নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এক, দুই, তিন, চার............ গুনতে থাকেন!

এখানে হাত পাকাচ্ছি :)

গোঁফওয়ালা

কাজের কাজ তেমন কিছু পারি না... ভালোবাসি ঘুরে বেড়াতে আর গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করতে। লেখালেখির হাত তেমন ভালো না...তবু শখে লিখি। ফেসবুক : facebook.com/Arefins.bd

গোঁফওয়ালা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প ২: শেষ মৃত্যু

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৫৩

মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই অন্ধ হয়ে যান কবীর সাহেব। তিনি এখন কেবল একটি মাত্র বিষয় নিয়ে চিন্তা করেন, তার সংগ্রহে থাকা পঠিত-অপঠিত বইগুলোর কি হবে? চোখই যদি না থাকলো তাহলে আর বই দিয়ে কি হবে?



প্রায় দশ বারো বছর ধরে তিনি বই সংগ্রহ করে চলেছেন। বইয়ের নেশায় তিনি দিনের পর দিন না খেয়ে টাকা জমিয়েছেন, পুরনো বইয়ের দোকানে পড়ে থেকেছেন বেলা-অবেলায়। তবে এসব অনেক আগের কথা, তার ছাত্র জীবনের।



কবীর সাহেব ভেবেছিলেন বই নিয়ে তার এ পাগলামোটা হয়তো বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে, কিন্তু যায়নি। সাড়ে চার বছর টিকে ছিলো তার বৈবাহিক জীবন। এর পেছনের কারনটাও ছিলো সেই বই। প্রেমের বিয়েটা ভেঙে যাবার পর থেকে তিনি একাকী জীবন যাপন করছিলেন।



কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় চোখ হারানোর পর থেকে কার্যত তিনি নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। এখন তিনি কি করবেন? বইয়ের তাকে সাজানো বইগুলো তিনি পরম মমতায় ছুয়ে দেখেন আর গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। সরকারি চাকরী থেকে হঠাৎ অবসরে চলে যাওয়ায় পেনশনের টাকা দিয়ে হয়তো বাকি জীবনটা চালানো সম্ভব কিন্তু সেটা হবে এক যন্ত্রণাদায়ক জীবন।



আত্মহত্যার করার কথা তিনি যে ভাবেননি তা না, কিন্তু সেটা মন থেকে মুছেও ফেলেছেন। তার কোন উত্তরসূরিও নেই যে তার জন্য তিনি বইগুলো রেখে যাবেন, আগলে রাখবেন।



এখন কেইবা তার তিলতিল করে গড়ে তোলা প্রিয় জিনিসগুলো যত্ন করে রাখবে? কত জনইবা সেগুলোর কদর বুঝবে? যে বুঝতে পারতো সেইতো তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে অনেক আগেই।



কবীর সাহেব তার বইগুলো সংগ্রহ করে রাখার জন্য বিভিন্ন মহলে ধরনা দিয়ে বেড়িয়েছেন, অফিসের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে হাত পেতেছেন, মন্ত্রনালয়ে চিঠির পর চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু কোন ফল হয়নি, শুরুতে সকলে তাকে আশ্বস্ত করলেও কেউ আর পরে সেটা গুরুত্ব দেয়নি। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিরও কোন জবাব মেলেনি কখনো।



এক জ্যোৎস্না রাতে তিনি নদীতে নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। অন্ধ মাঝির নৌকা ছুটে চলে দিকহীন গন্তব্যের দিকে, এলোমেলো ভাবে। তখন নক্ষত্রে আকাশ ছেয়ে গিয়েছে, গাঢ় জ্যোৎস্নার আভায় চারিদিক হয়ে উঠেছে নীলাভ স্বর্গ। কবীর সাহেব আবৃত্তি করে উঠলেন তার প্রিয় কবিতা-



বিকজ আই কুড নট স্টপ ফর ডেথ,

হি কাইন্ডলি স্টপড ফর মি-

দ্যা ক্যারিজ হেল্ড বাট জাস্ট আওয়ারসেলভস

অ্যান্ড ইমমোরটালিটি

উই স্লোলি ড্রোভ, হি নিউ নো হেস্ট

অ্যান্ড আই হ্যাড পুট এওয়ে-

মাই.................।




দূরে কোথাও থেকে দেখা যায় প্রকৃতির এমন খেয়ালে শান্ত জলরাশির মাঝে ভেসে চলা এক নিঃস্ব মাঝির নৌকায় উচু ঢিবির মত স্তূপ হয়ে রয়েছে বই আর বই। অদ্ভূত সে দৃশ্য!

(১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)



দেখতে পারেনঃ

গল্প : দাঁড়কাক

“দেবদাসের সমস্যা”

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:২৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: একজন বইপ্রেমী মানুষের জীবন যন্ত্রণার কথা খুব দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।

ধন্যবাদ, ভাই গোঁফওয়ালা।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৩৪

গোঁফওয়ালা বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই আবুহেনা।

২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭

সুমন কর বলেছেন: আরো একটু বিস্তারিত হলে বেশ হতো। তারপরেও ভাল লাগল।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩৫

গোঁফওয়ালা বলেছেন: 8-|

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


অনেক ভাল লাগল লেখাটা +++

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩৬

গোঁফওয়ালা বলেছেন: + এর জন্য ধন্যবাদ :-B

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.