নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুরুষের আটকান্ড রামায়ন, পৌরুষ ও সংজ্ঞায়ন:

২২ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৪

এক: সংজ্ঞায়ন পর্ব:
পুরুষ।
জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত দায়ীত্বের ভারে ন্যুজ এক প্রকারের প্রাণী বিশেষ।
স্বেচ্ছায় সব দায়ীত্ব মাথায় নিয়ে নিজেকে ভুলে যাওয়া এই প্রাণীকে কেউ কেউ আদর করে ‘পুরুষ মানুষ’ও বলে।
কখন বুঝবেন, আপনি একজন 'আসল পুরুষ' হয়ে গেছেন?
> যখন বাজারে গেলে বড় ইলিশ আর দেশী মুরগীগুলো দোকানদার দাম ঠিক না করেই আপনার ব্যাকডালা বা মিন্তির ঝুড়িতে পুরে দেয়।
কখন বুঝবেন, আপনি বড় সাপ হয়ে গেছেন?
>যখন আপনি তিন দিনেও আপনার ইনবক্স চেক না করার মতো হ্যাডোম ধারন করে থাকতে পারবেন।
প্রকৃত শক্তিশালী পুরুষ সেই, যে বারো মাসে ১৯ টা আরোপিত পার্বনের প্রতিটাতে ঘন্টার পর ঘন্টা, দোকানের পর দোকান, শপিঙ ব্যাগের বোঝা দুহাতে ঝুলিয়ে রেখে হাসিমুখে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে।
সারা জগত যখন ভোরের হালকা শীতে কম্বলের ওম জড়িয়ে ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলো আয়েশে জোড়া দিতে দিতে গভীর ঘুমে নিমগ্ন।
সেই মাহেন্দ্রক্ষণে একদল হোমোসেপিয়েন তড়াক করে উঠে নিজেকে প্রস্তুত বা আধাপ্রস্তুত করে ঘুম চোখে উর্দ্ধশ্বাসে পথে নামে।
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা-এই মেকানিক জীবনের নিপুণ শিল্পীর নাম 'পুরুষ'।
'পরিবারের ভবিষ্যৎ' এই দুশ্চিন্তাই একজন পুরুষকে 'পুরুষ' বানিয়ে রাখে। তাকে 'মানুষ' হয়ে মানুষের মতো বাঁচতে দেয় না।
মধ্যবিত্ত পুরুষ। এক চির আপোষকামী জাত। মধ্যবিত্ত নারী। এক চির ম্যানেজ মাস্টার।
দুই: পুরুষ ও হ্যাডোমঅলা মেয়েছেলে:
হ্যাডোম নামে একটি বাজে শব্দ প্রচলিত আছে। যার প্রতিশব্দ হতে পারত পুরুষ।
পুরুষ আর হ্যাডোম-নাকি সমার্থক। পুরুষ হতে হলে হ্যাডোম থাকতে হয়। ভদ্দরনোকরা ভদ্দর ভাষায় যাকে গাটস বলে। গাটস বা পৌরুষ বা পুরুষত্ব= এর সাথে নাকি মানিব্যাগের ফিগারের একটি বিপরীতমূখী সম্পর্ক আছে। স্লিম ফিগার ওয়ালেট সুপুরুষের পতাকাবাহী নয়। পেটমোটা মানিব্যাগই নাকি পুরুষত্বের ধ্বজ্জাধারী। তা সে নিজে যতই ধ্বজ্জভঙ্গ হোক।
তবে, ক্রেডিট কার্ড এসে অবশ্য এই মীথে নতুনত্ব দিয়েছে।
ভদ্দরনোকরা যত যা ই বলুক, পুরুষ হতে হলে মানিব্যাগ ও এটিটিউডের নাকি জয়জয়কার। তবে দুর্জনেরা বলে, হ্যাডোম থাকলে মানিব্যাগও লাগে না। হ্যাডোম কীভাবে অর্জিত হয়-সেটি অবশ্য আমার অধরা।
একজন বিলিয়নিয়ারকে চিনতাম। প্রান্তিক নিম্নমধ্যবিত্ত হতে বিজনেস করে বিলিয়নেয়ার হয়েছেন। কিন্তু, ভদ্রলোক হ্যাডোমের অভাবেই হোক, কিংবা বিনয়, বিলাসী দামী পণ্য কিনতে ইতস্তত হতেন। তো, তার যখন কিছু দামী পণ্য কিনবার দরকার দেখা দিত, তখন, তার কাছের একজন মানুষকে পাঠিয়ে কেনাতেন। নিজে কিনতে হাত উঠবে না বলে।
পুরুষ কীভাবে হয়ে উঠতে হয়-তা নিয়ে অনেক আগে একবার লিখেছিলাম। পুরুষ আসলেই হয়ে উঠবার জিনিস। অনেক কিছুই লাগে পুরুষ হতে। তবে মানিব্যাগের স্বাস্থ্যের বিষয়টা বোধহয় খুব কমোন। আর যেসব লাগে, তার মধ্যে এটিটিউড, গাটস, মেঘমন্দ্র কন্ঠ্যস্বর, মেজাজী মুড, রক্তচক্ষু-এসবই নাকি পুরুষত্বের অস্ত্র। সাথে একটু আলুর দোষ থাকলে সোনায় সোহাগা।
ওই যে বিলিয়নেয়ার ভদ্রলোকের কথা বলছিলাম না, ঠিক সেরকমই, অনেকেই হাত খুলে পুরুষের মতো পয়সা খরচ করাটাতে ঠিক অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেন না। তা সে যতই পয়সাওলা হন। একটা হাতঘড়ি কেন ২৫ হাজার টাকা হবে-সেই প্রশ্নের উত্তর তারা জানেন না। এক লাখ টাকার মোবাইল আর ওয়ালটন ফোনের তফাত তারা মানতে চান না।
বায়োলজিক্যালী পুরুষ হয়ে ওঠার পরেও তারা টাইয়ের নট আর স্যুটের ভাজ মেইনটেইন করে উঠতে পারেন না। শার্টের ইনও না। আমি এক হোমোসেপিয়েন পুরুষ হিসেবে যেমন বুঝি না, এক কেজি মুরগীর দাম যদি ১৫০ টাকা হয়, তাহলে আমার বাসার পাশের চিপাগলির পিজামাস্তান কেন এক পিস মুরগীর ঠ্যাঙ ভাজা ৫০ টাকা রাখবে-যেটা একাই প্রায় ৩৩৩ গ্রাম মুরগীর দামের সমান। আমার মতো ঠিক এরকম পুরুষদের একটা দারুন নাম আছে, যেটা নামকরণ করেছেন সেই ভদ্দরনোকরাই।
এমন পুরুষ বা ছেলেদের নাম হল, ’মেয়েছেলে’।
আজকে বোধহয় পুরুষদের জন্য নিবেদীত দিবস। সারাদিন কত ঢঙে-রঙে কত লেখা পড়লাম। পুরুষালী পুরুষদের পেন্নাম। পুরুষকে পুরুষ বানিয়েছে যে নারী-তাদেরও পেন্নাম।
আর জগতের সকল মেয়েছেলেদেরও পেন্নাম।
তিন: পুরুষের তিন কাল:
বাঙালি পুরুষ, জন্ম নেয়, জন্মদাতা দাত্রীর অপূর্ন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে।
বাঙালী পুরুষ, জন্ম দেয়, বৃদ্ধ বয়সের অবলম্বন সৃষ্টি করতে।
তাই, বাঙালি পুরুষ,
২৫ শে বাপ হলে হয় গর্বিত, এই ভেবে, যে, দেখছ, ২৫ এই বাপ, যাক ঝামেলা শেষ।
৫০ শে বাপ হলে পায় স্বস্তি, যে, যাক, অন্তত আঁটকুড়ে বদনাম ঘুচল।
আর ৮০ তে বাপ হলে হয় বিব্রত।
চার: পুরুষের রোমান্টিসিজম:
প্রতিটি 'রোমান্স' এর ঠিক অব্যবহিত পরে, একজন ♂ পুরুষ সবার আগে কোন প্রশ্নটি করে-জানেন?
---+ আমার লুঙ্গী কই?
আবেগে যতই বান ডাকুক, আগে লুঙ্গী সামলে রাখুন। পরে আর খুঁজে পাবেন না।
একই তরিকায়,
ব্রেক আপ হবার পরে পুরুষ ও নারী সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন ও উদগ্রীব হয় কোন ব্যাপারে-জানেন?
---+ ইনবক্স নিয়ে।
আপনার 'ইনবক্স' নিয়ে সচেতন হোন।
সময়ের পরিবর্তনে আজকের সুহৃদ কাল কুহৃদ হতে সময় নেবে না। তখন ইনবক্স হয়ে বসতে পারে প্যানডোরার বক্স।
আজকে ব্রেকআপ হলে কালই যদি তাকে 'ইনবক্স' নিয়ে ভাবান বা ভাবেন, তো জানবেন, এতকালের ভালোবাসাটা ভালোবাসাই ছিল না, ছিল 'পিরিত'।
হাশরের দিন ’বঙ্গপুঙ্গব’, মানে, বাংলাদেশের পুরুষ মানুষদের আমলনামার কালো চ্যাপ্টারের হিসেব-নিকেষ সম্পন্ন করতে যদি তাদের ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ইনবক্সকে আমলে নেয়া হয়,
তাহলে কাজটা মারাত্মক হবার সমূহ সম্ভাবনা।
কিছু ইনবক্স দুর্ভাগ্যক্রমে প্রকাশিত ও স্ব-দর্শিত হয়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় আবাঙালের এ হল নয়া উপলব্ধি।
একসময় বাঙালি পুরুষ বউয়ের কাছ থেকে মানিব্যাগ লুকাতে পারলেই কাবেল হয়ে যেত। এখন ইনবক্স লুকাতেই সে পেরেশান।
পাঁচ: পুরুষ তুমি মানুষ নও, তুমি শুধুই পুরুষ:
পুরুষের সুপ্রাচীন একতরফা কর্তৃত্ব’র অবসান আর নারীর মুক্তি নিয়ে কাজ করতে করতে আর কথা বলতে বলতে আমরা বোধহয় একটু বেশি বেশি নারীবাদী কিংবা পুরুষ বিদ্বেষী হয়ে যাচ্ছি।
জগতের সব লেখক কেন শুধু ‘একজন নারী’কেই নির্যাতিতার রূপে দেখাতে চান? নারী বা পুরুষ যেই লেখেন, সবার কলমেই নারীই একমাত্র নির্যাতিত ও বঞ্চিতরুপে সমবেদনার পাত্রী।
কেন, পুরুষ কি নির্যাতিত হয় না? বঞ্চনায় পুরুষ কি ভোগে না? সেকি প্রতারিত হয় না নারীর কাছে? তবে কেন শুধু সবার কলমে একমাত্র নারীই প্রষ্ফূট? কেন সাহিত্যে, খবরে, আচারে, সংস্কৃতিতে, সেমিনারে শুরু নারীর বঞ্চনার বন্দনা?
পপুলারিটি? ক্রেজ?
ট্রেন্ড? মেজরিটি? লোকলজ্জা?
পাবলিক এটিচুড? জড়ু কা গোলাম? ‍পুরুষতান্ত্রিক অহংবোধ? (যে, গল্পেও পুরুষ বলবান থাকবে)?
নারীমুক্তির দূত পুরুষ ও রমনীবৃন্দ: আপনারা আমার নমস্যঃ। সিরিয়াসলি। তবে অনলাইন ও অফলাইন যত লেখা পড়ি সবগুলোতে ভিলেন ওই পুরুষ (অন্তত ৯৫% লেখায়), এটা খুব পিড়া দেয়। মনে রাখতে হবে, আমাদের যুদ্ধটা পুরুষের বিরুদ্ধে না, পুরুষকে ইনফেরিয়র করে দেয়া না, পুরুষের এতদিনের ডোমিনেশনের প্রতিশোধের জন্য না।
পুরুষকে নারীর বা নারীকে পুরুষের প্রতিদ্বন্দ্বী বা শত্রূ পরিগনিত করার জন্যও না। আমাদের লক্ষ্য নারীর মুক্তি, নারীর সত্যিকারের মর্যাদা অর্জন, তার প্রাপ্য সম্মান প্রতিষ্ঠা আর নারীকে পুরুষের মতোই একজন ব্যক্তিস্বত্ত্বা ও মানুষ হিসেবে পরিচয় প্রদান।
এবার আসল কথা পাড়ি। কয়েকদিন আগে লাইফ ইন্সু্র‌্যান্স কোম্পানী হতে দু’জন এজেন্ট এসেছিলেন। আমাকে তারা ধৈর্য ধরে বোঝান, আমি মরলে আমার ইন্সুর‌্যান্সের টাকায় আমার পরিবার কীভাবে সুরক্ষিত থাকবে। কীভাবে আমার মরার পরেও ওই টাকা আমার প্রিয়জনদের নিরাপত্তা আর কমফোর্ট দেবে। হায় পুরুষ মানুষ! সারাজীবন তো দায়ীত্ব নিতেই হয়, মরার পরেও তার পরিবারের কী হবে তার জন্য মরার আগেই মরার প্রস্তুতি নিতে হয়।
পুরুষ, হে মহান পুরুষ! তোমার মরার পরে কীভাবে তোমার মৃত্যুপূর্ব দায়ীত্ব সুন্দরভাবে চলতে থাকবে তার চিন্তাও তোমাকে মরার আগেই ভেবে ও করে যেতে হয়। তুমি স্বাধীনভাবে মরতেও পারবে না।
তুমি জীবনেও স্বাধীন নও, মরণেও নও।
তুমি মানুষ নও, তুমি শুধুই পুরুষ।
ছয়: পুরুষ একটু বেশি বেশি পুরুষ:
পুরুষ মানুষ।
একটি পুরো জীবন কাটিয়ে দিয়েও স্থির করে উঠতে পারেনা তার একান্ত নিজস্ব প্রায়োরিটি আর জীবন প্রত্যাশা।
সারাটি জীবন সে মহামানবের এক কাল্পনিক মরিচিকার মেডেল জিতবার লড়াইয়ে কাটিয়ে দেয়। অন্যের আরোপিত ভূমিকায় নিপূণ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।
তবে সেদিনই সে তার জীবনের নিজস্ব প্রত্যাশা আর মানে খুঁজে পায়, যেদিন তাকে আপন করবার সময় ফুরায়।
আমাকে কেউ কেউ বলেন, তুমি ঠিক পুরুষদের মতো না, কেমন ম্যানতা ম্যানতা। ”পুরুষ” হবে পুরুষের মতো। তো আমার একজন পরিচিত মহা পরাক্রমশালী পুরুষ আছেন। তিনি প্রায়শই তার স্ত্রীকে কিভাবে চাপে রাখেন, কিভাবে ভয়ে রাখেন, কিভাবে সারাক্ষণ দৌড়ের উপর রাখেন তার গল্প বলেন তাড়িয়ে তাড়িয়ে। আর স্ত্রীকে শাসনে রেখে তিনি কিভাবে ”পুরূষ” হলেন তার রসালো গল্প বলে বিমল আনন্দ উপভোগ করেন।
আমাকে উপদেশ দেন, “বিদ্যুৎ সাব, বউকে বুঝলেন, সবসময় টাইটে রাখবেন। ”মেয়ে মানুষ” টাইট দিলে ভাল থাকে।” তো সেই পরাক্রমশালী ”পুরুষ” তার পুরুষালি কর্তৃত্বে মহাখুশি। পৌরুষত্ব বজায় রাখতে পেরে তিনি খুবই গর্বিত। তার পরাক্রমশালী পৌরুষত্ব দেখে আমিও মাঝে মাঝে ইর্ষায় পুড়ি।
মুশকিল হয়েছে অন্যখানে। ঘটনাক্রমে একদিন জানা গেছে, সেই পরাক্রমশালী ”পুরুষ” সাহেবের টাইটে থাকা স্ত্রী তার অফিস যাবার ও আসার মাঝের সময়টায় নিজের ”মেয়ে” মানুষত্ব বেশ ভালভাবে নানাভাবে নানাস্থানে উপভোগ করেন। মানে? ওই যে ওই আরকি?
আরেকদিন আমার গিন্নিকে নিয়ে শীতের সকালে গেছি নদীর পাড়ের এক বাজারে। শীতে দু’জনেই জবুথবু হয়ে জিনিসপত্র দেখছি। আসলে বউ সদায়পাতি করছে আর আমি নদীর ছবি তুলছি। পাশেই একজন “পুরুষ” বিছানার চাদর গায়ে জড়ানো অবস্থায় এক দোকানীর কাছ হতে ঢেরশ কিনছে। একটা একটা ঢেড়শ টিপে টিপে কচি কিনা তা পরখ করে তিনি আধাকিলো ঢেড়স কিনে গৃহে প্রত্যাগমন করলেন।
আমার স্ত্রী আমায় নিয়ে পড়লেন। “তুমি এমন করে ”পুরুষের” মতো বাজার করতে পার না? তুমি দেখে বুঝে কিনতে পারলে তো আমার কষ্টটা কমত।”
তো আমি আমার বউরে বললাম, দেখ যেসব ”পুরুষ” মানুষ একটা একটা ঢেড়ষের বোটা টিপে, লেজা চিপে কচি ঢেড়ষ কিনতে পারে তারা পুরুষ হিসেবে খুবই কাবেল কোনো সন্দেহ নেই তবে মানুষ হিসেবে তারা অত্যন্ত কুচুটে টাইপের হয়। তো তুমি যদি অমন ঢেড়ষ এক্সপার্ট ”পুরুষ” স্বামী চাও তাহলে কুচুটে স্বামীও মেনে নিতে হবে।” আমার স্ত্রী আমাকে তাড়া লাগায় “রিক্সা ডাকো”।
বেশি বেশি ”পুরুষ” হতে চাইলে হতে পারেন। তবে আপনি ”পুরুষ” হতে চাইলে মহিলাও তো ”মেয়ে” হতে চাইবেন তাই না?
সাত: পুরুষের ব্যবচ্ছেদ:
একজন নারী অপদস্ত হচ্ছে- এমন একটা শুট বাংলার নিস্পেষিত পুরুষ সমাজের জন্য চরমতম জিঘাংসাসূচক ’শীর্ষসুখ’ এর সমতূল্য। বিশেষত, সেই জিঘাংসার কড়া রাম গলা ভেজানোর ঠিক আগক্ষণেই যদি আবার সেই অপদস্ত নারীর উত্তেজক লাইভের নেশাতুর এ্যাপেটাইজার যোগ হয়।
একজন পুরুষ অপদস্ত হচ্ছে- এমন একটা শুটও বাংলার চির অপদস্ত পুরুষকূলের জন্য পরমতম সান্তনাসূচক ও পবিত্রতম সুখ।
নারীদের কাছে উভয় দৃশ্যের আবহ জানা যায়নি বিধায় বলা গেল না। নারীর মন দেবতারাই জানে না। আমি কোন পামর।
আবহমান বাংলার হাজার বছরের ইতিহাসে,
বাংলার পুরুষ ও ’হিংসিত’ আধুনিকা নারীকূলের জন্য,
যুগপত উত্তেজক লাইভ আর লাইভকালের অব্যবহিত পরেই ‘কূলটা’ ’ভাড়াটে’ নারীর হাতে হাতকড়া সহযোগে শশুরাল গমনের মতো সাতকড়ার কারি কিংবা সাতরঙ্গা চায়ের কড়া নেশাতুল্য লাইভ কপ-ক্রিমিনাল পরিবেশনা-অত্যন্ত দুর্লভ এক বিনোদন।
আট: পুরুষের গোপন রোগ:
মধ্যবয়সী পুরুষদের একটি হ্যাবিট আছে-ছোঁক ছোঁক করা। এই হ্যাবিট মধ্যবয়সী হতে কমপ্লান যুগের হাত ধরে সববয়সি পুরুষের মধ্যে সংক্রামিত হয়েছে। আবাল বৃদ্ধ বণিতা-সব বয়সি পুরুষ সে হোক টিন এজ, হোক তরুন, হোক পুরুষ বা মধ্যবয়সী পুরুষ-চলতে ফিরতে (ও হ্যা, ফেসবুকাতে) এই পুরুষ শ্রেনীর স্ল্যাং, ফিলদী, ন্যাকেড, লুজ-যে প্রতিশব্দই বলুন, শুনতে শুনতে বমি করার দশা হয়ে যাচ্ছে।
এমনকি যেকোনো সাধারন কথা বা গল্প করুন যেমন, ’সেদিন অমুকের স্ত্রী বমি করে মরতে বসেছিলেন’-এই অত্যন্ত সাধারন মেসেজটিতেও নানারকম ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য, বাঁকা অর্থে বয়ান, গুঢ় রহস্যের দিকে ইঙ্গিত শুরু হয়ে যাবে। সেমি অশ্লীল ভাষায় কথা বলা, মন্তব্য করা, নরনারীর গোপন সম্পর্ক নিয়ে আলগোছে ইঙ্গিত করা, সুরসুরি দেয়া-মধ্যবয়সী ও নিম্নমধ্যবয়সীসহ এখনকার ইয়থের পুরুষত্ব ও ড্যাশিং পার্সোনালিটির অংশ। রীতিমতো একরকম নিষিদ্ধ আনন্দের শিহরন জাগে মনে।
এমনকি কিছু নারীও কম যান না। ’১৮+ গপ্প’ নামের একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রীতিমতো নীল ছবি চালান দেবার মতো গল্প, বর্ননা, চুটকী, জোক-হরহামেশা করে যায় এই পারভার্ট মাইন্ডেড পুরুষ (ও নারীরা)। আর রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে ‘......পো’, ‘.........বাচ্চা’, ‘.........পুলা’-এসব ছাড়াতো আমাদের ইয়থরা এখন কথা শুরুই করতে পারে না।
কেউ কেউ বলবে, এত ভদ্র হলে চলেনা কিংবা একটু আধটু মসলা ছাড়া জীবন পানসা। ওকে, আপনার কমপ্লান খাওয়া পোলা বা মাইয়া আপনার অর্ধেক বয়সেই এমনকি আপনার সাথেই এগুলো গল্প শুরু করবে অচীরেই। কারন তাদের স্কুলেও এখন এগুলো ঢুকে পড়েছে।
রেডী থাকুন ভার্চুয়াল ও রিয়েল পারভারসন লাভাররা।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪০

শোভন শামস বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



নিজের ও অন্যদের সময় নষ্ট করতে পছন্দ করেন?

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১০

আহমেদ জী এস বলেছেন: বেচারা ,





পুরুষের যে আটকান্ড রামায়ন লিখলেন তাতে হ্যাডমওয়ালা একমাত্র "রাম" তো দেখি, আমাদের দেশের তাবৎ ঘুষ খাওয়া সচিব আর উপরতলার রাজনীতিবিদরা। এদের পকেটের লোটা-কম্বল দশ সেরী, হ্যাডম ঠিক রেখে ছুকছুক করার বুকের পাঁটাও আছে, এরা সহজেই আমপাবলিককে রক্তচক্ষু দেখানোর হিম্মত রাখেন, পাবলিকের মাথায় কাঠাল ভেঙে খাবার তড়িকাও ভালো জানা আছে!
বাকী আমপুরুষেরা রামায়নকান্ডের "সুগ্রীব"। যাদের সংসারের গন্ধ-মাদন পর্বত ঘাড়ে টানার অভ্যেস আছে। "রাম"দের সামনে ন্যাজ নেড়ে তোষামোদ করে করে লুঙি খুলে ফেলার ইতিহাসও আছে.......... এরা পুরুষ নয়, পুঃলিঙ্গ ধারনকারী প্রানী বিশেষ!:|| B:-)

কঠিন লেখা, রসময়! :P

৪| ২২ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বীর পুরুষের মতো লেখা।

৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো। জানলাম।

৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:০০

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: "পুরুষ" নিয়ে একটা বই বের করে ফেলুন। =p~

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.