নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলন্ত বাসে একটি ব্যর্থ ছিনতাইয়ের স্মৃতি

০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪

বেশ কয়েক বছর আগের কথা। তখন ঢাকায় ভলভো নামের দ্বিতল বাস চলতো; উত্তরা মতিঝিল ও মিরপুর মতিঝিল এই দুই রুটে প্রচুর বাস ছিল। 'ভলভো' নাম আসলে যাত্রীদেরই দেয়া, বাসগুলোর আদৌ কোনও নাম ছিল না। বি আর টি সি'র লাল রঙের সরকারী দ্বিতল বাস। খুব সম্ভবত সুইডিশ অটোমোবাইল কোম্পানি ভলভো'র তৈরিকৃত ছিল বাসগুলো। বাসের গা’য়ে ইংরাজিতে গোটা গোটা হরফে ভলভো লেখা, যা লোকমুখে পরবর্তীতে বাসের নামে পরিণত হয়। ওই বাসে করেই একদিন সন্ধেবেলা পল্টন যাচ্ছিলাম। নিচতলায় বেরোনোর দরজার কাছে বসেছিলাম। আমার মুখোমুখি চেয়ারে বসা এক প্রবীণ দম্পতি। আনুমানিক সাতটা সারে সাতটা বেজে থাকবে।

যাই হোক, বাস চলছে। এসময় ফার্মগেট পেরিয়ে কাওরান বাজারে চলে এলো বাসটা। ট্রাফিক জ্যাম, সিগনাল ইত্যাদির জন্য অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল এর গতি। এভাবে যেতে যেতে এক পর্যায়ে কাওরান বাজারে দেখলাম, চলন্ত বাসে বাইরে থেকে কে যেন হাত বাড়িয়ে ছো মেরে ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করলো আমার সম্মুখে বসে থাকা প্রবীণ ভদ্রমহিলার কানের দুল জোড়ার একটি। খুব সম্ভবত সোনার ছিল ওগুলো। এখনও চোখে ভাসছে চকচকে উজ্জ্বল হলুদ বর্ণের দুল জোড়া। শুরুতে একটুও বুঝতে পারিনি, ব্যাপারটা কী ঘটলো! কয়েক মুহূর্ত লেগে গিয়েছিল ঘটনাটা পুরোপুরিভাবে আত্মস্থকরণে। ঠিক একেবারে আমার মুখোমুখি বসেছিল দুজন। সেই ভদ্রমহিলার চটজলদি সজাগ হয়ে নিজেকে সরিয়ে নেবার ক্ষমতা ছিল বিস্ময়কর। বাইরে থেকে ছিনতাইকারী ছোও দিয়েছে, আর সেও তৎক্ষণাৎ তার মাথা জানালার পাশে ততোধিক দ্রুতবেগে সরিয়ে নিয়েছে। আনুমানিক ষাট ছুঁইছুঁই ছিল প্রবীণার বয়স। যাই হোক কোনও বিপদ হলো না। ঘটনাটা এতো দ্রুত ঘটে গিয়েছিল যে বাসে অবস্থিত অন্য যাত্রীদের কেউই বিন্দুমাত্র কিছু আঁচ করতেও পারেনি! পনেরো থেকে বিশ সেকেন্ডর একটি ব্যর্থ ছিনতাইয়ে ঘটনা। আমি মুখোমুখি বসে থেকে দেখলাম সব। সে সময় সদ্য সিগনাল থেকে বেরিয়ে বেশ দ্রুত গতিতে চলছিল বাসটি। ঘটনার পর জানালা দিয়ে সামনে (ওই বাসের সামনের কয়েকটি সিট ছিল উল্টোদিকে) তাকিয়ে দেখলাম, ছিপছিপে গড়নের লুঙ্গি শার্ট পরা আনুমানিক বছর পচিশের এক যুবক, রাতের আলো আঁধারি নির্জন সড়কে ধীর পা’য়ে রাস্তা পাড় হচ্ছে নির্বিঘ্নে।

ব্যাপারটা শুধু কানের একটি এমিটিশন বা সোনার দুল ছিনতাইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। যেভাবে ওরকম একটি দ্রতগতির বাসের জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে চিলের মতো ছোঁ মেরে ছিনতাইকারী সেই প্রবীণার দুল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল, এতে ভদ্রমহিলার কানও ছিড়ে যেতে পারতো, ভয়াবহ কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো! শেষমেশ অবশ্য সৌভাগ্যক্রমে খারাপ কিছু ঘটেনি। এটা সম্ভব হয়েছিল কেবলমাত্র সেই বয়োজ্যেষ্ঠ ভদ্রমহিলার তৎক্ষণাৎ আশ্চর্য দ্রুতবেগে মাথা আরেকদিকে সরিয়ে নিয়ে যাবার দক্ষতার জন্য। এমনকি ভদ্রমহিলার পাশে বসে থাকা তার স্বামীও বিন্দুমাত্র কিছু বুঝতে পারেনি। ভদ্রমহিলা ক্ষণকাল পরে তাকে বলেছিল। আর এদিকে দ্বিতল ভলভো বাস চলছে তো চলছেই!

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৭

রাকু হাসান বলেছেন: এমন ঘটনার প্রত্যক্ষ দেখেছি .যদিও সেটা ফার্মগেইট না । অামাদের আরও সচেতন হতে হবে ...
আমার ব্লগে আমন্ত্রণ আপনি সহ যারা এই পোস্টটি পড়ছে :-B

০১ লা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৩

অর্ক বলেছেন: আমিও আরও দেখেছি। একবার আমার নোকিয়া ন৯৫ ফোনও ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল, পায়নি। আমিও একইভাবে সময়মতো সরিয়ে নিয়েছিলাম।

ধন্যবাদ।

২| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮

ফেনা বলেছেন: হুম। ভাল হয়েছে।

০১ লা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৪

অর্ক বলেছেন: জি ধন্যবাদ।

৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমার সেল ফোনটা তিনবার ট্রাই করেছে।
আমি ব্যবহারের সময় ধরার একটা বিশেষ কৌশল অবলম্বন করি।
যার জন্য বেচারাদের টানে বারবার ব্যর্থ হতে হয়!
একবার ফার্মগেট, একবার কারওয়ান বাজার, আরেকবার মৎসভবন মোড়ে!

প্রতিবারই জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি কি নিশ্চিত মনে হেটে যাচ্ছে বিকারহীন!!!!!!

০১ লা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৩

অর্ক বলেছেন: ঠিক ছিনতাই নয়, একবার বুক পকেট থেকে আমার অনেক সাধের এক্কেবারে নতুন স্যামসাং গ্যালাক্সি জে ৫ ফোনটি চুরি হয়েছিল। আর আমি জানি, এটা ছিল স্যামসাং গ্যালাক্সি শো রুমের সেই মেয়েটির অভিশাপ!

ধন্যবাদ।

৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমি একবার দেখেছি বাসের জানালা দিয়ে একজনের মোবাইল ছোঁ মেরে নিয়ে যেতে। তার কিছুই করার ছিল না। ছিনতাইকারীদের ব্যাগ নেয়ার চেষ্টা টা ভয়ংকর। কারণ এর কারণে রিক্সা থেকে পড়ে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়। একবার আমি আর আমার আম্মা রিক্সা করে যাওয়ার সময় একটা চলন্ত কার থেকে আম্মার ভ্যানিটি ব্যাগ নেয়ার চেষ্টা করেছিল একজন। কিন্তু গাড়ির গতি থাকায় আর আম্মার হাতের মধ্যে প্যাঁচানো থাকায় নিতে পারেনি। আল্লাহর রহমতে রিক্সা থেকে পড়ে যায়নি আম্মা...

০১ লা জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৪

অর্ক বলেছেন: ঠিক। ঢাকার রাস্তায় যে কোনও সময়ে এরকম ছিনতাই হতে পারে। সেদিন যদি সেই প্রবীণা সময় মতো সরে না যেতো, তাহলে সে মারাত্মকভাবে আহত হতে পারতো, কান এক্কেবারে... উফ ভাবতেও পারি না, সেই ছিনতাইকারী কানের একটি সামান্য দুলের জন্যে কতো বীভৎস কাজ করেছিল!

ধন্যবাদ বিচার মানি তালগাছ আমার। শুভকামনা নিয়ত।

৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৪

শার্লক_ বলেছেন: ভলবো বাস ছিল ঐটা হালকা হলুদ রংয়ের ছিল, বিআরটিসি'র দায়িত্বে ছিল। পরে লাল কালার করে। আমি গতবছর দেখেছি মিরপুর ১০ থেকে একজনের মোবাইল জানালা দিয়ে ছো মেরে নিয়ে যায়, বেচারা বোকার মতো তাকিয়ে ছিল।

০১ লা জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:১৮

অর্ক বলেছেন: জি ঠিক বলেছেন। পরেও খুব যে লাল (সাধারণত যেমন হয়ে থাকে বি আর টি সি র বাস) ছিল তাও নয়, হলুদও ছিল সম্ভবত, মিশ্র রঙ।

এরকম অহরহ হয়। সুতরাং সাবধান!

অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

৬| ০২ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:০০

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: ভদ্রমহিলা ভাগ্যবান। তবে সবার এমন ভাগ্য থাকে না। আমি যে কটি ঘটনা দেখেছি সেগুলো সবই সফল ছিনতাইয়ের। চোখের পলকে এসব ছিনতাইকারীরা ছিনতাই করে পালিয়ে গিয়েছিলো :-(

০২ রা জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:১১

অর্ক বলেছেন: এরকমভাবে অনেকেই মোবাইল হারায় নিত্য। আমার একটা ঘটনার পর থেকে এ ব্যাপারে আমি খুব সচেতন। লোকাল বাসে সবসময় সাবধান থাকি। সচেতন না হলে যে কোনও সময় বিপদ হতে পারে।

ধন্যবাদ ও শুভকামনা নিরবচ্ছিন্ন।

৭| ০২ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:২২

রানা আমান বলেছেন: ভলভো বাস কোম্পানি ইতালিয়ান নয় সুইডিশ ।

০২ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

অর্ক বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ ও শুভকামনা নিরন্তর রানা আমান।

৮| ০৩ রা জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:০৯

গরল বলেছেন: বেশ কয়েকবার ঠিক এরকম ভাবে আমার সামনে থেকে হাতঘড়ি ছিনতাই হয়েছে, এটা অবশ্য এখন আর বেশি দেখা যায় না কারণ মানুষ সচেতন হয়েছে। যাই হোক ভলভো সুইডিশ কোম্পানী, ইটালির না।

০৩ রা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:২৯

অর্ক বলেছেন: সচেতন হলে, কমে থাকলে সুখদায়ক খবর। ইটালি কেটে সুইডিশ লিখলাম।

অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.