নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনোয়ার কামাল

আনোয়ার কামাল

আমি কবিতা,গল্প,প্রবন্ধ,বই ও লিটলম্যাগ আলোচনা লিখে থাকি । ‘এবং মানুষ’ নামে একটি লিটলম্যাগ সম্পাদনা করি। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। ব্লগারের অনুমতি ছাড়া কোন লেখা কপি করে অন্য কোথাও ছাপানো নিষেধ।

আনোয়ার কামাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণজাগরণ মঞ্চ: পিছন ফিরে দেখা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১৫

কাদের মোল্লার ফাঁসি রায় না হয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং রায়ের পর তার ভি চিহ্ন দেখিয়ে উপহাস করে বাংলার মুক্তি পাগল মানুষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল কাদের মোল্লা। তার এ উদ্ধত আচরণকে এ দেশের তরুণপ্রাণ যুবারা সহজে মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা সেদিনের এই অনাকাঙ্খিত রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইন এক্টিভিক্টস ফোরামসহ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের প্রতিবাদের ঝড় সারা বাংলায় টর্ণেডোর গতিতে ছড়িয়ে দিল। রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে ফেটে পড়লো এদেশের তরুণ প্রজন্ম, যুব সমাজ। আকাশসম অপরাধীর এতটুকু শাস্তি, তা তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। উত্তর থেকে দক্ষিণে, পূর্ব থেকে পশ্চিমে সবাই যে যার মত করে ছুটলো শাহবাগ মুখে।



রাজাকারের বিচারের দাবি ছড়িয়ে পড়ল শাহবাগ থেকে দেশময় হয়ে বিশ্বময়। আজিজ সুপার মার্কেট থেকে ছুটে এল একঝাঁক কবি, নাট্যকর্মী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, কলাভবন থেকে ছাত্ররা ছুটে এলো, ঘরে বসে রইলনা গৃহিনীরাও। দলে দলে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ডাক্তাররা বেরিয়ে এলো, ছাত্ররা আর মতিঝিল থেকে অফিস ফেরত সরকারি বেসরকারি চাকুরেদের ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসতে দেখা গেল শাহবাগ মুখে। পাবলিক লাইব্রেরিতে যারা বই পড়ছিল তারা বই পড়া ফেলে সবাই ছুটে এলো। রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসে ছিল দলে দলে যুবক- যুবতী, প্রেমিক-প্রেমিকা, সবাই তারা হাত ধরে ছুট দিল শাহবাগ মুখে, পেছনে রমনা ও সোহরাওয়ার্দীর সবুজ ঘাস আর পার্কের গাছগুলো মাথা উঁচু করে সমস্বরে সংহতি জানান দিল শাহবাগের অহিংস আন্দোলনে।

শাহবাগের থরে থরে সাজানো গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে শাহবাগের পিচঢালা পথে আলপনা আঁকা শুরু হল। ফুল দিয়ে লেখা হল বায়ান্ন, ঊনসত্তর, একাত্তর এবং দুই হাজার তের এর বিজয় গাঁথা। বাড়তে থাকে মানুষ, নতুন স্লোগান, বাড়তে থাকে ক্ষোভ বারুদসম অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত; তাদের মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ একজন মানুষ বুকে বড় বড় হরফে লেখা ’অপেক্ষা’ নিয়ে নির্বাক হয়ে চারুকলার সামনে মাঝপথে বসে পড়লো। কারো সাথে তার কোন কথা নেই। মনে হলো সে যেন রাজাকারের বিচারের দাবিতে জনম জনম প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে প্রস্তুত। আর একজন মাথায় হ্যাট পরে তাতে রণাঙ্গনের পাঠাগার লিখে অজস্র বই সাজিয়ে বসে পড়লো শাহবাগে। তাকে দেখে মনে হলো ঠিক যেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে সহযোদ্ধাদের অবসরে বই পড়ার আনন্দ দেয়ার জন্য তার এ আয়োজন। বিয়াল্লিশ বছরের জঞ্জাল সরানো হচ্ছে, তাই রাস্তা বন্ধ। এ ধরনের প্লেকার্ড লিখে দাঁড়িয়ে পড়ল কয়েকজন। লক্ষ লক্ষ মোমবাতি প্রজ্জ্বলিত করে অশুভ আঁধার দূর করা হল। হাজার হাজার বেলুন উড়িয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয়জনের কাছে চিঠি লিখে পাঠালো। একজন সন্তান তার শহীদ পিতার কাছে, স্ত্রী তার শহীদ স্বামীর কাছে, ভাই তার শহীদ ভায়ের কাছে চিঠি লিখে রঙিন বেলুনে তা উড়িয়ে দিল। সারা বিশ্বের বাঙালি কোটি কন্ঠে, হাত উচিয়ে শপথ নিল বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার। দেশে দেশে বাঙালিরা গণজাগরণ এর আদলে তারাও কাঁপিয়ে তুললো বিশ্বময়।



শাহবাগে আমাদের তরুণ প্রজন্ম জেগে থাকলো নিদ্রাহীন অজস্র রাত। ঝড়, বৃষ্টি, রোদ, বোমা, হেফাজতী তাণ্ডব কোন কিছুই তাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। তাদের দেখে বাংলাদেশ স্তম্ভিত হল। আমাদের শাহবাগ তখন থেকে প্রজন্ম চত্বর হল। একদিন বিকেল চারটায় সমগ্র বাংলাদেশ প্রতিবাদ স্বরূপ সব কাজ ফেলে তিন মিনিট দাঁড়িয়ে রইল। একদিন সমস্ত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী একযোগে সমস্বরে গেয়ে উঠলো প্রাণের জাতীয় সঙ্গীত, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। শিল্পী সংগ্রামীরা সমবেত হল একই চেতনায়। উদীচী’র সংগ্রামী সাথী বন্ধুরা সেদিন দিনকে রাত রাতকে দিন করে কাজ করে গেছে। ইতিহাসের এক অনন্য উচ্চতায় উদীচীকে নিয়ে গেছে। সারাদেশে উদীচী ছিল এ সংগ্রামের এক অপরিহার্য অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমরা আমাদের সকল কর্মীকে এ সংগ্রামে শরিক হওয়ার আহবান জানাই। তৈরি হল ফুল দিয়ে জাতীয় পতাকা, ঢোলের তালে, আবৃত্তি, নাটকে গানে আর স্লোগান কন্যা লাকীর কন্ঠ ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বময়। ছুটে এলো স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী প্রতিবাদমূখর ছাত্র-ছাত্রীরা। পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখলো তারুণ্যের জয়, বাঙালির বিজয় উল্লাস নতুন মাত্রায় উদ্ভাসিত হল। পরবর্তীতে গণজাগরণ মঞ্চ ইতিহাস হল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে।



এ আন্দোলনে শুরুতেই রাজীব হায়দারসহ অনেক সাথীদের হারাতে হয়েছে, অসংখ্য সাথীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। তবু গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকে থামানো যায়নি। সাথীদের খুনে রাঙ্গা রাজপথে বিজয়ের পতাকা সমুখপানে এগুনোর প্রেরণা জোগাবে। জয় আমাদের হবেই হবে। সাথীদের হারানো বেদনার রক্তশপথ নিয়েছে যে তারুণ্য, তারা কী ঘরে ফিরে যাবে বিফল মনরথে! জয় ছাড়া কী বাংলার দামাল তুর্কী

তরুনেরা ঘরে ফিরে গেছে কখনো? জয়ের প্রতিক্ষায় অপেক্ষা, কেবলই অপেক্ষা আর প্রহর গোনা।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

মৃদুল মিয়া বলেছেন: Moncho Ar Nei

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫০

আনোয়ার কামাল বলেছেন: এটা ঠিক না। মঞ্চ সবসময় থাকবে। শাহবাগ জেগে রয় অহর্নিশ।

২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৫

Eisenheim বলেছেন: জয় ছাড়া কী বাংলার দামাল তুর্কী তরুনেরা ঘরে ফিরে গেছে কখনো?
-
আশার বাণী শুনে ভালো লাগলো +

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৪

আনোয়ার কামাল বলেছেন: চলে আসুন। প্রতিবাদ করুন। শহীদের রক্ত কী বৃথা যাবে? কেউ কী আবার বলে উঠবে না; কোনঠে আছেন বাহে........।

৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা নাই।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫২

আনোয়ার কামাল বলেছেন: শতভাগ একমত। অপনারাই পারবেন। আগামীতে সমবেত হয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯

দাকুড়াল বলেছেন: জলকামানে নিভে গেলো গণজাগরণ মঞ্চের চেতনার আগুন :) :) :
Click This Link

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

আনোয়ার কামাল বলেছেন: সাময়িক। তুষের আগুন কভু নেভে না। ধিকি ধিকি করে জ্বলে ওঠে অসময়ে, টেরই পাবেন না কখোন আগ্নেয়গিরি হয়ে ধেয়ে আসবে।

৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১১

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: কাদের মোল্লার 'ভি' চিহ্ন নিয়া একটা মস্ত ভুল বুঝাবুঝি আছে সবার মধ্যে। কাদের মোল্লা আওয়ামী লীগারদের মত অত ফালতু টাইপ নেতা না যে, ফাঁসীর বদলে যাবজ্জীবন দিলে ঐটাকে সে জয় মনে করবে। সমস্যাটা করেছে প্রথম আলো পত্রিকা তার 'ভি' চিহ্নটাকে এভাবে তাদের প্রথম পাতায় দিয়ে।

দয়া করে জামায়াত করে এমন কারো কাছে জেনে আসেন, শাস্তি পাবার পরেও কাদের মোল্লা কেন 'ভি' চিহ্ন দেখিয়েছিল?

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১১

আনোয়ার কামাল বলেছেন: সেদিন শুধু প্রথম আলো না সব পত্রিকায় এই ভি চিহ্ন প্রকাশ করেছিল। মূল বিষয় সেটা না। বিষয়টি ছিল কাদের মোল্লা নিশ্চিত ছিল তার ফাঁসি হচ্ছে না। কারণ জন কেরী, বান কী মুন এদের ফোন শেখ হাসিনা উপেক্ষা করবে না। কিন্তু বিধি বাম! সেদিন জনতার রুদ্র রোষ, আমজনতার আকাঙ্খা সব মিলে যে আবহ দেশে বিরাজ করছিল তা থেকে এর ব্যত্যয় ঘটার কোন উপায় ছিল না। আজ সেটা অনেকটাই নেই। এ বিষয় নিয়ে জামায়াতের কাছে যাওয়ার কোন প্রয়োজন পড়ে না। চোখ-কান খোলা রাখলেই বোঝা যায়।

৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫

জাতির চাচা বলেছেন: নিস্তেজ শাহবাগী....আবার খাড়াইতে চায়!!!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৬

আনোয়ার কামাল বলেছেন: চাচা, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি নিশ্চয় জানেন, কোন আন্দোলন ও সংগ্রাম এর মাঝে চড়াই উৎরাই থাকবেই। আপনি হতাশ হলেও যারা এর সাথে রয়েছে তারা নিশ্চয় হতাশ নয়। আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। আপনি চলে আসুন। দেখবেন এক থেকে দুই হবে। আপনার দুহাত প্রসারিত করেন। দেখবেন আরো দুজন। তাহলে এক থেকে সাথে সাথে চারে পরিণত হবেন।

৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৬

জেন রসি বলেছেন: এ লড়াই বাঁচার লড়াই।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮

আনোয়ার কামাল বলেছেন: এ লড়াইয়ে জিততে হবে। এ লড়াই মরণজয়ী করতে হবে রে.......।

৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯

একে৪৭ বলেছেন: ফুস্‌সস.......
ভাই, যাদের চোখে স্পেশাল রাজনৈতিক (যদিও ম্যাক্সিমাম-ই ফাও) চশমা নাই, তারা সবাই যানে অাপনাদের তারুন্বের এনার্জি-টা কোথা থেকে এসেছিল।
ওটা হয়ত অার অাসবে না! কারণ সরকারের হয়তো অাপনাদের অার দরকার হবে না!!
খিচুরীও অাসবে না, এনার্জিও পাবেন না!!!

তবে যদি সত্যিই তারুন্বের এনার্জি দাবি করেন, তাহলে সরকারে'র যা যা ইচ্ছা, তার বাইরে'র যে কোন একটা ইস্যু নিয়ে অান্দোলনের ব্যাবস্থা করে দেখান। অার তা যদি দেশের স্বার্থে হয়, তবে কথা দিলাম- "মাঠে পাবেন"।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০২

আনোয়ার কামাল বলেছেন: ভুল ধারণা। আপনি কী বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন? না হলে তবে চলে আসুন । আপনি এলেইতো ওদের একজন বাড়ে। প্রাণের টানে, মনের টানে শহীদের রক্তের শপথে নেমে আসুন তা হলেই দেখবেন আপনি যা বলেছেন তা কিছুই না। সবই তুচ্ছ বনে যাবে। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.