নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গান শুনতে ভালবাসি কিন্তু গান গাইলে সবাই পালায়। প্রেম করি কিন্তু প্রেমিকা নাই। লেখালেখি করি কিন্তু পাঠক নাই। আমি আছি কিন্তু কেউ নাই...

আসিফ বিন হোসেন

পনেরো হাজার পৃষ্ঠার একটা উপন্যাস লিখব! সেই উপন্যাসে তার নাম কোটিবার থাকবে! সেই উপন্যাসের নায়ক আমি আর নায়িকা সে!

আসিফ বিন হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামী এবং একটা ভেজা কাগজের টুকরো

১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯

স্থান:- নিমতলা বাস স্ট্যান্ড
সময়:- দুপুর দেড়টা। আকাশে মেঘ। চারদিক গুমোট হয়ে আছে। কালো হয়ে আসছে। হঠাত্ এক পলকেই যেন খাঁটি রোদ্দুর, সন্ধ্যার অন্ধকার হয়ে গেল।

বর্ষাকালে এমন আবহাওয়া চেনা জানা। জামীর ব্যাগে ছাতা আছে, কিন্তু সে বের করবে না। সবসময়ই ছাতা থাকে। কিন্তু সবসময়ই বৃষ্টি হলে, সে কাক ভেজা হয়েই ফেরে।

এই আবহাওয়াটা কেন যেন চারদিকটাকে নিস্তব্ধ করে দেয়। বৃষ্টি শুরু হওয়ার ঠিক আগ মূহুর্ত পর্যন্ত এই রাস্তাটা ভীষণ ব্যস্ত ছিল। টোকাই কাগজ কুড়োচ্ছিল, ভিক্ষুক ফুটপাতের মানুষদের বিরক্ত করছিল, কিছু ছেলে একটা মেয়ের দিকে "হা" করে তাকিয়ে ছিল..
ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি শুরু হল। রাস্তাটা হঠাত্ ফাঁকা হয়ে গেল। ফাঁকা হয়ে গেল ফুটপাতটাও। টোকাই আর ওই ভিক্ষুকটা বাস স্ট্যান্ডের ছাদের নিচে আশ্রয় নিল। আর ওই মেয়েটা আর "হা" করা ছেলে গুলো কোথায় যেন চলে গেল..

জামী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে। সে চশমা খুলে সে পকেটে রেখে দিল। এবং এমন ভাব করতে লাগল যে, চশমা ছাড়া সে সবকিছু দেখছে।
আবছা দেখতে পেল একটা বাস আসছে, ফাল্গুন হওয়ার কথা। উঠে পড়ল জামী। উঠে চশমাটা ভেজা টি-শার্ট দিয়ে মুছে পরে নিল...

বাসে কত রকমের মানুষ। একটা লোক সামনের মহিলা সিটের দিকে লোভনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, কিন্তু জামী দেখল ওখানে নেহাতই পূর্ণ বোরখা পরা এক মহিলা বসে আছে। লোকটার দৃষ্টি হল মহিলার ফর্সা হাতের দিকে।
এক বৃদ্ধ লোক জামীর দিকেই তাকিয়ে আছে। জামীও বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল, চোখাচোখি হওয়ার পরে, বৃদ্ধ লোকটা চোখ সরিয়ে নিল।
একটা মধ্য বয়স্ক লোক বাসেই সিগারেট ধরিয়ে নিল। কিছু মানুষ অস্পষ্ট প্রতিবাদ করল, কিন্তু শেষমেশ কেউ কিছুই বলল না।
হঠাত্ জামীর মনে হল, তার প্যান্টের পকেটে, একটা ছোট কাগজে অরুণিমার নম্বর আছে। অরুণিমা হাসপাতালে ঢোকার আগে কাগজটা তার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। ডাক্তার সে, ইমার্জেন্সির ডাক পড়েছিল, যাওয়ার সময় কোনও কথা বলে যেতে পারে নি।

সাবধানে কাগজটা জামী জানালার পাশে রাখল, শুকানোর জন্য।
বাসে হঠাত্ গোলযোগ লেগে গেল, এক ছেলে নাকি, এক মহিলার নিতম্বে ইচ্ছে করে হাত দিয়েছে। মহিলা ইচ্ছে মতো গালাগাল করছে, জামী মহিলার দিকে তাকাল। ভয়ঙ্কর দেখতে! মহিলা কেন মহিলা সিট ছেড়ে ছেলেদের সাথে বসেছে সেটা হল প্রশ্ন। কিন্তু বাসের সবাই ছেলেটাকে ধরে বৃষ্টির মধ্যেই নামিয়ে দিল। মহিলার মুখে তৃপ্তির হাসি..

কলাবাগান চলে এসেছে বাস। জামী নেমে পড়ল। সাথে সাথে বাসও চলে গেল।
জামী জানালার পাশ থেকে কাগজটা নিতে ভুলে গিয়েছে! সে এক মূহুর্ত চলে যাওয়া বাসটার দিকে তাকালো। খালি রাস্তা। অনেক দূরে চলে গিয়েছে। নিজের সর্বোচ্চ দৌড় দিয়েও বাসটাকে ধরা সম্ভব না।
যেটা চলে যাওয়ার সেটা চলে গিয়েছে। আর এই বাস কখনওই অরুণিমার নম্বর তার কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য ফিরবে না। জামী বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে লাগল। চশমাটা আবার খুলে পকেটে পুরে নিল....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.