নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিয়তি

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৩২




ঠিক গতকাল- ঢাকাস্থ টিকাটুলি’র দেশবন্ধু হোটেলে পরোটা সবজি খাচ্ছিলাম। বিকেলবেলা। ওদিকে গেলেই সাধারণত ওখানে খাই। ষাট বছরের পুরনো হোটেল। হোটেলের ম্যানেজার বা মালিক পক্ষের কেউ সে সময় সেখানে ভাত খাচ্ছিল। হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। আটকা পড়লাম হোটেলে। খদ্দের আমি তখন একাই ছিলাম। এ সময় সেই বিশালদেহী ভদ্রলোকের ভাত খাওয়া শেষ হলে কাউন্টারে যেয়ে বসলো। তারপর সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় অতিবাহিত হয়েছে, এ সময় ভীষণ জোরালো শব্দ হলো কাছে কোথাও, হোটেলটা কেঁপে উঠলো থরথর করে। শব্দের উৎসের সন্ধানে বা দিকে তাকালাম। দেখলাম, ছাদে ক্ষণকাল আগে ঘূর্ণনরত ফ্যানটা পড়ে আছে বেঞ্চের ওপর। ছিঁড়ে পড়েছে। লোকটা বেঞ্চের ঠিক যেখানে বসে খাচ্ছিল, সেখানেই ফ্যানের মূল বডিটা পড়েছে। ফ্যানটা আর মাত্র পাঁচ মিনিট আগে পড়লে, সেখানে তখন লোকটার থেঁতলানো বীভৎস রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতো। এটা ষাট বছরের (পরবর্তীতে জেনেছিলাম) পুরনো ফ্যান। হোটেলটার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই চলছে। এর মাঝে কখনও বদল করা হয়নি। ষাট বছর ধরেই ওটা ওভাবেই ঘুরছিল। পুরনো ফ্যান- এর বডিটা আকারে যেমন বড়, তেমনি ভারি। বর্তমান সময়ের সাধারণ ফ্যানের ওজনের আনুমানিক দ্বিগুণ হবে ওটার ওজন। মেঝের ওপর পাখাগুলো দুমড়ে মুচড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে অর্ধ শতাব্দীরও অধিক পুরনো ফ্যানটা।

আগে যেমন বলেছি পাঁচ মিনিট আগে ঠিক যেখানে ফ্যানের বিরাট বডিটা পড়েছে, সেখানে বসেই ভাত খাচ্ছিল হোটেলের মধ্যবয়স্ক বিশালদেহী ম্যানেজার বা মালিক পক্ষের সেই লোকটি। পাঁচ মিনিট আগে দুর্ঘটনাটা ঘটলে সেখানে তখন লোকটার থেঁতলানো বীভৎস রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতো। এটা নিছকই একটা দুর্ঘটনা। এতে আমাদের মানুষের কারও কোনও হাত নেই। সমস্তটাই অদৃষ্ট। হোটেলটিতে একইরকম আরেকটা পুরনো ফ্যান আছে। ওটা এখনও সচল। উপস্থিত মুহূর্তে ঘটনাটি দারুণরকম আলোড়িত করেছিল আমাকে। ঠিক লোকটার পাশেই আমি বসেছিলাম। ফ্যানটা তার মাথায় পড়লে, সেখানে তখন নিশ্চিত মৃত্যু হতো তার। বড্ড বাঁচা বেঁচে গেছে লোকটি। পুরো ব্যাপারটাই নিয়তি, ঐশ্বরিক। আমি নিশ্চিত নই, আমার মাথার ওপর যে ফ্যানটা ঘুরছে, ওটা পাঁচ মিনিট পর ছিঁড়ে পড়বে কিনা!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৪৪

মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেছেন: হায়াত শেষ না হলে কেউ মরবে না

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৪৮

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:২১

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: কিছুকিছু সময় মনের মধ্যে ভাবনার জটলা লাগে, ভালো মন্দ পাওয়া না পাওয়ার হিসেব কষতে থাকে মন। তখন কেমন যেন স্থির হয়ে যায় চোখ দুটো, যদিও মনটা করে দিক্বিদিক ছোটাছুটি। বিশ্বাসহীনতা গ্রাস করে নিজেকে।
ভালো লাগলো

বৈশাখী শুভেচ্ছা রইল ভাই।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৪১

অর্ক বলেছেন: খুব ভালো কথা। এরকমই হয়। অনেক ধন্যবাদ পড়ে মন্তব্য রাখার জন্য। শুভকামনা।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ২:১১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটাই নিয়তি! এটাই ভাগ্য! অবিশ্বাসীদের জন্য চেয়ে আর ভালো উদাহরণ আর কী হতে পারে?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৭:৪০

অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আরেকটা পুরনো ফ্যান কিন্তু সেখানে এখনও নির্দোষভাবে ঘুরছে!

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৫:০২

হাফিজ বিন শামসী বলেছেন:


যার যেখানে যেভাবে মৃত্যু আছে তা ঘটবেই। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অর্ধশত বছরের পুরনো ফ্যান এখনো মাথার ওপর ঘুরছে । অথচ কর্তৃপক্ষের সেদিকে খেয়াল নেই।
দেশ বন্ধু হোটেলের কথা লিখে অনেক স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন।
ধন্যবাদ। দোয়া করি,ভাল থাকুন।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৭:৪৯

অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। আরেকটা পুরনো ফ্যান কিন্তু সেখানে এখনও নির্দোষভাবে ঘুরছে! ওটাতে সামান্য কোনও সমস্যাই নেই যে কর্তৃপক্ষকে অনেক পুরনো ফ্যান বিধায় পরিবর্তন করতে বলবো। ছিড়ে না পড়লে হয়তো আরও বহু বছর ওটা ওভাবেই চলবে! বিল্ডিংটাও বেশ পুরনো।

শুভকামনা আপনার প্রতিও।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৬:৩৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বড় বাঁচা বেঁচে গেছেন দুজন! ভবিষ্যতে সাবধান থাকবেন।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৭:৫০

অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৬| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:১৭

নীল মনি বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
হায়াত ছিল তাই বেঁচে আছে। ছোট ছোট উদাহরণগুলো জীবন চলার পথের অনেক বড় শিক্ষা

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২১

অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। শেষের কথাটি খুব ভালো লাগলো। শুভকামনা আপনার জন্য।

৭| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২০

শাহ আজিজ বলেছেন: ঘুরতে ঘুরতে ফ্যানের গোঁড়ায় যে হুক থাকে তা ক্ষয়ে যায় , রাবারের সাপোর্ট থাকে কিন্তু অনেক সময় ইলেক্ট্রিশিয়ানরা ওটা লাগায়না । আমার কপালে একই দুর্দশা ঘটেছিল আমাদের গেস্ট হাউসে। আমি ঠিক ওই সময় বালিশ জানালার কাছে দিয়ে রাস্তার লোকদের দেখছিলাম । প্রথমে ধপ তারপর গুড়ুম করে আমি যেখানটায় মাথা দেই সেখানে পড়ল । অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। ফ্যানটা খুব ভারি এবং তার কানেক্টিং হুক ক্ষয়ে চিকন হয়ে গেছে । সিলিং ফ্যান পরিত্যাগ করে ওয়াল হ্যাংগিং বা স্ট্যান্ড ফ্যান নিরাপদ।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৪৯

অর্ক বলেছেন: ঠিক তাই। আপনি সঠিকই বলছেন। এরকমভাবেই দুর্ঘটনাটা হয়েছিল। হতে পারে বহু পুরাতন ফ্যান এর কারণ। আসলে এমন কিছু আমার জীবনে পূর্বে ঘটেনি দেখে কিঞ্চিৎ বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম! ইতিপূর্বে শুধু পত্রিকায় দুয়েকবার পড়েছিলাম ফ্যান ছিঁড়ে মৃত্যুর খবর! আপনিও তো একইরকম সৌভাগ্যবান দেখছি!

স্ট্যান্ড বা ওয়াল হ্যাঙ্গিং ফ্যান সিলিং ফ্যানের মতো পুরো ঘর শীতল করতে পারে না। স্ট্যান্ড ফ্যান তো আবার ঘরের বেশ খানিকটা জায়গা দখল করে ফার্নিচারের মতো, বাচ্চাকাচ্চা থাকলে ফুটোয় হাত ঢুকিয়ে দিতে পারে। গরমে ফ্যান নিত্যব্যবহার্য, প্রায় চব্বিশ ঘণ্টাই চলে। তাই আমার মনে হয় সিলিং ফ্যান মজবুতভাবে স্থাপন করে ব্যবহার করাই উত্তম ওসব বিকল্পের থেকে।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার গঠনমূলক মন্তব্যে আমাদের ভাবার উপকরণ আছে। ওরকমই কিছু একটা ত্রুটি রয়ে গিয়েছিল, গোড়া ঘেকে বা ছাদ ভেঙে ফ্যানটি পড়েনি! ষাট বছর লেগেছে দুর্ঘটনা হতে! খুব সম্ভবত রাবারের সাপোর্ট ছিল না! মাঝে কখনও ত্রুটিমুক্ত করলে হয়তো দুর্ঘটনা হতো না, হয়তো আরও দীর্ঘ দিন সচল থাকতো ফ্যানটি।

৮| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:২৩

নীল মনি বলেছেন: আপনার ভালোলাগার জন্য শুকরিয়া

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৫১

অর্ক বলেছেন: আবারও শুকরিয়া! হা হা হা। আবারও ধন্যবাদ।

৯| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:১৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: এত বছরের ফ্যান নিশ্চয় বদলানে উচিত ছিল।দূর্ঘটনা কিন্তু বেশির ভাগ আমাদের অসচেতনতার কারনেই ঘটে থাকে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৪৮

অর্ক বলেছেন: আপনি ভুল মত দিয়েছেন। শুধুমাত্র পুরনো হয়ে যাবার কারণে ফ্যান বদলানোর কোনও যুক্তি নেই! সচল পণ্য কেন শুধু শুধু বদলাতে যাবো! ফ্যান অন্য বৈদ্যুতিক পণ্য টিভি, ফ্রিজের মতো নয় যে বর্তমান সময়ের আধুনিক পণ্যের মতো পুরনোগুলো কাজ করতে পারছে না। কাছাকাছি সময়ে ইলেক্ট্রিশিয়ান দেখিয়ে চেক করে নেয়া যেতো বড়জোর। কিন্তু তাই বা কতোদিন পর করা উচিৎ, বিশ, ত্রিশ, চল্লিশ বছর... এরকম পুরনো ফ্যান চারপাশে আরও অনেক আছে।

ধন্যবাদ। আশা করি বোঝাতে পেরেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.