নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেবার মত তেমন কোন পরিচয় এখনো অর্জন করতে পারিনি। আরও কিছুদিন সময় দিন.।।

আনন্দ কুটুম

কে আমাকে ফুলের মালায় বরণ করল, আর কে আমাকে জুতার মালায় বরণ করল ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি যেন সব সময় সত্য দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হই। এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা।

আনন্দ কুটুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মমতা দি\'র রাজ্যে থাকি।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৪

'ব্লগ' সিনেমাটি নিয়ে মিডিয়া ডিপার্টমেন্টের সাথে একটা ফর্মাল মিটিং ছিল। কলেজ আগেই আমাকে ইমেইল করেছিল তারা কাজটাকে সাপোর্ট করতে চায়। আমি আমার মত প্রপোজাল সাজিয়ে নিয়ে গেলাম। চাওয়া পাওয়া খুব স্পষ্ট। আমি আমার মত ধিরে ধিরে প্রপোজালটা ব্যাখ্যা করলাম। কমিটি আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনলেন। কেউ কেউ তো খুব উচ্ছ্বসিত। এর মাঝে একজন স্যার প্রশ্নই করে বললেন- আচ্ছা তোমার বয়স কত?? আমি ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলাম। কত আর হবে?? যৌবনের প্রথম প্রহর।
- উঁহু!!! এই মিটিং পরে তোমার যৌবন আছে বলে আর মনে হয় না। সেটা গত হয়েছে বহু আগেই।
- না না। কি বলেন স্যার?
যাই হোক। এমন সময় ডিপার্টমেন্ট প্রধান সবাই থামিয়ে দিয়ে ভারি গলায় কথা শুরু করল। তার কথা শুনে আমি এক রাস বিস্ময়ে ডুবে যেতে থাকলাম। স্যার যা বললেন তা হল
-"বুঝতেই তো পারছ রাজ্যের অবস্থা খুব একটা ভালো না। এখন মাওলানা মমতা ব্যানার্জি ক্ষমতায়। মুসলিমদের ভোট পাওয়ার জন্য কি না করছে। এমন সময় এই সিনেমার দায়িত্ব নেওয়াটা বেশ রিস্কের। সরকার খ্যাপানো কাজ কলেজ করতে চায় না।"
- কি বলেন স্যার?? সরকার খ্যাপানো কাজ হবে কেন? এটা তো বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে করা হয়েছে।
- কিন্তু সম্প্রদায় তো মুসলিমরা। তসলিমার কথা মনে নাই?? বলছে তার থেকে গুণী লেখিকা হয় না। কিন্তু যেই তসলিমা বলছে, কোলকাতা থাকার পার্মিশন দেও। অমনি বলছে হবে না। খেলটা বুঝতে পারছ?
বাসার ঠিক পাশেই একটা বিশাল থাম লাগানো হয়েছে। থামের মাথায় আছে হাজার ওয়ার্টের প্রায় ২০ খানা লাইট। রাতের বেলাও রাস্তা ফকফকা পরিস্কার। থামের সাথে লাগিয়ে রাখা হয়েছে মমতাদির হাসি মাখা এক বড় সাইনবোর্ড। তার দয়ায় স্ট্রিট লাইট হয়েছে বলে কথা। হায়রে ব্রান্ডিং।
কোলকাতার শহরে ঘুরতে ঘুরতে আমি কনফিউসড হয়ে যাই, মমতা ব্যানার্জির ধর্ম কোণটা?? এই বাড়ির সামনে মমতা দিদি মাথায় কাপড় দিয়ে মোনাজাত করছেন, তো দুই পা এগিয়ে গেলেই দেখি দেবী দুর্গার পায়ে প্রণাম ঢুকছেন। এই দেখলাম হাতে তজবি গুনছেন তো পাশের এলাকায় গিয়ে দেখি গলায় ক্রুস ঝুলছে। একেই বুঝি বলে সাঁচ্চা অসাম্প্রদায়িক। কেয়া বাতহে।
যেবার প্রথম পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলাম, সেবার একটা পিভিএস ব্যানারের পাশে ১০ মিনিট হা করে তাকিয়ে ছিলাম। ছবিতে দেখা যাচ্ছে চাষের ক্ষেতে গরু যেভাবে লাঙ্গল গলায় বেঁধে টেনে নিয়ে যায়, মমতা দিদি সেই ভাবে লাঙ্গল গলায় বেঁধে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। মজার ব্যাপার হল যে গ্রাফিক্স ডিজাইনার কাজটা করেছেন, তিনি যে মহান ডিজাইনার তা ছবির দিকে তাকালেই বোঝা যায়। কথাটা বোধে হয় একটু ভুল হয়ে গেল। ছবিতে শুধু মাথাটাই মমতা দিদির। বাকি দেহ কার কাছ থেকে ধার করা হয়েছে, সেটা গবেষণার বিষয় হতে পারে।
মমতা দিদির নানা ঢঙের নানা ধর্মের ছবি আমি দেখেছি। কিন্তু সিঁদুর পড়া মমতা দিদিকে আর দেখা হয়নি। কি জানি কবে হয়ত ঘর থেকে বের হয়েই চোখে পড়ে যাবে মমতা দিদির সিঁদুর পড়ে কোন এক গাছের সাথে লোটকে আছে। বলা তো যায় না!! সময় বড় খারাপ।
- কি দাদা, আসছে মে মাসেই তো বিধান সভার নির্বাচন। তো ভোট কোনদিকে??
- আমাদের কোন ভোট আছে নাকি?? ভোট দিলেও যে, না দিলেও সে। পশ্চিমবঙ্গে একজনই মরদ আছে। মমতা ব্যানার্জি।
- আর বাকি সব??
- কোই, কেউ একবার বলুক না, সিপিএম করে। একেবারে পুঁতে ছেঁড়ে দেবে।
কি বুঝলেন পাঠক?? চলছে এভাবেই। এপার বাংলা বলেন বা ওপার বাংলা বলেন। চিত্র কিন্তু একই।
বাড়ির পাশের মাঠে ফুটবল খেলার আসর বসেছে। জমকালো আয়োজন। মাইকটা ঠিক আমার বাড়ির দিকে তাক করা। ভাষ্যকার সকাল থেকে যে কয়বার "মমতা ব্যানার্জি" শব্দটা উচ্চারন করেছেন, ঠিক সেই কয়বার "ফুটবল" শব্দটা উচ্চারন করেছেন কি না সন্দেহ। একবার মনে হল মাঠে মনে হয় স্বয়ং দিদিই খেলছে।
- হ্যা খেলছেই তো। তবে ফাঁকা মাঠে। অপজিট দল নেই বলে তো আর খেলা থেমে থাকে না। ছেলের বাপও তিনি, মেয়ের বাপও তিনি।
নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততোই শহর জুড়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের হিড়িক পড়েছে। প্রায় দেখি শত শত গাড়ি ভরে ভরে দাঁড়ি টুপি ওয়ালারা ইসলামিক সমাবেশে যায়। ট্রাকের উপরে দাঁড়িয়ে কোচি কোচি বাচ্চারা স্লোগান দেয়। আর গাড়ির সামনে টাঙ্গানো থাকে দিদির মিষ্টি হাসির ছবি।
বাংলাদেশে যারা ভাবেন যে এদেশে মুসলিমরা বড় কষ্টে আছে। এগুলো দেখলে তাদের নিজেদেরই লজ্জায় নাক কাঁটা যাবে। কি বহাল তনিয়তে চলছে দিদির রাজ্য আর ডাঁড়ি টুপি সিঁদুর।
কেবল কষ্টে আছে সেই মানুষ গুলো যারা দুকলম লিখতে চায়। লিখতে জানে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৫

মাকড়সাঁ বলেছেন: সাঁচ্চা অসাম্প্রদায়িক। সম্পূর্ণই একমত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.