নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু গল্প কিছু স্বগতোক্তি- ৪

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০৫

কোলকাতা শহরের কলেজ স্ট্রীটে অবস্থিত কফি হাউজ আমার খুব প্রিয় একটি জায়গা। ওখানে আমার দারুণ ভালো লাগে। কোলকাতায় গেলে ওখানে নিয়মিত যাই। বিকেলের পর সাধারণত খুব ভিড় হয়। এছাড়া বাকি সময় মোটামুটি নিরিবিলিই থাকে। ওখানকার কফি বা খাবারদাবার খেতে তেমন ভালো না লাগলেও, ওর পরিবেশটা আমার কাছে দারুণ উপভোগ্য। ভালো লাগে সেখানকার মৃদু আলোকসজ্জা, কালচে রঙের হালকা আলো, বিরাটকায় উন্মুক্ত বিল্ডিং, আরও... সবমিলিয়ে ওখানে অবস্থান করতে আমার ভালো লাগে। সুখানুভূতিতে ভরে থাকে মন। কফি হাউজে সাধারণত আমি বিভিন্ন কফির সাথে সিদ্ধ ডিম খাই, বাটার দেয়া ব্রেড খাই, কখনও অনিয়ন (পিয়াজ) পাকোড়া ইত্যাদি। অনেক.. অনেক পুরনো, ঐতিহাসিক একটি স্থাপনা কোলকাতার এই কফি হাউজ- সম্ভবত ব্রিটিশ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান; বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী, অসংখ্য বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়মিত আড্ডা, আনাগোনা ছিল এই কফি হাউজে। কবিতা, গল্প, নাটক, গান বিভিন্ন কালজয়ী শিল্পসাহিত্য সৃষ্টিতে জড়িয়ে আছে এর নাম। প্রয়াত শিল্পী মান্না দে’র কফি হাইজ নিয়ে গাওয়া সেই অবিস্মরণীয়, বিখ্যাত গানটি মনে পড়ছে,
‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই.. আজ আর নেই/ কোথাও হারিয়ে গেল সোনালি বিকেলগুলো সেই.. আজ আর নেই/ কবি কবি চেহারার কাঁধেতে ঝোলানো ব্যাগ মুছে যাবে অমলের নামটা/ আর্ট কলেজের ছেলে নিখিলেস সান্যাল বিজ্ঞাপনে ছবি আঁকতো/ কাকে যেন ভালবেসে, আঘাত পেয়ে যে শেষে পাগলা গারদে আছে রমা রায়...’ (এলোমেলোভাবে খানিকটা তুলে দিলাম)।
আমার বিভিন্ন সময়ের কোলকাতা ভ্রমণের স্মৃতিতে কল্লোলিনী এই শহরের সঙ্গে কফি হাউজও অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে। আবার যাবো সেই প্রিয় নগরী ও কফি হাউজে, যদি আবার কখনও ফাগুন ফিরে আসে জীবনে... আবার!


ময়মনসিংহ শহরে খুব ছোট্ট একটা পার্ক আছে, ‘বিপিন পার্ক’। সুন্দর সাজানো গোছানো একটি পার্ক। বাস টার্মিনাল থেকে পাঁচ টাকা ভাড়ায় অটো যোগে যাওয়া যাবে সেখানে। অল্প কিছু বেঞ্চ, এক কোণে বড়সড় একটি চায়ের দোকান, পাশে অবিরাম বয়ে চলেছে ব্রহ্মপুত্র নদ, নদীতটের দমকা হাওয়া থেকে থেকে। সবমিলিয়ে এক কথায় বলবো, ‘সুন্দর’। পার্ক থেকে বেরিয়ে প্রধান সড়ক ধরে কিছুদূর সামনে হেটে গেলেই চোখে পড়বে, ময়মনসিংহের জিরো পয়েন্ট, খানিক দূরে টাউন হল। জিরো পয়েন্টের সোজা রাস্তা ধরে খানিকটা হেটে গেলেই পার্কের মতোই খোলামেলা ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়। সেখানে চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন আয়োজন প্রতিদিন- গান বাজনা, কনসার্ট, উৎসব, মেলা এটা ওটা লেগেই থাকে। বেশ কিছু আধুনিক অভিজাত রেস্টুরেন্টও পাওয়া যাবে চারপাশে। সেখানে বিভিন্ন খাবারদাবার ও পানীয় পাওয়া যায় সবসময়। কিন্তু ওখানে বাইরের থেকে দাম তুলনামূলক বেশ খানিকটা চড়া। যাই হোক ওখানকার সরু গলি বরাবর কিছুটা সামনে এগোলেই চোখে পড়বে, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা’র (দুঃখিত, এ মুহূর্তে তাঁর নাম মনে পড়ছে না) নামাঙ্কিত বিরাট একটি লাইব্রেরী, মিনি চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন ইত্যাদি। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালাটি দারুণ উপভোগ্য। এক কথায় বলবো, চমৎকার। আমাদের সকলেরই সময় সুযোগ করে একবার হলেও দেখে আসা উচিৎ। সংগ্রহশালায় যেয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন’র বর্ণাঢ্য, সৃষ্টিশীল শিল্পী জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে ও সচিত্র দেখে দারুণরকম আন্দোলিত হয়েছিলাম। সত্যি, তাঁর মতো এতো মহান একজন দিগ্বিজয়ী, অসামান্য প্রতিভাধর চিত্রশিল্পী এই বাংলাদেশে জন্মেছিল বলে গর্বে বুক স্ফীত হয়ে ওঠে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের মতোই, বাংলাদেশি হিসেবে আমিও যারপরনাই গর্বিত তাঁর মতো এতো বড় একজন বিশ্বখ্যাত, কিংবদন্তী চিত্রশিল্পী’র দেশে জন্মগ্রহণ করে। অধীর বুকে, গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি এই মহান মানুষটিকে। মোটামুটি এই হয়ে গেল ময়মনসিংহ শহর ভ্রমণ। শহরে আর উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু নেই বেড়াবার বা দেখবার। আর যা আছে সব দূরে দূরে। বোধহয় ময়মনসিংহের রেল স্টেশনটাকেও দর্শনীয় স্থানের তালিকায় রাখা যেতে পারে!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৬

বিদেশে কামলা খাটি বলেছেন: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় না দেখলে আর ময়মনসিংহ গিয়ে কি লাভ। খু্ব সুন্দর একটি জায়গা। সবার ভালো লাগবে।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৫১

অর্ক বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। আমি আসলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছপালা, নয়নাভিরাম সবুজ প্রকৃতি ছাড়া কিছু পাইনি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেখার জন্য দ্বিতীয়বার আমি যাবো না। আমি যা বলেছি তা ময়মনসিংহে পর্যটক ভ্রমণের ভালো বিজ্ঞাপন হতে পারে। সম্ভবত আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে ঘুরেফিরে দেখতে পারিনি বা গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ কিছু দেখা হয়নি। আপনি একটি পোস্ট লিখতে পারেন এ নিয়ে।

২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩১

প্রামানিক বলেছেন: দু'টি বর্ননাই ভালো লাগল। ধন্যবাদ

২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৪৫

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫৮

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: খুব কম মানুষেরই নতুন নতুন জায়গা দেখার সুযোগ হয়। আপনি ভাগ্যবান...

২০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৪৭

অর্ক বলেছেন: সত্যি নতুন শহর জনপদ ভ্রমণের আনন্দ অতুলনীয়! আমি ভ্রমণ যারপরনাই উপভোগ করি। এরকমভাবে আরও লেখার ইচ্ছে রইলো। অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.