নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেবার মত তেমন কোন পরিচয় এখনো অর্জন করতে পারিনি। আরও কিছুদিন সময় দিন.।।

আনন্দ কুটুম

কে আমাকে ফুলের মালায় বরণ করল, আর কে আমাকে জুতার মালায় বরণ করল ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি যেন সব সময় সত্য দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হই। এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা।

আনন্দ কুটুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিপোক্রেট বাঙালি সমাজ ও বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম চুম্বন দৃশ্য।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৫

প্রকাশ্যে চুমু খাওয়াটা বরাবরই বাঙালি সমাজে ক্ষমার অযোগ্য পাপ বলেই গণ্য হয়ে এসেছে। আর সেই চুমু যদি দেখানো হয় সিনেমার মত গণমাধ্যমে তা হলে তো কথাই নাই। বিদেশী ভাষার সিনেমায় চুমু খাওয়া দেখলে আমারা যতটা পুলকিত হই ঠিক ততোটাই অসম্মানিত হই নিজের ভাষার সিনেমায় চুমু খেলে। জাত গেল, সমাজ গেলে, ধর্ম গেল, শুধু রইল বাকি আমাদের নস্ট ইগো খানা। জাতিগত হিপোক্রেইসি আজো রয়ে গেছে আমাদের।
সম্ভবত বাংলা সিনেমায় প্রথমে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া হয় সত্যজিতের- "ঘরে বাইরে" (১৯৮৫) তে। আর এই বৈপ্লবিক কাজটা করেছিলেন ভিক্টর ব্যানার্জি এবং সতীলেখা সেনগুপ্তা। একবার ভাবুন তো ১৯৮৫ সালের বাঙালি সমাজে তখন কি বিতর্কই না তৈরি হয়েছিল?? স্বয়ং সত্যজিৎ রায় জিনি আর কিছুদিন পরেই অস্কার পাবেন। ইতোমধ্যে যার ঘর ছেয়ে গেছে জাতীয়, আন্তর্জাতিক পুরুস্কারে। ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক বলতেই যখন সবাই এক মাত্র সত্যজিতকে বোঝে। এমন একজন মানুষকে তখন বলা শুরু হল "ব্লু ফিল্ম" এর ডিরেক্টর। আজ যে টালিগঞ্জের নায়ক নাইকারা কারনে অকারনে পর্দায় চুমু খায়। সেই চুমু খাওয়ার কন্টকাকির্ন পথ খানা কিন্তু এই মানুষ গুলোই পরিস্কার করেছিলেন। টালিগঞ্জের সিনেমায় মটামুটি লেভেলে আর্ট হিসেবে যৌনতা স্থান করে নিতে পারলেও সে আর্ট বর্ডার ক্রস করে এখনো বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি। এখনো ইহা কালচার পরিপন্থী বলে গণ্য হয়। কিন্তু প্রশ্ন জাগে মনে, কালচার আসলে কি?? ইহা কি গাছে ধরে?? না কি মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে?? সৃষ্টি কি সবাই এক সাথে করে?? নাকি পরিবর্তনটা একজন দুই জনের হাত দিয়েই শুরু হয়?? বাঙালি ইতিহাসের কোন মহান ব্যাক্তি প্রকাশ্যে চুমু খেলে একে মুলত কালচারের অংশ হিসেবে আমরা ধরে নিতে পারতাম? বা কত মানুষ এক সাথে চুমু খেলে সেটা আমাদের কাছে কালচার হয়ে উঠত?? বিষয় গুলো খুব জানতে ইচ্ছা করে।
আমার দেখা বাংলাদেশী সিনেমায় যৌনতার সব থেকে স্পষ্ট উপস্থাপন হল মোরশেদুল ইসলামের- "দুখাই" সিনেমা। এতোটা স্পষ্ট ও শৈল্পিক ভাবে বাংলাদেশী আর কোন সিনেমায় যৌনতা স্থান পেয়েছে কি না আমি জানি না। যাক সে কথা। আজকের আলাপটা সেদিকে নয়।
১৯৮৫ সালে সতীলেখা সেনগুপ্তা যে সাহসী কাজটা করেছিলেন তা আজকের দিনেও অনেক নারী অভিনেত্রী করার সাহস দেখান না। কিন্তু কি কারনে এমন একজন সাহসী অভিনেত্রী "ঘরে বাইরে" সিনেমার পরে নিজেকে সিনেমা জগত থেকে গুটিয়ে নিলেন, সেটা বড় রহস্য। দীর্ঘ ৩০ বছরের বিরতির পরে তাকে আবার পাওয়া গেল "বেলা শেষে" চলচ্চিত্রে।
বেলা শেষে যখন মুক্তি পায় তখন আমি ভারতে। কিন্তু নানা ব্যাস্ততার কারনে সিনেমাটি আর দেখা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে ইউটিউবের দৌলতে "বেলা শেষে" দেখা হল। এক কথায় বলব চমৎকার। বাংলা সিনেমার জগতে এতো চমৎকার স্ক্রিনপ্লে খুব কম দেখা যায়। এতোটা পরিপাটি আর হিসাব মেপে চরিত্রায়ন আমি খুব একটা দেখিনি। প্রতিটা চরিত্রের অভিনয় দক্ষতা, ডায়লগ থ্রো করার ক্ষমতা আমাকে অভিভূত করেছে। সিনেমা দেখতে দেখতে ভুলেই গিয়েছি আমি কি আসলে ফিকশন দেখছি না ডকুমেন্টারি??
কামার আহমেদ সাইমনের- "শুনতে কি পাও" যেমন ডকুমেন্টারি উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েও ফিকশন হয়ে ওঠে। ঠিক বেলা শেষে সিনেমাটাও দেখতে দেখতে দর্শকে টেনে নিয়ে যায় একেবারে বাস্তবের সেই ভূমিতে। যে ভূমিতে বাঙালি এই পরিবার গুলোর গোড়াপত্তন হয়।
আমরা একই সাথে একই চালার নিচে ঘুমাই, একই হাড়ির ভাত খাই। কিন্তু ঠিক কমই একজন আরেকজনের মনের অলিগলি চিনি। দীর্ঘ ৫০ বছর এক সাথে ঘর করার পরেও ঠিক একজন আরেকজনের যেন চেনা জানা হয়ে ওঠে না। টেকনোলোজি, নাগরিক জীবন, অর্থের মোহ শেষ পর্যন্ত আমাদের কোথায় নিয়ে চলে যায়, সেটা খুব সুন্দর ভাবেই উঠে এসেছে সিনেমায়।
আমাদের দায়িত্ব গুলো যে এক সময় অভ্যাসে পরিনত হয়ে ওঠে, সেগুলো উঠে এসেছে খুব সুনিপুণ ভাবে। আর ঐ যে, নারী স্বাধীনতা!!! নারীর এক পা ঘরে বেঁধে দিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত তার কানে স্বাধীনতার বাণী ঢালি এগুলো যে বড় প্রহসন তাও ফুটে উঠেছে সিনেমায়। নারীর ক্ষমতায়ন, বিকৃত স্বাধীনতা, ফার্চুয়াল লাইফের ইম্প্যাক্ট সব কিছুই স্পষ্ট।
কিন্তু সতীলেখা কেন এতদিন আমাদের তার এই মনমুগ্ধকর অভিনয় থেকে বঞ্চিত করেছেন সেই হিসাব আমি কোন মতেই মেলাতে পারছি না। এতো সাবলীল অভিনেত্রী বাংলায় খুব কমই জন্মেছে। যদি কখনো দেখা হয় তবে অবশ্যই এই প্রশ্নের জবাব চাইব। আর সুযোগ পেলে একদিন তাকেও দাড় করাব আমার ক্যামেরার সামনে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৬

মাধব বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন কুটুম সাহেব।

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫০

নূর আল আমিন বলেছেন: গরু ছাগল পশুপাখিও রাস্তায় সেক্স করে, আপনিও করুন

৩| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪

মাকড়সাঁ বলেছেন: চুমু সংলাপ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.