নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষের প্রকৃত অর্থে যাহা গুণ থাকা দরকার সেরুপ গুন নিজের মধ্যে না থাকলেও চেষ্টায় আছি প্রকৃত মানুষ হয়ে বাঁচার।

এন.এ.আনসারী

একজন মানুষ হিসাবে আমিও সত্যক ভালবাসি। তাই আমারো চেষ্টা থাকে সত্য প্রকাশ করার আপ্রাণ চেষ্টা। অন্যের মত সহনশীলতার সাথে শুনা এটাই মনুষ্যত্য

এন.এ.আনসারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে খারেজি -ওহাবি জঙ্গিবাদের উৎপত্তি ও বিকাশ ......(part-01)

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০

সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। কারন ইসলাম মানেই শান্তি। কিন্তু ইদানিং ইসলামের নামে গজিয়ে ওঠা কট্টরপন্থি ওহাবী সালাফীপন্থি আনসারুল্লাহ, তালেবান, আল-কায়েদা, আইএস সহ জঙ্গিবাদীদের যে হয়েনারুপ পৃথিবী দেখছে তা কখনো ইসলাম সমর্থন করে না কারন ফিতনা-সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও বিশৃঙ্খলা ইত্যাদি ইসলাম সমর্থন করে না। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ বলেন, ”ফিতনা হত্যার চেয়েও ভয়াবহ।’’ [আল কুরআন, সূরা বাকারা, আয়াত-১৯১]
আল্লাহ্র প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিদায় হজ্বের ভাষণে বলেন, ‘‘শুনে রাখো! মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই। সাবধান আমার পরে তোমরা একজন আরেকজনকে হত্যা করার মত কুফরি কাজে লিপ্ত হয়ো না।” মানুষ হত্যার বিষয়ে নিষেধ করে আল্লাহ্ বলেন,‘‘কেউ কাউকে নরহত্যার অপরাধ অথবা পৃথবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টির কারণ ব্যতীত হত্যা করলে সে যেন গোটা মানব জাতিকে হত্যা করলো। আর কেউ কারো প্রাণ বাঁচালে সে যেন গোটা মানব জাতিকে বাঁচালো।’’ [আল কুরআন, সূরা মায়িদা, আয়াত-৩২]
ইসলামের নামে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যদ্বাণী, ”হযরত আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: শেষ যমানায় এমন একটি গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটবে যারা হবে বয়সে নবীন, বুদ্ধিতে অপরিপক্ক ও নির্বোধ। কুরআন পাঠ করবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালীও অতিক্রম করবে না। তাঁরা সৃষ্টির সেরা মানুষের কথাই বলবে, কিন্তু দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেমন ধনুক (তীর) শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়।’’ [তিরমিযী, ফিতান, বাব ২৪] নবীজির এই হাদিসের আলোকেই বলা যায় আইএস তালবান আলকায়েদারা কবেই ধর্ম থেকে বেরিয়ে পড়ে জানোয়ারে রুপান্তরিত হয়েছে।
যাঁরা কট্টরপন্থা অবলম্বনকারী সন্ত্রাসী, তাঁরা কপট ও মুনাফেকী চরিত্রের। তাঁরা নিজেদেরকে শান্তির বার্তাবাহক বানিয়ে গোপনে অশান্তি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সংঘটিত করে। তাঁদের সম্পর্কে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, ‘‘তাদেরকে যখন বলা হয়, তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরাই তো শান্তি ও সংস্কারকামী।[আল কুরআন, সূরা বাকারা, আয়াত ১১]
এই কারণে বিশ্বের আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখ, লেখক, বুদ্ধিজীবী, পর্যটক অর্থাৎ প্রত্যেক শ্রেণির সুন্নি মুসলমান এই সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ বা ফিৎনার বিরুদ্ধে স্ব স্ব অবস্থান হতে বিরোধিতা করেন।
শান্তির ধর্ম হিসাবে ইসলাম ধর্ম পৃথিবীতে এক আল্লাহ্ ও তাঁর অত্যন্ত প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করে। তাওহীদ ও রিসালতের সমন্বয়ে ইসলামের প্রথম চার খলিফা পার্থিব ও অপার্থিব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। ইসলামের মূল ধারা সুন্নি জামা‘আত ইসলামের প্রথম চার খলিফাকে সঠিক পথের অনুসারী হিসাবে মান্য করে। ইসলামি জাহানের সুন্নি তৃতীয় খলিফা হযরত ওসমান গনি যুন্ নুরাইন ইবন আফ্ফান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এক দল বিদ্রোহী কর্তৃক নিহত হওয়ার মাধ্যমে বিদ্রোহী মুসলিম কর্তৃক সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী একজন খলিফার শাহাদাতের মত বেদনাবিধুর দৃষ্টান্তের সৃষ্টি হয় এবং পরে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। ইসলাম ধর্মে সুন্নি, শিয়া ও খারেজী- এই তিনটি প্রধান ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতবাদের উৎপত্তি এবং পরে মুসলমানরা আরও ধর্মীয় ফিরকা বা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে যায়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা ও মদিনার জীবনে যদিও মুনাফিক ছিল কিন্তু তারা মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিতে সফল হয় নি। সুন্নি চতুর্থ খলিফা হযরত আলি ইবন আবি তালিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (৬০০খ্রি.-৬৬১ খ্রি. শাসনকাল ৬৫৬- ৬৬১খ্রি.) ইসলামি জাহানের খলিফা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মুনাফিক চক্র বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এই সময়ে প্রাক ইসলামি যুগ হতে চলে আসা কুরাইশ বংশের হাশিম ও উমাইয়্যা গোত্রের দ্বন্দ্ব নতুন করে দেখা দেয়। কারণ হযরত ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন উমাইয়্যা গোত্রের এবং হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হলেন হাশিম গোত্রের। হযরত ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হত্যার বিচার বা প্রতিশোধকে কেন্দ্র করে মুসলিম ধর্মীয় ব্যক্তিদের মধ্যে মতানৈক্য প্রকট আকার ধারণ করলে খলিফা আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। ফলে মুসলিমদের মধ্যেই উষ্ট্র যুদ্ধ (৬৫৬ খ্রি.) ও সিফ্ফিনের যুদ্ধ (৬৫৭ খ্রি.) সংঘটিত হয়। এভাবে প্রখ্যাত সাহাবী ও তৎকালীন সিরিয়ার শাসক উমাইয়া নেতা হযরত আমীরে মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার (৬০৬-৬৮০ খ্রি. শাসনকাল ৬৬১-৬৮০ খ্রি.) সঙ্গে খলিফা আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মনোমালিন্য শুরু হয়, যার প্রভাব তাঁদের সন্তান হাশেমী বংশের সূর্য ইমাম হাসান ইবন আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (৬২৫-৬৭০ খ্রি.), ইমাম হোসাইন ইবন আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহু (৬২৬-৬৮০ খ্রি./৪-৬১ হি.) এবং উমাইয়া বংশের বাদশাহ্ ইয়াজিদ ইবন মুয়াবিয়া (৬৪৭-৬৮৩ খ্রি. শাসনকাল ৬৮০-৬৮৩ খ্রি.) প্রমুখের উপর পড়ে। এক পর্যায়ে উমাইয়া বংশের ইয়াজিদ বাহিনীর সঙ্গে ইমাম হোসাইন পরিবারের মধ্যে সত্য- মিথ্যার দ্বন্দ্বে কারবালার যুদ্ধ (৬৮০ খ্রি./৬১ হি.) পর্যন্ত গড়ায়। এর পর মুসলমানদের মধ্যে ফিৎনা ও ফিরকা বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। এই ফিরকা বা মুসলিম দল-উপদলের মধ্যে ভয়ঙ্কর-বিশৃঙ্খলাকারী হিসাবে খারেজি সম্প্রদায় তাঁদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পরবর্তীতে খারেজি উপগ্রুপ বা খারেজি ভাবাপন্ন কিছু ক্ষুদ্র গ্রুপ এ সম্প্রদায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এসব গ্রুপের মধ্যে সালাফি-ওহাবি বা আহলে হাদিস অন্যতম। সমকালীন ধর্মতত্ত্ববিদগণ ‘দ্যা ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এন্ড দ্যা লেভান্ত’ (ISIL-Islamic State of iraq and the levant) যার সংক্ষিপ্ত নাম আই এস, আল কায়দা (Al-Qaida) ও এরূপ দল-উপদলের বিশ্বাস ও কার্যক্রমকে খারেজিদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। (Contemporary theologians have compared the beliefs and actions of Islamic State of Iraq and the Levant, al Qaida and like minded group to the Khawarij) (সূত্র- Online avaliable http//en.wikipediya.org/wiki Khawarij । তাই এই বিষয়ে আলোচনা করা সমীচীন মনে করি।

খারেজি পরিচয়ঃ-
মুসলিমদের মধ্যেই প্রথম গৃহযুদ্ধ উষ্ট্র যুদ্ধ (৬৫৬ খ্রি.) সংঘটিত হওয়ার পর আপাতদৃষ্টিতে সুন্নি ৪র্থ খলিফা হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিজয় অর্জন করলেও মূল বিজয় অর্জন করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। কারণ তাঁরা মুসলমানদের মধ্যে এরূপ গৃহযুদ্ধ কামনা করেছিল। পরবর্তীতে সিফ্ফিনের যুদ্ধ (৬৫৭ খ্রি.) যা হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সৈন্যদের মধ্যে ইউফ্রেতিস (ফোরাত) নদীর তীরে সিফ্ফিন নামক স্থানে সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিআল্লাহু আনহুর পরাজয় অনুমান করতে পেরে তাঁর এক দল সৈন্য আমর ইবনুল আসের (৫৮৫-৬৬৪ খ্রি.) পরামর্শক্রমে তাঁদের পতাকাশীর্ষে ও বর্শাগ্রে পবিত্র কুরআন শরীফ বেঁধে চীৎকার করে উঠল, ‘‘এখানে আল্লাহর কিতাব- এটি আমাদের মধ্যে বিরোধ মীমাংসা করে দিবে ।’’(সূত্র-ড.সৈয়দ মাহমুদুল হাসান, ইসলামের ইতিহাস) পরবর্তীতে এ মীমাংসার কারণকে শির্ক ফাত্ওয়া দিল খারেজীরা। খলিফা আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহু শুরু থেকেই মুসলমানদের মধ্যে এরূপ যুদ্ধ নিয়ে অনিহা ছিল। কুরআন দেখিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করানোর আসল বিষয়টি তিনি অনুমান করেও কেবল মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট ও কুরআন শরীফের অবমাননা- এদুয়ের আশঙ্কায় যুদ্ধ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে উভয়পক্ষের সংঘর্ষ পরিসমাপ্তির জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে, তাঁরা উভয়ে মধ্যস্থতাকারী (Mediator) নিযুক্ত করে বিরোধ নিষ্পত্তি করবেন। খলিফা আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষে আবু মুসা আশ্‘আরী রাদ্বিআল্লাহু আনহু (ওফাত ৬৬২/৬৭২ খ্রি.) ও হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বিআল্লাহু আনহুর পক্ষে আমর ইবনুল আস রাদ্বিআল্লাহু আনহু কে (৫৮৫-৬৬৪ খ্রি.) মধ্যস্থতাকারী নিযুক্ত করা হয়। আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, উভয় পক্ষের চারশত করে লোক নিয়ে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থানে মিলিত হবেন এবং বিরোধ মীমাংসা করবেন। যদি তাঁরা কোন স্থির ও অবিচল সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারেন তাহলে মীমাংসার ভার নিযুক্তীয় আট শত লোকের ওপর পড়বে এবং তাঁরা প্রত্যেকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। সে অনুযায়ী জানুয়ারি, ৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থান ‘দুমাতুল জন্দল’ নামক স্থানে সালিসি বৈঠক বসে। সালিসি সভা শুরু হওয়ার পূর্বে আমর ইবনুল আস সরলমনা আবু মুসাকে বুঝালেন যে, ইসলামের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য মুয়াবিয়া ও আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহুমা এ দুইজনের পরিবর্তে তৃতীয় ব্যক্তিকে খলিফা নির্বাচিত করতে হবে, যদিও খলিফা নির্বাচনের বিষয়টি তাঁদের এখতিয়ার বহির্ভূত ছিল। দুই মধ্যস্থতাকারী স্থির করলেন যে, আবু মুসা আল আশ‘আরী প্রথমে হযরত আলি রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর পদচ্যুতি সর্বসমক্ষে ঘোষণা করবেন এবং পরে আমর ইবনুল আস হযরত মুয়াবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁর ঘোষণা দেবেন। সেই মোতাবেক সহজ-সরল আবু মুসা আল আশ‘আরী আমর ইবনুল আসের কথামতো তিনি জন সমক্ষে হযরত আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহুকে খলিফার পদ হতে পদচ্যুত করেন। তারপর সভা মঞ্চে আমর ইবনুল আস বললেন, ‘‘আমি হযরত আলির পদচ্যুতি অনুমোদন করলাম এবং তাঁর পরিবর্তে মুয়াবিয়াকে খলিফা মনোনয়ন করলাম।” এ ঘোষণানুসারে সিরীয়রা আমীর মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে খলীফা স্বীকার করলেও ইরাক্বীরাসহ বাকী সৈন্যরা তা মানতে রাজী হননি। তাঁরা হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে খলীফা পদে বহাল আছে বিধায় হযরত আমীর মু‘আবিয়া ও সিরীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিদ্রোহ্ দমনের পরামর্শ দেন। হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুও এ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিলেন; কিন্তু এদিকে এক অমূলক ধূয়া তুলে ১২,০০০ (বার হাজার) লোক সৈন্য দল ত্যাগ করে আব্দুল্লাহ ইবন ওহাবকে তাঁদের নেতা নির্বাচিত করেছেন এবং ঘোষণা করে যে, লা হুকমাহ ইল্লা লিল্লাহ বা আল্লাহর মীমাংসা ছাড়া কারো মীমাংসা নেই। তাঁরা হযরত আলিকেও উক্ত মীমাংসার জন্য রাজী হওয়ায় তারা হযরত আলির দল থেকে ‘খারিজ’ বা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ‘খারেজি’ অর্থ দল ত্যাগী অর্থাৎ ইসলাম ধর্ম হতে তাঁরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন বুঝাতে এ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তারা দল ত্যাগ করে হারুরা নামক গ্রামে মিলিত হয়, এ গ্রামের নামানুসারে অনেকে তাদেরকে হারুরীয়া বলে। তারা আল্লাহ্র হুকুমের কথা বলে ছিলো বলে অনেকের নিকট তারা ‘মুহাক্কিমাহ্’ নামে পরিচিত। হারুরা থেকে তাঁরা আব্দুল্লাহ ইবন ওহাবের নেতৃত্বে নাহরাওয়ানে শিবির স্থাপন করে। হযরত আলি ‘খারেজি আন্দোলনের’ সংবাদ পেয়ে সৈন্যদের নিয়ে নাহরাওয়ানের দিকে অগ্রসর হয়ে নাহরাওয়ানের যুদ্ধে (৬৫৯ খ্রি.) খারেজিদের পরাজিত করেন। এভাবে ৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে মুসলমানদের মধ্যে সুন্নি-খারেজি বিভক্তি প্রকাশ্যে দেখা দেয়। এরূপে খিলাফতের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ ও অশান্তি দেখা দিলে হযরত আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহু ইসলামের স্বার্থে হযরত হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিআল্লাহু আনহুর সঙ্গে সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হন। সন্ধি অনুযায়ী সিরিয়া ও মিশরের শাসক হিসাবে হযরত আমীরে মুয়াবিয়া রাদ্বিআল্লাহু আনহু এবং খিলাফতের অবশিষ্ট অংশে খলিফা হিসাবে হযরত আলি রাদ্বিআল্লাহু আনহু শাসন করবেন। এভাবে উভয় সাহাবীর বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। ফলে মুসলামানদের গৃহযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে; কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত সফল না হওয়ায় তাঁরা নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করে। বিশেষ করে বিদ্রোহী খারেজিরা উভয় সাহাবীর ওপর খুবই ক্ষুব্ধ হয়।....(চলবে)
...................(এন,এ আনসারী, বি,এ(অনার্স) ও এম,এ(মাস্টার্স)-ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.