ত্রণ। যেটা মুস্তাফিজ ছাড়া বাংলাদেশের আর কোন পেসারেরই। এটার প্রমাণ পাবেন এদের ইকোনোমি রেট দেখলে। (ওয়ানডে খেলে না বলে নামটা আনিনি, তবে শহীদও তাদের কাতারেই।)

মাশরাফি প্রথমে আলোতে এসেছিল তার গতির কারণেই। সেটাও এমন সময়ে যখন পুরো বিশ্ব মেতেছিল দুই গতিদানব শোয়েব আক্তার ও ব্রেট লী কে নিয়ে। তাদের জন্য শেন বন্ড এবং শন টেইটও অতটা আলো পায়নি। সেখানে মাশরাফি ঠিকই আলো কেড়েছিল। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ১৪০ এর ব্যারিয়ার ভেঙ্গেছিল। এটা অবাক হওয়ার কারণও। সেই সময়টায় পেসারদের জন্য উপযোগ্য কন্ডিশন, সুযোগ ও পরিচর্যা আমাদের এখানে ছিল। এটার প্রমাণও মিলে। তখন বাংলাদেশের সেরা ফাস্ট বোলার ছিল খর্বাকৃতির খালেদ মাহমুদ সুজন। এইটুকই যথেষ্ট তখনকার অবস্থাটা বুঝানোর জন্য। কিংবদন্তী ও সাবেক খেলোয়াড়দের মত মাশরাফি হল বাংলাদেশের সর্বপ্রথম জেনুইন ফাস্ট বোলার। ইনজুরী না থাকলে আর সঠিক পরিচর্যা পেলে সে ডেডলি একটা বোলারেই পরিণত হতে পারতো।

এটা বললাম ইতিহাস। বর্তমান নিয়ে পরে আসছি।

মাশরাফি ইনজুরি প্রবণতার বড় কারণ হল কোন ভাল মানের ফিজিও না থাকা। একটা ভাল ফিজিও এর অভাবেই মাশরাফি কখনো ইনজুরি পুরোপুরি সারাতে পারেনি। তার শল্য চিকিৎসক ডেভিড ইয়াংও এটার কথা বলেছে। তার ঠিকমত পুনর্বাসন হওয়ার আগেই তাকে খেলায় আনা হত। যার কারণে তার রোগটা পুরোপুরি সারতোও না। তাই তাকে বারবার ইঞ্জুরিতে যেতে হয়েছে। ঠিক এমনটা হতে পারতো সাকিবের ভাগ্যেও। পূর্বের শিক্ষা থাকায় সাকিব সেটা থেকে বেঁচে গেছে। এমনকী শফিউলেরও। তার হাতের ইনজুরিটা খুবই বিপদজনক ছিল। তবুও লম্বা সময়ের পুনর্বাসনে সেই শফিউলও এখন সেরে উঠেছে। এই একটা জিনিসের অভাবের ফলেই মাশরাফির দুর্দশা।

মাশরাফির ইনজুরির জন্য তাকে যে একটা সময় মানুষ খুব পছন্দ করতো সেটাও না। তার খেলা পছন্দ করলেও সে এত ইনজুরিতে পড়ায় বিরক্তই ছিল বেশির ভাগ মানুষ। মানুষের এই মনোভাবটা বদলাতে মাশরাফি কোন সাংবাদিক বা অজুহাত ব্যবহার করেনি। তার বারবার মাঠে ফিরে আসার কারণেই মানুষ তাকে ভালবেসেছে। সেই সাথে ফিরে আসার পর তার পারফমেন্সও মানুষকে মুগ্ধ করাতে বাধ্য করেছে।

তবে তাকে মানুষ বেশি ভালবাসতে শুরু করেছে - ২০০৯ এর ইনজুরির পর থেকে। কারণ, কেউ ভাবেনি যে সে আর কখনো ক্রিকেটে ফিরে আসবে। ফিটনেস না থাকায় সিরিজের পর সিরিজ বসে থাকতে হয়েছে। ২০১১ তে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপটাও খেলতে পারেনি। খেলার জন্য বাচ্চাদের মত কেঁদেছেও। এইটা তাকে ভালবাসার মূল কারণ। সে আরেকবার ইনজুরিতে পড়লে শুধু খেলাই ছাড়তে হবে না, সাথে সাথে বরণ করতে হবে পঙ্গুত্বও। সেই মানুষটা সব কিছু জেনেও যখন ঠিক ভাবে ফিট না হয়েও মাঠে ফেরার জন্য বাচ্চাদের মত কাঁদে - তখন একটা কঠোর হৃদয়ের মানুষও তাকে ভালবাসতে হবে।

ঠিক সেই সময়েই ইনজুরির ভয়ে অবসরে যায় শেন বন্ড। ব্রেট লিও আর ইনজুরিকে মেনে নিতে না পেরে অবসর নিল। ঠিক ধরেছেন, এরাও ইনজুরি প্রবণ ছিল। তারা না পেরে অবসর নিয়েছিল। তাদের ইনজুরির কন্ডিশনও অতটা সিরিয়াস ছিল না যে তারা আরেকবার ইনজুরিতে পড়লে পঙ্গু হয়ে যাবে। এই দিকটাতেই মাশরাফি বেশি ভালবাসা অর্জন করেছে।

এই ভালবাসা কোন সাংবাদিক তাকে দেয়নি। তার স্পৃহাই তাকে দিয়েছে। তার খেলার প্রতি আবেগটাই তাকে আলাদা করেছে। শুধু খেলাটাই আসল না, সে কোন লীগেও নিয়মিত খেলতে চায়নি - সে শুধু চেয়েছে তার দেশের হয়ে খেলতে।

ওকে, এটা গেল।

অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশে সাফল্য সে ছাড়াও সাকিব পেয়েছে, হাবিবুল বাশার পেয়েছে। এমনকী বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অধিনায়ক মুশফিকের সময়ও পেয়েছে। তবুও মাশরাফি কেন আলাদা?

উদাহরণ দেই কিছু,
রিকি পন্টিংকে যখন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন অস্ট্রেলিয়া দলের অবস্থা টাল-মাটাল ছিল। স্টিভ ছেড়ে গেছে, স্টিভ ওয়াহ-এর ডেপুটি শেন ওয়ার্ন ড্রাগ টেস্টে ধরা পড়ে খেলা থেকে নিষিদ্ধ। দলের পারফমেন্সও ভাল না। ঐ দল বিশ্বকাপ জিতবে সেটা কেউ ভাবেনি। সাথে আবার খেলোয়ার সংকটও ছিল। জ্বি, অস্ট্রেলিয়ারও খেলোয়ার সংকট হয়েছিল।
তরুণ রিকি পন্টিং সেই দলকেই ২০০৩ বিশ্বকাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন করেছিল। ঐ বিশ্বকাপের ফাইনাল আর গ্রুপ পর্বের একটা ম্যাচ ছাড়া পন্টিং-এর পারফমেন্সও গড়পড়তাই ছিল। তার কিছু পদক্ষেপেই অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিল। ঐ বিশ্বকাপে তার সেরা আবিষ্কার ছিল অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস, ব্যাটিং-ফিল্ডিং দুই দিকেই আক্রমনাত্নক মনোভাব, এবং খেলোয়ারকে স্বাধীনতা দেওয়া, খেলোয়ারের সাথে একদম অন্তরঙ্গ মিশে যাওয়া।
অস্ট্রেলিয়ার ঐ দুর্বল দলটাকেই সে বানিয়েছিল অজেয় অস্ট্রেলিয়া দলে। শুধু তাই না, ২০০৭ বিশ্বকাপেও অপরাজিত চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।
তার দলে পারফর্মার অনেক ছিল। কিন্তু সে আসার আগে ঐ পারফর্মাররাই পারফর্ম করতে পারেনি। সে ঐ দলকেই কোথা থেকে কোথায় তুলেছিল তা সবারই জানা। (অস্ট্রেলিয়া সবসময়ই শক্তিশালী দল, কিন্তু অজেয় ঐ সময়টা ছাড়া আর কখনোই ছিল না।)
তবে মুদ্রার অপরপিঠও তাকে দেখতে হয়েছে - তার দলে পারফর্মার দিয়েও সে একটা সময় আর সফল হতে পারেনি। ২০০৮ এর পর থেকেই সময় খারাপ হয়ে যায় তার। ২০১১ তে তো খেলাই ছাড়তে হয়েছিল তাকে।

উদাহরণ দেওয়া যায় ধোনীকেও। ২০০৭ এ ভারতের ক্রিকেটের অবস্থান খুবই খারাপ ছিল। ধোনীকে অধিনায়ক করে দেওয়ার পরই দলটা পুরোপুরি বদলে যায়। ২০০৭ এর আগে ও পরে ভেবে ভারতীয় ক্রিকেটকে দুইভাগ করা যায়। ধোনীর পারফমেন্সটা আসলে কতটুকু ছিল? স্বল্প-সংখ্যক ম্যাচ ছাড়া সে বড় স্কোরও করেনি, তার ব্যক্তিগত পরিসংখ্যান খুবই দুর্বল। তবুও ধোনীকে নিয়ে বায়োগ্রাফিকাল ফিল্ম করেছে ভারতে। এর কারণ, ধোনীর গুরুত্ব তার পরিসংখ্যান দিয়ে বুঝা যাবে না। সে বড় স্কোর করেনি, তবে ক্রিকেট ফিল্ডে সে নতুনত্ব এনেছে। আক্রমনাত্নক মানসিকতা এনেছে। সবচেয়ে বড়কথা, অশ্বিনের মত একটা সাধারণ মাপের অফস্পিনার এখন টেস্টের সেরা অলরাউন্ডার। সুরেশ রায়নার মত মিডল অর্ডার সাধারণ ব্যাটসম্যান এখন ক্লিন হিটার, ম্যাচ ফিনিশার। জাদেজার মত একটা অপদার্থ খেলোয়ারও নিয়মিত পারফর্ম করে। এইসব খেলোয়ার যতটা না ভাল, তার চেয়ে বেশি তাদেরকে উন্নত করিয়েছ ধোনী। তাদের ভিতর থেকে তাদের পারফর্ম করার ক্ষমতাটা বের করে কাজে লাগাতে পেরেছে। এই কারণেই ধোণীকে ক্যাপ্টেন কুল, ক্ষুরধার মস্তিষ্কের অধিনায়কও বলা হয়।

এখন আসি মাশরাফির অধিনায়কত্বের বিষয়ে।
বিপিএল দিয়ে শুরু করি। বিপিএলে তিনটা আসরেই কিন্তু মাশরাফির দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তিনবার সে একই দলের সদস্য নিয়েও খেলেনি। এমনকী শেষ আসরটায় মাশরাফি ব্যাটিং-বোলিংও করেনি বেশির ভাগটা সময়। তার দলে ওয়ার্ল্ড টি-টুয়েন্টি জেতানো অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি থাকার পরও মাশরাফি শুধুই অধিনায়ক হিসেবে ম্যাচ খেলেছে। এটা অনন্য এক উদাহরণ - কারণ শুধু অধিনায়কত্বের জন্য পৃথিবীর কোন খেলোয়ারই দলে টিকে থাকতে পারেনি। সাথে করতে হয়েছে পারফর্মও। এই একটা জায়গায় মাশরাফি আলাদা। (৯২ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকেও শুধু তার অধিনায়কত্বের জন্য অনুরোধ করে দলে আনা হয়েছিল।)

মাশরাফির একটা গুণ আছে, সেটা হল সে তার দলের সদস্যদের থেকে পারফর্ম বের করে আনতে পারে। খুব বেশি অধিনায়কের এই গুণটা নেই। খেলাকে খুব ভালভাবে রিড করতে পারে। কখন কোন কাজটা করা শ্রেয় হবে - সেটা বুঝতে পারে। যার কারণে দুর্বল দল নিয়েও সে ফাইট করতে পারে। তার খেলোয়ারদের সে সাহস জোগায়, আবেগী করে তোলে। আবেগ কখনো ভাল নয়, কিন্তু হুট করে যখন আবেগ চলে আসে - তখন আবেগের তাড়নায় মানুষ যে কোন কিছু করে বসতে পারে। আর, ক্রিকেটের ময়দানে সেটা বের হয়ে আসে পারফর্মের মাধ্যমে। প্রাথমিক আবেগে সফল হয়ে এক ধরণের আত্নবিশ্বাস জাগে। ঐ আত্নবিশ্বাসটা পরবর্তীতে সফলতা আনতে সাহায্য করে। আর, এইভাবে পূর্ণ হয় একটা পারফমেন্স।

এটা হল সাইকোলোজি। ফুটবল কোচেরা সফল হয় তাদের কৌশলের পাশাপাশি সাইকোলোজি ব্যবহার করে। গার্দিওলা যেইবার মৌসুমে ছয় শিরোপা জেতালো, তার মাঝে একটা টুর্নামেন্টের ফাইনালের আগে খেলোয়ারদের কোন কৌশল না শিখিয়ে তাদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিল কথা বলে। ঐ সময়টার আগে বার্সা খুব বাজে সময়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছিল, খেলোয়াররা ঠিকমত মাঠে সবটা ঢেলে দিতে পারছিল না। তখন গার্দিওলা খেলোয়ারদের পূর্বের খেলার ফুটেজ দেখিয়ে দেখিয়ে তাদেরকে কিছু কথা বলেছিল। এবং ঐ সেশনের পর খেলোয়াররা যখন বের হয় তখন তাদের অনেকের চোখ দিয়েই পানি পড়ছিল, আবেগক্রান্ত ছিল। সেই আবেগটা কাজে লাগিয়েই বার্সা ঐ মৌসুম তো আধিপত্য করেছিলই, সাথে সাথে তাদের সব বাজে সময় পিছনে ফেলে এখনো অপ্রতিরোধ্যই আছে।
এছাড়া প্রতিটি দলেই কোচিং স্টাফে একজন স্কিলড সাইকো অ্যানালাইসিস্ট থাকেই।

মাশরাফি ইনজুরির কারণে খেলা থেকে অনেকবারই বঞ্চিত ছিল। তবে, সে ঐ বঞ্চিত সময়টাকে কাজে লাগিয়ে একটা আদর্শে পরিণত করেছিল। সেই আদর্শ দিয়েই এখন সে অধিনায়ক হিসেবে সফলদের একজন। এছাড়া বললে অধিনায়ক মাশরাফির প্রাথমিক পর্যায়ের পরিসংখ্যান বা রেকর্ড কিন্তু খুব ভালোও নয়। সাকিব, বাশার, মুশফিক কেউ ই এটা ভালভাবে করতে পারেনি। এমনকী মুশফিকের টাইমে সেরা সেরা পারফর্মার নিয়েও খুব একটা সফল হতে পারেনি। সাকিবের সময়ে সাকিব নিজেই পারফর্ম করেছে। সে তার দলের সদস্যদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি অতটা। কিছুটা ইগোও সাকিবকে পিছিয়ে দিয়েছে। বাশারের সময় পারফর্মারই ছিল না। মাশরাফি আগের সব অপূর্ণতাকেই একবারে মুছে দিয়েছে। সে খেলোয়ারদের মিশতে পেরেছে তার সহজ-সরল জীবনযাপনের সুবাদে, না খেলে মাঠের বাইরে বেশি সময় পড়ে থাকায় বা মাঠে তার সময় আর বেশি নেই - এই চিন্তায় তার চিন্তাভাবনাই হয়ে গেছে শুধু মাঠে পারফর্ম করা নিয়ে, বর্তমান নিয়ে। অধিনায়কের সুবাদে এটা তার দলের সবার মাঝে ঢুকিয়েও দিতে পারছে। সবচেয়ে বড় কথা, আগের অধিনায়কেরা এক ম্যাচ জিতলেই খুশি থাকতো - শুধু বলার জন্যই বলতো - আগের ম্যাচ এখন নেই, এটা নতুন ম্যাচ, এটার জন্য পরিকল্পনা আলাদা। আর, মাশরাফি এটা শুধু বলেই না। মেনেও চলে।

যার ফলাফল - আগে শুধু সিরিজের একটা ম্যাচ জিততো দল, আর বেশির ভাগই ম্যাচই হারতো জেতার অবস্থানে গিয়ে। [সাকিবের সময়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজ জয়, আর মুশফিকের আমলে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ জয় ছাড়া বাকিগুলো আমাদের থেকে দুর্বল দলের সাথেই ছিল।]
আর মাশরাফির সময়ে দল এখন সিরিজের এক ম্যাচ জিতেই ক্ষান্ত না, সাথে সাথে সিরিজটাও নিজেদের করে নেয়। সর্বশেষ খেলা ছয়টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের সবকটিই বাংলাদেশ জিতেছে। [মাঝে দুটো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ছিল ২০১৫ ও ২০১৬ এবং একটা চারজাতি টুর্নামেন্ট ছিল ২০১৬ তে, যেটায় বাংলাদেশ রানার্সআপ]।

তবে, সাইকোলোজির সাথে সাথে কৌশলের ব্যাপারও আছে। মাশরাফি আসার পর দলের ব্যাটিং অর্ডারে অনেক পরিবর্তন আসে।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন মাহমুদুল্লাহ্‌র। আগে সে ব্যাট করতো ইনিংসের একদম শেষ প্রান্তে। যার কারণে সে তার পুরোটা দিতে পারতো না। মাশরাফি এসে তাকে উপরে উঠিয়ে দেয়। ফলাফল - মাহমুদুল্লাহ্‌ এখন দলের ব্যাটিং স্তম্ভ। এমন একজায়গায় ব্যাটিং পজিশন তার, যেটা হল দলের সবচেয়ে সেরা ব্যাটসম্যানের পজিশন। ঐ জায়গা থেকে সে নিজের স্বাধীনমত ভাবে খেলতে পারবে। তাই মাহমুদুল্লাহ দলের পারফর্মারদের মধ্যে একদম সেরাদের একজন।
তামিম - যে কিনা মাঝে নিজের মত করে খেলতেই পারছিল না। তার চিন্তা করতে হত টপ অর্ডারের পুরোটাকে নিয়েই। নিজের সঙ্গী পাচ্ছিল না যে তাকে সাপোর্ট দিবে ভাল মত। মাহমুদুল্লাহ্‌কে উপরে উঠিয়ে আনায় সবচেয়ে বড় উপকার হয়েছে তামিমেরই। এতে সে স্বাভাবিক ভাবে খেলতে পারে। কারণ, মাহমুদুল্লাহ-এর মত ঠান্ডা মাথার একজন অপর পাশে থাকলে তাকে অন্য কিছু নিয়ে অতটা চিন্তা করতে হবে না। তার ঐ সঙ্গীই সেইটা চিন্তা করে আগাতে পারবে। এতে সে আত্নবিশ্বাস পায়। সেই আত্নবিশ্বাসের কারণে এখন তামিম পুরোপুরিই বদলে গেছে। বলতে গেলে চিন্তামুক্ত তামিম এখন। যখন কন্ডিশন যেমন থাকবে, সেই অনুযায়ী খেললেই তার চলছে।
সাব্বির-সৌম্য-রুবেল-তাসকিন সবাই ই তাদের পছন্দ মত ভাবে খেলতে পারছে। যার ফলে দলে পারফর্মার বেড়েছে। তাতে আত্নবিশ্বাসও বেড়েছে সবার। এবং প্রতিনিয়ত স্বাধীনভাবে খেলাটাই ধরে রাখতে পারছে।

পেস বোলিং অ্যাটাকও একটা বড় কৌশল। একসময় বাংলাদেশ শুধুই বাঁহাতি স্পিনারের দেশ ছিল। প্রতিপক্ষকে শুধু আমাদের এই একটা দিক নিয়ে ভাবলেই চলতো। ব্যাটসম্যানরাও পেস খেলতে পারতো না ভাল ভাবে। বলতে গেলে পেসারদের জন্য কোন সুবিধাই ছিল না। প্রতিটা পিচ ছিল স্পিন-বান্ধব।
এই স্পিন-বান্ধব পিচেই তিন পেসার নামায় মাশরাফি। একটা রিস্ক নিয়ে। যদি কাজ করে তো সচারচর ধারা বদলে যাবে, না কাজ করলে আগের ধারায়ই ভিন্নভাবে ভাবতে হবে। রিস্কটা কাজ করেছিল - কারণ, প্রতিপক্ষ এমনটা ভাবেনি, ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। পেসাররাও ভরসা পায়। তারাও পারফর্ম করতে শুরু করে। এরই ফাঁকে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট মুস্তাফিজুরেরও উত্থান হয়। সব মিলে প্রতিপক্ষের তখন ভাবনাও বেড়ে যায় - কারণ, তাদেরকে পেস নিয়েও ভাবতে হচ্ছে, সাথে পুরোনো স্পিন তো আছেই। তাদের কাছে বাংলাদেশ আনরিডেবল হয়ে গেছে এখন। কখন কোন ডিপার্টমেন্ট কাজ করবে কেউ ই আগে থেকে ভাবতে পারেনা। পিচও স্পিন-পেস দুটোর সহায়ক হয়ে গেছে। তাতে আমাদের ব্যাটসম্যানরাও স্পিন-পেস দুটোতেই দক্ষতা বাড়িয়ে নিতে পেরেছে।
আগে যেখানে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ নিজেদের দিনে যে কোন অঘটনই ঘটাতে পারে বলে স্বান্তনার বাণী দিত। সেখানে এখন জেতার জন্য আমরা সবরকম চেষ্টাই করব, দিন শেষে কে জিতবে সেটা বলা অনিশ্চিত বলে নিজেদের স্বান্তনা দেয়।

এটা কবে থেকে শুরু হয়েছে? বেশিদিন না - এই মাশরাফি আসার পর থেকেই।

এছাড়া অ্যাটাকিং ফিল্ড সেটাপ তো আছেই। বিশ্বের সব কিংবদন্তীই মাশরাফির আক্রমণাত্নক ফিল্ড প্লেসমেন্টের প্রশংসা করেছে। প্রতি ম্যাচেই করে। ওয়ার্ল্ড টি-২০ তে ভারতের বিপক্ষে খেলার সময় গাভাস্কার প্রাণখুলেই প্রশংসা করেছে, একবার না বারবার। ঐ প্রশংসা করার কারণেই হার্শা ভোগলেকে নিয়ে সমালোচনা হয়েছে, তাকে কমেন্ট্রি প্যানেল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। (এটার পিছনে অবশ্য আরেকটা কারণও আছে।)

এই জন্যই দলের ভুরি ভুরি পারফর্মার থাকলেও তাই সাফল্যের কৃতিত্ব দেওয়া হয় মাশরাফিকেই। কারণ, সে দলটাকে আনপ্রেডিক্টেবল করে তুলেছে প্রতিপক্ষের কাছে। এখন, একেক ম্যাচে একেক ইউনিট পারফর্ম করে। কোন ম্যাচে বাঁহাতি স্পিনার। আবার কোনটায় পেসার। কোনটায় অফস্পিন। কোনটায় পার্টটাইম বোলার। সাথে ব্যাটিং-এ উলটাপালটা লাইন আপ তো আছেই। (এখন শুধু তামিম ছাড়া প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকেই যে কোন পজিশনে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। এবং প্রত্যেকেই স্লগ+ক্ল্যাসিক দুইভাবেই খেলতে পারে।)

এখন, বর্তমান পারফমেন্স নিয়ে বলি।
তার আগে জিজ্ঞেস করি - সাকিবের পারফমেন্স কি ভালভাবে দেখেন?
যদি দেখে থাকেন - তাহলে কি এটা লক্ষ্য করেছেন যে দলের অন্যরা ভাল খেললে সাকিবকে ভাল খেলতে? বা অন্যরা খারাপ খেললে সাকিবকে খারাপ খেলতে?

না। সাকিবের পারফমেন্স দলের অন্যদের পারফেমন্স থেকে উলটা। মাঝে মাঝে ছাড়া দলের সবচেয়ে বাজে সময় সাকিব দাঁড়িয়ে যায়, যখন দলের কারোরই ফর্ম থাকে না - তখন সাকিব একা লড়ে। আবার, মাঝে মাঝে ছাড়া দলে সবচেয়ে ভাল সময় সাকিব খারাপ খেলে। সবাই যখন ফর্মে থাকে - তখন সাকিব ধুঁকতে থাকে। কিন্তু সেটা সাকিবের বিশ্বসেরা অলরাউন্ড হওয়ার পথে হতে পারেনি। কারণ, সে বেশির ভাগ সময়ই তার অ্যাভারেজ খেলাটাই খেলে যায়। দলের অন্যদের পারফমেন্স ভাল থাকলে তারটা চোখে পড়েনা, অন্যরা খারাপ খেললে তারটাই মূখ্য হয়। সে এটাই করে যাচ্ছে। তাই সে তার জায়গায়ই আছে। আর, এই কারণেই মনে হয় সাকিব নিজের জন্য খেলছে। তার খেলার স্টাইলই এটা। তাই বলে তো সাকিব সাধারণ মানের খেলোয়ার হয়ে যায়নি। তাই না?

মাশরাফির ইনজুরির কারণে সে মাঠে খেলা ঠিকমত ডেলিভার করতে পারে না। তবুও সে দলের বিপদের সময় প্রতিপক্ষকে চেপে ধরতে পারে নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিয়ে। ব্যাটিং-এ শেষ দিকে নেমে ধুপধাপ কয়েকটা বাউন্ডারি মেরে রান প্রতিপক্ষের এক্সপেক্টেশনের চেয়ে ১০/২০টা বাড়ীয়ে দিতে পারে। এগুলো হল ক্যামিও। বিপদের সময় সে ছোটখাট কিছু কন্ট্রিবিউট করে, যেটাকে পরবর্তীতে অন্যরা কাজে লাগিয়ে ম্যাচের রঙ পালটে দিতে পারে।
তবে, খেলার চেয়ে তার অধিনায়কত্বই বড় ফ্যাক্ট। শুধু অধিনায়ক মাশরাফিই যথেষ্ট। তার প্রমাণ গত বিপিএল।
এছাড়া ওয়ার্ল্ড টি-২০ এ অস্ট্রেলিয়ার সাথে মনমরা ভাবে থাকায় ভালভাবে অধিনায়কত্ব করতে পারেনি বলে গাভাস্কার বলেছিল - সে দলে ব্যাটিং-এ ভূমিকা রাখে না, বোলিং-এ না, অধিনায়কত্বও ভাল ভাবে করে না - তাহলে সে দলে আছে কেন?

ঠিক তার পরের ম্যাচ, আগের ম্যাচ দুটোতেই গাভাস্কার তার অধিনায়কত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছিল। গাভাস্কারের ঐ কথাটাকে আমরা কেউ ই ভালভাবে নেইনি। একটা ম্যাচে ওমন করায় গাভাস্কার সমালোচনা করবে? না। গাভাস্কার কথাটা সমালোচনা করে বলেনি - সে বলেছিল আক্ষেপে - মাশরাফির থেকে ঐদিনের আচরণ তাকে দুঃখ দিয়েছিল। সে ঐদিন মাশরাফিকে পায়নি বলেই সমালোচনা করে বলেছিল। এর প্রমাণ - সে সবসময়ই মাশরাফির প্রশংসা করেছে। বলতে গেলে মাশরাফি বাংলাদেশকে কেমন বদলে দিয়েছে সেটার ভাল ব্যাখ্যাটাও গাভাস্কার দিয়েছিল।

আর সাংবাদিকদের সাথে সুসম্পর্ক - এটা কি মাশরাফির দোষ না গুণ? কাউকেই তো বলা হয়নি সাংবাদিকদের সাথে সুসম্পর্ক না রাখতে। নাকি এমন নীতিমালা আছে কোন? সাংবাদিকদের সুসম্পর্ক রাখাটা বিশাল বড় গুণ - কারণ কেউ ই এইটা পারে না। আর মাশরাফিকে নিয়ে বাড়িয়ে লেখার দরকারও নাই কারো - ওর নিজের কথা শুনলেই তো বুঝা যায়। পত্রিকা না - টিভি ফুটেজের কথা বলছি।

আবেগ থাকাও সমস্যা নাকি? সত্যি বলতে ওর মাঝে দেশ নিয়ে যতটা আবেগ আছে - দেশের শীর্ষস্থানে থাকা দেশচালকদেরও অতটা নেই। যদি থাকতো, তাহলে দেশের সমস্যাও কম থাকতো। দেশ নিয়ে তো আপনিও ভাবেন, সবাই ই ভাবে - তো, আপনার কাছে এই প্রশ্নটা থাকলো, দেশ নিয়ে ভাবা কারো কাছে কি দেশের প্রতি আবেগ থাকা আরেকজনকে ভাল লাগবে না?
একটা খেলা পাগল মানুষের সাথে আরেকটা খেলা পাগলের সুসম্পর্ক থাকবেই, বই পাগলার সাথে বই পাগলার - ব্যাপারটা খুবই সহজ।

আপনার পোস্টের থেকে বড় কমেন্ট দিলাম।

আপনি স্রোতের বিরুদ্ধ্বে চলে নিজেকে ব্যতিক্রম প্রমাণ করতে চাওয়া এক ব্যক্তি। ঐদিন ফারুকী গ্যাং, আজকে মাশরাফি। দুটো পোস্টেই লজিকের বদলে আপনি অ্যান্টি-আবেগ ব্যবহার করেছেন। আপনার সমস্যা হল - ওরা সফল, জনপ্রিয় - আপনি কেন নন? আপনি অন্য কারো জনপ্রিয়তা দেখতে পারেন না।
হয়তো নেক্সট পোস্ট হবে এই ব্লগের জনপ্রিয় ব্লগারের জনপ্রিয় হবার কারণ নিয়ে।

ফেইমসিক আপনাকে বলা যাবে না, আপনার মাঝে পপুলার পার্সনের উপর একটা বিদ্বেষ আছে। নিচু মানসিকতা এটা।
এতে আপনি ব্যতিক্রম হবে না।

প্রচলিত ধারার বিপরীতে থাকাই ব্যতিক্রমতা না - মাঝে মাঝে ধারার সাথে থাকাও ব্যতিক্রমতা।
আর এটাকে ভাল ভাবে বলা যায় - কারো মাঝে অন্ধত্ব না থাকলেই তার পক্ষে ব্যতিক্রম হওয়া সম্ভব।

মাশরাফিকে এত বড় কমেন্ট করার পরও আমি বলব - মাশরাফি মাঝে মাঝে প্রচুর ভুল করে বসে, যার কারণে ম্যাচও হারতে হয়। মাঝে মাঝে তার মাঝে তাসকিন প্রীতি জেগে উঠে। যেটা বেশিরভাগ সময়ই অসহ্যকর। সবচেয়ে অসহ্যকর লেগেছিল অস্ট্রেলিয়ার সাথে ম্যাচটা ছেড়ে দেওয়ায়। ঐ ম্যাচ হারার জন্য আমি দায় মাশরাফিকেই দিব আজীবন। জ্বি, এত বড় ফ্যান হওয়ার পরেও আমি মাশরাফিকে দায় দিয়ে যাব।

আপনাকে কটুভাবে কথা বলায় আমি বিন্দুমাত্রও দুঃখিত নই। আপনি বুঝে কথা বলুন - আপনাকে সম্মান করবো। ভুল করবেন - কটু কথাই শুনবেন। আবেগ দিয়ে আমি চলি না - যুক্তির উপরই চলি - এবং আপনার পোস্টের যুক্তিগুলো প্রচুর লেইম। না বুঝেই আপনি মনগড়া ভাবে ওগুলো তৈরি করেছেন। সে জন্যেই এত বড় কমেন্ট করতে হল আমাকে।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:০০

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: #প্রথমত আপনি সরাসরি আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। এটা দেখেই পয়েন্ট বাই পয়েন্ট উত্তর দেয়ার মানসিকতা নষ্ট হয়ে গেছে। যাক তবু সংক্ষেপে কয়েকটা বলি।
#আমি সাধারণ দর্শকদের মাঝে তিনি কেন জনপ্রিয় এটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি। কোন ক্রিকেট বোদ্ধাদের নয়। তাই স্বল্প ক্রিকেট জ্ঞান থেকেই এটা ব্যাখ্যা করা উচিৎ।
#সাধারণ দর্শকদের চোখে তার বোলিং দক্ষতা বর্তমানে সাধারণই।
#মাশরাফি ইনজুরিতে পড়ছে। তা থেকে মানুষের সিম্প্যাথি আসছে এটা তো আমিও বলছি। এই সিম্প্যাথিটা স্বাভাবিক জিনিস। আমি একে খারাপ বলিনাই।
#তার আবেগের প্রকাশ, সাংবাদিকদের সাথে ওঠা বসা এগুলোকে আমি ফ্যাক্টর হিসেবে বলেছি খারাপ বলিনি।
#সে একঝাঁক নতুন পারফর্মার পাইছে এটা কি মিথ্যা!!

৫| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:০৬

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

আপনি কি খেলা দেখেন। মনে হয় না। এটা একটা হিট সিকিং সাইকো পোষ্ট।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:০৪

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: হু সেটাই! দেখছেননা পোস্ট দেয়ার একঘণ্টার মাথায় একহাজার হিট পড়ে গেছে! আর সবাই কমেন্টে এসে আমারে সমর্থন করতেছে।

৬| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৪২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পোষ্টটি পড়ে এত রাগ লাগছিল যে বলার মতো না! আমি পোষ্টের বিপক্ষ যুক্তিগুলো লিখব ভেবেই মন্তব্যে আসলাম। দেখি রক্তিম দিগন্ত অসাধারন এক মন্তব্য করেছেন। আমি যা বলতাম তাতো বলেছেনই, আরো অনেক উচ্চমানের যুক্তি দিয়েছেন যা আমি নিজেও দিতে পারতাম না হয়ত। ওনাকে আন্তরিক শুভকামনা এবং +++।

আর এটা আসলেই একটা হিট সিকিং পোষ্ট। আপনি নিজেও জানেন যা লিখেছেন তা শুধু মাশরাফি ভাইয়ের জন্যে পাগল ভক্তদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে নিজের পোষ্টটির দিকে টানা। হিট যদি করতেই হতো, ওনাকে নিয়ে ঠিক কথাগুলোই লিখতেন। তখনও মানুষ পড়ত। মাশরাফি ভাই এমনই এক কিংবদন্তী!

পোষ্টে মাইনাস জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:০৬

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: সামুতে রম্য লিখলেই হিট হওয়া যায়। আমার এত কষ্ট করে আপনাদের মতো সুইট সব ব্লগারের গাল খাওয়া লাগত না।

৭| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:২৯

মাদিহা মৌ বলেছেন: আজাইরা বিশ্লেষণ!

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আপনার অসাধারণ বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

৮| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৩৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এরপর অনেকটা সময় চলে গেছে, বাংলাদেশে ক্রিকেট তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অথচ আমার আগ্রহে ভাটা পড়ছে।" আমারও একই অবস্থা! ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হারের পর থেকেই মোটামুটি ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতির পরিসমাপ্তি ।

আপনার মূল্যায়ন বড্ড সাদামাটা হয়েছে, বলতে গেলে মাশরাফিকে ছোটই করেছেন । এ ধরণের আলোচনা নিরপেক্ষতার দাবি রাখে ।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: মাশরাফি সবার চোখে এত উঁচুতে উঠে গেছে যে নিরপেক্ষ কিছু বলার চেষ্টা করলেও ছোট করেছে বলে মনে হয়।

৯| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৪০

গেম চেঞ্জার বলেছেন: মাশরাফি'র মতো মানুষটাকে খাটো করার চেষ্টা লক্ষ্য করলাম! যদিও কিছু কথা সত্য যেমন- সাংবাদিকদের স্বার্থের ব্যাপারটা! কিন্তু সেটা কি ফাও? মাশরাফিকে নির্দিদ্বায় আমি গ্রেটদের কাতারে ফেলতে পারি(ব্যক্তিগতভাবে)। এবং আমার দেখা সেরা মানুষ মাশরাফি!!

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: হতে পারেন। আমার তাকে ব্যক্তিগত ভাবে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। সবার চোখে তার অবস্থান এত বেশী উঁচুতে যে কিছু নিরপেক্ষভাবে বলার চেষ্টাকেও খাটো করার চেষ্টা মনে হয়

১০| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:২০

ক্লে ডল বলেছেন: এসব লিখে ব্লগে পোষ্ট সর্বাধিক পঠিত হতে পারে, কিন্তু মানসিকতার অবনতি ঘটে!

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৩

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: হু সর্বাধিক পঠিত তো হইল এখন সামু আমারে ট্যাকাটুকা কিছু দিবনা!

১১| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:০৪

সবুজ স্বপ্ন বলেছেন: মাশরাফি খেলা শুরু মানে ২০১৪ সাল থেকে কি ধরনের বল করেছে আপনি দেখেছেন ? অনেক সময় ব্রেক থ্রু, বা রান নিয়ন্ত্রন করা । আর তার আধিনায়কের সুনাম শুধু দেশে না বিদেশের ক্রিকেট বোদ্ধাদের কাছেও সমান জনপ্রিয়। আশা করি কমেন্টস করার আগে একটু বুঝে শুনে করবেন। সবকিছুতে নির্বোধের মত "তাল গাছ আমার " বললেই কিন্তু সমালোচনা হয়না ।
আর মাশরাফি মানুষ তার মাঝে মাঝে ভুল হতেই পারে, আপনি কি সারাজীবন সব কাজ ঠিক করেছেন ?
আর ১৩০ গতিতে বল করলেই কি বা ১৫০ গতিতে বল করলেই কি যদি আপনি রান কন্ট্রোল বা উইকেট না পান ?

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৬

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: মাশরাফি আপনার পছন্দের খেলোয়াড়? তাহলে একটু নিজেরে জিজ্ঞেস করেন যে কি কি কারণে আপনার তাকে ভাল্লাগে?

১২| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৮

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

আবার এলাম,
মাশরাফি একজন লড়াকু মানসিকতার মানুষ। সে বারবার হোচট খেয়ে আবার উঠে দাড়িয়েছে, লড়াই করেছে। পায়ে ইঞ্জেকশন নিয়ে তবেই বল করতে নামে। হাটুতে দশের অধিক সার্জারি। পায়ে নী ক্যাপ নিয়ে বিশ্বকাপে বল করেছে। আর আপনি এই এমন খেলোয়াড়কে নিয়ে আজেবাজে মনগড়া বিশ্লেষণ করে ব্লগে নিজের বিবেগ বিসর্জন দিয়েছেন। আশা করি সেটা বুঝবেন। পোষ্ট হিট করে কি পেলেন পাঠকের ঘৃনা এক্সছাড়া?

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আপনার পয়েন্ট টা কি আমি লিখিনি? ইঞ্জুরি থেকে সিম্প্যাথি আর ইন্সপাইরেশন পয়েন্ট দিয়ে? আর আমার কি ধরণের পোস্ট দেয়া উচিৎ? আপনারা যা পছন্দ করবেন তা? নাকি আমি যা বলতে চাই সেটা?

১৩| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৮

পথহারা মানব বলেছেন: আপনার বিশ্লেষনের ক্ষমতা দেখে না, আমি দিন দিন অবাক হয়ে যাচ্ছি। কিভাবে পারেন ভাই এত উচ্চমানের বিশ্লেষন করতে, গ্রেট!!
মানুষের ভাল গুনগুলো দেখতে চেষ্টা করেন, আপনারও লাভ হবে আর আমাদেরকে জানালে আমারাও লাভবান হব। আর আমি মন্তব্য করতে আসছি আপনাকে শুধু সর্বাধিক পঠিত না, সর্বাধি মন্তব্যের ঘরেও যেন আপনার জায়গা হয় সেই জন্য।

আচ্ছা এর পর কাকে নিয়ে বিশ্লেষন করে আপনার মানসিকতার আসল রুপ দেখাবেন। সালমান শাহ নাকি মুস্তাফিজ নাকি অন্য কেউ।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আমিতো ব্লগে আসার আগে আপনার নাম অনেক শুনছি ভাই। শুধু সামু ক্যান বাংলা ব্লগিং কমিইউনিটর সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগার নাকি "পথহারা মানব"! ভাবতেছি পরের বিশ্লেষণ টা আপনারে নিয়াই লেখমু। আর সবসময় এমনই কইরেন পোস্টে কি বলছে সেটা বাদ দিয়া কয়বার পঠিত কয়টা মন্তব্য এগুলা নিয়াই পইড়া থাইকেন।

১৪| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:১৬

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: আপনার নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ শেষ অবধি আর নিরপেক্ষ থাকেনি। কোথাও কোথাও আপনার মাশরাফির প্রতি নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ বেশি হয়ে গেছে, আবেগ আক্রান্ত মনে হয়েছে।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: মাশরাফিরে ভালবাসার অনেক কারণ রয়েছে। এ নিয়ে বাড়াবাড়ির ও কমতি নেই। কিছু বলদরে দেখছি লেখে "মাশরাফি বাংলাদেশের অষ্টম বীরশ্রেষ্ঠ! তার হাতের বল যেন মুক্তিযোদ্ধার হাতের গ্রেনেড" এগুলা দেখলে ক্যামন লাগে বলেনতো!

১৫| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:১১

মেটাফেজ বলেছেন: স্মরণকালের সেরা বালপুষ্ট। ধারাবাহিকভাবে এমুন ধোনের পোস্ট লেখেন কেমনে?

১৬| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৩১

শরতের ছবি বলেছেন: আমার আর কিছু বলার নেই ঐ অসাধারণ মানুষটি নিয়ে ,সব-ই কমেন্ট এ উঠে এসেছে । বিশেষ করে রক্তিম দিগন্ত এর মন্তব্য পইড়া জান্ডা ঠাণ্ডা হয়া গেছে । তাকেই ধন্যবাদ জানাই।

১৭| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬

আশাবাদী অধম বলেছেন: একটি বিষয়কে বিভিন্ন অাঙ্গিকে বিশ্লেষণ করা বর্তমান সময়ের বহুল চর্চিত একটি রীতি। এতে বাস্তব অথচ লুকায়িত কিছু তথ্য এবং তত্ত্ব উদঘাটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অন্যরা গালি দিলেও আমি আপনার এ প্রচেষ্টাকে এ্যাপ্রেসিয়েট করছি।


তবে সত্য কথা হচ্ছে, এ জাতীয় গবেষণায় ১০% ফ্যাক্টকে এভিডেন্স বানিয়ে অর্জিত ফলাফলকে ১০০% এর ওপর প্রয়োগ করা হয়। ফলে সত্যের অপর পিঠটা জানাতে গিয়ে আসল পিঠটাই এড়িয়ে যাওয়া হয়।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। কিছু মানুষকে আমাদের সুশীল সমাজ প্রশ্নের উর্ধে তুলে ফেলেছেন। ওনাদের দিকে আঙ্গুল তুললেই তাদের সুশীলানুভূতিতে আঘাত লাগে। কি অদ্ভুত!

আমি প্রশ্ন তুলতে চাই। কোন সত্যই আমার কাছে পরম সত্য নয়। আমি প্রশ্ন করে এর সত্যাসত্য যাচাই করে নিব। আমি ব্লগারদের তো একটু অন্যরকম মানসিকতার ভাবছিলাম। কিন্তু সবাই হুজুগে। কি আপদ

১৮| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: ভাল কিছুই তো হচ্ছে।

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২০

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: কি প্রসঙ্গে বললেন ধরতে পারিনাই। একটু ব্যাখ্যা করতেন যদি

১৯| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০

র‍্যাশ বলেছেন: শেষ পয়েন্টটা বাদ দিয়ে আমার কাছে লেখাটা ভালই লেগেছে। শেষ পয়েন্টে সাংবাদিকের সাথে সখ্য রাখার ব্যাপারে মাশরাফিকে পরোক্ষ ভাবে কটাক্ষ করা হয়েছে। আসলে সাংবাদিকের সাথে সখ্য রাখা কোন অপরাধ নয় বরং এটা তার উদার মহৎ মানসিকতার সাক্ষ্য দেয়। আসলে প্লেয়ার আর মিডিয়া নিজেদের স্বার্থে পরষ্পরের উপর নির্ভরশীল। প্লেয়ারদের তারকা বানায় মিডিয়া। মিডিয়া না থাকলে একজন প্লেয়ার যতই ভাল খেলুক লোকজন তার কথা দুই দিন পরই ভুলে যেত। অধিকাংশ মানুষ নিজ নিজ জীবন যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত। কার এসব নিয়ে ভাববার সময় আছে। কিন্ত এই ইস্যুগুলো বাঁচিয়ে রাখে মিডিয়া। কোন প্লেয়ার এক ম্যাচ ভাল খেললেই তাকে নিয়ে সপ্তাহ ধরে নানা প্রকার রিপোর্ট (ছোট বেলায় কি দিয়ে ভাত খাইছে, কোন ব্রান্ডের টয়লেট পেপার ব্যবহার করছে!) প্রকাশ করে। আর এখন তো টিভি চ্যানেল আর অনলাইন নিউজ পেপারের অভাব নেই। ফল জাতীয় দলে দুই ম্যাচ খেললেই এখন কেউ বড় তারকা। অবশ্য এটা তারা করে নিজেদের ব্যবসায়ীক স্বার্থে। জীবন যুদ্ধে ব্যস্ত সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের আফিমের সুখানুভুতি তৈরী করে এরা নিজেদের আখের গোছায়।

মাশরাফি বাংলাদেশের ছোট শহর নড়াইল থেকে উঠে আসা তরুণ, আবেগ প্রবণ। বাংলা দেশের অধিকাংশ মানুষই তাই যেটা পোষ্টে বলা হয়েছে। মাশরাফির বেশ কয়েক বার দুর্ভাগ্য জনক ভাবে ইঞ্জুরির স্বীকার হয়েছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জীবন যুদ্ধে নানা ভাবে বিপর্যস্ত , তারা তাদের এই দুরবস্থার জন্য ভাগ্যকে দোষারোপ করে। এই মানুষগুলো "দুর্ভাগা" মাশরাফির মধ্যে নিজেকে খুঁজে পায় , মাশরাফি তাদের কাছে হয়ে উঠে কাল্ট হিরো।

বলা হয় যে একজন অধি নায়ক ততটাই ভাল যতটা ভাল তার দল। তবুও অধিনায়কের নিজস্ব কোন কৌশল , প্লেয়াদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা অনেক সময় পার্থক্য গড়ে দেয়। সন্দেহ নেই মাশরাফি সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের সেরা দলটাই হাতে পেয়েছে তবুও সাম্প্রতিক সাফল্যে তার অধিনায়কত্বের কিছু ভূমিকা আছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যে ফাষ্ট বোলারদের অবদান বেশ খানিকটা। তার আমলেই বাংলাদেশ নিয়মিত তিন পেসার নিয়ে খেলছে। নিজে পেসার হওয়ায় সে পেসারদের মনস্তত্ব ভাল বোঝে , তাদের বোলিং এ মোটা মুটি এটাকিং ফিল্ডিং সাজায়, তাদের মোটিভেট করতে পারে। সে অন্তরঙ্গ বন্ধু প্রিয় মানুষ, টিমের সবার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক থাকায় তাদের মোটা মুটি মোটেভেট করতে পারে। গেম প্লান তৈরীতে কোচ হাতুরাসিঙ্গের বড় অবদান। তার সঙ্গে তার বোঝা পড়া ভাল। মাশরাফির অধিনায়কত্ব বিশ্ব সেরা পর্যায়ের না হলেও গত ১৮ বছরে বাংলাদেশে যত অধিনায়ক দেখেছি তাদের মধ্যে সেরা বলে রায় দেয়া যায়।

খেলাধুলার মূল উদ্দেশ্য বিনোদন। মানুষের খাদ্য বস্ত্রের মত মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হলেই বিনোদনের প্রসঙ্গ আসে। কাজেই যারা মৌলিক চাহিদা পূরণের মত উৎপাদনশীল( খাদ্য, বস্ত্র ) , সেবামুলক( চিকিৎসা, বাসস্থান ) ও মননশীল (শিক্ষা ) কাজে জড়িত তাদের কাজকে বেশি হাইলাইট করা উচিত । প্লেয়ারদের কাজ কে খাটো করছি না তবে এরাই হওয়া উচিত সত্যিকারের নায়ক। মাশরাফি তার সাক্ষাৎ কার গুলোতে সব সময় এই কথাগুলোই বলে কিন্ত বাংলার জনগণ সেই কথা শুনলে তো !!

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:২২

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার লেখার সাথে মোটামুটি সহমত পোষণ করছি। তবে আমি সাংবাদিকদের সাথে মেশা নিয়ে মাশরাফিকে কঠাখ্য করতে চেষ্টা করিনি। মাশরাফি স্বভাবতই মিশুক প্রকৃতির ও আমুদে হওয়ায় সাংবাদিকদের কাছে সে সহজলভ্য একজন। এবং তার এসকল গুনগুলি অনেক সাংবাদিকদেরই তার ভক্ত বানিয়ে দিছে।

২০| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬

বাকরখানি বলেছেন: নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ পড়ার পর আমার হাসির শব্দে আশেপাশের রুমের লোকজন উঁকি মাইড়া দেইখা যাইতাছে আমারে। হো হো হো হো হো =p~

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:২১

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: মানুষরে হাসাইতে পারলে আমার ভালই লাগে। হাসতে থাকেন ভালা থাকেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.