নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অলিম্পিক গেমসে একবার দেখেছিলাম, জনৈক কিউবান বক্সার প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ান বক্সারকে বেল বাজিয়ে খেলা শুরু হওয়া মাত্রই একটা কি দুটো পাঞ্চে নক আউট করে দেয়! এক্কেবারে ক্লিন নক আউট। বেমক্কা পাঞ্চ খেয়ে ফ্লোরে নিঢাল পড়ে আছে বক্সারটি। খেলা শুরু হওয়া মাত্রই খেলা শেষ। উপস্থিত অগণিত দর্শকবৃন্দ, বাইরে টেলিভিশনে লাইভ আরও কোটি কোটি দর্শক, খেলার রেফারি, অফিসিয়াল সবাই দারুণ হতাশ। কেউই আশা করেনি, খেলা শুরুর প্রথম মিনিটেই এভাবে নক আউট হয়ে যাবে সেই অস্ট্রেলিয়ান বক্সার! যে বক্সারটি সেদিন এমন দুয়েক পাঞ্চেই কুপোকাত হয়েছিল, সেও কিন্তু মোটেই সেরকম অনভিজ্ঞ নিম্নমানের বক্সার নন, অলিম্পিকের মতো সর্বোৎকৃষ্ট ক্রীড়া আসরে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, নিশ্চয়ই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেই রিঙে নেমেছিলেন। তারপরও কিউবান বক্সারের সাথে রিঙে দীর্ঘসময় টিকে থাকবার মতো ভালো বক্সার হয়তো তিনি ছিলেন না। অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে বক্সিং তেমন জনপ্রিয় খেলা নয়। নির্ঘাত কিউবান বক্সারের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের ব্যাপারে তার পূর্বে তেমন কোনও ধারণা ছিল না। ইতিপূর্বে যাদের সাথে তিনি আন্ত মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় লড়েছিলেন, তাদের থেকে কিউবান বক্সিংয়ের লেভেল আরও অনেকটাই উচ্চতর। উপস্থিত বিরাট সংখ্যক সংখ্যাগরিষ্ঠ অস্ট্রেলীয় সমর্থকরা স্বভাবতই দারুণ হতাশ স্বদেশী খেলোয়াড়ের এমন পারফরমেন্সে। সমস্ত শোরগোল মুহূর্তেই স্তিমিত হয়ে এলো। কিন্তু সেখানে উপস্থিত অস্ট্রেলীয় দর্শকদের একজনও সেই বক্সারকে কোনওরকমের দুয়োধ্বনি দেয়নি। বরং এমন পরাজয়ও অনেকে খুশিখুশি মেনে নিয়েছিলেন। আমাদের দেশের দর্শক হলে ওরকম পরিস্থিতিতে নির্ঘাত দুয়োধ্বনি দিতো সেই পরাজিত খেলোয়াড়কে, নানান কটূক্তি করতো।
যে কোনও পর্যায়ের যে কোনও খেলায় যে কোনও ফলাফলই হতে পারে। সবই সানন্দে মেনে নিতে হয়। আমাদের দেশের মানুষদের এই জায়গাতে ঘাটতি রয়ে গেছে। খেলার ফলাফল প্রত্যাশানুযায়ী না হলে আমরা অনেকেই উগ্র হয়ে উঠি। খেলোয়াড়দের দুয়োধ্বনি দেই, গালমন্দ করি, আর তারপর চুলচেরা বিশ্লেষণে লেগে যাই, কেন এরকম হলো, অমুক তমুক কেন ওরকম না করে এরকমটা করতে গেলো। এরকম হতে পারতো, তাহলে ফলাফল অন্যরকম হতো ইত্যাদি। বাইরে থেকে সবকিছুই ওরকম সরল ছক কাটা যায়, কিন্তু বাস্তবে যারা খেলার মাঠে খেলে তাদের দর্শকদের মতো অতো নির্ভার নিশ্চিন্ত হবার বিন্দুমাত্র কোনও সুযোগ নেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পরাজয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন পরাজয় দুটোই খেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের ক্রিকেট দল ধারাবাহিক কিছু ম্যাচ খারাপ করলে, আমাদের দেশের সিংহভাগ সমর্থক উগ্র হয়ে ওঠে। এমনকি মাঠেও দেখেছি, ফলাফলে হতাশ দর্শকদের খেলোয়াড়দের ইচ্ছামতো দুয়োধ্বনি দিতে, গালিগালাজ করতে, তাদের লক্ষ্য করে নানানরকম ভীষণ অশালীন মন্তব্য করতে। ঢাকার মাঠে এরকম একবার নয় অনেকবার দেখেছি। হয়তো খেলায় নিশ্চিত পরাজিত হতে চলেছে বাংলাদেশ, এ সময় মাঠের সীমান্তে যে খেলোয়াড় ফিল্ডিং করছে তাকে উচ্চস্বরে চিৎকার চেঁচামিচি করে তিরস্কার করা শুরু করেছে দর্শকরা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। যা কোনওক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। ফলাফল যাই হোক দেশের প্রতিনিধিত্বকারী খেলোয়াড়দের কিছুতেই এভাবে আক্রমণ করা যাবে না। এই বোধোদয় হোক সবার।
১৯ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:২৭
অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। সভ্য হোক সবাই।
২| ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: খেলার সাথে কি সারা দেশের মানুষের আবেগ থাকে না?
আবেগের কি মূল্য নেই?
১৯ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯
অর্ক বলেছেন: অতি আবেগজনিত সমস্যা নিয়ে লিখেছি। আবেগ অস্ট্রেলিয়ানদেরও আছে তাদের দেশ নিয়ে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত প্রকাশ কিন্তু নেই।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: যারা এই খেলা নিয়ে অতি বাড়াবাড়ি করে তারা নিঃসন্ধেহে চরম মূর্খতারই পরিচয় দেয়।
খেলা নিয়ে বাড়াবাড়ির কিছু নেই।