নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির !

নাভেদ

প্রোফাইল এ _ই -ডি -টি- ং কাজ চলিতেসে ।

নাভেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিমিটিভ এনোনিমাস !

১৯ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫

শুকনো পাতা মাড়ানোর মচ মচ শব্দ হচ্ছে । আমি মুখ উঁচিয়ে এদিক ওদিক তাকালাম । কই ! মানুষটা এখনো আসেনা কেন ! এতক্ষন তোঁ লাগার কথা না । টেনশনে কেমন বমি বমি লাগছে । আচ্ছা , ওকে নিয়ে আমার এতো ভয় কেন ? আমি কি ওকে ভালবাসি ? ধুর কি সব ছাইপাঁশ ভাবি , তা কি করে হবে ! অন্য কিছু নিশ্চয়ই । কিন্তু , ওকি আমাকে ভালোবাসে ? ছিঃ ! আমার মাথাই গেছে আজ ।



গাছের বাঁকলের তৈরি চটি জোড়া এক পাশে পরে পরে রোদে শুকাচ্ছে । এপাশে বন অনেকটা হালকা । বড় বড় কয়েকটা পাইন গাছ এক সারিতে দাড়িয়ে আছে । সারির শেষ মাথায় একটা মেপল গাছ । গাছের ডালে সাদা কি একটা যেন ঝুলে আছে । কাছে যেতেই বুঝলাম ,একটা ছেড়া গেঞ্জি , এটা ওর ! গেঞ্জিটা আলতো করে ছুয়ে দিলাম। ঘামের বিদঘুটে গন্ধে দম নেয়া দায় । কিন্তু কি আশ্চর্য , আজ ঘামের গব্ধ ও কেমন যেন অদ্ভুত ভালো লাগায় আমাকে অবশ করে দিলো । হেঁটে হেঁটে ট্রিহাউজের দিকে এগিয়ে গেলাম । আমাদের ট্রিহাউজ শক্ত-পোক্ত একটা ওক গাছের ডালে ।রশি বেয়ে উপরে উঠে এলাম । মৃদু বাতাস বইছে বাইরে । তুলা গাছের একটা ভাঙ্গা কাণ্ডে মাথা রেখে শুয়ে পরলাম । মানুষটা পাশে থাকলে এতো ভালো লাগে কেন , কে জানে ! ওর আসতে হয়ত আরও দেরি হবে । ইশ , একটু তাড়াতাড়ি করে আসতে পারেনা ? নিশ্চয়ই আঙ্গুর , জব আর কলার খোজে এগাছ থেকে ও গাছে ঘুরে বেরুচ্ছে । ভর দুপুরে প্রতিদিনকার মত ফিরেই হয়ত ক্লান্ত হয়ে মাটিতে শুয়ে পরবে । মানুষটার কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম গুলো গাল বেয়ে একে বেকে নেমে যাবে সবুজ ঘাসের গভীরে । কতদিন ভাবি ওর কপালের ঘাম গুলো আমার ছিন্ন - জীর্ণ কাপড়টা দিয়ে মুছে দিব । কিন্তু ভয় হয় । পাছে যদি কিছু মনে করে !ধুর ! যা হবার হবে আজ ওর কপাল আমি ছুব ই ।আমাদের ছোট কুটিরে সভ্যতার একটাই নিদর্শন - বহু পুরনো আমলের একটা গিটার । বিকেলে গাছেরগুড়িতে ঠেসান দিয়ে ও যখন ক্লদ দেবুসির সুর ভাজে , তখন আমার শরীরের শিরায় শিরায় কেমন যেন একটা শিহরণ উঠে । মানুষটা এতো করুন সুর তুলে কেন ? ওর মনে কি খুব দুঃখ !ইশ আমি যদি পারতাম ওর সব কষ্ট গুলো ভুলিয়ে দিতে ! রাতে খাওয়ার সময় ওকে খানিকের জন্য কাছে পাই । নির্লিপ্তের মত খেয়ে যায় । এক বার আমার দিকে তাকালে কি খুব ক্ষতি হয়ে যাবে ? নাহ । সে তাকাবে না । এতো রাগ লাগে , মাঝে মাঝে মনে হয় ওকে ধরে ____ । ইয়াহ আল্লাহ , কি অসভ্য হয়ে গেছি এই কটা দিনে ! ও জানলে কি ভাববে ! ছিঃ !রাতে ঘুমানোর আগে একবার মাথা নিচু করে বলবে , সব ঠিক আছে ? আমি হয়ত কিছু বলব কিন্তু ও উত্তর না শুনেই চলে যাবে । ইচ্ছে হয় বলি , একটা গান গাও না , প্রাচীন পৃথিবীর গান । প্রাচীন পৃথিবীতে নাকি হাসন রাজা নামে এক গীতিকার ছিল । তাঁর একটা সুন্দর গান আমি জানি । চাঁদ উঠলেই বির বির করে গাই , ইশ ও যদি আমার সাথে গাইত , খুব কি ক্ষতি হত ?



খুক খুক করে কাশির শব্দে নিচের দিকে তাকালাম । মানুষটা দাড়িয়ে আছে । শূন্য হাত । ভরসা হারানো অসহায় দৃষ্টি । আজ কি ও কিছু পায়নি ? আমি মানুষটার সামনে দাঁড়ালাম । ওর হাত দুটো থেমে থেমে কেপে উঠছে । আজ সারাদিন আমাকে না খেয়ে থাকতে হবে , এই চিন্তাই কি ওকে এতো অস্থির করে রেখেছে ? মানুষটা এমন কেন ? উফ ! আচ্ছা , আজই ওর কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম গুলো মুছে দিলে কেমন হয় ? তাঁর সাথে ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম , ভয় পাও কেন ! আমি আছি তোঁ । এই যে তোমার পাশে ।আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে । এতো কান্না পাচ্ছে কেন !

__ তিশা নামের মেয়েটা হু হু করে কাঁদছে । আর ইবু নামের ছেলেটা গভীর মুগ্ধতা নিয়ে সেই কান্না দেখছে !



আমাজানের গহিনে টিকে থাকা পৃথিবীর শেষ দুই মানব মানবি এখনো জানেনা , তাঁরা দু' জন দু' জনকে ভালোবাসে !

_____ ( ২১১৪ সালে মঙ্গলের উপগ্রহ ডিমসে বসে ১০০ বছর আগের প্রাচীন এক পুথি থেকে এই গল্পটি সংগ্রহ করেছেন লেখক ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ বেশতো!!!

২২১৪ সালে আরেক পাঠক ব্লগ নামক অনলাইন ফোরাম থেকে পুরানো ডাটা উদ্ধার করতে গিয়ে গল্পটি পেয়ে পড়ে কেমন আনমনা হয়ে যায়!!!!!

আহা সত্যি কি গভীর ভালবাসাসী ছিল তবে ২০০ বছর আগে ;) =p~ =p~ =p~

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১৭

নাভেদ বলেছেন: ভালোবাসা তোঁ ভালোবাসা _ই ! হোক না তা দুশো বছর আগের _ই ! ধন্যবাদ !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.