নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একবার মহাখালী রেল ক্রসিং থেকে সামান্য দূরে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলার রেল লাইনে কাটা পড়া লাশ দেখেছিলাম। আজ থেকে প্রায় এক যুগ আগের কথা। আমি তখন নিতান্তই কিশোর। শাড়ি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছিল লাশটা। তারপরও দৃশ্যমান, মৃতার চোখসহ গালের খানিকটা অংশ ঝুলে বাইরে বেরিয়ে এসেছে বীভৎসভাবে। অল্প কিছুক্ষণই ছিলাম সেখানে। পরিষ্কার ঝকঝকে একটি শাড়ি ছিল ভদ্রমহিলার গা’য়ে। লাশটা এখনও ভাসছে চোখের সামনে। ভাসাভাসা স্বভাবতই। অতো আগের কথা আজ আর সেভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে নেই। মনে থাকবার কথাও নয়। কিন্তু পরিষ্কার মনে আছে যে, সেদিন আমার কিশোর মনে তার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুটি দারুণ রেখাপাত করেছিল। ইতিপূর্বে নাটক সিনেমায় প্রেমে প্রত্যাখ্যান বা প্রতারিত হয়ে বা দারিদ্র্যতার অভিশাপে দুকুল হারিয়ে বিপর্যস্ত অল্প বয়সী তরুণী মেয়েদেরকে এভাবে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে দেখেছিলাম। কিন্তু তার ক্ষেত্রে, শাড়ি ও অবশিষ্ট মুখাবয়ব দেখে পরিষ্কার অনুমান করা যাচ্ছিল তিনি একজন চল্লিশোর্ধ নারী। ওরকম মোটা কাপড়ের হালকা গোলাপি বা এরকম কোনও রঙের শাড়ি (শাড়িটার সঠিক রঙ এমুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না। কিন্তু তা ছিল মোটা কাপড় ও কোনও হালকা রঙের, যা সাধারণত একটু বয়স্ক মহিলারাই পরে থাকে। উপস্থিত মুহূর্তে শাড়িটা দেখেই বয়স শনাক্ত করেছিলাম।) কোনও তরুণী মেয়ের পরার কথা নয়, এছাড়া যতোটুকু চেহারা বাকি ছিল তা দেখেই পরিষ্কার অনুমান করা যাচ্ছিল তার বয়স। আর পরিপাটি বেশভূষা, চকচকে দামি জুতা দেখে দারিদ্র্যতায় বিপর্যস্ত হয়ে তার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেবার ধারণাটিকেও সহজেই বাদ দেয়া যায়। তাহলে?
আগেই বলেছি ঘটনাটা গভীর রেখাপাত করেছিল আমার সেই অপরিণত কিশোর বয়সে। সেটাই আমার জীবনে প্রথম রেলে কাটা পড়া কোনও লাশের মুখোমুখি হওয়া। আমি অত্যন্ত কৌতূহলী হয়ে উঠেছিলাম তাঁর আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ জানার জন্য। সে যে আত্মহত্যাই করেছিল, সেটা নিশ্চিত ছিলাম না যদিও। সেখানকার স্থানীয় লোকজন বলছিল আত্মহত্যা। আত্মহত্যার ধারণাটাই স্বাভাবিক। একটা জ্বলজ্বলে ট্রেন ভরদুপুরবেলায় মাটি কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে, বিকট হর্ণ বাজিয়ে, শব্দ করে ছুটে যাবে, এটা বধির না হলে কারও না বোঝার কথা নয়। তারপরও হেডফোনে গান শুনতে থাকলে বা কথা বলার মুহূর্তে অন্যমনস্কতা থেকেও দুর্ঘটনা হতে পারে বৈকি!
(চলবে)
২১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮
অর্ক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। সাথেই থাকুন। আরও অনেক কিছু বলা হবে।
২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত ব্যক্তির বীভৎস লাশ না দেখাই শ্রেয়ঃ। মাঝে মাঝে ব্যক্তিবিশেষের উপর এর খুব ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে থাকে।
আত্মহত্যাই হোক আর দুর্ঘটনাজনিত কারণেই মৃত্যু হয়ে থাক, একটি প্রাণ অসময়ে ঝরে গেল, এটাই দুঃখের কথা। তিনি তো নিশ্চয়ই কারো মা ছিলেন, তারা নিঃস্ব হয়ে গেল!
২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৪৯
অর্ক বলেছেন: নিঃসন্দেহে! আজও লাশটা আমার চোখে ভাসে। খুবই নির্লিপ্ত মুখের একাংশ। সবচে’ বড় কথা, আমার কেন যেন বদ্ধমূল ধারণা খুব তুচ্ছ কারণে ভদ্রমহিলা আত্মহত্যা করেছিলেন!
জানি প্রকৃত কারণ বা সত্যটা কোনওদিন জানা যাবে না!
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ঠিকতো, দেখি কানে হেডফোন লাগিয়ে আপনি আমাদেরকে কতটা সেফজোনে রাখতে পারেন।
ধন্যবাদ,শুভেচ্ছা অনন্ত।