নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনোয়ার কামাল

আনোয়ার কামাল

আমি কবিতা,গল্প,প্রবন্ধ,বই ও লিটলম্যাগ আলোচনা লিখে থাকি । ‘এবং মানুষ’ নামে একটি লিটলম্যাগ সম্পাদনা করি। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। ব্লগারের অনুমতি ছাড়া কোন লেখা কপি করে অন্য কোথাও ছাপানো নিষেধ।

আনোয়ার কামাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মরণ

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৮

মিরপুর মুক্ত দিবস

আনোয়ার কামাল



৩১ জানুয়ারি মিরপুর মুক্ত দিবস। বাঙালি জাতির মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হলেও মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন ঢাকার এই মিরপুর শত্রুমুক্ত হয়েছিল ৪৬ দিন পর ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি। সারা দেশ যখন বিজয় আনন্দে উদ্বেলিত তখন মিরপুর ছিল অবরুদ্ধ। হারিকেনের নিচে অন্ধকারের মত ঢকার মিরপুর মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের আরো ৪৬টি দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। দিতে হয়েছে আরো আত্মাহুতি, ঝরেছে স্বাধীন দেশে হানাদারদের হাতে মুক্তিপাগল তরতাজা সজীব প্রাণ। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর বিহারী-রাজাকার-আলবদর-আলসামস্ বাহিনীর হত্যা, বর্বরতা ও পৃথিবীর জঘন্যতম গণহত্যাসহ বাঙালি নিধনের মহোৎসবে যে মেতে উঠেছিল তারই অবসানের দিন। মিরপুরের ঘরে ঘরে শহীদদের ঠিকানা পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন পুরো মিরপুরই একটি বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় রণাঙ্গন হিসাবে খ্যাত মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনের ডি ব্লকে অস্ত্র উদ্ধার করতে গেলে পাকিস্তানী ও তাদের স্থানীয় দোসরদের সাথে এক ব্যাপক সংঘর্ষে ৪১ জন সেনা সদস্যসহ লেফটেন্যান্ট সেলিম মো. কামরুল হাসান (বীর প্রতীক) শহীদ হন। এই মিরপুরেই শহীদ হয়েছেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার এবং তার ছোট ভাই সাংবাদিক জহির রায়হান সহ আরো অনেকে।



পাকিস্তান আমলে ৪৭ এর আগে থেকে পূর্ব বাংলায় বসবাসরত বিহারী এবং ৬২ থেকে ৬৪ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত আয়ূবশাহী আমলে স্যাটেলার বিহারীরা পূর্ব বংলার রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী মোহাম্মদপুর ও মিরপুরকে এক প্রকার অবরুদ্ধ করে রাখে। বাঙালিদের কাছে সংখ্যালঘু হয়ে মিরপুরে উদ্বাস্ত বসতি স্থাপনের নামে প্রধানত অবাঙালিদের পুণর্বাসন করা হয় এই মিরপুরে। ৬৪ সালে আয়ূবশাহীর স্যাটেলাররা মিরপুরে জয়েন্ট কোয়ার্টারে বসবাস শুরু করে। সেই সাথে স্থানীয় জনগোষ্ঠী বিহারীদের কাছে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে। বিপুল পরিমাণে বিহারীদের অভিবাসনের ফলে মিরপুর হারাতে থাকে বাঙালি কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। দ্রুত প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে অবাঙালিদের। ব্যাপকতা পেতে থাকে অবাঙালি সংস্কৃতি, আর হারাতে থাকে বাঙালি তার আপন সংস্কৃতি।



পাকিস্তান সরকারের অনেক বিভাজনমূলক কর্মকান্ডের মতো এখানেও এক অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পাকিস্তানী সরকারের অনুগত বশংবদ গোষ্ঠী সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং তাদের মধ্যে থেকে উগ্রবাদী ঘাতক সৃষ্টি করাই ছিল তাদের আসল উদ্দেশ্য। তারই চূড়ান্ত রূপলাভ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাসে। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে থেকেই মিরপুরে আক্তার গুন্ডার একটি বাহিনী ছিল। তারা সবাই ন্যাড়া মাথায় থাকতো। ১২নং পানির ট্যাংকের উপরে তার বক্সিং ক্লাব নামে একটি সন্ত্রসী গ্রুপ ছিল। যুদ্ধের পুরো সময় মিরপুরবাসী তার পৈশাচিক কর্মকান্ড অবলোকন করেছে। সেই আক্তার গুন্ডাই বাঙালি চাকরিজীবীদের মাস শেষে বেতন নিয়ে মিরপুর দিয়ে যাওয়ার সময় তা লুটে নিত।



মিরপুরে বিহারী সংস্কৃতি ক্রমশঃ বিস্তার করতে থাকায় পিছিয়ে পড়তে থাকে বাঙালি সংস্কৃতি। আর ঠিক সে সময়ই তৎকালীন দৈনিক আজাদ পত্রিকার শিশুদের পাতা মুকুল ফৌজ এর শাখা গড়ে ওঠে মিরপুরে। ১৯৬৪ সালে মারুফ গনি’র তত্ত্বাবধানে মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনে বিহারী অধ্যুষিত অঞ্চলে সর্বপ্রথম বাঙালি সংস্কৃতির বীজ বপন করা হয় মুকুল ফৌজের মাধ্যমে। মারুফ গনি সহ মুকুল ভাই, রানা ভাই, সবাই মিলে মুকুল ফৌজের পৃষ্ঠপোষকতা করে। এখান থেকেই বিভিন্ন দিবসে বাঙালিরা তাদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড তুলে ধরতে প্রয়াসী হয়। এর পাশাপাশি বাঙালি কিছু শিক্ষানুরাগীরা বাংলা শিক্ষার প্রয়াসের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন বাঙালি স্কুল। সে সময় প্রতিষ্ঠিত স্কুলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্কুলের মধ্যে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সিদ্ধান্ত স্কুল, ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়, মিরপুর বেঙ্গলী মিডিয়াম স্কুল, মিরপুর বাংলা কলেজ প্রভৃতি। এ স্কুলগুলোর মধ্যে মিরপুর বেঙ্গলী মিডিয়াম স্কুল শুধুমাত্র বাঙালিদের স্কুল হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পায়। সে সময় মিরপুরে ভাষা শহীদদের নামে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার মিরপুর বেঙ্গলী মিডিয়াম স্কুলের প্রাঙ্গণে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ভূমি দস্যুরা সেটি ভেঙ্গে ফেলে সেখানে নির্মাণ করে বাণিজ্যিক ভবন এবং মিরপুর বেঙ্গলী মিডিয়াম স্কুলের নাম বদল করে নতুন নামকরণ করে মিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।



১৯৬৯ সালের গণ অভূত্থানের পর ১৯৭০ এর নির্বাচনের মাধ্যমে বাঙালির দৈনন্দিন সংস্কৃতি ও বাঙালির রাজনৈতিক সংস্কৃতির পালা বদল হতে শুরু করে। যে রাজনৈতিক উত্তাল হাওয়া ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত পূর্ব বাংলায় বয়ে যায় তার কিছুটা হলেও বিহারী অধ্যুষিত মিরপুর এলাকায় প্রভাবিত করে। বাঙালিদের উজ্জীবিত করে, উদ্বেলিত করে। বিহারী বেষ্টিত হয়ে থাকলেও বাঙালিরা নিজেদের মধ্যে সংগঠিত হতে থাকে। মিরপুর অঞ্চলে তখন তিনটি ধারা বহমান ছিল প্রথমত: স্থানীয় বাঙালি অধিবাসীরা, দ্বিতীয়ত: আয়ুব খানের স্যাটেলাইট বিহারীরা এবং তৃতীয়ত: শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি যারা চাকরি বা অন্যান্য পেশাজনিত কারণে মিরপুরে বসবাস করতেন। ১৯৭১ সালে দেশব্যাপী যে সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয় বিহারীরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সেই সাথে স্থানীয় কিছু বাঙালি যারা তৎকালীন সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের খুব কাছে ছিল তারা দৃশ্যত সংগ্রাম কমিটির কাছে থাকলেও অদৃশ্য আঁতাত ছিল বিহারীদের সাথে। সে সময় মিরপুরে প্রশাসনিকভাবে ১১ জন বিডি মেম্বার ছিল, তন্মধ্যে ৬ জন বাঙালি আর ৫ জন বিহারী হলেও চেয়ারম্যান নির্বাচনে বিহারী মো. অব্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। মূলত: ১১ জন মেম্বার ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচন করে। বাঙালিদের মধ্যে থেকে ফকির শরীফ উদ্দিন প্রার্থী হলেও এবং ১জন বাঙালি বিডি মেম্বার বেশি থাকা সত্বেও তিনি বিহারী মো.আব্বাস এর কাছে পরাজিত হন। জনশ্রুতিতে রয়েছে যে, স্থানীয় বাঙালি এস এ খালেক, কলিমুদ্দিন ব্যাপারী ও মিরপুরের আরও একটি প্রতিষ্ঠিত পরিবার বিহারী আব্বাস মেম্বারের পক্ষে কাজ করে। ফলে এভাবেই মিরপুরে বাঙালিদের প্রভাব প্রতিপত্তি খানিকটা সংকুচিত হতে থাকে। ষাটের দশক থেকে স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত মিরপুরে বাঙালি সংস্কৃতি সেভাবে বিকাশ লাভ করতে পারেনি।

মিরপুর এলাকার অগ্রজ সংস্কৃতিকর্মী মিজানুর রহমান, সগির মোস্তফাসহ অন্যান্য প্রাজ্ঞজনদের কাছ থেকে তথ্যে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বানে যে সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়েছিল তার মধ্যে ছিলেন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি যারা চাকরি বা অন্যান্য পেশা জনিত কারণে মিরপুরে বসবাস করতেন। স্থানীয়দের মধ্যে বিডি মেম্বার ফকির শফির উদ্দিন উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য বিডি মেম্বাররা নিশ্চুপ থেকেছে বা আঁতাত করেছে বিহারী ও পাকিস্তানী পক্ষাবলম্বনকারীদের সাথে। সে সময় বিহারী আব্বাস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম কমিটির আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য আক্তার গুন্ডার নেতৃত্বে গুন্ডাবাহিনী গড়ে তোলা হয়। অপরদিকে মিরপুর থানা সংগ্রাম কমিটির অহবায়ক শহীদুল হক মামার নেতৃত্বে কবি কাজী রোজী, কবি মেহেরুন্নেছা, ওসমানসহ অসংখ্য মুক্তি পাগল মানুষ মিরপুর ১ নম্বর পানির ট্যাঙ্কির উপর স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হলে বিহারীরা সংগ্রাম কমিটির সদস্যদের খুঁজতে থাকে। সেদিন জীবন বাঁচাতে অনেকেই আত্মগোপন করে বাঁচলেও বাঁচতে পারেনি কবি মেহেরুন্নেছা। কবি মেহেরুন্নেছার পুরো পরিবারকেই নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ২০১৩ সালে এসে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কবি মেহেরুন্নেছার পরিবারের হত্যাকারী হিসাবে কাদের মোল্লার শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রদান করে।



স্বাধীনতার ঊষালগ্নে ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে আলবদর, আল সামস, রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীরা নির্বিচারে বাঙালি নিধন করেই শুধু ক্ষান্ত হয়নি। দেশের শ্রেষ্ট সন্তান সূর্য সৈনিক বুদ্ধিজীবীদের গুপ্ত হত্যা করে তাদের মৃত্যুকূপ তৈরি করে মিরপুরের বিরাণ ভূমিকে। শহীদুল্লাহ কায়সার অন্তর্ধান থেকে শুরু করে জহির রায়হান নিখোঁজ রহস্য, স্বাধীনতার ৪৬ দিন পর স্বাধীন দেশের মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ ও সেনা সদস্যদের মিরপুর মুক্ত করতে এসে জীবন দান মিরপুরের বর্তমান তরুন সাংস্কৃতিক কর্মীদের আন্দোলিত করে।

দেশ স্বাধীনের পর সে মিরপুরের বিহারী ও পাকিস্তানী খান সেনাদের একত্রিত করে গোলা বারুদ নিয়ে ৪৬ দিন মিরপুর অবরুদ্ধ করে রাখে। অবশেষে বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ ৮৬ জন বাঙালি বীরের রক্তের বিনিময়ে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ মুক্ত হয় মিরপুর।



বর্তমান রাজধানী ঢাকার উপকন্ঠে ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অন্যতম বৃহত্তর মিরপুর একটি প্রাচীন জনবসতি বলে পরিচিত। মিরপুরের শাহ আলী বোগদাদীর মাজার, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, চিড়িয়াখানা, বধ্যভূমি, সিদ্ধান্ত বাড়িসহ বেশ কিছু স্মারক সেই সব চিহ্ন বুকে লালন করে কালের সাক্ষী হয়ে আছে। মিরপুরে ১১টি বধ্যভূমির মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুসলিম বাজার, শিয়াল বাড়ি, আলোকদী গ্রাম, জল্লাদখানা (মিরপুর ১০), মিরপুর বাংলা কলেজ, সারেং বাড়ি, সিরামিক (মিরপুর ১২), কালাপানি, দোয়ারী পাড়া, কল্যাণপুর, রাইনখোলা প্রমুখ।



মিরপুরকে মুক্ত করতে এসে মেজর জেনারেল(অবঃ) হারুন-অর-রশিদ এর জবানীতে জানা যায়: ‘‘তিন প্লাটুন সৈন্য নিয়ে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ রাতেই পৌছে যাই মিরপুরে। তখন টেকনিক্যাল দিয়ে মিরপুরে ঢোকার একমাত্র পথ। এক ভূতুড়ে নগরী তখন মিরপুর। বিদ্যুৎ সরবাহ তখন বন্ধ ছিল। আমরা অবস্থান নেই মিরপুর ফায়ার সার্ভিস এন্ড ডিফেন্স ইনষ্টিটিউটে। তখন আরো সৈন্য সহ ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ মিরপুর ১২ নম্বর এলাকার বিহারীদের নিরস্ত্র ও বন্দি করি। সেখানে গিয়ে দেখি ডোবা-নালা-ঝিলের মধ্যে লাশ আর লাশ। ৩০ জানুয়ারি ’৭২ এর যুদ্ধে এ সকল মানুষ হতাহত হয়। আমরা বিহারী ও লুকিয়ে থাকা পাক সেনাদের বন্দি করে নিয়ে আসি বর্তমান শেরে-বাংলা ষ্টেডিয়ামের মাঠের কাছে (তখন সেখানে একটি খোলা মাঠ ও ধান ক্ষেত ছিল)। ১২ নং ডি ব্লক মাঠে উদ্ধার করা অস্ত্র জমা করা হয়েছিল। সেখানে ছোট-বড়-ভারী অস্ত্রগুলো বহন করে নিয়ে আসতে ১০টি ট্রাক লেগেছিল।” এতেই বোঝা যায় সে সময় মিরপুর ছিল একটি মিনি ক্যান্টনমেন্ট। এ কারণেই মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ রণাঙ্গন হিসেবে মিরপুর দখলদার পাক হানাদার ও বিহারীদের কাছ থেকে মুক্ত করতে অনেক আত্মত্যাগের মাধ্যমে জাতিকে ৪৬ দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। এই ‘মিরপুর মুক্ত দিবস’ নিয়ে খুব বেশি লেখা লেখি হয়নি। ফলে অনেকটা স্মৃতির গভীরে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই দগদগে ঘা। নতুন প্রজন্মকে তার কিঞ্চিৎ ইতিকথা জানান দেয়ার উপযুক্ত সময় এখনই।

ঢাকা মহানগরীর অন্যতম প্রাণ কেন্দ্র মিরপুর এখন প্রায় ৪০ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণের আবাসস্থল, ১১টি বধ্যভূমি, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও কৃষ্টিকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মের নবচেতনার আলোক বর্তিকা হয়ে আছে। সেই ঐতিহাসিক মিরপুর এখন মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল, শাহআলী, দারুস সালাম, রূপনগর, ভাসানটেক ও তুরাগ নিয়ে মোট ৮টি থানা হয়েছে। প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষের পদভারে মুখরিত এই বৃহত্তর মিরপুর। এই মিরপুরের অধিকাংশ মানুষই জানেন না মিরপুর মুক্ত দিবসের শোকগাথা। জানেন না স্বজন হারানোর মর্মব্যথা, হৃদয়ের গভীরে লুকানো অন্তহীন ক্ষতের চিহ্ন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.