নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেবার মত তেমন কোন পরিচয় এখনো অর্জন করতে পারিনি। আরও কিছুদিন সময় দিন.।।

আনন্দ কুটুম

কে আমাকে ফুলের মালায় বরণ করল, আর কে আমাকে জুতার মালায় বরণ করল ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি যেন সব সময় সত্য দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হই। এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা।

আনন্দ কুটুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তান প্রীতি.....

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৮

(১)
সরযন্ত্র পুকুর চুরি সমান হয় না। সরযন্ত্র হয় সূক্ষ। কিন্তু ক্ষতি হয় পুকুর চুরি সমান।
২০০৫ সাল। রতন বাগচী নামের এক হিন্দু শিক্ষকের কাছে ম্যাথ শিখতাম। গণিতের জন্য তার বেশ নাম ডাক ছিল। তিনি ক্রিকেট খুব ভালোবাসতেন। একদিন ক্রিকেটের আড্ডা বসলো। স্যার জানতে চাইলেন কে কোন দল সাপোর্ট করিস? আমি বললাম পাকিস্তান। তিনি জানতে চাইলেন পাকিস্তান কেন সাপোর্ট করি? পাকিস্তান যে বাংলাদেশের প্রধান শত্রু, তারা যে কি অমানবিক অত্যাচার করেছে ভুলে গেছিস?
আমি বললাম- ভাই ভাই তো একটু ঝগড়া লড়াই হতেই পারে। আমাদের আপন ভাই ভাইয়ের মাঝে হয় না? (এই কথাটা বছরখানেক আগে এক বড় ভাইয়ের মুখে শুনেছিলাম).
এবার স্যার গেল রেগে। এতোটা রাগ আমি আগে কখনো দেখিনি। বিষয়টি যেহেতু পড়ালেখার বাইরের তাই তিনি রেগে গেলেও গায়ে হাত দিলেন না। এর পরে তিনি তার বক্তব্য গড়-গড় করে বলে গেলেন। সেদিনের মত পড়ালেখা বন্ধ। কোচিং শেষে বের হয়ে এসে মনে মনে দিলাম গালি - "শালা হিদু কোথাকার। তুই তো ইন্ডিয়া সাপোর্ট করবিই। তুই হিদু বলেই তো পাকিস্তান সহ্য করতে পারিস না। "
.
(২)
২০০৬ আমি মনের সুখে তখনো পাকিস্তান সমর্থন করে যাচ্ছি। সামনে মাতৃভাষা দিবস। ততদিনে বাইরের বিশ্বের সাথে একটু আধটু পরিচয় ঘটা শুরু হয়েছে। ৯ম -১০ম শ্রেনীর ভাষা শিক্ষা বইটা পড়তে গিয়ে চোখে পড়ল ২১ ফেব্রুয়ারী নিয়ে কিছু অমুল্য লেখা। আমি যতই পড়ি ততই বরফের মত ঠান্ডা হয়ে যাই। এত সরযন্ত্র এত নির্যাতনের ফল আমার স্বাধীনতা? তা হলে সেদিন যে বাগচী স্যারকে গালি দিয়েছিলাম। এই সাহস আমি কোথায় পেলাম? এই গালি আমার মস্তিষ্কে কে ঢুকাল?
.
(৩)
হিসাবটা কি মেলানো যায়? এটা একটা সরযন্ত্র। খুব সুক্ষভাবেই আমরা এই সরযন্ত্রের স্বীকার। আমাদের শেখানো হয়- পাকিস্তান বাংলাদেশ ভাই ভাই, আমাদের শেখানো হয় রতন বাগচীরা হিন্দু বলেই তারা ভারতকে সাপোর্ট করে। আমাদের সেখানো হয় ওটা কোন যুদ্ধ না, ওটা ছিল গন্ডগোল। এই শিক্ষা থেকেই তৈরী হয় পাকিস্তান ক্রিকেট প্রীতি, পাকিস্তান ক্রিকেট প্রীতি থেকে আসে পাকিস্তান প্রীতি, পাকিস্তান পণ্য প্রীতি। সেখান থেকে আসে বাংলাদেশ বিরোধী, জাতির পিতা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী মনোভাব। যার শেষ পরিনাম ভাঙ্গা শহীদ মিনার, মন্দিরে আগুন বা রাজাকারের জানাজায় মানুষের ঢল।
.
(৪)
এই হিসাবটা শুধু একদিকেই না। উভয় দিকেই আছে। খুব ছোটবেলায় ক্রিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তাম। মানে খেলা ধুলা বাধ্যতামূলক। পড়ালেখা অপশনাল বিষয়। আমাদের ক্রিকেটের কোচ ছিলেন ইমদাদুল বাশার রিপন। হাবিবুল বাশার সুমনের মেঝ ভাই। আমার এক বন্ধু একবার বলেছিল "আমি কখনোই বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমে খেলব না। খেলতে যদি হয় ইন্ডিয়ান টিমে খেলব।" শুনে আমি এতোটাই আহত হয়েছিলাম যে রাগে দুক্ষে কথাটা কোচের কানে দিয়েছিলাম। কোচ শুনে ওকে ডেকে বুঝিয়ে বলেছিলেন-" সব কিছুর আগে দেশ প্রেম। দেশ প্রেমকে ছাপিয়ে কখনোই তুমি বড় হতে পারবে না। সে হোক ক্রিকেট, হোক ফুটবল। সুমনকে দেখ, (হাবিবুল বাসার সুমন ভাই ছিল আমাদের আইডল) সুমনকে কোটি কোটি টাকা দিলেও কিন্তু সে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাবে না। " ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যে আমার সেই বন্ধু এখন মুদীর দোকানি। তার আর ইন্ডিয়ান ক্রিকেট দলে খেলা হয়নি।
কিছুদিন আগে এক শর্ট ফিল্ম মেকারের সাথে পরিচয় হল। সে অনেক যুক্তি দিয়ে তার তার পাকিস্তান প্রীতিকে হালাল করতে চাইল। তার সব থেকে বড় যুক্তি হল- "আমি ছোট বেলা যাদের খেলা দেখে দেখে বড় হয়েছি, তাদের সাপোর্ট করব এটাই তো স্বাভাবিক।" এই চলচ্চিত্র মেকারের দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আমি হতবাক। ভাবুনতো এই মানুষটা জনপ্রিয় হলে কি প্রক্রিয়ায় পাকিস্তান প্রীতি প্রচার করবে? এর পর আমি তাকে কিছু কথা বলেছিলাম। তিনি আমার কথার মর্ম বুঝেছিলেন কি-না জানি না।
এভাবে একটু একটু করে আমাদের মস্তিষ্কে পাকিস্তান ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আমরা অসাম্প্রদায়িক, আধুনিক, বৈশ্বিক হওয়ার ভান করে পাকিস্তান প্রীতিকে হালাল করে চলি.......

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:০৭

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: সুমনকে কোটি কোটি টাকা দিলেও কিন্তু সে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাবে না ???

But he went India 4 ICL.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.