নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাফখাতা

কাজী আসিফুজ্জামান

Lazy, Arrogant, Selfish, Idiot!!!

কাজী আসিফুজ্জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ম্যানেজার (ছোটগল্প)

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:০৫



চিৎকারের শব্দ শোনা যাচ্ছে। রফিকের কান খাড়া হয়ে গেল। চিৎকারটা খুব পরিচিত লাগছে। কার হতে পারে? রিনা? নাকি শোমা? নাহ। বুঝতে পারছে না সে। ও হ্যাঁ। সম্ভবত লাবনীর গলা। এসব ক্ষেত্রে সব মেয়েছেলেই চিৎকার চেঁচামেচি করে। তবে এই মেয়েটার সব কিছুই একটু বেশি বেশি। বিরক্তমুখে রফিক ঘরের কোণায় রাখা টেলিভিশন সেটটা অন করল। এই ভরদুপুরে আর বাইরে যাবে না। একটু আগে দুপুরের খাবার খেয়ে উঠেছে সে। এখন একটু বিশ্রাম দরকার। বিকালে একবারে বের হবে। অনেকদিন পর আজ মালিক তাকে ডেকেছেন। ব্যবসার অবস্থা কিছুটা খারাপ যাচ্ছে। হয়ত সেই ব্যাপারেই কথা বলবেন। তাই ঠিক করেছে বিকালে আগে ওখানে যাবে। ওখান থেকে বের হয়ে যাবে লঞ্চঘাট। অনেকদিন পেটে কোন লালপানি পড়েনি। আজ বড্ড খেতে ইচ্ছা করছে!
লাবনীর গলা এখনও শোনা যাচ্ছে। রফিক টেলিভিশন বন্ধ করে খাটে শুয়ে পড়ল চোখ বন্ধ করে। “শালা আজ একটু ঘুমাবো ভাবছিলাম। কিন্তু মাগীডার জন্যে সেডাও পারতাছি না! শালী খানকি মাগী!” মনে মনে বলল সে। লাবনীর সাথে রফিকের দেখা হয়েছিল তাদের গ্রামের বাড়িতে। রফিকের আব্বার বন্ধু, গ্রামের হেডস্যারের মেয়ে। তিন বছর আগে রফিক যখন গ্রামের বাড়ি যায়, তখন রফিকের আব্বা বিয়ে দেয়ার জন্যে তোড়জোড় শুরু করেন। লাবনীকে তারা আগে থেকেই পছন্দ করে রেখেছিলেন। রফিক গেলে একেবারে সাথে সাথেই চার হাত এক করে দেন তাদের। লাবনী মেয়ে ভালো। গায়ের রংটা একটু চাপা। তবে রফিকের ভালো লেগেছিল। প্রথম ৩ বছর বউকে গ্রামের বাড়িতেই রাখে সে। কিন্তু গত মাসে হেডস্যার অর্থাৎ তার শ্বশুর মারা যান। ওই দিকে রফিকের বাড়িতেও কেউ নেই। বাবা ছিলেন। মারা গেছেন গত বছর। রফিক বউকে ঢাকায় নিয়ে আসে।
টক টক টক। দরজা ধাক্কানোর শব্দে জেগে উঠল রফিক। বিছানা থেকে নেমে দ্রুত দরজা খুলল। আফনান সাহেব এসেছেন। ভদ্রলোকের এখনো শার্টের ৩টা বোতাম খোলা। রুমাল দিয়ে ঘাম মুছছেন। “কিরে? ঘুমায় গেছিলি?” প্রশ্ন করলেন আফনান সাহেব। “না, স্যার। এমনি শুয়েছিলাম!” রফিকের লজ্জিত উত্তর। “হুম বুঝছি। এখন বল, কত হইছে আমার?”
“কতক্ষণ ছিলেন স্যার?”
“তা কি আর আমি হিসাব করছি নাকি? কত দিলে হবে সেটা বল?”
“৩০০ দিলেই হবে স্যার”
আফনান সাহেব মানিব্যাগ থেকে ৪০০ টাকা বের করে দিলেন। “আজকের এইটারে ভালো লাগছে। অনেকদিন পর একটা ভালো জিনিস আনসোস।সেই জন্য ১০০টাকা বেশী দিলাম। আর এইটারে আমার পারমানেন্ট কইরা দিস। মজা পাইছি কইরা!” বলে হেসে দিলেন ভদ্রলোক।
রফিকও হেসে বলল, “তাইলে কিন্তু স্যার রেট বেশি পড়ব!”
“পড়ুক। কিন্তু আমার এডারেই লাগবো!” বের হয়ে গেলেন আফনান সাহেব।
************
রাত ১ টা বাজে। রফিক ফিরেছে বাসায়। আজ অনেকদিন পর বিদেশিটা খেয়েছে। তাই নেশা রয়ে গেছে এখনও। টলতে টলতে নিজের ঘরে ঢুকল সে। অন্ধকারে সুইচবোর্ড হাতড়ে লাইট জ্বালাল। তারপর শুয়ে পড়লো খাটের উপর। অনেক্ষণ শুয়ে থাকলো সে। ঘুম আসছে না। নেশাটাও মনে হচ্ছে আসতে আসতে কাটছে। বার বার এপাশ ওপাশ করে চেষ্টা করছে ঘুমানোর। কিন্তু রফিকের মন অন্যদিকে কাজ করছে। কোনদিকে সেটা বুঝতে পারছে সে। কিন্তু নিজেকে দমানো চেষ্টা করছে। এই মদ্যপ অবস্থায় ওসব করা যাবে না।
অবশ্য মনের অবস্থাটা রফিকের সেই দুপুর থেকে হয়ে আছে। “নাহ! আর পারমু না। এখনই করুম। যা হইবে হউক!” আনমনে বলে উঠে দাঁড়ালো। রুম থেকে বের হয়ে রান্না ঘরের পাশের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। চাবি দিয়ে তালা খুলে ভেতরে ঢুকল রফিক। ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিল। একটুপর শোনা গেল চিৎকার!
**********
শাহেদ হাসান দাঁড়িয়ে আছেন। যদিও তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে তিনি যে কোন সময়ই মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন। ইতমধ্যে ২ বার বমি হয়ে গেছে তার। মালিবাগ থানার এসআই তিনি। আজ সকালে রেলগেইটের কাছে একটা বাসা থেকে ফোন আসে তার কাছে। ফোন করেছিল বাসাটির কাজের লোক। তার সাহেব নাকি খুন হয়েছেন। শাহেদ সাহেব কিছুক্ষণ পরই ঐ বাসায় যান। লাশ দেখেন। একজন পুরুষের লাশ। সম্পুর্ণ নগ্ন দেহ। সারা শরীরে কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। শুধু মাত্র গোপনাঙ্গ অনুপস্থিত! মনে হচ্ছে কেউ খাবলা মেরে জায়গাটা তুলে ফেলেছে। রক্তে ভেসে গেছে সারা বিছানা। ক্ষত জায়গায় এখন কালো রক্ত জমে আছে। বিছানার নিচে ফেলে রাখা আছে একটি গোপনাঙ্গ ও ২ টি অন্ডকোষ!
তদন্তে জানা গেল, খুনির নাম মোসাম্মৎ আছিয়া খানম লাবনী। ভিক্টিম তার স্বামী রফিকুল আলম। রফিকুল আলমের লাবনী ছাড়া আরও ২ টো স্ত্রী ছিল বলে জানা যায়। তবে খুনের পর কাউকেই ওই বাড়িতে পাওয়া যায় নি। আরও জানা যায়, মালীবাগের রেলগেইট সংলগ্ন ঐ বাড়িটিতে বেশ কিছুদিন ধরেই পতিতা ব্যবসা চলছিল। রফিকুল আলম ছিলেন সেই পতিতালয়ের ম্যানেজার!

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৪৫

মানিক মোহাম্মদ ওমর বলেছেন: রফিকের বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো ইঙ্গিত থাকলে ভালো হতো। যেহেতো আসার কথা আছে।

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫

কাজী আসিফুজ্জামান বলেছেন: ইঙ্গিত আছে। গল্পের প্রথম প্যারার শেষ ৩টি লাইন দেখুন! :)

২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:১২

কালীদাস বলেছেন: এই লেখাটা আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। চমৎকার :)

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫

কাজী আসিফুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৫৯

নিশা বিবি বলেছেন: লাবনী একধম ঠিক কামটাই করসে...। রফিক মিয়াঁ গোপনাঙ্গ ছাড়া বাইচা থাকলে শাস্তিটা চরম হইত ...।

৪| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:০৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মোটামুটি...

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫

কাজী আসিফুজ্জামান বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৫| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: প্রথম দিক ভালই ছিল মোটামুটি। লাস্টে মনে হলো সংবাদ পড়ছি!! গল্পের সব গোমর ফাঁস করতে নেই। শুভ কামনা।

৬| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫২

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল !

৭| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:৫১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: শেষটা গল্পাকারে হলো না যেন। অথচ শুরুতে খুব প্রমিসিং লাগছিল।
আপনি সংলাপ আরও যোগ করে কলেবর বাড়াতে পারতেন। অন্তত শেষটায়।
তবে খুনও অনেক সময় পজিটিভ হয়। একটা পজিটিভ দিক দেখিয়ে শেষ করেছেন বলে, ভাল লেগেছে।

৮| ০১ লা মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:০৫

সিলেক্টিভলি সোশ্যাল বলেছেন: গল্প বলা যেমনই হোক, "poetic justice" হয়েছে। তাই আমার খারাপ লাগে নি :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.