নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কারো কেউ নই তো আমি , কেউ আমার নয় , কোন নাম নেইকো আমার শোন মহাশয়।।

বাবুরাম সাপুড়ে১

নিভন্ত এই চুল্লিতে মা একটু আগুন দে আরেকটুকাল বেঁচেই থাকি বাঁচার আনন্দে

বাবুরাম সাপুড়ে১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতে এখন নরেন্দ্র মোদীর সমকক্ষ নেতা নেই

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭


নরেন্দ্র মোদী ৮ তারিখ রাত থেকে ( ৮ নভেম্বর ২০১৬) ৫০০ এবং ১০০০ রুপীর পুরনো নোট বাতিল করেছে। ভারতে মোট কারেন্সি নোটের মূল্য প্রায় ১৬-১৭ লক্ষ কোটি রুপী , এর মধ্যে প্রায় ৮৫-৮৬ শতাংশ ৫০০ এবং ১০০০ রুপীর নোট , অর্থাৎ মোদী এক ধাক্কায় প্রায় ১৩-১৪ লক্ষ কোটি রুপীর ৫০০ এবং ১০০০ নোট বাতিল করে দিয়েছে। ভারতে প্রচুর লোকের কাছে ৫০০ এবং ১০০০ রুপী নোটের কোটি কোটি ব্ল্যাক মানি আছে , সব রাজনৈতিক দল ব্ল্যাক মানি দিয়ে ইলেকশন লড়ে। ব্ল্যাক মানি হচ্ছে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ , যে অর্জনের ওপর ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এখন যে বা যাদের কাছে এই অবৈধ ৫০০ বা ১০০০ রুপীর নোট আছে তাদেরকে ব্যাংকে গিয়ে এই অর্থ জমা করে নতুন নোট নিতে হবে। নির্দিষ্ট এমাউন্টের ওপর কোন একাউন্টএ অর্থ জমা হলেই ব্যাঙ্ক সেই তথ্য ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টকে জানাতে বাধ্য। প্রযুক্তির কারণে এখন এটা খুব সহজ হয়ে গেছে , সমস্ত কিছুই ডিজিটালী লিংকড।

এই নোট বাতিলের জন্য সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোদীর নিজের পার্টি বিজেপি। এর পর ক্রমান্বয়ে কংগ্রেস , মুলায়মের সমাজবাদী ,মায়াবতীর বিএসপি, দিদির তৃনমূল , ডিএমকে /এআই ডিএমকে ইত্যাদি। বিজেপিতে মোদীর প্রাধান্য এখন নিরঙ্কুশ। পার্টিতে তার বিরুদ্ধে ট্যা -ফোঁ করার কেউ নেই। বিরোধী নেতা নেত্রী যেমন রাহুল গান্ধী , মমতা , কেজরিওয়াল , মায়াবতী ,মুলায়ম ইত্যাদিরা মোদীর এই সিদ্ধান্ত হজম করতে পারছে না। মমতা দিদির সারদার লুট করা টাকা , মুলায়ম -মায়াবতীর "কালা-ধন" সব বরবাদ। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। তারা চিল্লাম -চিল্লি করে যাচ্ছে , মোদীকে হুমকী দিচ্ছে। ছোট -বড় অনেক বিজেপি নেতা আড়ালে আবডালে মোদীর গুষ্টি উদ্ধার করছে। ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট অনেক জায়গায় রেইড মারছে। আজকেই মুম্বাইয়ে এক মাঝারি মানের বিজেপী নেতার গাড়ী থেকে ৯৫ লক্ষ টাকা ব্ল্যাক মানি ধরা পড়েছে। কিন্তু বিজেপী নেতারা সামনা সামনি কিছু বলতে পারছে না। কারণ মোদীর এই সিদ্ধান্তে জনসমর্থন প্রচুর।গতকাল টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক জনমত সমীক্ষা বলছে প্রায় ৮৯% সাধারণ মানুষ মোদীর এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করছে।বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নোট বদল করতে অসংখ্য সাধারণ মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। তাদের কাজকর্মের অনেক ক্ষতি হচ্ছে কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের অধিকাংশ এটা সমর্থন করছে।

মোদীর এই সিদ্ধান্ত এক ধাক্কায় ব্ল্যাক -মানি এবং টেরোরিজম ফান্ডিং অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে কাশ্মীর শান্ত , ভারতীয় সেনা-বাহিনীর ওপর পাথর-গ্রেনেড ছোড়া বন্ধ , এর রেট ছিল পাথর ছোড়ার জন্যে ৫০০ রুপী , গ্রেনেড ছোড়ার জন্যে ১০০০ রুপী , এখন নোট বাতিল তো পাথর /গ্রেনেড ছোড়া বাতিল। সবাই এখন নিশ্চিন্তে কাশ্মীর ঘুরে আসতে পারেন --সেখানে এখন বরফ পড়ছে --অসাধারণ দৃশ্য --গতকাল শ্রীনগরের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৩ ডিগ্রি সেঃ , লাদাখের মাইনাস ৬ ডিগ্রি। চতুর্দিকে বরফ ই বরফ।
মধ্য ভারতের ছত্তিশগড় ,ওড়িশা এবং মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ যেগুলো নকশালদের ঘাঁটি , সেখানে তাদের সন্ত্রাস প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে , তাদের লুট করা হাজার হাজার কোটি রুপী যেগুলো তারা গভীর জঙ্গলে মাটির নিচে পুঁতে রাখে , সব বাতিল , তাদের এখন মাথায় হাত।

পাকিস্তানের পেশোয়ারে ISI এর জাল ভারতীয় নোট ছাপানোর প্রেস আছে। প্রতি বছর প্রায় ৭০০ কোটি রুপী জাল নোট ( ৫০০ এবং ১০০০) ছাপায়। সেগুলোকে নেপাল এবং বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করায়। মোদীর এক ধাক্কায় তাদের জাল নোট ছাপানোর কারবার বন্ধ।

আমি কোনদিন বিজেপির সমর্থক ছিলাম না , এখনো নই। ২০১৪ সালে মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হয় তখন অন্য অনেকের মতো আমিও সংশয় বাদী ছিলাম। মোদী প্রধানমন্ত্রী হয় কারণ তখন কংগ্রেসের দুর্নীতি চরমে উঠেছিল। কিন্তু বিজেপিও কোন ধোয়া তুলসীপাতা নয়। তাই মোদী যখন বলেছিল --মায় না খাউঙ্গা , না খানে দুঙ্গা --- তখন সেটা নির্বাচনী জুমলা মনে হয়েছিল। গত দু -আড়াই বছরে মোদী খারাপ কিছু করেনি যাতে তার বিরুদ্ধে কিছু বলা যায় উল্টো দিকে সে কিছু বদলানোর চেষ্টা করছে।

গত কয়েক মাসে বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের সমীক্ষা জানাচ্ছে নেতা হিসাবে মোদীর এপ্রুভাল রেটিং প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ , অর্থাৎ এখনই নির্বাচন হলে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চায় প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ ভোটার। অন্যান্য নেতা যেমন রাহুল গান্ধী অথবা অরবিন্দ কেজরিওয়ালএর এই রেটিং ১০-২০ শতাংশ । মোদী এখন ভারতের অবিসংবাদিত নেতা , রাহুল /কেজরিওয়াল তার সামনে বাচ্ছা ছেলে।

সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও মোদীর এই দেশের সিস্টেম বদল করার "মেহনত" স্বীকার করছে। দলীয় রাজনীতির উর্ধে উঠে মোদী এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ,যাতে এটা মনে হচ্ছে সে একজন লিডার থেকে স্টেটসম্যান এ পরিবর্তিত হতে চায়। গুজরাতের এক গরীব মায়ের সন্তান, রেল -স্টেশনএ একদা চা বিক্রেতা বালক নিজেকে স্টেটসম্যান স্তরে উন্নত করতে পারবে কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


একা মুহিতের ভাইদের বালিশের নীচের টাকায় কয়েক ব্যাংক চলতে পারবে।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: বালিশের নিচে ,তোশকের নিচে ,বস্তার ভিতরে , গাড়ীর ডিকিতে আমার -আপনার দেশে কাড়ি কাড়ি টাকা আছে। এগুলোকে demonetize করতে হবে। মোদী কিছুটা শুরু করার চেষ্টা করছে।সাধারণ মানুষের সমর্থন পাচ্ছে ।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭

বুবলা বলেছেন: স্বাধীনতার পরে এই প্রথমবার কেউ ব্ল্যাকমানি জাল টাকার বিরুদ্ধে এতবড় স্টেপ নিয়েছে সেজন্য সবাই সমর্থন করছে, আমিও স্টেট ব্যন্কে এ ৩ ঘন্টা লাইন দিয়ে টাকা পেলাম, আমার একটু সমস্যা হল ঠিক, কিন্তু মনে খুব খশী হয়েছি, কারন প্রথমবার অনুভব করছি কালো টাকার, জাল টাকার কারবারীদের বিপদে ফেলবার যুদ্ধে আমিও সামিল হয়েছি

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৩

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: ভালো বলেছেন।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঐতিহাসিক এক সিদ্ধান্ত। মোদী একটা জিনিস বটে!

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৩

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: মোদী এক রাজনৈতিক নেতা থেকে স্টেটসম্যান হতে পারবে কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে।কমেন্ট করার জন্যে ধন্যবাদ।

৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪২

জেন রসি বলেছেন: সাহসী সিদ্ধান্ত। ব্যক্তিগত ভাবে মোদিকে আমি অপছন্দ করি। এক গুজরাটে বিতর্কিত ভূমিকার জন্যই তাকে কাঠগোড়ায় দাঁড়া করানো যায়।

কিন্তু ভারতে তার জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তিনি কিছু ইফেক্টিভ পলিসি এক্সিকিউট করতে পেরেছেন।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১২

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: হ্যাঁ গুজরাটে মোদীর ভূমিকা বিতর্কিত , কিন্তু আইন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই প্রমান হয় নি। কংগ্রেস ২০০৪-১৪ ক্ষমতায় থাকা কালে মোদীকে অপরাধী প্রমান করার প্রচুর চেষ্টা করেছে কিন্তু সফল হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের তত্ত্বাবধানে SIT গঠন করেছিল ,তারাও কিছু প্রমাণ করতে পারেনি। সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগ থেকে মোদীকে মুক্তি না দিলে সে প্রধানমন্ত্রী হতে পারতো না।
আমার নিজের ব্যক্তিগত ধারণা ২০০২ সালে যখন গুজরাটে দাঙ্গা হয় মোদী তখন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সদ্য নতুন , তার আগে সে বিধায়ক পর্যন্ত ছিল না , রাজ্য চালনাতে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ ছিল , মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সে দাঙ্গা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল , কিন্তু তার বিরুদ্ধে বিরোধীদের যে অভিযোগ --যে মোদী নিজে সম্পৃক্ত ছিল এটা ঠিক নয় , কোন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষেই বোধহয় এটা সম্ভব নয়। কিন্তু এটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা। আসল কথা হল দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে , এটা না হলে , সে না গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ১২ বছর টিকতে পারতো---না পরবর্তী কালে প্রধানমন্ত্রী হতে পারতো।

৫| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৩০

জেন রসি বলেছেন: তার দলের কর্মীরাই সে হত্যাকান্ডে ইনভলবড ছিল। এবং যেসব নেতা ইন্ধন দিয়েছিল তারাও মোদির কাছের লোক ছিল। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। একজন মূখ্য মন্ত্রী হিসাবে সে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিল তখন। এই হত্যাকান্ডের দায়ভার অবশ্যই তাকেও নিতেও হবে।

কংগ্রেস বাদেও ভারতের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরাও সেসময় তার তীব্র নিন্দা করেছিল। অরুন্ধতি রায় সরাসরি তাকে সাইকোপ্যাথ বলেছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.