নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেবার মত তেমন কোন পরিচয় এখনো অর্জন করতে পারিনি। আরও কিছুদিন সময় দিন.।।

আনন্দ কুটুম

কে আমাকে ফুলের মালায় বরণ করল, আর কে আমাকে জুতার মালায় বরণ করল ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি যেন সব সময় সত্য দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হই। এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা।

আনন্দ কুটুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাস্তু শাপ

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৪

লিনেয়ার ফর্ম, বলতে গেলে চলচ্চিত্র থেকে প্রায় বিদায় নিয়েই ফেলেছে। যদিও চলচ্চিত্রে লিনেয়ার ফর্মের একটি আলাদা আবেদন আছে। নন-লিনেয়ার ফর্ম নিয়ে চলছে ব্যাপক গবেষণা ও প্রয়োগ। এক সময় ছিল যখন উপমহাদেশীয় সিনেমার নাটকিয়তা, সাস্পেন্স বা থ্রিল তৈরি হত সরল গল্পের ভাজে ভাজে। ডায়লগ, অভিনয় বা ক্যামেরার গতিই ছিল শেষ ভরসা। বর্তমানে উপমহাদেশীয় সিনেমায় সেই নাটকীয়তা, সাস্পেন্স বা থ্রিল তৈরি করার দায়িত্ব এখন অনেকটাই সম্পাদক/ এডিটরের কাঁধে। নন-লিনেয়ার ফর্মের ব্যাবহার বা প্রয়োগ আজ এমন অবস্থায় উপনীত হয়েছে যে, শুধু বর্তমান, অতীত, ভবিষ্যত বা বাস্তব ও স্বপ্নের নিশ্রনই না, একই সাথে একাধিক গল্প বর্ণনা ও বর্ণনার ঢঙে এসেছে এক আমূল পরিবর্তন। গল্পের মাঝে গল্প ও তার মাঝে আরও একটি গল্প বা বাস্তবের মাঝে কল্পনা ও তারও মাঝে পৃথক আরও একটি কল্পনা এমন অসংখ্য ঢঙে গল্প বলার ট্রেন্ড চালু হয়ে গেছে। দিন দিন লিনেয়ার ফর্মের চলচ্চিত্র থেকেও দর্শকের রুচি উঠে যেতে শুরু করেছে। আগের তুলনায় দর্শক এখন অনেক মেধাবী ও বিচক্ষণ।
আমার মতে নন-লিনেয়ার ফর্মের একটি বড় দিক হল এখানে দর্শক নিজেও চলচিত্রের কারিগরি দিকের অংশ হয়ে ওঠেন। এখানে সিনেমা ফাইনাল এডিট হয় দর্শকের মাথার ভেতরে বা চিন্তায়। লিনিয়ার ফর্মে যেখানে দর্শক কেবলই নীরব দর্শক। সেখানে নন-লিনেয়ার ফর্মে দর্শক এক এক জন এডিটরও বটে। ফলে দর্শকের সাথে সিনেমার যেমন প্রত্যক্ষ কানেকশন তৈরি হয় ঠিক সেভাবে দর্শকের দায়িত্বও বেড়ে যায়।
কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত "বাস্তু শাপ" নন-লিনেয়ার ফর্মে করা তেমনই একটি সার্থক চলচ্চিত্র। গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা, অভিনয়, আবহ সংগীত বা গতি/টেম্পোর নৈপুণ্যতা নিয়ে দর্শকের মাঝে আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু পরিচালকের স্রেফ গল্প বলার যে অভিপ্রায় তা শতভাগ পূর্ণ হয়েছে বলেই আমার ধারনা এবং একটি গানের মধ্য দিয়েও তিনি তা প্রকাশ করেছেন।
গল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দু হল "বাস্তু শাস্ত্র"। বাস্তু শাস্ত্র মূলত প্রাচীন স্থাপত্য বিদ্যার এক জিওম্যাট্রিক ফর্মুলা। যেখানে প্রধানত পরিবেশের সকল উপাদানগুলোর সাথে স্থাপত্যের পরিমিত পারস্পরিক সংযোগ ঘটানো হয়। বর্তমানে অধিক জনসংখ্যা বহুল গরীবি দেশে প্রমোটারদের রাজ্য বিস্তারে বা মাল্টিপ্লেক্সের বাজারে এগুলো এখন কেবল কিতাবি আলোচনা ছাড়া আর কিছু না।
সিনেমাটিতে বাড়ির বা আবাস স্থলের "বাস্তু শাস্ত্রের" বর্ণনার আড়ালে আরও একটি "বাস্তু শাস্ত্রের" গল্প বলতে দেখা যায়। যে বাস্তু শাস্ত্র কোন বাড়ির নয়, সেটা পারস্পরিক সম্পর্কের বাস্তু শাস্ত্র। কখনো কখনো ঘরের বাস্তু শাস্ত্রের মত পারস্পরিক সম্পর্কের বাস্তু শাস্ত্র নির্ণয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যার অভাব জীবনকে বিষিয়ে তোলে। এসকল পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্গতি শতভাগ থাকা সত্ত্বেও জীবন যেন স্রেফ বয়ে চলা ভারবাহী এক খেয়া ছাড়া কিছু না। যার কাজ শুধুই বয়ে চলা, না থাকে সেখানে রোমান্স, না থাকে জীবনের স্বাদ। সিনেমার গল্পের আড়ালে পরিচালকের অস্পষ্ট বক্তব্য প্রায় এমনই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

কবি সুবর্ণ আদিত্য বলেছেন: অসাধারণ কিছু বিষয় জানলাম, যা আগে জানতাম না....

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৫

আনন্দ কুটুম বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.