নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মানুষ" আরও কিছু কথা মানুষের জন্য

০৩ রা মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:১৭



রেবিস নামক এক ধরনের জীবানুর সংক্রমণ হলে কুকুরের (ও এ গোত্রীয় অন্যান্য প্রাণীদেরও) জলাতঙ্ক রোগ হয়। যার পরিণামে তাদের শারীরিক মানসিক কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যাদের সাধারণভাবে ‘পাগলা কুকুর’ বলা হয়ে থাকে। এক পর্যায়ে কাছাকাছি সময়ে তারা মরে যায়। এই রেবিস সংক্রমিত কুকুরের কামড়ে আঁচড়ে রক্তের মাধ্যমে মানুষের দেহে এ জীবানু প্রবেশ করলে ও পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাক্সিন গ্রহণ না করলে মানুষও রেবিস থেকে সৃষ্ট জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়। এর কোনও চিকিৎসা নেই। জলাতঙ্কে মৃত্যু শতভাগ নিশ্চিত। ভ্যাক্সিন সময়মতো গ্রহণ না করলে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু অনিবার্য। এটা শুধুমাত্র রেবিস বাহিত প্রাণীর মাধ্যমেই ছড়ায়। এমন নয় যে, কুকুর বিড়াল কামড় আঁচড় দিলেই জলাতঙ্ক রোগ হবে। না। শুধুমাত্র কুকুর বিড়াল শিয়াল নেকড়ে বেজি ইত্যাদি রেবিস জীবাণুবাহী প্রাণীর কামড় আঁচড়ে রক্তের মাধ্যমে মানব দেহে এই জীবানু প্রবেশ করতে পারে। সুস্থ কোনও প্রাণীর কামড়ে আঁচড়ে এ রোগ হবার কোনওরকমের কোনও সুযোগ নেই। আক্রান্তের সম্ভাবনা দেখা দিলে, নিয়মমাফিক ভ্যাক্সিন গ্রহণ করে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত হওয়া যায়। বাংলাদেশে কুকুরই এ রোগের প্রধান উৎস। সেই অষ্টাদশ শতাব্দীতে এর ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করেন মহান ফরাসি বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর। এই আবিষ্কার আদতে বদলে দেয় সারা পৃথিবী। এর পূর্বে জলাতঙ্কের কোনও প্রতিকার ছিলো না। মৃত্যু অনিবার্য ছিলো। ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের ফলে এটা কমে যায়। এই আবিষ্কার সেদিন হতে আজ অব্দি কোটি কোটি মানুষের জীবন বাঁচিয়ে চলেছে। অবশ্য এখনকার ভ্যাক্সিন আরও ক্ষমতাসম্পন্ন। আগে চোদ্দটা লাগতো। এখন আধুনিক ভ্যাক্সিন পাঁচটাই যথেষ্ট। যাই হোক আরেকবার কুর্নিশ মহান এই ফরাসি বিজ্ঞানীকে। অনেকের মতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। তাঁর আরও আবিষ্কার আছে।

যাই হোক আপনার তথ্যটা বেশ ক'বছর আগের নিঃসন্দেহে। পুরনো জেনারেল ফিগার। এখন জলাতঙ্ক রোগ কমে প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। ইউরোপ আমেরিকা আজ পুরোপুরি জলাতঙ্ক মুক্ত। আমাদের দেশেও ভ্যাক্সিনের সহজলভ্যতা ও সচেতনতার কারণে শূন্যের কোঠায় চলে গেছে জলাতঙ্ক। গেলো বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে জলাতঙ্কে মাত্র ত্রিশজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা গেছে। আশা করছি যে, ২০২৩ সালের মধ্যে আমাদের দেশও পুরোপুরিভাবে জলাতঙ্ক মুক্ত হয়ে যাবে। অর্থাৎ আগামী বছর। যাই হোক জলাতঙ্ক যখন খুব বেশি ছিলো পৃথিবীতে, তখনও পৃথিবীর সভ্য শিক্ষিত বিবেকবান শুভ বুদ্ধির মানুষ ভাবেনি যে, কুকুর বিড়ালকে হত্যা করে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। কী অসুস্থ, বিকৃতমস্তিস্ক চিন্তা! মানুষের জন্য সবচেয়ে উপকারী প্রাণী কুকুর। এদের বুদ্ধিমত্তা অন্যান্য যে কোনও প্রাণীর থেকে বেশি। খুবই নগন্য সংখ্যার কুকুর বা এ গোত্রীয় প্রাণী এই জীবাণুতে সংক্রমিত হয়ে থাকে যা শতকের হিসেবেও আসবে না। আক্রান্ত কুকুরের আচরণে বোঝা যায়। লোকজন এরকম কুকুরকে 'পাগলা কুকুর’ বলে থাকে। স্বভাবতই তখন ওদের থেকে দূরে থাকে। পৃথিবীজুড়ে শিশু কিশোররা সর্বাধিক কুকুর বিড়ালের কামড় আঁচড়ের শিকার হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রে সে জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। দেখা যাবে, কেউ হয়তো লেজ ধরে টান দিয়েছিলো, কেউ ভেঙচি কেটেছিলো ইত্যাদি। যেমন বলেছি, এক শতাংশও হবে না রেবিস সংক্রমিত কুকুরের সংখ্যা। এর জন্য নিরানব্বই শতাংশ কুকুরকে হত্যা করার চিন্তা প্রকৃতার্থেই অত্যন্ত পৈশাচিক, জান্তব। যখন রোগটির কোনওরকমের কোনও প্রতিকার ছিলো না, প্রচুর মানুষ মারা যেতো। তখনও সভ্য শিক্ষিত শুভ বুদ্ধির বিবেকবান মানুষ ভাবেনি যে, কুকুর বিড়ালকে হত্যা করে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। কী অসুস্থ বর্বর জঘন্য চিন্তা বাবা! ভাবতেই শিউরে উঠছি।

জলাতঙ্ক আজ শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে। শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আপনার আর টেনশন নেবার দরকার নেই বলে মনে করি। যে কোনও প্রাণীর সাথে বসবাস করতে হলে তার মনোজগৎ স্বভাবচরিত্র সম্পর্কে জানতে হয়, বুঝতে হয়। কুকুর বিড়াল খরগোশ মানুষের সঙ্গে বাস করতে পারে। এটা আসলে দারুণ একটি ব্যাপার। এদের জন্যে আমদের খাঁচার দরকার হয় না। এর আনন্দ নিতে শিখুন। সে জন্য শুধু নামে কাঠামোতে নয়, প্রকৃত অর্থেই আপনাকে মানুষ হয়ে উঠতে হবে। কুকুরের কামড় আঁচড়ের যতো ঘটনা ঘটে থাকে, তার পঁচানব্বই শতাংশের জন্য দায়ী মানুষ নিজেই। যেমন শিশুকিশোররাই মূলত এর শিকার হয়। কারণ তারা অবুঝ। শৈশব কৈশোরের দশ্যিপনা দুরন্তপনায় তাড়িত। কোনও না কোনওভাবে প্রাণীদের উত্যক্ত করার কারণে তারা তাদের আক্রমণের শিকার হয়। নির্ঘাত দেখা যাবে যে, কুকুর বিড়ালের লেজ ধরে টেনেছিলো, ভেঙচি কেটেছিলো, কান মলে দিয়েছিলো ইত্যাদি। এতে মেজাজ বিগড়ে যায় প্রাণীটির। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।

আমি নিজে একবার কুকুরের কামড় খেয়েছি। জিন্সের প্যান্ট পরে থাকার কারণে কুকুরের দাঁত চামড়া পর্যন্ত যায়নি। তাই কোনও সমস্যা হয়নি। রেবিস সংক্রমিত পাগল কুকুর ছিলো সেটা। আকস্মিক কামড় দিয়ে চলে যায়। তারপর কিছুক্ষণ লক্ষ্য করে বুঝতে পেরেছিলাম যে, সে অসুস্থ। নিশ্চিতভাবে কিছুদিনের ভিতরে মারা গিয়েছিলো। সেই রাতে আমাকে কামড় দিলেও, সেখানে কেউ যদি তাকে মারতে আসতো আমি অবশ্যই বাধা দিতাম। অসুস্থ কুকুর। এমনিই মারা যাবে। কারও কাছে যাবার দরকার নেই। কুকুর মানুষকে কখনও কামড়ায় না। এ প্রবণতা নেই তাদের মাঝে। দুর্ঘটনা যদি ঘটে, তাহলে ভ্যাক্সিন নিতে হবে। যা অত্যন্ত সহজলভ্য। যে কোনও বড়ো ফার্মেসিতেই পাওয়া যাবে। সরকারি হাসপাতাল, সেবাদান কেন্দ্রে একদম ফ্রী দিয়ে থাকে।

যে প্রাণীর সাথে বসবাস করতে হয়, তাদের সম্পর্কে অল্পস্বল্প জানতেও হয়। কুকুর বিড়াল কখনওই মানুষকে কামড়ায় না বা আক্রমণ করে না। তাদের উত্যক্ত করা হলে আত্মরক্ষার জন্য তারা এরকমটা করে থাকে। যা প্রতিটি প্রাণীরই সহজাত একটি প্রবৃত্তি। মানুষেরও। কোনও জঙ্গলে একটা বাঘ যদি আপনার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে, তখন আপনিও আত্মরক্ষার্থে যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন নিজেকে বাঁচানোর। বাঘের ওপরও কিলঘুষি লাথিটাথি চলবেই। চলা উচিতও। নিজেও চেষ্টা করবেন ঘাড় মটকে দিতে। জীবনের ওপর সঙ্কট বলে কথা! হাল ছাড়া যাবে না কিছুতেই। কথায় আছে, যতোক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। সামান্য একটা ছাগলেরও লেজে টান দিয়ে দেখবেন কোনওদিন, নির্ঘাত শিং বাগিয়ে ঢিশ দিতে তেড়েফুঁড়ে আসবে।

জানি না আপনাকে বোঝাতে কতোটুকু সক্ষম হলাম। মোটা দাগে ব্যাপারটা হলো যে, গেলো বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে মাত্র ত্রিশ জন মারা গেছে জলাতঙ্কে। এ বছর হতে পারে সংখ্যাটা শূন্যের কোঠায় আসবে। ২০২৩ সালে শেষ। আপনার কোট করা সংখ্যা বেশ ক’বছর আগের। পুরনো জেনারেল ফিগার। একসময় প্রতি বছর পঞ্চাশ হাজারও মারা যেতো। সেটা অতীত। এখন ভ্যাক্সিনের সহজলভ্যতা, মানুষের সচেতনতার কারণে শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকেছে জলাতঙ্ক। সো নো টেনশন। কুকুরদের সাথে দুশমনি থেকে সরে এসে ভালো কিছু নিয়ে চিন্তা করে কাঁধের ওপর মানবের বিরাট মাথাটাকে কাজে লাগান। ও হ্যা, আপনার চ্যালেঞ্জ নিতে চাই। বলেন কোথায় মাঝরাতে কুকুরের কামড় খেতে যেতে হবে? ছবি তুলে এখানেই পোস্ট করবো। নো প্রবলেম। কুকুরগুলো যে ফ্রী ডিউটি দিচ্ছে এটাও তো বোঝা উচিৎ মানুষ! হা হা হা।

ধন্যবাদ। আবার বলি নিজে আগে মানুষ হোন। চাইলে আপনার সেই মন্তব্য আমি পোস্টে আবার ফিরিয়ে আনতে পারি। তখন লজ্জা পেয়ে এই নিক বাতিল করে আবার নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এ সাইটে। দিনদুপুরে এমন ডাহা মিথ্যা ছলচাতুরী! তাও আবার সম্পূর্ণ অদরকারে!

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:২৪

অর্ক বলেছেন: লেখাটি এই পোস্টের জন্য লিখতে হলো। মন্তব্যে বলা। এখানে জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দেয়া আছে। এছাড়াও প্রাসঙ্গিক বেশকিছু বিষয় এসেছে, যা আমাদের সবার জানা উচিত মনে করে পোস্ট করলাম। ধন্যবাদ ও শুভকামনা সবার জন্য। আসুন পশুপাখির প্রতি সদয় হই। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করি।


"জীবে দয়া করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর" (স্বামী বিবেকানন্দ)

২| ০৩ রা মার্চ, ২০২২ দুপুর ১:৩৬

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:

রেবিস মানুষ ছড়াতে পারে?

০৩ রা মার্চ, ২০২২ রাত ৮:০০

অর্ক বলেছেন: পারে না।

৩| ০৩ রা মার্চ, ২০২২ রাত ৯:২৩

গরল বলেছেন: যত যুক্তিই আর পরিসংখ্যানই দেখান না কেন যাদের মগজে একবার ঢুকেছে কুকুর নাপাক প্রাণি তাদের কে মানুষ বানাতে পারবেন না। এসব নির্বোধেরা পাছা দিয়ে বায়ু ছেড়ে নাপাক হয়ে আবার হাত-পা আর মুখ ধুয়ে পাক সাফ হওয়ার চেষ্টা করে। তাদের মগজে আর কি ঢুকাতে পারবেন।

০৩ রা মার্চ, ২০২২ রাত ১১:০৫

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২২ রাত ১১:১৬

সোবুজ বলেছেন: কিছু মানুষের চিন্তা চেতনা আধুনিক না।তারা এটাও বিশ্বাস করে কালো কুকুর মারলে সওয়াব হবে।এটা ধর্মীয় নির্দেশ।

০৩ রা মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৩১

অর্ক বলেছেন: ব্যাপারটা জানা নেই। শুনিনি কখনও। নিজের বুদ্ধিকে পর্যাপ্ত সম্মান করি।

ধন্যবাদ। শুভকামনা থাকলো।

৫| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৪৬

তানীম আব্দুল্লাহ্ বলেছেন: আপনার কথায় যুক্তি আছে । জিতছেন।

০৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৮:১৪

অর্ক বলেছেন: হারজিতের কিছু নেই। জানি, জানাই। পৃথিবীর জন্য সভ্য, নিরাপদ নাগরিক হয়ে উঠি। এইতো।

ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.