নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেবার মত তেমন কোন পরিচয় এখনো অর্জন করতে পারিনি। আরও কিছুদিন সময় দিন.।।

আনন্দ কুটুম

কে আমাকে ফুলের মালায় বরণ করল, আর কে আমাকে জুতার মালায় বরণ করল ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি যেন সব সময় সত্য দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হই। এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা।

আনন্দ কুটুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাঁটাতারে ঝুলে থাকে আমার প্রেমিকার লাশ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৪

কি আজব ট্রেন বানিয়েছে এরা। দুই তিনটা বগী পর পর গন্ডারের শিং এর মত মাথার উপরে একটা করে শিং। এগুলো নাকি কারেন্টের কানেকশন। উপর দিয়ে যে নিরবিচ্ছিন্ন কারেন্টের লাইন গিয়েছে, এই শিং দিয়ে সেই লাইন থেকে কারেন্ট টেনে নেওয়া হয়। দেখে বেশ হাসি পায়। গোয়েন্দা বইতে কয়লা দিয়ে চালিত ট্রয় ট্রেনের কথা পড়েছি। স্কুল থেকে যেবার প্রথম স্কাউট ট্রেনিং নিতে খুলনা গেলাম তখন ট্রেনে করে গিয়েছিলাম। দল বেধে সবাই মিলে উঠেছিলাম কমলাপুর রেল ষ্টেশন থেকে। সেগুলো নাকি তেল দিয়ে চালাতে হয়। জীবনে এই প্রথম কারেন্টের ট্রেন দেখলাম।
ট্রেন থেকে নেমে প্লাটফর্মের এক পাশে দাঁড়িয়ে আছি। ষ্টেশনের নাম শিয়ালদাহ ষ্টেশন। শুনেছি পৃথিবীর ব্যস্ততম ষ্টেশন গুলোর মাঝে একটা। সত্য মিথ্যা ভাই জানি না। মানুষ গুলো পিঁপড়ার মত ছোটাছুটি করছে। কে যে কোন দিকে যাচ্ছে আর কার উদ্দেশ্যই বা কি বোঝা বড় ভার। কিছুক্ষণ পর পর হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। ফাকা প্লাটফর্মে এসে নতুন ট্রেন থামছে। যাত্রী নামছে, হকার নামছে, মালপত্র নামছে। ষ্টেশনের সবুজ শার্ট পড়া কুলীরা দৌড়াদৌড়ি করে সেই সব মালপত্র মাথায়, কাধে, ট্রলিতে করে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ গুলোও কেমন জানি অদ্ভুত। একেক জন একেক ভাষায় কথা বলছে। কেউ হিন্দি, কেউ উর্দু, কেউ ইংরেজী, কেউবা আবার বাংলায়। এদের বাংলা বলার ধরণও বেশ অদ্ভুত ভঙ্গিতে। শুনলে হাসি আটকে রাখা দুষ্কর।
কিন্তু এই মুহূর্তে আর হাসি আসছে না। টেনশনে ঘাম ছুটে যাবার অবস্থা। সুরেশ কাকু বলেছিল আমি ট্রেন থেকে নামার আগেই সে পৌছে যাবে। জানিনা সে এসেছে কি-না। আসলেও এই লক্ষ লক্ষ মানুষের মাঝে খুঁজে পাওয়াটাও তো চারটা খানি কথা নয়। বনগা বর্ডার পার হওয়ার পর একটা দোকান থেকে তাকে মোবাইল করেছিলাম। এত দেরি তো করার কথা নয়। সুরেশ কাকু নলীন কাকুর ছোট ভাই। একবার আমাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন দুই ভাই মিলে। সেবারই প্রথম দেখা। এখানের মানুষজন যেভাবে কথা বলে, নলীন কাকু, সুরেশ কাকুও সেভাবে কথা বলেন। নলীন কাকুর বাবা পরিমল ব্যানার্জীর সাথে আমার দাদুর বেশ ভাব ছিল। একই স্কুলে পড়ত। পাশাপাশি বাড়ি ঘর। বয়সও ছিল না-কি পীঠেপিঠী। শুনেছি সাতচল্লিশে দেশভাগের সময় পরিমল ব্যানার্জী সপরিবারে কলকাতা চলে আসেন। তাদের ফেলে আসা বাড়িতে এসে ওঠে হাসেমের দাদুরা। হাসেমের দাদা ছিলেন তত্কালীন মুসলিম লীগের নেতা। পরে অবশ্য তিনি জামাতের রাজনীতি করেছেন। দাদুর মুখে শুনেছি এর পর বহুবার পরিমল ব্যানার্জী আমাদের পুরান ঢাকার ঐ বাড়িতে গিয়েছেন। যতবার গিয়েছেন ততবারই হাসেমদের বাড়ির দেওয়াল, উঠোন, পুকুর পাড়, পাতকুয়োর দড়ি ধরে আছাড়ি-বিছাড়ি কান্না করেছেন। এগুলো সব শোনা কথা। এগুলো দেখার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য কোনটাই আমার হয়নি। কিন্তু নলীন কাকুর কান্না দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। আমার জ্ঞান হওয়ার পর নলীন কাকু যেবার প্রথম আমাদের বাড়িতে গেলেন সেদিন আমাদের বাড়ির রেলিঙ্গে দাড়িয়ে হাসেমদের বাড়ির দিকে তাকিয়ে গগন ফাটিতে চিত্কার করে কান্না করতে লাগলেন। এই কান্নার মানে কি আমি বুঝি না। এতগুলি বছর কেটে গেছে। ঘর বাড়ি কি আর সেই আগের মত আছে? হাসেমদের আগের এক তলা বাড়ি এখন আড়াই তলা হয়েছে। দুই তলার ছাদে ছোট একটা টিনের চাপড়া। সেই পুকুর নেই, পুকুর ঘাটও নেই। হাসেমের বাপ-চাচাদের মাঝে হাতাহাতি, কেচকাচারি হয়ে সব ভাগাভাগি হয়ে গেছে। পুকুরের অংশটুকু পেয়েছিল হাসেমের মেঝ চাচা। তিনি সেই পুকুরটাকে বেচে দিয়ে লন্ডন চলে গেছেন। এর পরে সেই পুকুরে মাটি পড়ল, দালান উঠলো, নতুন নতুন মানুষও আসলো সেই দালানে। আমাদের বাড়ির কোল ঘেসে এতবড় দালান উঠলো যে আমাদের বাড়িটা পুরো ঢেকে যাওয়ার জোগাড়। এখন আর আমাদের বাড়ির ছাদে আগের মত রোদও আসেনা আলোও আসেনা।
(২)
-দাদা টাইম কত?
-আমি চমকে উঠলাম। আমাকে বলছেন?
-জি দাদা, টাইমটা কত?
আমি ঘড়ি দেখে নিয়ে বললাম -১২ টা ৩০ মিনিট. পাশ থেকে আরেকজন মধ্য বয়সী ভদ্রলোক বলে উঠলেন -ঠিক বলছেন তো দাদা? আরেকবার দেখুন তো? আমি আবার হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম। ভুল তো হয়নি ঠিকই তো আছে।
-হ্যা ১২ টা ৩০ মিনিটই তো বাজে।
অমনি মধ্য বয়স্ক লোকটা বলে উঠলেন- ১২ টা ৩০ বাজে না, আপনার ঘড়িই বাজে। ঘড়ির ডাক্তার দেখান.
আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রথম লোকটি ট্রেনের দিকে ছুটে গেল। মাইকে এক মহিলার ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠ ভেসে আসছে “রানাঘাট গামী, বারাকপুর লোকাল ট্রেনটি ৫ নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাবে। ট্রেন ছাড়িবার সময় ১২টা ১৫ মিনিট”। এর পর যথা রীতি তিনি হিন্দি ও ইংরেজিতে বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করতে লাগলেন। হটাৎ করে মাথায় এলো বর্ডার পার হবার পরে তো ঘড়ির টাইম ঠিক করা হয়নি। ভারতের টাইম তো বাংলাদেশ থেকে ৩০ মিনিট পিছিয়ে।
খুব পানির পিপাসা পেয়েছে। পানি খেতে হলে প্লাটফর্মের ঐদিকটাতে যেতে হবে। কিন্তু ততক্ষণে যদি সুরেশ কাকু চলে আসে? সুরেশ কাকুরা যেদিন ঢাকায় গিয়েছিল সেদিন আমি আর বাবা কল্যানপুর বাস স্টান্ডে গিয়ে আগে থেকেই বসে ছিলাম। কাকুরা গেলে বাবা নিজে লোক পাঠিয়ে মাওয়া থেকে টাটকা ইলিশমাছ আনালেন। মা সেই মাছ দিয়ে তিন পদ রান্না করলেন। সর্ষে ইলিশ, শাপলা দিয়ে ঝোল আর পিয়াজ দিয়ে মচমচে ভাজি। কাকুরা গরুর মাংস খায় না বলে বাবা কড়া করে মাকে বলে দিলেন -ওরা যে কয়দিন থাকবে সেই কয়দিন যেন কেউ ভুলেও গরুর মাংসের নাম মুখে না নেয়। নলীন কাকুরা গেলে সেবার বাড়িতে সাজ সাজ এক রব পড়ে গেল। আমি আর সুরেশ কাকু বাবার ৮০ সিসির মোটর সাইকেলটা নিয়ে পুরো ঢাকার শহর চোষে বেড়ালাম। টিএসসি তে বসে চা খেলাম। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখে তো তার চোখ ছানাবড়া অবস্থা।
-তোদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এত বড়?
-হ্যা! কেন কোলকাতায় বিশ্ববিদ্যালয় নাই?
-আছে, তবে এত বড় না। কোলকাতায় যতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় আছে সব গুলোকে তোদের এই একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে।
-তোমার কথা শুনে বেশ মজা পেলাম।
-হ্যা রে। তোদের দেশটা অনেক সুন্দর। মানুষগুলো বড়ই ভালো। তোদের দেশটাতে থাকতে পারলে ভালই হত। কি দুঃখে যে কোলকাতায় থাকি?
সুরেশ কাকুরা কি দুঃখে কোলকাতায় থাকে সেটা বোঝা আমার জন্য বড়ই অসম্ভব কাজ। সুরেশ কাকুরও সেটা ঠিকঠাক বোঝার কথা না। এই দুঃখ বুঝেছিলেন সুরেশ কাকুর বাবা আর তার অসুস্থ ঠাকুরদা। দেশভাগের সময় নলিনী কাকুর ঠাকুর দার বয়স ছিল প্রায় সত্তর বছর। আজ যায়, কাল যায় অবস্থা। ঐ বয়সেই পরিমল ব্যানার্জী তার মৃতপ্রায় বাপকে নিয়ে রিফিউজি হয়ে গেল। এই শোক সামলাতে না পেরে কলকাতা আসার বছর খানেকের মাঝেই নলীন কাকুর ঠাকুরদা মারা যায়। পরিমল ব্যানার্জী এখানে বিয়ে করলেন, সংসার পাতলেন। নলিনী কাকু আর সুরেশ কাকুর জন্মও হল ভারতে। কিন্তু কিসের মায়ায় যে নলিনী কাকু হাসেমদের বাড়ি দেখে কেঁদেছিলেন আমি জানি না।
সুরেশ কাকু কি আসবে না? আমি ঘন্টা খানেক হল দাঁড়িয়ে আছি। মানুষের ধাক্কা-ধাক্কিতে একজাগায় দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। এই নিয়ে তিনবার সরে দাঁড়াতে হয়েছে। বুদ্ধি করে বর্ডার থেকে একটা মোবাইলের সিম কিনে নিতে পারলে ভাল হত।
-কিরে তুই এখানে দাড়িয়ে আছিস, আমি পুরো শিয়ালদা চোষে ফেললাম।
হটাত সুরেশ কাকুর গলা শুনে বুকে দম আসলো। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে জড়িয়ে ধরলাম। সেও সেই চিরচেনা বন্ধুর মত জড়িয়ে ধরে বলল
-কতক্ষণ হল তুই নেমেছিস? ভয় করেনি অচেনা শহরে একা একা আসতে?
-ভয় করবে কেন? আমি কি ছোট নাকি?
-হমমম তুই তো এখন অনেক বড় হয়ে গেছিস। চল.... যেতে যেতে কথা হবে।
-বাড়ি কত দূর কাকু?
-গেলেই তো দেখবি। চল....
-কাকু পানি খেতে হবে আগে।
-চল তোকে কোলকাতার লেবুজল খাওয়াই।
লেবুজল খেয়ে নিয়ে আমরা লোকাল বাসে উঠে বসলাম। বাস এগিয়ে যাচ্ছে রাস্তা একেবেকে। এটাই সেই কোলকাতা? কেমন যেন ঘোর লাগছে আমার। এই শহরেই কি সত্যজিত, রবীন্দ্রনাথ, উত্তম কুমাররা থাকতো? এই শহরে পরিমল ব্যানার্জীর মত আরো একজন রিফিউজি থাকতো। নাম ঋত্বিক ঘটক। তিনিও সব ফেলে, শিকড় বাকড় উপড়ে এপার বাংলায় চলে এসেছিলেন। বড় দুর্বিসহ দিন কেটেছিল তার। বইয়ে পড়েছি। রাস্তার পাশে ইংরেজ আমলের দালান। লাল লাল ইটের দালান, শত শত বছর ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি দালানের ইটে ইটে লেপ্টে আছে শাসন, শোষণ, দেশভাগ, ধর্ম, রায়ট, প্রেম, ঘৃনা আর হারানোর ইতিহাস। এটা সেই কোলকাতা। শিল্পের শহর কোলকাতা, হতাশার শহর কোলকাতা, স্বপ্নের শহর কোলকাতা। বহু বছর আগে লক্ষ লক্ষ মানুষ তার ঘর বাড়ি ফেলে সময়ের স্রোতে ভেসে এসেছিল এই সহরে শুধু বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে। এই শহরেই এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার আর ভারতের প্রথম অস্কার হাতে নিয়ে দুজন পথিক হেটেছিল। আমার যেন ঘোর কাটে না।
বাসটা রাস্তার মোড় ঘুরে নেতাজী ভবনের সামনে এসে দাঁড়াল। রাস্তার মাঝখানে নেতাজী সুবাষ চন্দ্রের একটা মূর্তিও আছে। হ্যা হ্যা মনে পড়েছে। এই লোকটিই তো বলেছিল "তোমরা আমাকে রক্ত দেও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব"। কি স্বাধীনতা তিনি দিয়েছিলেন বাঙালী জাতিকে? রিফিউজি হওয়ার সাধীনতা? ঘরবাড়ির মায়া ভুলে পথে পথে ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা? তুলশী তলায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালানোর দায়িক্ত থেকে খারিজ হওয়ার স্বাধীনতা? এতবছর পরে এসে এই প্রশ্নটি বড় অবান্তর মনে হয়। বাস এগিয়ে চলছে ।
(৩)
নলিনী কাকুদের বাড়িটা গঙ্গা নদীর কাছেই। ছাদে উঠলে হাওড়া ব্রীজ দেখা যায়। সব মিলিয়ে বাড়িতে চার খানা ঘর। ছোট একটা ডাইনিং স্পেস, টয়লেট আর রান্না ঘর। সর্ব সাকুল্যে বাড়ির সদস্য সংখা সাত। নলিনী কাকু, তার দুই ছেলে, এক মেয়ে, সুরেশ কাকু আর দুই ভাইয়ের স্ত্রী। নলিনী কাকুর বড় ছেলে আশুতোষ কলেজে হিস্ট্রিতে পড়ে। বাড়িতে থাকে খুব কম। রাজনীতি করে শুনেছি। মমতা ব্যানার্জির সাথে তার একটা ছবি আছে। বড় করে ঘরের দেওয়ালে টানিয়ে রাখা। ছোট ছেলেটা ক্লাস ফোরে পড়ে। আর এক মাত্র মেয়ে এবার ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়েছে। নাম স্বরলিপি। গান-টান করে হয়তো। সারাদিন এঘর ওঘর করে আর গুনগুনিয়ে বেড়ায়।
রাতে নলিনী কাকু আসলে বিশাল এক আড্ডা বসে বাড়িতে। তিনি খুঁটে খুঁটে আমাদের বাড়ির সবার খবর নেন। মা কেমন আছে? বাবা কেমন আছে? তোমার ছোট ভাই কেমন আছে? তোমার ফুফুরা কি এখনো তোমাদের বাড়ি আসে যায়? সেখ হাসিনা প্রধান মন্ত্রী হওয়াতে আমাদের আসলে কোন উপকার হয়েছে কি না? হাসিনার সরকার যুদ্ধ অপরাধীদের কি সত্যি সত্যি ফাঁসিতে ঝুলাতে পারবে কি না? ইত্যাদি ইত্যাদি....
এমন করে প্রায় প্রায় বাড়িতে আড্ডা বসে। নলিনী কাকু অনর্গল বলে চলেন তার বাপ ঠাকুরদার কথা, তাদের ফেলে আসা অতীতের কথা, চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী থেকে অফিসার হওয়ার কথা। কখনো কখনো কথা বলতে বলতে তিনি তামাক খেতে খেতে কালো হয়ে যাওয়া দাঁত বের করে হাসেন। কখনো বা বাপ ঠাকুরদার কথা বলতে বলতে চোখ দিয়ে পানি ফেলেন। অদ্ভুত এই মানব জনম। এই হাসি তো এই কান্না।
সুরেশ কাকু বিয়ে করেছে বছর দুয়েক হল। তাদের কোন ছেলেপুলে নেই। কাকির বয়স সতের আঠার হবে। দেখতে মন্দ না। বেশ মিশুক মহিলা। সুরেশ কাকু সারাদিন তার ব্যাবসা নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। বড়বাজারে তার একটা প্রসাধনীর দোকান আছে। প্রথম দিকে স্বরলিপির সাথে আমার খুব একটা কথা-বার্তা হতনা। কিন্তু আজ কাল বেশ ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। মাঝে মাঝেই আমার রুমে এসে কি কারণে যেন উকি দিয়ে যেত তখন। অপূর্ব চাহনি তার। ছিপছিপে গড়ন, লম্বা চুল আর কাটা চিবুকে তাকে অপরুপ লাগে। পরিমল কাকুর বড় ছেলে রতনদার রুমেই আমার থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। রতনদা শুধু রাতেই আসে। সুতরাং সারাদিন ঘর ফাঁকাই থাকে। ছোট কাকি মাঝে মাঝে এসে ঝাড়-পোশ করে দিয়ে যান।
(৪)
দুই বছর হল ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছি। দুই দুইবার ঢাকা বিশ্ববিদালয় চারুকলা অনুষদে পরীক্ষা দেওয়ার পরেও চান্স হয়নি। মানসিক ভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েছিলাম। অবশেষে ভারত সরকারের বৃত্তি পেয়ে কোলকাতায় পড়তে আসা। আমি অবশ্য প্রথম পছন্দ হিসেবে শান্তিনিকেতন চেয়েছিলাম। কিন্তু চান্স হল রবীন্দ্র ভারতীতে। বিষয় ‘প্রাচ্য কলা’। ক্লাস শুরু হতে আরও সপ্তাহ দুয়েক বাঁকি। কোন কাজ নেই তাই বিছানায় শুয়েই গড়াগড়ি দিচ্ছি। হাতে চে গুয়েভারার ডায়রি। অনেক চেষ্টা করছি বইটিতে মন দিতে। কিন্তু কোন মতেই মন দিতে পারছিনা। কোলকাতার গরমটা যেন বাংলাদেশ থেকে একটু বেশিই। বাইরে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। যদিও আমি কোলকাতার তেমন কোন জায়গা চিনিনা। স্বরলিপিই একমাত্র ভরসা।
প্রতিদিন বিকাল হলে আমি আর স্বরলিপি বেড়িয়ে পড়ি। কোনদিন ট্রামে চড়ি, কোনদিন বা মেট্রোতে। মাটি ফুরে মেট্রো চলে শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। ট্রামের পু-ঝিক-ঝিক শব্দ শুনতে দারুন লাগে আমার। জীবনানন্দ এই ট্রামে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিল বিশ্বাসই হতে চায় না। প্রেমিকের মত উদার এই বাহন কের প্রান নিতে পারে? আমি আর স্বরলিপি মিলে মাঝে মাঝে ষ্টীমারে চেপে বসি। গঙ্গা পাড়ি দিয়ে বেলুর মঠ, তারকেশ্বর ঘুরে আসি। চমৎকার আনন্দে কাটে দিন। মাঝে মাঝে সন্ধ্যা হলে হাওড়া ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে বড়বড় করে নিঃশ্বাস নেই। কি অদ্ভুত সেতু বানিয়েছে ইংরেজরা। যা আজ কোলকাতার পরিচয়দাতা হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সন্ধ্যা হলে গঙ্গা তার রুপ মেলে ধরে। শত শত ডিঙি নৌকা হ্যারিকেনের টিমটিম আলো জ্বালিয়ে এলোমেলো ঘুরে বেড়ায়। প্রতিটি নৌকায় প্রেমিক যুগল পৃথিবী ভুলে স্বর্গ সুখে মত্ত। দেখে বড় হিংসা হয়। প্রায় প্রায় দুষ্টুমি করে স্বরলিপিকে বলি- চল আমরাও একদিন নৌকায় ভাসি। স্বরলিপিও কম জানে না- যদি কখনো তোমার প্রেমে ভাসি, তবে নৌকায়ও ভাসবো। কথা দিলাম।
স্বরলিপি কখনো আমার প্রেমে ভাসবে কি-না জানি না। কিন্তু ভেসেছিল এক অবাঙ্গালী ছেলের প্রেমে। দেখতে শুনতে মন্দ নয় সে। কিন্তু প্রেম বেশিদিন টিকে নাই। ছেলেটি ছোট-খাট মডেলিং করত। হটাত একদিন মুম্বাইয়ের ডাক পেল। এরপর ওদের দুজনের দুটি পথ দুটি দিকে গেছে বেঁকে। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি বুঝি ওর প্রেমে পড়েছি। কিন্তু মুখ ফুটে বলতে সাহস হয় না, যদি তাতে বন্ধুত্বটা ক্ষয়ে যায়। তাই অনুভূতির মুখে লাগাম দিয়ে নিজের মত করে থাকার চেষ্টা করি।
আমার ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। আমি নিয়মিত ক্লাসে যাই। বেশ কিছু বন্ধু বান্ধবও হয়েছে। এতদিনে আমি নলিনী কাকুদের বাড়ি ছেড়ে মেচে উঠেছি। ক্লাস থেকে বাসায় ফিরেছি। ক্লান্তিতে চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসছে। স্বরলিপিকে ঘরে ঢুকতে দেখে আমি হুরমুর করে বিছানায় উঠে বসলাম। সরোলিপির হাতে বেশ কিছু রজনীগন্ধার স্টিক। আমার দিকে না তাকিয়ে ও বুক সেলফের উপরে রাখা ফুলদানিতে ফুল গুলো সাজাতে লাগলো। কোন মেয়ের সামনে খালি গায়ে বসে থাকাটা বেশ লজ্জার বিষয়। আমি আড়চোখে দেখার চেষ্টা করছি আমার টি-শার্টটা খুলে কোথায় রেখেছিলাম। নিজেকে বেশ অপ্রস্তুত লাগছে।
-চল, আজ আমরা নৌকায় চড়বো। নৌকায় চড়ার সময় চলে এসেছে।
কি বলব বা কি করব বুঝতে পারছি না। এর পর আমাকে আর কিছু বলতেও হয়নি। যা বলার ওই বলেছিল। আমি শুধু একরাশ বিস্ময় নিয়ে আমার হটাত পাওয়া সুখটাকে ছুয়ে দেখছিলাম। এর পরে কখনো নৌকায় করে গঙ্গায় ভাসা, কখনো ভিক্টোরিয়া পার্ক, কখনো গড়ের মাঠ, কখনো কফি হাউস করে দিন কেটে যায়। প্রায় প্রায় সে বাড়ি থেকে আলুপোস্ত, আমডাল, শোলমাছ রান্না করে নিয়ে আসে। খাওয়ার সময় একরাশ মায়া ভরা চোখে তাকিয়ে থাকে।
-কি খাও না খাও তা তো বুঝতেই পারি। কোন কথা না বলে চুপ করে খেয়ে ওঠো।
আমিও ওর সাথে কোন তর্কে যাই না। মাথা নিচু করে খেয়ে নেই। সুযোগ পেলেই আমার রুমে চলে আসে। কি ব্যাপার আলনা এলোনো কেন? দুই দিনেই শার্টটা নোংরা করে ফেললে? আমি না সেদিন ধুয়ে দিয়ে গেলাম? কি ব্যাপার টুকরো কাগজ এখানে পড়ে আছে কেন? বাস্কেটটা আছে কি করতে? ইত্যাদি ইত্যাদি।
হটাত করে কোলকাতাটা আপন থেকে আরো আপন হয়ে ওঠে। বাড়িতে একদিন রোটে গেল, রতনদার কোন এক বন্ধু না-কি দেখেছে তার বোনকে ভিক্টোরিয়া পার্কের ঝোপ-ঝাড়ে বসে এক ছেলেকে চুমু খেতে। এর পর থেকে সবাই স্বরলিপিকে আড় চোখে দেখা শুরু করল। আগের মত আর চাইলেই সে বাড়ির বাইরে আসতে পারেনা। প্রতিদিন ফোনে ফোনে এত কথাবলি, কিন্তু মন ভরেনা।
একদিন নলিনী কাকু বাড়ি এসে ঘোষণা করে দিলেন, মেয়ে দিন দিন কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাচ্ছে। সুতরাং এই মেয়েকে আর ঘরে রাখা যাবে না। কন্যার বিয়ের পাত্র সন্ধান শুরু হল। দুই দিন পর পরই কাকুর অফিসের উৎপল বাবু নানা পেশার, নানা চেহারার পাত্রের ছবি নিয়ে বাড়িতে হাজিরা দিতে থাকে। অবশেষে বিয়ে ঠিক হয় যাদবপুরের সুনীল বসুর ছেলে রাহুল বসুর সাথে। ছেলে দুই বছর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে একটা সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করছে। ছোট কাকিমা আমাদের সম্পর্কের কথা আচ করতে পেরেছিল আগে থেকেই। তিনি আমতা আমতা করে একবার বলেওছিলেন- স্বরলিপির তো সবে মাধ্যমিক পড়ছে। অন্তত গ্রাজুয়েশন স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর না হয় বিয়েটা দেওয়া হোক। কিন্তু বদমেজাজি নলিনী ব্যানার্জীর হুংকারের কাছে ধোপে টেকেনি তার প্রস্তাব। অগত্যা সিদ্ধান্ত হল বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু পালিয়ে যাবোটা কোথায়? স্বরলিপিই উত্তরটা দিল- চল আমরা বাংলাদেশে পালিয়ে যাই।
(৫)
খুব ভোরে দরোজার খট খট শব্দ শুনে দরজা খুলে দেখি স্বরলিপি দাঁড়িয়ে আছে। কাঁধের স্কুল ব্যাগটি বেশ বড়সড়। হয়ত আজিই কোলকাতায় আমাদের শেষদিন। আর হয়ত কখনো ফেরা হবেনা এ শহরে। কেমন যেন মায়া মায়া লাগছে এ শহরটির জন্য। কিন্তু স্বরলিপি ভাসে এক অন্য সুখে। অনেকদিনের জমিয়ে রাখা স্বপ্ন আজ পূর্ণ হবে। ঠাকুরদার নাড়ি পোতা, জন্মের মাটি বাংলাদেশ দেখবে সে। ভবিষ্যতে ঐ দেশটি তার হবে। তার সন্তানের হবে। কত গল্পই না সে শুনেছে ঐ দেশ সম্পর্কে। কত মিথ, কত কল্পনা, কত অশ্রুগাঁথা কাব্য পড়েছে সে।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে ঝামেলা চলছে। পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে ওদেশের মানুষেরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কোন এক রাজনৈতিক দল তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ করে ধেয়ে আসছে। শুনেছি সীমান্ত এলাকা বেশ উত্তপ্ত। বর্ডার গেট দিয়ে যারা বৈধভাবে পারাপার হচ্ছে তাদেরও হয়রানির শেষ নেই। আমার পাসপোর্ট থাকলেও স্বরলিপির পাসপোর্ট নাই। কিন্তু সেটা তেমন কোন বিষয় না। রোজ রোজ কত মানুষ পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া এপার ওপার হচ্ছে তার হিসাব কে রাখে? শুধু কি মানুষ? গরু যাচ্ছে, ফেন্সিডিল যাচ্ছে, স্নো-পাউডার যাচ্ছে, মোটর গাড়ি যাচ্ছে। তার সাথে আর একটি দুটি প্রাণী যুক্ত হলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।
ভাবতে বেশ অবাক লাগছে যে আমি আজীবন স্বদেশ, সার্বভৌমত্ব, দেশপ্রেমের বুলি আউড়েছি, সেই আমি কি-না আজ নিজের সুবিধার্থে সকল আইন কানুন নিজের মত করে বদলে নিচ্ছি। কখনও কি ভেবেছিলাম যে, স্বরলিপিকে নিয়ে এভাবে পালিয়ে দেশে ফিরবো? কেন এই পালিয়ে ফেরা? কেন কাঁটাতারের বেড়া গোলীয়ে চোরের মত নিজের দেশে ফেরা? কেন নিজের ভালোবাসাকে অন্য দেশ থেকে চুরি করে ফেরা? আমার অপরাধ কি আমি মুসলিম? না-কি আমি বাংলাদেশি? না-কি বাঙ্গালীত্ব পরিচয়টি আমার জন্ম পরিচয় নয়?
দালালের সাথে চুক্তি মোতাবেক সে চার হাজার টাকা পকেটে পুরে নিল। এর পর মোটর বাইকে চড়ে বসা। আম বাগান, কাঁঠাল বাগান, তামাকের ক্ষেত, চাষের জমি, বাঁশ বাগান পাড়ি দিয়ে অবশেষে ঘণ্টা দুয়েক পর বাইক থামল এক বাড়ির আঙিনায় এসে। সামনেই কাঁটাতারের বেড়া। এর পরে আর গাড়ি যাবে না। এটুকু পথ পায়ে হেটে যেতে হবে। কাঁটাতার পার হয়ে আড়াই কিলোমিটার হেটে গেলেই দর্শনার বাস পাওয়া যাবে। এর পর চুয়াডাঙ্গা থেকে সরাসরি ঢাকা। ঢাকা কথাটি শুনে বুকের মাঝে কেমন যেন এক গুচ্ছ স্বপ্ন আছড়ে পড়ে।
দূরে একজন বোরখা পড়া মহিলা হন্তদন্ত হয়ে দৌড়ে যাচ্ছে। মাথায় মোটামুটি সাইজের একটা বস্তা। দালালের পরামর্শ মোতাবেক আমরাও ঐ মহিলাকেই অনুসরণ করে এগোতে লাগলাম। মাথার উপরে কড়া সূর্য। এক এক পা করে যত এগিয়ে যাই ততই ভয় এবং স্বপ্ন পুরনের আনন্দ আমাদের আস্টেপিস্টে বেঁধে ফেলে। দুজন দুজনের হাতটা শক্ত করে ধরে চাকা চাকা মাটির ঢ্যালার উপর দিয়ে হাঁটতে থাকি। এই তো আর একটু জমি, কয়েকটা তারকাটা পেড়িয়ে গেলেই আমার স্বাধীনতা। আমার প্রেমের স্বাধীনতা। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে কেনা আমার উন্মুক্ততা। আমার মুক্ত বাতাস। ভাবতে ভাবতে স্বরলিপিকে জড়িয়ে ধরি খুব গভীর করে। আনন্দে চিৎকার করতে ইচ্ছা করে আমার।
হটাত কিছু বুঝে ওঠার আগে দূর থেকে একটা গুলির শব্দ ভেসে আসে। স্বরলিপি তীব্র আর্তনাদে ওর নখগুলো দিয়ে আমার পীঠ খামচে ধরল। মুহূর্তেই আমার সাদা টি-শার্টটি সিঁদুর রঙে ভিজে গেল। দূর থেকে ভেসে আসছে কোলাহল- হল্ট!!!!! আর এক কদম এগবি না। ফায়ার করে দেব।
চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে। পেছন থেকে তিনটি রাইফেল ছুটে আসছে আমাদের দিকে। রক্তাক্ত দুইজোড়া পা তারপরেও বিরাম নেয় না। এগিয়ে চলে স্বাধীনতার দিকে। আরেকটা বুলেট ছুটে আসে। তীব্র একটি ঝাঁকুনি দিয়ে ঢুকে যায় আমার শরীরে। আমি আছড়ে পড়ি থাক থাক সাজিয়ে রাখা তারকাটার প্রাচীরে। বহুরঙ্গিন পোশাক পড়া দানবগুলো ছুটে আসছে। ছুটে আসছে রক্ত পিপাসু রাইফেলস। ছুটে আসছে ইংরেজ চক্রান্ত। ছুটে আসছে মানব ধর্মের বিরুদ্ধে যুগযুগ ধরে গড়ে ওঠা ধর্মীয় বিভেদ। চোখ দুটো আরো ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। মুখের খুব নিকটে আরো একখানা পদ্মমুখ। চোখ দিয়ে টুপ টুপ করে জল পড়ে যাচ্ছে। আমি আলত করে ছুয়ে দিতে চাইছি। পারছি না। হাতদুটো টকটকে লাল হয়ে গেছে। কানের কাছে ফিসফিস একটি কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে।।
-দেখ তোমার হাতে কত রঙ। মুঠি মুঠি সিঁদুর হাতে মেখেও আমার সিঁতিতে সিঁদুর দেবেনা, তা কি করে হয় বল?

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

কৃষ্ণ চুড়ার ফুল বলেছেন: চমৎকার এক কথায় অসাধারণ লেখনী ,ব্যাপক লাগলো দাদা

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৫

আনন্দ কুটুম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই কষ্ট করে এই অধমের লেখা পড়ার জন্য।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৪

সাখাওয়াত সনেট বলেছেন: ওয়াও অসাধারণ....... চমৎকার লিখনি

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৬

আনন্দ কুটুম বলেছেন: যাক!! আপনি বলছেন তা হলে?? জীবন ধন্য। আপনার মত সেলিব্রেটি বলেছে। তা হলে তো কথাই নাই,।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অসাধারণ!
মনে হল একটা সিনেমা দেখলাম| অনন্য| ব্লগে আমার পড়া সেরা গল্পগুলোর লিস্টে এটা থাকবেই

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০০

আনন্দ কুটুম বলেছেন: আপনার কমেন্ট পড়ে ভালো লাগলো। সাধারণত খুব কম মানুষের কথাই শেষ পর্যন্ত মন ছুঁয়ে যায়। আপনার কমেন্টা কেনই যেন মন ছুঁয়ে গেল। লেখাটা লিখেছিলাম বছর খানেক আগে। এখন পড়লে এর মাঝের ভুল গুলো আমি নিজেই বুঝতে পারি। অনেক বেশি দুর্বল লেখা এটা। কিন্তু আপনার ভালো লেগেছে ভেবে ভালো লাগছে। এতোটা অবশ্য আমি আশা করিনি। এটা আমার প্রপ্যও না। কিন্তু লেখাটা আপনার কাছে সিনেমা হয়ে উঠেছে ভাবতেই মনে বাতাস দিয়ে যাচ্ছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১

মাকড়সাঁ বলেছেন: Osadaron oviggotar bornona khubee valo laglo :) :)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০০

আনন্দ কুটুম বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.