নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চট্টগ্রাম শহরের টুকিটাকি

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪



ঢাকার মতোই একটি দারুণ জনবহুল ভিড়ভাট্টার শহর চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। একইরকম ভিড় হুলস্থুল, এটা ওটা আয়োজন, সাজ সাজ রব সবসময়। বড় বড় আকাশছোঁয়া অট্টালিকা, অভিজাত শপিং মল, দোকানপাট ইত্যাদি। অনেকটা নয়, প্রায় পুরোটাই ঢাকার মতোই। চট্টগ্রাম শহরকে বরং আমার মনে হয়েছে ঢাকার থেকেও আরও চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো ও বড়। চট্টগ্রামে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য উপভোগ্য বেশ কিছু স্থান রয়েছে। শহর থেকে খানিকটা দূরে নয়নাভিরাম পতেঙ্গা সি বিচ। শহরের ভিতরে রয়েছে মিউজিয়াম, শহীদ জিয়া শিশু পার্ক, শাহ আমানত আলি (র: )’র মাজার, ওয়ার সিমেট্রি, কাছাকাছি ফয়’স লেক, চিড়িয়াখানা, বায়োজিদ বোস্তামি’র দরগাহ ইত্যাদি।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা তুলনামূলক অত্যন্ত দুর্বোধ্য। তাদের নিজস্ব অনেক শব্দ আছে। স্থানীয়রা দ্রুতগতিতে কথা বলতে থাকলে বাইরের লোকদের বোঝা অনেকসময় দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। একবার এরকম একটি অভিজ্ঞতা হয়েছিল, পতেঙ্গা সি বিচ থেকে ফেরার পথে শহরের কোনও একটি নির্দিষ্ট স্থানে লোকাল বাস না থাকায় বেশ বিপদে পড়েছিলাম। বাস সার্ভিসের কোনও সমস্যা ছিল সেদিন; হরতাল বা এরকম কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ। এদিকে রাত হয়ে আসছে। আরও অনেকেই সেখানে আমার মতো অপেক্ষা করছিল বাসের। কিন্তু বাস নেই। এক পর্যায়ে একটা খালি পিকাপে অনেকের সাথে আমিও হুড়মুড় করে উঠে পড়লাম লাফিয়ে। খোলা হাওয়া খেতে খেতে যেতে লাগলাম শহরস্থ নিউ মার্কেটের উদ্দেশ্যে। এক দল লোক পিকাপে। বোধহয় মোটামুটি সবাই সেখানে স্থানীয় ছিল। তারা পরস্পর নিজেদের মধ্যে কথা বলতে লাগলো। দারুণ বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম, এসব বেশ কিছু কথার বিন্দুবিসর্গ কিছুই বুঝতে পারছি না, অনেক কথা ভাসাভাসা বুঝতে পারছি, কিছু কিছু মোটের ওপর বুঝতে পেরেছিলাম! আমি বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক জায়গায় গিয়েছি, চট্টগ্রাম’র ভাষার মতো দুর্বোধ্য আঞ্চলিক ভাষা অন্য কোথাও নয়। ওখানে বোধহয় ‘ভালো’কে ‘গম’ বলা হয়।
‘কেমন আছেন?’
‘গম আছি।’ এরকম শুনেছিলাম।

চট্টগ্রামে শিমের বিচি দিয়ে রান্না করা তরকারি দারুণ প্রচলিত। স্থানীয় ভাষায় একে ‘খাইস্যা’ বলা হয়ে থাকে। খেতে দারুণ সুস্বাদু। হোটেল রেস্টুরেন্টে আমার কাছে শুনে আপনি আবার ‘খাইস্যা’ বলে বসবেন না যেন! মহা বিপদে পড়ে যাবেন! নির্ঘাত আপনার মুখে ‘খাইস্যা’ শুনে, ওয়েটার পরিবেশনকারীরা স্থানীয় ভেবে আপনার সঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা শুরু করে দিবে। তখন কি করবেন!
চট্টগ্রামের মানুষ তরকারিতে যারপরনাই তেল মসলা খায়। চট্টগ্রামে খাবার দাবারের দাম ঢাকার মতোই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বরং বেশিই মনে হয়েছে। চট্টগ্রামে শুটকি ও সামুদ্রিক মাছ সর্বত্র পাওয়া যায়।
আমি শহরের আল জামান হোটেলে একবার এক গাদা টাকা দিয়ে অনেক আশা করে রূপচাঁদা মাছ খেয়েছিলাম। খেয়ে আক্কেলগুড়ুম। মাছে কোনও স্বাদটাদ কিচ্ছু নেই। হিসাবছাড়া তেলমশলা দিয়ে তরকারি আর আমার খাবার উপযুক্ত রাখেনি!
চট্রগ্রামে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত অনেক বাড়িঘর ও স্থাপনা এখনও দিব্যি টিকে আছে। এদিকওদিক প্রচুর চোখে পড়বে। চট্রগ্রামের পুরাতন রেল স্টেশনটা বোধহয় ব্রিটিশ আমলেই নির্মিত হয়েছিল। এরকম আরও অনেক বহু পুরনো স্থাপনা এখনও রয়ে গেছে।
চট্রগ্রাম শহরেও ভালো ট্রাফিক জ্যাম হয়, ঢাকার মতোই। তেমনি যানবাহনের আধিক্যও লক্ষণীয়। প্রচুর প্রাইভেট কার, মাইক্রো ব্যক্তিগত যানবাহন সেখানেও।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাটি খুব ছোট, পশুপাখি অল্পসংখ্যক। এর সম্প্রসারণ ও আরও পশুপাখি সংযোজন আশু প্রয়োজন। তবে পশুপাখি রক্ষণাবেক্ষণটা আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি ব্যক্তিগতভাবে চিড়িয়াখানা নির্মাণের পক্ষপাতী নই। আমার দৃষ্টিতে এটা মানবিকই নয়। একসময় ইয়োরোপের বিভিন্ন দেশের চিড়িয়াখানায় পশুপাখিদের পাশাপাশি আফ্রিকার কৃষ্ণ বর্ণের শিশুদের খাঁচায় ভরে রাখা হতো। লোকজন ভিড় করে দেখতো। বিগত শতাব্দীপূর্বেই। কাছাকাছি সময় অনলাইনে একজন কবি’র ‘চিড়িয়াখানা’ নিয়ে এরকম একটি কবিতা আমাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছে। মানুষের বিনোদনের জন্য বনের মুক্ত পশুদের এভাবে এক রত্তি খাঁচায় লোহার বেরি পরিয়ে বন্দি জীবনযাপনে বাধ্য করা কতোটা মানবিক? আদৌ কি মানবিক?

(চলবে)

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫

তালপাতারপাখাই বলেছেন: সুন্দর!

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:০৭

অর্ক বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ। সাথে থাকুন। এরকম আরও লেখার আশা রইলো।

২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: মিয়াবাই, দু-চারটা ছবি দিতে পারতেন?

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬

অর্ক বলেছেন: ভালো হতো। হঠাৎ শুয়ে শুয়ে লিখে ফেললাম। তেমন পরিকল্পিত লেখা নয়। ছবির ব্যাপারটা ঠিক মথায় ছিল না। বিভিন্ন ক্লাউড স্পেসে খুঁজলে পাওয়া যাবে। কিন্তু তা সময়সাপেক্ষ।

ধন্যবাদ।

৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩

প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল বর্ননা। ধন্যবাদ

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৩১

অর্ক বলেছেন: জি ধন্যবাদ ভাই।

৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: চট্টগ্রামের উপর দিয়ে অনেকবার কক্সবাজার গিয়েছি কিন্তু নেমে ঘুরে দেখা হয়নি। সুন্দর বর্ণনা।

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৩২

অর্ক বলেছেন: অবশ্যই সময় করে নেমে দেখবেন। খুব সুন্দর শহর। আন্তরিক ধন্যবাদ।

৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৪

বনসাই বলেছেন: ১৯৮৮ তে প্রথম চট্টগ্রাম বেড়াতে যাই; সে সময় প্রাইভেট কার চোখেই পড়ে নি। রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা ফাঁকা। এখনো মনে আছে, ঢাকায় ফিরে মনে হলো যেন শহরে আছি।

উপজাতি যাদুঘরে যেয়ে হতবাক হয়েছিলাম; সেখানে তখনও পাকিস্থানী উপজাতিদের পরিচয়, পুতুল ছিল। আজো আছে কি না জানি না।

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৩৫

অর্ক বলেছেন: ১৯৮৮! ওরে বাবা! এখন অনেক অনেক এগিয়ে গেছে। উপজাতি যাদুঘরটা দেখা হয়নি। নির্ঘাত এখন সব বদলে গেছে।

অজস্র ধন্যবাদ।

৬| ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২

জাহিদ অনিক বলেছেন:


আমি মাত্র একবার গেছি চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে আমার বেশ ভালো কয়েকজন বন্ধু আছে।
ঢাকার থেকে আমার চট্টগ্রামকেই বেশি ভালো লাগে।

২৪ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০১

অর্ক বলেছেন: চট্টগ্রাম খুব ভালো, স্বাস্থ্যকর একটি জায়গা। ঢাকার মতো দূষিত নয়। ওখানে খোলা জায়গা, মাঠ, খানিকদূরে পাহাড় সমুদ্র... বসবাসের জন্য বেশ ভালো। তবে মূল শহরে এখন ভিড়ভাট্টা অনেক, গিজগিজ করে মানুষ। চট্টগ্রাম ঢাকার বেশ কিছু নিয়মিত ট্রেন আছে। চট্টগ্রামের মানুষ বন্ধুভাবাপন্ন, তবে দারুণরকম আঞ্চলিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.