নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কারো কেউ নই তো আমি , কেউ আমার নয় , কোন নাম নেইকো আমার শোন মহাশয়।।

বাবুরাম সাপুড়ে১

নিভন্ত এই চুল্লিতে মা একটু আগুন দে আরেকটুকাল বেঁচেই থাকি বাঁচার আনন্দে

বাবুরাম সাপুড়ে১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাশিশ , হাশিসিন , এ্যাসাসিন এবং এ্যাসাসিনেশন .....

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৪৬

সময় ১১৯০ সাল ,স্থান :জেরুজালেম।

বাদশা সালাদীনের নেতৃত্বে মুসলমান সেনাবাহিনী যুদ্ধ করছে খ্রিস্টান বাহিনীর সাথে। তাদের নেতা রিচার্ড -দ্য লায়ন হার্ট

যুদ্ধ হচ্ছে জেরুজালেম শহর দখল করা নিয়ে। এই শহর পৃথিবীর এক প্রাচীনতম শহর ,ইহুদী ,খ্রিস্টান এবং মুসলমানরা একে পবিত্র শহর মনে করে। এর আগে একাধিক রক্তক্ষয়ি যুদ্ধ হয়েছে এই শহর দখল করা নিয়ে , এখন চলছে তৃতীয় যুদ্ধ বা থার্ড ক্রুসেড। হাজারে হাজারে সেনা এবং সাধারণ নারী ,পুরুষ ,শিশু মারা গেছে প্রথম এবং দ্বিতীয় ক্রুসেডে এবং আরো অনেক হাজার মারা যাবে এই তৃতীয় ক্রুসেডে --ক্রস অথবা ক্রিসেন্ট এর আধিপত্য বিস্তারে।

মুসলমান এবং খ্রিস্টান যোদ্ধারা ছাড়াও আরও এক তৃতীয় পক্ষও এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ কারী। তারা দুর্ধর্ষ ,নৃশংস এবং হত্যাকাণ্ডে সম্পূর্ণ ভাবে নিবেদিত প্রাণ ,তাদের চোখে দেখা যায় না।
ক্রুসেডে অংশগ্রহণ কারী দু -পক্ষকেই তারা আক্রমণ করছে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে এই তৃতীয় পক্ষের আক্রমণের দক্ষতা , ক্ষিপ্রতা এবং নৃশংসতা এত বেশী যে ক্রুশেড অংশগ্রহণ কারীরা হতভম্ব হয়ে যাচ্ছে ,তারা বুঝে উঠতে পারছে না এরা কারা। তারা মনে করছে এগুলো কোন অশরীরী আত্মা বা জিন।

বাদশা সালাদীন রাতের অন্ধকারে দু -দুবার এদের আক্রমণ থেকে কোন রকমে প্রাণে বেঁচে যায়। কিন্তু বাদশা জিন -টিনে বিশ্বাস করত না। সে স্পাই লাগলো এই আততায়ীদের পরিচয় জানার জন্য। স্পাইরা অনেক খোঁজ খবর নিয়ে জানালো রাতের অন্ধকারে আক্রমণকারী এই আততায়ীরা নাজিরি- ইসমাঈলি ,শিয়া ইসলামের এক অনুসারী অংশ। আলামুট পাহাড়ের ওপর অবস্থিত এক গোপন দুর্গে এদের অবস্থান এবং এরা হাসান -ই -সাবাহ নামের এক ধর্মীয় নেতার অনুসারী।

কিন্তু নাজিরি- ইসমাঈলি যোদ্ধারা এতো দক্ষ ,ক্ষিপ্র এবং নৃশংস হত্যাকারী কি করে হয়ে উঠল , এদের নিজেদের জীবনের কোন পরোয়া নেই এবং তাদের উদ্দেশ্যই বা কি ?

জানা গেলো এই আততায়ীরা ১২থেকে ২০ বছর বয়সী কিশোর -যুবক। এদেরকে অপহরণ করে অথবা ভুলিয়ে -ভালিয়ে হাসান নিয়ে আসতো আলামুট পাহাড়ের গোপন দুর্গে। এরপর হতো এদের ধর্মীয় ব্রেইনওয়াশ। হাশিশ নামক মাদক সেবন করিয়ে আল্লার ইবাদত করাতে করাতে এদের বোঝানো হতো এই ইহজন্মের অসাড়তা এবং ক্ষণ স্থায়ীত্বের। হাশিশ প্রভাবে ধর্মীয় উত্তেজনার ট্রান্স -এ যখন তাদের স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধি লোপ পেত তখন আনা হত সুন্দরী যুবতীদের ! তারা নাচতো, গাইতো, সুমধুর বাদ্য বাজাতো, মনোরঞ্জন করতো তাদের নানা উপায়ে। কিভাবে?

রবার্ট আন্তোন উইলসন তাঁর Prometheus Rising বইতে লিখেছেন : accomplished young girls who would dance and sing for him, play lovely musical instruments and feed him morsels of the most delicious foods. As the initiate drifted into an ecstatic daze, the girls would go to work on him, giving him a full-body tongue massage while one girl performed oral sex on him. Eventually the bedazzled young man would climax into the girl’s mouth “as softly and slowly and blissfully as a single snowflake falling,”

আহাহা স্বর্গ সুখ ! কোন পুরুষ না এটা চায় !! তাদের বোঝানো হতো এটাই হলো জান্নাত , কিন্তু ইহজন্মের এই জান্নাত ক্ষণস্থায়ী ,তাদের লক্ষ পরজন্মের চিরস্থায়ী জান্নাত।
"Hassan would tell him that he had been favored by Allah and given a tiny glimpse of the highest level of heaven reserved for those martyrs who die for their faith. For such loyalty and devotion, the delights he had experienced so briefly were available for all eternity. Now he longed for nothing more in this world than the chance to die in the service of Allah."

এরপর হাসান তাদের দুর্গের নিচে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাতো হত্যা এবং সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য। হাশিশ সেবন করে আল্লার নামে যুদ্ধ করতে যাওয়া এই যুবকদের বলা হতো হাশিসিন

তৃতীয় ক্রুসেড শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন ক্রুসেডাররা এই হাশিসিন দের নৃশংশতা ভুলতে পারে নি । ফরাসিরা হাশিসিন উচ্চারণ করতে পারতো না --তারা এদেরকে বলতো এ্যাসাসিন যা পরবর্তী কালে ইংরাজি শব্দ assassin হিসাবে ডিকশনারিতে স্থান পায় এবং এই ধরণের হত্যা কর্মকে বলাহয় assassination .

কিন্তু প্রশ্ন হলো এই হাশিসিন রা মুসলমান এবং খ্রিস্টান ক্রুসেডারদের মনে এত ভয়ের কেন সঞ্চার করলো ? এমন নয় যে তারা অনেক হত্যা করছিলো , অন্তত ক্রুসেডগুলোতে নিহতের সংখ্যার তুলনায় তা কিছুই ছিল না। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন মানব মন অনিশ্চয়তা কে ভীষণ ভয় পায় --অকস্মাৎ ,আকস্মিক ঘটনা তাকে ভীত, এলোমেলো করে দেয়। হাশিসিন দের তীব্র ,ক্ষিপ্র ,আকস্মিক হত্যাকান্ড অভিজ্ঞ সেনাদের হৃৎ-কম্প ধরিয়ে দিতো।

উপরোক্ত হাশিসিন দের সাথে বর্তমানের ধর্মীয় নেশায় নেশাগ্রস্থ জিহাদীদের কোন পার্থক্য নেই। এরা একই ভাবে ব্রেইনওয়াশড হয়। মৃত্যুর সংখ্যার তুলনায় ভয়ের হৃৎ-কম্প তারা বেশী ছড়ায়। কোন জনবহুল জায়গায় গুলি চালিয়ে অথবা কোনো স্কুলে , রেঁস্তোরায় ,রেল স্টেশনে বা হোটেলে ঢুকে কিছু নিরীহ মানুষ কে হত্যা করে।পৃথিবীতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মানুষদের সংখ্যা কত ? খুব বেশী হলে কয়েক হাজার। পৃথিবীতে রোড একসিডেন্টে অথবা মশার কামড়ে প্রতিবছর এর থেকে অনেক বেশি মানুষ মারা যায়।
নিহতের সংখ্যা নয় , এই হত্যাকান্ড গুলো ঘটার অনিশ্চয়তা ,আকস্মিকতা এবং নৃশংসতা পৃথিবীর ৭৫০ কোটি মানুষের হৃৎ-কম্প ধরায়। "হি হ্যাজ বিন এ্যাসাসিনেটেড" ইশ মোর ডেঞ্জারাস সেনটেন্স দেন "হি সিম্পলি ডায়েড"

রেফারেন্স :
১)hasan-bin-sabbah-and-secret-order-of....

২) assassins

৩) Hassan-i_Sabbah

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:২৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: আফিম তবুও ভালো, ধর্ম সে তো হেমলক বিষ!!!
হাশিসিন-এ্যাসাসিন নিয়ে তথ্যমূলক পোস্ট। ভালোলাগা।

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৩১

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: "ধর্ম সে তো হেমলক বিষ!!!"

ধর্মের কাছে "reason is a whore" !!!

২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: হ্যাঁ, এখনও ঠিক এমনটাই করা হচ্ছে। কিছুই বদলায় নি।

২৯ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: সাধারন মানুষকে ধর্মের হাশিশ খাইয়ে নেশা করানো সবথেকে সহজ।

৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩

ওসেল মাহমুদ বলেছেন: বোকার হদ্দ দের কেই ইহুদীরা পোষা কুকুরের মত ব্যবহার করছে হীণ উদ্দেশ্য হাসিল করতে !

২৬ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭

বাবুরাম সাপুড়ে১ বলেছেন: ওই ইহুদি গুলানরে কি করে টাইট দেয়া যায় বলেন দেখি --ব্যাটারা সব আবিষ্কার করে বসে আছে , অন্যদের জন্য তো কিছু ছেড়ে রাখবে!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.