নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির !

নাভেদ

প্রোফাইল এ _ই -ডি -টি- ং কাজ চলিতেসে ।

নাভেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে মৌলবাদের উত্থান ও একটি সাধারন বিশ্লেষণ _

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০২



মৌলবাদের উত্থান ::: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মৌলবাদের উত্থান গভীর গবেষণা ও বিশ্লেষণের দাবি রাখে । কেননা , বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে মৌলবাদ , ধর্মান্ধতা বিরোধী একটি ভাষা ভিত্তিক ও সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদী আবহ থেকে ।বাংলাদেশের মানুষের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হাজার বছরের । হাজার বছরের এই সম্প্রীতিতে কি করে সৃষ্টি হল ভাঙ্গনের ? আর এই ভাঙ্গনের সরু ছিদ্র দিয়ে কিভাবে জন্ম নিল মৌলবাদ , এই নিবন্ধে সে বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হয়েছে ।

মৌলবাদের উত্থান সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই মৌলবাদকে রাজনৈতিক , সামাজিক ,সাংস্কৃতিক , আঞ্চলিক এবং আর গভীর পর্যালোচনার জন্য মনস্তাত্ত্বিক , সামরিক এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করতে হবে । এই লেখায় কিছু হালকা আলোচনা করা হয়েছে ।

১। ব্রিটিশ কলোনিয়ালিজম ::

ব্রিটিশ শাসন পূর্ব ভারতবর্ষের ক্ষমতায় ছিল মুসলমানরা ।তাই , ব্রিটিশদের হাতে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যাওয়ার জন্য হিন্দুরা মুলত মুসলমানদের দায়ী করত । আমার মনে হয় হিন্দু মুসলমান বিভেদের সেটাই ছিল আনুষ্ঠানিক সুচনা । ব্রিটিশ রাজদণ্ডের নিচে থেকে হিন্দুরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে থাকলেও মুসলমানরা পিছিয়ে পরলো । এর পেছনে খুব সম্ভবত ব্রিটিশদের বিষয়ে মুসলমানদের Inferiority কাজ করেছিল । ১৯৪০ এ এসে হিন্দু - মুসলমান বিভেদ যখন তুঙ্গে তখন এই ধর্মীয় রাজনীতিকে কে কাজে লাগিয়ে জিন্নাহ তার ' দ্বিজাতি তত্ত্ব ' ঘোষণা করলেন । ব্রিটিশরা ১৯০ বছর ধরে যে ধর্মীয় বিরোধ জিইয়ে রেখে ভারতবর্ষে ছড়ি ঘুরাল , সেই অনুকরণে জিন্নাহ ও রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করতে চাইলেন এবং এটাই ছিল ভারতবর্ষের ইতিহাসের Massive Blunder . এই ধর্মীয় রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে '৪১ এসে জন্ম নিল এক সাম্প্রদায়িক গুষ্ঠি । অনেক পরে এসে এই গুষ্ঠি বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে মৌলবাদের অভূতপূর্ব ল্যাব ওয়ার্ক শুরু করে । ব্রিটিশ মুকুট আর পাক রাষ্ট্রযন্ত্রের হাত ধরে ধারাবাহিক ভাবে বাংলাদেশে উত্থান ঘটে মৌলবাদের । এই উত্থানের অনানুষ্ঠানিক বীজ নিহিত হয়েছিলো ১৭৫৭ তেই ।

২। জাতীয়তাবাদ - ধর্ম ককটেল :: '

৪৭' এর দেশ ভাগের পরেই পাকিস্তান সরকার ' জাতীয়তাবাদ ' এর Synonym হিসাবে ' ধর্ম ' শব্দ ব্যাবহার করতে থাকে । সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির পরিবর্তে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে রাখে আর তার সাথে চলে অন্য জাতি গুষ্ঠির বিরুদ্ধে religious-Cultural Assault । বিশেষ করে পাকিস্তান সামরিক সরকার গুলো ধর্ম ও মৌলবাদকে আঁকড়ে ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে ।ফলে মৌলবাদী গুষ্ঠি গুলো বাধাহীন ভাবেই ডালা পালা মেলে বেড়ে উঠেছে । যুদ্ধময় '৭১ এ এই বাড়ন্ত মৌলবাদী গুষ্ঠি তাদের শক্তিমত্তা ও বৈশিষ্ট প্রকটভাবেই তুলে ধরেছে ।

৩। মুক্তিযুদ্ধ- ইতিহাস বিকৃতি ::

৭১ এ যে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের আবির্ভাব , সেই যুদ্ধের ইতিহাসকে রাজনৈতিক স্বার্থ -সিদ্ধির উদ্দেশে কর্দমাক্ত ও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয় । ফলে মুক্তিযুদ্ধোত্তর ঠিক পরবর্তী প্রজন্ম সহজ ভাষায় আমাদের বাবা - চাচারা সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হয় । আর এই সুযোগে মৌলবাদী গুষ্ঠি তাদের ধর্মান্ধ - মৌলবাদী প্রোপাগণ্ডা শুরু করে । যে প্রোপাগণ্ডা এখনো চলছে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পক্ষে গোয়েবোল ছিল_ একজন - কিন্তু বাংলাদেশে প্রশ্নবিদ্ধ এই মৌলবাদী গুষ্ঠির অন্তত হাজার খানেক ঘিলুহিন মস্তক বিশিষ্ট গোয়েবোল আছে । যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিই ছিল মৌলবাদীদের উত্থানের প্রধান কারন ।

৪। ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ ::

এই বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মৌলবাদ বিস্তারে পরোক্ষ ভাবে সবচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । এর দুটি দিক আছে । ১ - ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলমান দমন-পীড়ন নীতি । ২- বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় অযাচিত হস্তক্ষেপ । বিশেষ করে কাশ্মীর সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের Hostile Policy এবং সামরিক হস্তক্ষেপ দেশের ভিতরে ভারত বিরোধী আবহ তৈরি করে । এছাড়া ধারাবাহিক ভাবে মুসলমান নিধন , বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা ও নানান ভারত বিরোধী গুজব মৌলবাদী গুষ্ঠির কাছে প্রোপাগণ্ডা ইস্যু হিসাবে কামিয়াব ফলাফল নিয়ে আসে । তারা দেশের অভ্যন্তরে ভারত বিরোধী প্রচারনা চালিয়ে নিজেদের পক্ষে জনমত তৈরি করে । এছাড়াও , বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের ক্রমাগত Elder Brother Policy ও ভারত বিদ্বেষে নতুন পালক যুক্ত করে । আর এই বিদ্বেষ পুজি করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে ধর্মান্ধ মৌলবাদী চক্র ।

৫। উর্দি - শাসন ::

উর্দির নিচে থাকে মৌলবাদী গুষ্ঠির শুক্রাণু । জলপাই রঙের অমরা (placenta) এই মৌলবাদীদের পুষ্টি সরবরাহ করে । '৭৫-'৯০ পর্যন্ত মৌলবাদীদের দেহে চলেছে পুষ্টি সরবরাহ । জাতীয়তাবাদ কে ফেলা হয়েছে ট্রেস বাস্কেটে । গদি আঁকড়ে থাকতে একসময়ের মহামানবরা এই মৌলবাদীদের তোষণ নীতি গ্রহণ করে । দেশের মুল ধারার রাজনীতির স্রোতে নিয়ে আসে এই গুষ্ঠিকে । আর এটাই ছিল জাতিওতাবাধের দেয়ালে পেরেক মেরে দেশকে বিভক্ত করার এক অদূরদর্শী রাজনীতি ।

ধর্মান্ধতাই মৌলবাদের উৎস । আমি দেখেছি এই গুষ্ঠির সদস্যরা ধর্ম ও মুক্তিযুদ্ধ দুটো সম্পর্কেই আশংকা জনক পরিমান কম জানে । আর এই অজ্ঞানতার সুযোগে মৌলবাদ যুগে যুগে বিস্তৃতি লাভ করে , ভবিষ্যতেও করবে ।
এছাড়া অনুন্নত মধ্যযুগীয় মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা , দারিদ্রতা , নিরক্ষরতা , মধ্যপ্রাচ্য এবং বিভিন্ন এনজিও ' ও মৌলবাদীদের পক্ষে রসদ জুগিয়ে যাচ্ছে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৪৮

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার পর্যবেক্ষণ এবং বিশ্লেষণ সংক্ষিপ্ত হলেও আমার কাছে যথার্থ মনে হয়েছে। দ্বিমত পোষণ করার কোন সুযোগ পেলাম না। শুধু নিজেকে একটু ঝালিয়ে নিলাম। বাংলাদেশ থেকে যদি মৌলবাদ উচ্ছেদ করা না যায়, তবে কস্মিনকালেও বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমবে না এবং বাংলাদেশ কখনই উন্নতি করতে পারবে না। এটা মনে রাখা দরকার যে আমাদের দেশে আরব দেশগুলোর মতো কোন তেল নাই যে টাকা দিয়ে সব করে ফেলা যাবে। গ্যাস আছে কিন্তু তা নিজেদের প্রয়োজনেই ঠিক মতো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছি। অনেক ধন্যবাদ নাভেদ।

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

নাভেদ বলেছেন: হা । মৌলবাদ দূর করতে না পারলে রাজনৈতিক অস্থিরতা থামবেনা । আবার একই ভাবে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোও মৌলবাদ পুষে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাইবে । দুষ্টচক্র ভায়া !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.