নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই লেখাটি আসলে একটি অতি প্রাচীন দেয়াল, হলুদ মলাটের ডায়েরী অথবা ধুলোপড়া খাতার মতো, যেখানে স্মৃতিও জমে, কিছু আক্ষেপও। একই বিষয়বস্তু অথচ ভিন্ন ভিন্ন অবয়বের বিচ্ছিন্ন সব ভাবনাকে জোড়া তালি দিয়ে একত্র করার অভিপ্রায়ে এই লেখা। আবার বলা চলে, যে, না, এই লেখাটা আসলে মনের একটি গোপন ডায়েরি। যেখানে কথাদের জমিয়ে রেখেছিলাম, ভিন্ন ভিন্ন প্রকোষ্ঠে, আবার একটু একটু করে তা হতে চুইয়ে পড়ে প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।
সচেতনভাবে, স্থীরলক্ষ্য লেখার ক্ষমতা থাকে বড় মাপের লেখকদের। আমার মতো এলেবেলের লিখিয়েদের সেই বালাই নেই। আমার ভাবনারা হয় টুকরো টুকরো। সেই বিচ্ছিন্ন ভাবনাগুলোকে জোড়া দিয়ে কিছুতেই এক সুতোয় বাঁধতে পারছিলাম না-সময়, সাহস ও সংকোচের বাস্তবতায়। এবার সেটাই করলাম। লেখাটাকে পূর্ণ রূপ দিলাম। সম্ভবত শুরুর ৬-৭ বছর পরে।
এই বিষয়টি লেখালিখিতে আমার অন্যতম প্রিয় বিষয়। আবার আমার গোপন দুঃখও।
লিখতে বসবার আগে আমি অনেকবার ভেবেছি, এই দিকটা নিয়ে এতটা প্রগলভ হওয়াটা হ্যাংলামো হয়ে যায় কিনা।
প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে এসে এরকম তুচ্ছ একটি জিনিসের জন্য আকুলি বিকুলি প্রকাশ হ্যাংলামোইতো হয়ে যায়, তাইনা?
জীবনের স্বাভাবিক নিয়মে যা একসময় এসেছিল কিংবা এসে যায়, তার জন্য আবার এত সাধনা কেন? কেউ কেউ আবার এর মধ্যে রহস্যের গন্ধও পেয়ে যেতে পারে। কী ব্যাপার? কী ব্যাপার?
না, বিরাট কোনো কিছুর জন্য এতবড় কাব্য ফেঁদে বসিনি। খুব সামান্য, অতি সামান্য একটা বিষয়। কিন্তু এই সামান্য বস্তুটির অস্তিত্ব থাকা এবং না থাকার মধ্যে যোজন যোজন ব্যবধান।
ভাবনার সেই বিষয়টির নাম ’বন্ধুত্ব’।
‘বন্ধু’, হ্যা ‘বন্ধু’- এটা আমার জীবনের এক বিশেষ phenomenon। খেয়াল করলে দেখবেন, আমার এত এত দিস্তা দিস্তা হাবিজাবি লেখার ভিতরে ‘বন্ধু’ কথাটির উচ্চারন অত্যন্ত বিরল।
বন্ধুত্ব নিয়ে আমাদের দু’জনের আছে নিজস্ব দর্শন। নিজস্ব অর্থ। আমি তাই বলি সুহৃদ। এটাই বরং বলতে আরাম-সুহৃদ।
আমাদের ছোটকালে ‘বন্ধু’ জবানটা আমাদের মফস্বলের চ্যাংরাদের ঠোঁটে ঠিক আসত না। তাই আমরা বলতাম, ‘ও হল আমার কেলাশমেট।”
বড় হতে হতে মাথা ছাদ ছুবার পরেও অন্য কারনে ‘বন্ধু’ আর উচ্চারন করার ফুরসত ঘটল না। সহসা উচ্চারন করেছি বলে তাই মনেও পড়ে না।
বহু বহু আগে একবার লিখেছিলাম, “বন্ধু পাতাতে কী লাগে?” অনেকগুলো প্রতিউত্তর জমা পড়েছিল সেই কাঁচা হাতের স্ট্যাটাসে।
বন্ধু পাতাতে যাই লেগে থাকুক না কেন, সেটার যোগান আমাদের জীবনে যৌবনলুপ্ত পদ্মার মতো শুকিয়ে গিয়েছে বহুদিন আগেই। বিধায় বন্ধুতার যোগান বড্ড ক্ষীন।
নিজস্ব তরিকার মতবাদের গোঁড়া বিশ্বাসী হওয়ায় আর আত্মসম্মানবোধ টনটনে হওয়ায়, সমাজেও খুব ব্রাত্য। তার ফলাফল অত্যন্ত উগ্রভাবে দৃশ্যমান হয় আমাদের প্রাত্যহিক প্রকাশে।
এই গল্পে নতুন, পুরোনো, নানা সময়ে, নানা আবহে লেখা নতুন পুরোনো অনেক কাসুন্দীরই স্থান হয়েছে। লেখার স্বরগ্রাম বদলেছে তাই আচানক। লেখার ছন্দ্য না খুঁজে তাই লেখার সুরটা ধরে নিলে পড়তে অসুবিধে হবার কথা নয়।
বলি তবে।
>>>>>>>>>>>>>
এক: স্কুল বন্ধুদের সাথে একটি বিকেল, স্মৃতি রোমন্থন আর, অতঃপর বিস্মৃতির রোদন:
।।--।।
লেখক আনিসুল হক সাহেবের এক বন্ধু একবার গ্রাম হতে শহরে এলেন। একদিন বন্ধুকে প্রস্তাব দিলেন, চলো, আমরা পুরোনো বন্ধুরা মিলে একটা ’লীভ টুগেদার‘ (গেট টুগেদার) আয়োজন করি। সেই লীভ টুগেদার হয়তো কখনো আর নাও হয়ে থাকতে পারে।
তবে, অন্য একটা লীভ টুগেদারের গল্প দিয়ে শুরু করি। আজ হতে বেশ কিছু বছর আগে, এক আটপৌরে সন্ধ্যায় আমাদের শৈশবের মফস্বলের বিখ্যাত (বা অখ্যাত) ’গমমেন্ট স্কুল’ এর (এই নামটাই আমরা বেশী বলতাম) কয়েকটা সাবেক ’বেয়াদব ছেলেপিলে’ (মোক্তার স্যারের প্রিয় গালি) তৎকালীন হবু প্রবাসী বাবুর প্রবাস গমন উপলক্ষ্যে একপেয়ালা চা, সাথে কিঞ্চিৎ মুরগী নামীয় প্রাণীর আত্মত্যাগসুচক মনুষ্য খাদ্য (BBQ) আর অনেকখানি আড্ডার জন্য মিলিত হলাম শহরের এক প্রান্তে। সৌজন্যে বাবু এ্যান্ড কোং। যেহেতু সে বিদেশ যাবে, ভাল মালকড়ি কামাবে, তাই পকেটটা তো তারই কাটবার কথা।
আমরা ৫ জন মানুষ। মুরগীর সৎকার করলাম, কফি খেলাম, দেশের রাজনীতির গুষ্টি উদ্ধার করলাম, ”জীবনে আর কী হবে”-মর্মে হা-পিত্যেস করলাম। ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনলাম। তারপর হাত কচলাকচলি করে (হ্যান্ড শেকের অভদ্র প্রকাশ আর-কি) যার যার বাড়িতে গেলাম। সেই সুখস্বপ্ন নিয়ে রাতেই বসে পড়েছিলাম কী-বোর্ডে। আজকের বিশাল লেখার মুসাবিদা করছি সেটারই সামান্য স্মরন দিয়ে। লিখেছিলাম-
.......আজকে ঠিক গুছিয়ে লিখতে পারছি না। শুধু লেখার তাগিদটা অনুভব করছি বলে লিখছি। সরকারী স্কুলের ’৯৬ ব্যাচের পোলাপানকে নিয়ে একটা ফেসবুক গ্রুপ করা হয়েছিল। সবাইকে connected রাখার জন্য। উল্কার মতো তার উত্থান, ধূমকেতুর মতো পতন। অবশ্য তা হবারই ছিল।
আমরা যেই যুগে কলেজ শেষ করে যার যার মতো উচ্চ-নিম্ন শিক্ষার জন্য ছড়িয়ে পড়ি সেসময় মোবাইলের এমন বন্যা ছিলনা বিধায় সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। যোগাযোগটা কমে গিয়ে সবাই কে কোথায় চলে যায়। অনেক দিন পরে হলেও আবার সেই পুরানো যোগাযোগটা ঝালাই করার চেষ্টা হল।
বাবুর কল্যাণে সেটার একটা রিহার্সাল হয়ে গেল। আমি জানি আপনাদের প্রত্যেকের ঘর-সংসার আছে, আপিস আছে, নিজস্ব নব্য বন্ধু জগত আছে। সমাজ আছে, পাড়ার ছেলে-ছোকরার আবদার আছে।
তবুও একটা সত্যি কথা কি জানেন?
স্কুলের বন্ধুদের মতো বন্ধু হয় না। তাদের মতো আপনাকে জ্বালাতে কেউ পারবে না, আর কারো সাথে আপনার ৬ পাকনার পিকনিকের গল্প শেয়ার করতে পারবেন না; মোক্তার স্যারের হাফ বেতের বাড়ির সুখানুভুতির স্মৃতি রোমন্থন করতে পারবেননা।
নওশের স্যারের দাঁত খোঁচাতে খোঁচাতে পড়ানো, বড় সুবল স্যারের টেনে টেনে সুর করে পড়ানো, সোলায়মান স্যারের বিখ্যাত হাফ পাঞ্জাবীর সৌন্দর্যকে আপনাকে মনে করিয়ে দিয়ে ঠা ঠা করে পাগলের মতো হাসাতে পারবে কে?
টিলো-এক্সপ্রেস খেলার কথাটি কি আপনাদের সন্তানকে গল্প করেছেন নাকি তাদের মতো Tab আর Ipad'র প্রজন্ম’র কাছে বলতে লজ্জা পান?
লজ্জা পাবেন জানি। তাই আমাদের কাছে বলুন, আমরা লজ্জা করব না, দেব না, বরং অনেকদিন পর আরো একবার স্মৃতিকাতর হবার সুযোগ নিন।
কাল বাবু, সুমন-১, সুমন-২, রায়হান যখন কথা বলছিল আমি একটা বিষয় নিয়েই ভাবছিলাম।
কী ভালই না লাগে স্কুলের বন্ধুরা জোট হয়ে আড্ডা দিতে। এই সময়টাকে ধরে রাখা দরকার। খুব কি কঠিন সেটা? আসুন আর একবার আমরা চেষ্টা করি। কর্পোরেট জগৎ, কর্পোরেট বন্ধু, ঢাকার সমাজ, পাড়ার ভাইজানেরা, সোসাইটি, ক্লায়েন্ট, পরিবার, অ-পরিবার সব থাকুক তার নিজের মতো।
শুধু আসুন, এসবের সাথে পুরানো একটা সম্পর্ককে আবার ঝালাই করি। বসি নিয়মিত। দু’চারজন করে হলেও। হয়তো টং দোকানে বসে দু’কাপ চা খাব। জিহবা পোড়ানো সিঙারা। অনেক খুজে কিনে আনব কে-টু সিগ্রেট। সেই দিনগুলাতে আমরা কর্পোরেট কষ্টকে দুরে রাখব, সোসাইটিকে ভুলে যাব, পরিবারের জন্য সুখানুভুতি নিয়ে যাব।
আর আসুন, না হয় পরিবারকে নিয়েই আসুন। সবাই এক এক করে দেশ ছাড়ছে। এমনি করে সবাই আবার দুরে চলে যাব। হয়তো বৃদ্ধ বয়সে আবার সেই পুরানো বন্ধুদের মনে পড়বে।
সেই সময়টা আসার আগেই কিছু করি?...........
------সেদিনের উত্তাল আবেগের রাতের গল্প এখানেই শেষ।
বন্ধুত্বের আবেগ উদ্বায়ী হতেও সময় নেয়নি। উদাত্ত আহবানের পোস্টে দু’চারটা লাইক পড়লেও সাড়া মেলেনি।
সেদিন হতেই এই শাহনামার একেকটা বড়-ছোট অধ্যায়ের শুরু। ভূমিকা শেষে এবার পরের অধ্যায়ে যাই।
>>>>>>>>>>>>
দুই: বন্ধু খুঁজে মরি, যদি মেলে ফ্রি:
।।--।।
এক ব্যক্তি তার স্ত্রী মারা যাবার পর তার ঘরের এক ছেলে সন্তানসহ বিয়ে করলেন এক বিধবা মহিলাকে, যার আবার আগের ঘরের এক ছেলে আছে। নতুন সংসারে তাদের একটা ছেলে হল। তো একদিন ভদ্রলোক অফিস গেছেন। দুপুর বেলা স্ত্রীর জরুরী ফোন-
তুমি এখনই বাসায় আসো দ্রুত। দেরী করবে না।
“কেন কী হয়েছে?” উদ্বিগ্ন স্বামীর প্রশ্ন।
“আরে এসে দেখ লংকা কান্ড হয়ে গেছে। তোমারটা আর আমারটা মিলে আমাদেরটাকে পিটাচ্ছে।”
চলমান লেখার সাথে সংশ্লেষহীন এই গল্পটা আমি বহুদিন আগে আমার বন্ধু বাবুর কাছে শুনেছিলাম। কিন্তু গল্পটি আমি আজ এই ১৫-১৬ বছর পরেও নানা উপলক্ষ্যে বারবার মানুষকে বলি। এই গল্প আমার মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে বাবু।
বাবু আমার বন্ধু আবার জুনিয়র। বন্ধু তো আসলে ফিলোসফিক্যাল ইনফ্লুয়েন্সারও বটে।
ইউনিভার্সিটি পড়ার সময় আমার একরকম অদ্ভুৎ বন্ধু গ্রুপ ছিল যাদের আমার ভাষায় আমি বলতাম জুনিয়র ফ্রেন্ড। (আমার একজন সিনিয়র ফ্রেন্ডও আছেন, যার বয়স ৭৫।) বাবু সেরকম একজন। অদ্ভুৎ ব্যাপার হল বাবুর সাথে আমার দেখা হয় না সে অন্তত ১০ বছর হবে। মজার বিষয় হল, আমরা এক শহরে থাকলেও কেউ কখনো অনুভব করিনি, যে, ’কতদিন দেখা হয়নি’। সেই সাথে ফিকে হয়ে গেছে সে সহ আমাদের বিষম বয়সী ত্রয়ীর একসময়কার ভ্রাতৃত্বের গভীরতা। তিনজনে কথা হয় না, দেখা তো না-ই। সে হোক। মায়ের পেটের ভাই-বোনই আজকাল খবর রাখে না।
আমি খুব ভাগ্যবান কিছু মানুষকে দেখেছি, যারা তাদের শৈশবের ল্যাংটোকালের বন্ধুদের সাথে এখনো Connected আছেন। কিন্তু ওই সময়টা আমার গেছে নিদারুনভাবে।
আমার লাইফে সবকিছুতেই যেন দেরী ব্যাপারটা ওৎপ্রোতভাবে জড়িত।
সব বাচ্চারা স্কুলে যায় ৪/৫ বছর বয়সে, আমি শুরু করেছি ৭ বছরে। সব ব্যাচমেটরা সেকেন্ড ইয়ারেই বিসিএস্’র প্রস্তুতিতে বিসমিল্লা করে, আমি ফোর্থ ইয়ার শেষ করেও দেখি পৃথিবীর উচ্চতম খাচ্চর (স্যরি, পর্বত), নিম্নতম চরিত্র (ভৌগলিক স্থান)
-এসব কিছুই জানি না।
”পদ্মাবতী কোন কাব্যের অংশ” জিজ্ঞেস করলে মিনমিন করে বলি “আচ্ছা, পদ্মা নদীর উৎপত্তি নিয়ে একটা কী যেন বিতর্ক আছে না?”
এসএসসি’র টেষ্ট পরীক্ষা শেষ, রেজাল্টের অপেক্ষায় সবাই। বন্ধুরা সব সাজেশন, মডেল টেস্টে ব্যস্ত।
সবাই একদিন দলবেঁধে আমার বাসায় হাজির। উদ্দেশ্য সবাই মিলে একটি ভাল সাজেশন পেপার বানাবে।
ওমা! ওরা এসে দেখে আমি কলোনীর (আমার শৈশব, কৈশোর কেটেছে বাসাবাটি’র পিডিবি কলোনীতে) পিচ্চিদের নিয়ে সামারের দুপুরে ক্রিকেটের পিচ বানাচ্ছি।বোঝো ঠেলা। সহপাঠীত্ব কেন্দ্রীক বন্ধুত্বের ওখানেই শেষ।
এতগুলো কথা এজন্য বললাম, আজ অনেকদিন পরে নিয়মিত জীবনের ফাঁকে একদিন হঠাৎ মনে হল জীবনে বন্ধু বানাতেও দেরী করেছি। হয়তো ভুলও। এক সময়ে যা পায়ে হেঁটে এসেছে, তাকে উপেক্ষা করে হয়তো জীবনভর একটি চোরা আক্ষেপকে সঙ্গী করে নেয়া হয়েছে। চেতনে, অবচেতনে বা অতিচেতনে।
স্কুলের ফ্রেন্ড হয় গলাগলি সম্পর্কের। তাদের কোথায় হারিয়ে ফেলেছি। কলেজের ফ্রেন্ডদের খোঁজ জানি না। বিশ্ববিদ্যালয়তো আরো খারাপ অবস্থা।
আসলে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে যেসব মওকায়, সেই প্লাটফরমগুলোতে, মানে, স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে তো আমার কাজ ছিল হেঁটে হেঁটে হিমু হওয়া। বিদ্যালয়ের চৌকাঠ মাড়ালে তবে না বন্ধু।
আজ এই অবেলায় তাদের আবার খুঁজছি।
আমি আমার অন্তত ৫০জন বিভিন্ন স্টেজের সাবেক বন্ধুদের খুঁজে বের করেছি ফেসবুকের কল্যানে। গলাগলি (একসময়কার) বন্ধু জিয়াদের সাথে এক ঈদে দেখা হল প্রায় ১৬ বছর পর। ব্যাপক স্মৃতিকাতরতার অভিনয় হল। তার পরে আবার ৫ বছর গেছে। ধোঁয়াশা।
অবশ্য ফেসবুকে ‘তথাকথিত’ বন্ধু বানিয়েছি বেশুমার। অনেকে আবার নক করে বলেন, “ওই মিয়া, এত ভাব ক্যান, ফেসবুকে রিকু দিছি, একসেপট করেন না ক্যান?” হাজার হোক, বন্ধুত্বের দাবী।
একবার ঈদে বাড়িতে গিয়ে আমার প্রিয় শহরে একটা চক্কর দিলাম। একটা অদ্ভুত ব্যপার খেয়াল করলাম। আমাদের সেই মানুষ গিজগিজ করা শহরটা এমনকি ঈদের দিনেও শুনশান নিরব। এত এত মানুষ সব কোথায় গেল? কিছু পুরোনো দিনের বন্ধুদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করলাম। কেউ মিলল, বেশিরভাগই হারিয়ে গেছে।
আজও আমি শহরে গেলে একা একা শহরটাতে হাঁটি। শহরের অতীতের সাথে বর্তমানের হাহাকারকে একাকার করি। অতীতের স্মৃতি খুঁজি। যাহোক, দেখা হল একজনের সাথে। পান-সুপারি বিক্রেতা।
আমাকে পেয়ে তার খুশি কে দেখে। আরেকজনকে পেলাম। সে রীতিমতো গিন্নীবান্নি হয়ে একাকার। আরেকজনকে পেলাম। বেচারা আমাকে ঝেড়ে ফেলতে খুব অদ্ভুৎ রকমের বোকামো করল কতকটা।
স্কুল ভিত্তিক সাবেক দোস্তদের একটা চা-ড্ডা হল একবার। চায়ের লিকারের মতো সম্পর্ক’র গাঢ়ত্ব যে বহু আগেই পানসে হয়ে গেছে-চায়ের চুমুকে চুমুকে আমরা সেটা খুব প্রকটভাবে টের পেলাম। ওই নাটকের সেখানেই সমাপ্তি।
এতসবের পরে তাই অবস্থার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। সবাই সবার স্থানেই আমরা আছি। প্রাপ্ত বয়সে এসে জীবনের নানা নতুন বাস্তবতা মাথাচাড়া দেয়। শৈশবের আবেগমথিত সম্পর্ক যৌবনের শহুরে বাস্তবতার মুখে দাড়িয়ে ফিকে হয়ে যেতে বাধ্য হয়।
নতুন নতুন বন্ধু, বাস্তবতা, জীবনের দৌড়, পরিবারের ছায়া-একসময়ের বন্ধুত্বের আবেগের সুকঠিন গাঢ়ত্বকে যদি ঢেকে দেয়-তাকে দোষ দেয়া যায় না।
তবু তার জন্য আক্ষেপের ক্ষীণ একটি সুর বাজে মনের মাঝে কোথাও। সময়ে, অসময়ে-
"তোমাদের মাঝে কি কেউ আছে, বন্ধু আমার?"
>>>>>>>>>>>>>>
তিন: বন্ধু আসলে কী কাজে আসে?
।।--।।
আমি বলব, বন্ধুত্ব কি আসলেই কাজে আসে?
শুধু হঠাৎ হঠাৎ হাই! কি খবর! ভাল তো! কেমন! হ্যলো! মিস ইউ! আধামরা জানলেও প্রে ফর ইউ-বলে দেয়া.....এইসব সুপার মডার্ন চোস্ত কিন্তু সুিবধাজনক সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্যই কি বন্ধুত্ব?
নাকি মাঝে মধ্যে জ্বালানো, এক কাপ চা, অগ্যস্ত হাঁটা, বসে দু দন্ড রাজা উজির মারা, ইতরামি বজ্জাতি শেয়ার করা, হাসি কান্নায় এক হওয়া, অসুখে পাশে বসা, রাত জাগা, সুখে সুখি, দুখে দুখি, মরলে খাটিয়া ধরা এসবের জন্যও?
কারো কারো সেই বিরল ভাগ্য হয়। আমাকে ইর্ষায় পোড়ান এমন কিছু মানুষ, যাদের অমন বন্ধুর সংখ্যা অনেক। অবশ্য, সেটা তারা Deserveও করেন।
মাঝে মাঝে অনুভব করি, অন্তত ছুটির দিনে, দুপুর তিনটেতে, কম্বলের নিচে ওমে শুয়ে টিভি দেখার ওয়াক্তে দরোজায় ঠক ঠক করে, আরাম হারাম করে দিয়ে বলবে-চল, তো, চন্দ্রিমায় কয়টা কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে, সেটা গুনে আসি"-এমন হারামিপনার জন্য হলেও একজন বন্ধু থাকা দরকার।
"অথচ আমার একজন বন্ধু নেই।
এই আঠেরো কোটির ভীড়ে,
এই অগুনতি মানুষের কোলাহলে,
আমার কোনো বন্ধন নেই।"
আপনার কতজন বন্ধু থাকবে, সেটা অনেকটা নির্ভর করে, আপনি কতটা নিজের সাথে কমপ্রোমাইজ করতে রাজি আছেন, তার ওপর।
সবচেয়ে বেশি বন্ধুভাগ্য পেতে হলে - নিজের করাতে নিজেকে দু'খানা করে দেখাতে পারতে হবে, অথবা, বাঁদর নাচ নাচতে রাজি থাকতে হবে। অমোঘ ব্যক্তিত্বের অধিকারী যদি হতে চান, তাহলে আপনাকে নির্বান্ধব, বিশুষ্ক জীবন কাটাতে হবে।
নিজের সত্যিকারের বন্ধু কে, সেটা চিনতে চান? সিরিয়াসলি?
ফেসবুকে একটা পোস্ট দিন, "বন্ধুরা আজ হতে জবলেস।" পরবর্তি ঘটনাপ্রবাহ দেখুন। আর বন্ধু চিনে নিন।
মানুষের ভিন্ন ভিন্ন দরকারে ভিন্ন ভিন্ন পদের বন্ধু থাকে।
যেমন: -বিপদে টাকা ধার নেবার জন্য বন্ধু। এদেরকে অন্য কোনো কাজে লাগে না। অন্য কোনো সময় এদের বন্ধুত্বও কবুল করবে না। আবার, গাঁজা খাবার জন্য এক রকম বন্ধু থাকে। তাদের সাথে অন্য কোনো কাজ নেই। শুধু গাঁজা খাবার দরকার পড়লে তাদের কাছে যাবে। বাকি সময় ফক্কা।
কিছু বন্ধু ধরে রাখা হয় পরীক্ষার সময় নোটস নিতে। পরীক্ষা শেষ। বন্ধুত্বও শেষ। এদের সাথে আবার গাঁজা খাওয়া বা বিপদে টাকা ধার নেবার যোগ নেই।
কিছু বন্ধুত্ব সৃষ্টি করা হয় মনের সুখ মিটিয়ে গালিগালাজ করে মনের ক্ষেদ মেটানোর জন্য। এদের সাথে শুধু এই কাজই চলে। এরা আবার গাঁজার সঙ্গী হয় না। করাও হয় না।
কিছু বন্ধু মেইনটেইন করা হয় প্রক্সি দেবার জন্য। সারাবছর এদের খোঁজ রাখবে না। এদের সাথে নেবে না। শুধু প্রক্সি দিতে হলে ডাক পড়ে।
আরেক রকম বন্ধু থাকে। যাদের কদর শুধু রোগী, হাসপাতাল, রক্তদানের দরকারে। দরকার শেষ। বন্ধুত্ব আবার ড্রয়ারে। এই বন্ধুদের গাঁজা খেতে ডাকবে না, টাকা ধার করতে পারে, তবে বোনের বিয়েতে এদের ডাকবে না।
সোশ্যাল স্টাটাস ও ফেসবুক স্টাটাসের জন্য রেডি স্টক বন্ধুর তালিকা আবার ভিন্ন। এদের সাথে ফেসবুকে রাজা উজির মারবে। কিন্তু, এদের কখনো কোনো উপকার করবে না। এদের কাছ হতে মাঝেসাঝে উপকার নেবে, তবে কখনো নিজ চৌহদ্দীতে নেবে না।
কিছু বন্ধু থাকে, বা রাখে, যাদের শুধু মন খারাপ হলে মনের ব্যথা শেয়ার করবে, চোখের জল ফেলবে। কিন্তু, বান্ধবী আবার ঘরে নিলে তাকে ভুলে যাবে।
কিছু বনধু আবার থাকে আর কোথাও যখন কিছু নেই, তখন সময় কাটাবার ও চা-ড্ডা করার সঙ্গ পেতে। তাদের আবার ঈদে বাসায় যাকা যাবে না। গাঁজাও খেতে ডাকবে না।
কিছু বন্ধু হবে লিটনের ফ্ল্যাট জোগান দিতে। এরা টাকা ধার বা প্রক্সির জন্য ডাক পাবে, এক সাথে বিড়ি খাবে, তবে এই বন্ধুদের কখনো বাসায় ডাক পড়বে না। যত রাজা উজির মারা সব বাইরে।
কিছু বন্ধু রাখা হয় স্টক লট। সেলফী, দলফী, বুটক্যাম্প, কক্সবাজার, সমিতি, জয়েন্ট প্লট কেনা একদলের সাথে। কিন্তু ওই যে স্টক লট, তাদেরকে ওই দলে নেবে না। খবরও দেবে না।
ওদেরকে কেবল “ভাইয়া”, মেনটর, বড় ভাই, মুরব্বী, দোস্ত, প্রিয় ভাই, শ্রদ্ধেয় আসন নামের ফক্কা দেবার জন্য।
আহা বন্ধু। উহু বন্ধু।
কিছু কিছু 'মানুষ' থাকে,কিছু কিছু 'বন্ধু' থাকে,কিছু কিছু 'ভাইয়া' থাকে, কিছু কিছু 'বস' থাকে,যে বা যারা, আপনাকে প্রকাশ্যে ভাইয়া, বস, গুরু, ভাই, সহমত, পাশে আছি, উম্মা উম্মা করে ভিজিয়ে রাখবে। কিন্তু, ক্রীকেট ম্যাচের ফ্রি টিকেট পেলে সেটা আপনাকে তো দেবার কথাই নেই।
অফিসে বদনা সরবরাহের ডিলটাও দেবে নিজের কোরামের কাউকে। বড় চেয়ার খালি হলে দেবে আরো কোনো বড় 'ভাইয়া'কে।
এই 'ভাইয়া'রা এমনকি নিজ এলাকায় পটলের দর পানির দামে নামার সুখবরটাও আপনাকে না দিয়ে 'এ্যালাকার বড়ভাই'কে দেবে।
এরা হল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেটোনিক লাভার ভাইয়ার সেই প্রেমিকার মতো, যে নোটস, ফুচকা, টিকিট, শপিং, রিক্সাভাড়া, লাইব্রেরি, টাকা জমা, ফ্লেক্সি মায় সকালের নাস্তা নিত ওই প্লেটোর কাছ থেকে, কিন্তু এফেয়ার করত জৈনক 'আকাশ' ওরফে আক্কাচের সাথে।কোরাম ও ফোরাম এখানে বিগ ফ্যাক্টর।
জীবনের একটা অবেলায় এসে তাই উপলব্ধি জাগে-
-কিছু কিছু ‘মানুষ’ আসলে মানুষ না। ওঁরা স্রেফ দো-পেয়ে।
-কিছু কিছু ’বন্ধু’ আসলে বন্ধু না। ওঁরা স্রেফ বন্ধুত্বের ভেকধারী।
-কিছু কিছু ’ভক্ত’ আসলে ভক্ত না। ওঁরা ক্ষণিকের মুগ্ধ।
-কিছু কিছু ‘ভাইয়া’ আসলে ভাই না। ওঁরা সুবিধাসন্ধানী।
-কিছু কিছু ‘সেইরাম’ আসলে সেইরাম না। ওঁগুলো স্রেফ ‘গ্রিজীং’।
-কিছু কিছু ’সুহৃদ’ আসলে সুহৃদ না। ওঁরা নেহাতই দুধের মাছি।
আজকাল বন্ধু হতেও যোগ্যতা লাগে, কোটা লাগে, কোরাম লাগে, হ্যাডম লাগে-পকেটের, সকেটের। তা না হলে কেউই পুঁছবে না। তেলাপোকা আর ডাউনোসরের বন্ধুত্ব বাবা আদমের যুগে হলেও এই জুকারবার্গ যুগে সেটা হবার নয়।
যদি পারতাম, আমিও একটা আন্দোলন শুরু করতাম। ’কোরামমুক্ত’ বা ‘ব্লকমুক্ত’ বন্ধুত্ব আন্দোলন।
এটা এমন একটি স্বপ্ন যেখানে বন্ধুত্বে থাকবে না, কোরাম, ব্লক, কমিউনিটি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ’এ্যালাকা’, ‘অমুক প্রজন্ম’, ‘তমুক ব্যাচ’, ”ওই বিশ্বাসের’, নির্দিষ্ট বলয়ের, সীমিত ঘরানার, ”নিজের কোলের”, “আমাদের মতো আমরা”-টাইপের কোনো সীমানা বা গন্ডি।
বন্ধুত্ব হবে ওপেন, সবার সাথে সবার। কোনো ফিল্টারিং থাকবে না।
নিজেদের ঘরের ছিটকীনি দিয়ে নিজেরা বন্ধু থাকব, বাকিদের সাথে বন্ধু বন্ধু কুতকুত খেলব-দারুন তামাশা।
খুব কি অসম্ভব সেটা?
>>>>>>>>>>>>>>>
চার: মেয়াদত্তীর্ণ কর্পোরেট বন্ধুত্ব
।।--।।
আমার পরিচীত একজন সাবেক কর্পোরেট বন্ধু। চাকুরীচ্যুত হয়ে ছাড়াছাড়ি হয়েছে প্রায় অর্ধবছর। বেঁচে থাকাকালীন অর্থাৎ চাকরী করাকালীন বহু কর্পোরেট বন্ধু ছিল তার। কত আনন্দ, হাসি, ঠাট্টা, একসাথে চটপটি খাওয়া, কাঁশবনে চা উপভোগ, সেলফী, আদর, আবদার, মান, অভিমান-যেন কতদিনের ইয়ার দোস্ত।
চাকরী যাবার পর বিগত অর্ধবছরে সেই সাবেক কর্পোরেট বন্ধুকে একটি ফোন দিয়ে খোঁজ নিয়েছেন কতজন?-জিজ্ঞেস করেছিলাম সাবেককে।
সংখ্যাটা ১ বা ২, তাও পরিমাণে এক বা দুইবার। পতিত কর্পোরেট বন্ধুকে কে মনে রাখে? যতদিন সাথে আছে সব আছে। উইকেট পড়লে বা কর্পোরেট ছাড়লেই বাই বাই। সময় কই?
কর্পোরেট বন্ধুত্ব হল সবচেয়ে বড় ফক্কা, কমপ্লিটলি ফান। জীবনের প্রথম আনুষ্ঠানিক ও প্রথাগত চাকরি যখন শুরু করি তখন নেহাতই অর্বাচীন। নওল কিশোর না হলেও নওল যুবক। রক্তে আবেগের গরম।
হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা উদ্যম। ব্যাপক কর্পোরেট বন্ধুত্ব। যেদিন সেই চাকরি ছেড়ে নতুন নৌকায় পাল তুলি, সবাই সবাইকে বুঝিয়েছিলাম, এই বিচ্ছেদ কেবলই দৃষ্টির। মনের নয়।
আজকে ১৪ বছর পরে বুঝি, চোখের আড়াল, মনের আড়াল।
মজার বিষয় হল, ১৪ বছরে ১টি সিঙ্গেল ফোন কল আসেনি-কেমন আছেন জানতে চেয়ে। [ এমনই সুকীর্তি আমার!]
বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুবাদে অন্য কর্পোরেটের বন্ধুত্বও পেয়েছি আকছার।
হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্রের মতো তার আগমন। আমাকে দিয়ে স্বার্থ উদ্ধার হবে না-বোঝা মাত্রই নিস্ক্রান্ত।
কিছু যে কেউ বোঝে না - তা নয়। ওই পক্ষেও বোঝে, আমিও বুঝি। তবে কেউ কাউকে বোঝাতে যাই না।
শুধু অভিনয় করি।
বেশী গভীরে গেলে বরং লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি।
>>>>>>>>>>>>>>
পাঁচ: বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও
।।--।।
”আমি ক্ষুদ্রের দেবতা,
আমি শূদ্রের পরমেশ্বর।
আমি ক্ষুধিতের ত্রাতা,
আমি দলিতের ভ্রাতা,
আমি পাপে জর্জর,
আমি তুচ্ছতার সর্বেশ্বর।”
--কয়েক দিন আগে। এক অনুজ সহকর্মীকে বলছিলাম,
”ভাই, মানুষকে, বিশেষত আপনার কাছের মানুষদের পরীক্ষা নিতে যাবেন না। তাতে নিজেই ঠকবেন। নিজে আরও হতাশ হবেন। আরও কুঞ্চিত হবেন।
সত্য জানতে চেয়ে, সত্যি সত্যিটা বা অন্তরের ভেতরেরটা জানতে চেয়ে আপনজন, বান্ধব ও বন্ধুদের পরীক্ষা নিতে গেলে আরও খারাপ করবেন।”
কেন বললাম?
খুব জোর সম্ভাবনা আছে, আপনার বিশ্বাস আরও ভাঙবে।
আপনার চেনা জগতটা আরও কলুষিত হিসেবে প্রমানিত হবে। আপনার কাছের মানুষেল প্রকৃত সংখ্যা আরও কমবে। আপনার এতদিনে চেনা আয়নাটা আরও খানখান হয়ে যাবে।
কে সত্যিই আপন, কে মিথ্যেই আপন, কে সত্যি কাছের, কে মিথ্যে মিথ্যি আপনার প্রাণের, যাচাই করতে গেলে, পরীক্ষা নিতে গেলে ফলাফল আরও মারাত্মক হবার সমূহ সম্ভাবনা।
আপনার আরও নির্বান্ধব হবার সমূহ সম্ভাবনা। তাই, এই বয়সে আর বৃথা পরীক্ষা নেবেন না।
মানুষকে, সম্পর্ককে, চেনা জীবন, জগত ও চারপাশকে পরীক্ষা নিতে গিয়ে দুঃখ আর বাড়াবেন না।
বরং, এই ভাল। সত্যি ও অভিনয় মিলিয়ে যেই ধোঁয়াশার মাঝখানে আপনি আছেন, সেটাকে আকড়ে ধরুন।
মিথ্যে হলেও সে অন্তত একটা প্রবোধ তো দেয়। পরীক্ষিত সত্যিটা হতে পারে আরও হৃদয়বিদারক। প্রমানিত।
>>>>>>>>>>>>>>>
ছয়: ফেসবুক ফ্রেন্ড: আছে ফল গাছে নাই, খাই ফল দ্যাশে নাই
।।--।।
সম্ভবত আল্লামা রুমি বলেছিলেন, “বন্ধুদের কাছে রাখো। শত্রুদের আরো কাছে রাখো।’ আর আমি বলি, শত্রুদের থেকে সতর্ক থাকুন। বন্ধুদের থেকে আরও বেশি সতর্ক থাকুন। ফেসবুক বন্ধুদের থেকে তার চেয়েও বেশি সতর্ক থাকুন।
মনের মতো বন্ধু তো সবাই চায়। বন্ধু বাঁছাইয়ের এই ধারা ফেসবুকেও চলে।
ফেসবুকে কাউকে নেটওয়ার্কে যোগ করার ক্ষেত্রে আমি কিছু ট্রেন্ড মেনে চলি। বুদ্ধিমান যেকেউ আমার ফ্রেন্ডলিস্ট দেখলেই সেই ট্রেন্ডটা খুব সহজেই ধরে ফেলতে পারবেন।
যাহোক, প্রায়ই ফ্রেন্ডলিস্টে চিরুনী চালানোর কথা শুনি। সময়, পরিস্থিতি, ঘটনাক্রমে ফেসবুক বন্ধুদের স্বরুপ চেনা যায়। আমারও চেনা হয়েছে।
আমি যদিও ’ফেসবুক ফ্রেন্ড’ নামক অদ্ভূৎ তত্ত্বে বিশ্বাস করি না, তবুও ফেসবুকে বেশ কিছু মানুষের সাথে আমি সংযুক্ত আছি। জাতীয় ও ব্যক্তিগত ঘটনাক্রমে, চলার পথে, আলাপের ছলে, ওনাদের ভার্চুয়াল উপস্থিতির বিচারে বেশ কিছু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী, জীবনবোধ, এপ্রোচ, মীথ, ধান্ধা, পছন্দ বুঝে ফেলা যায়।
আমিও বুঝি। তবে বুঝে চুপ থাকি। নড়িচড়ি না। ছাঁটাই তো না ই। বরং চুপেচাপে দেখে যেতে ভালই লাগে।
মক্কা শরীফে হাজি সাহেবের স্বপ্নে দেখার মেসেজ পাঠানো হতে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিরূপ ধারনা পোষণকারী-সবাইকেই দেখি। দেখি আর হাসি। থাকুন আপনারা। বন্ধু না হোন, ফেসবুক বিনোদন ও ফেস ডিটেকশনে আপনারা আমার সহায়ক।
ফেসবুক ফ্রেন্ড এবং সত্যিকারের বন্ধু’র মধ্যে পার্থক্য আছে কি?
হ্যা, পার্থক্য আছে-এমনটা আমি বিশ্বাস করি। আপনি করেন?
আপনি নিশ্চই মানবেন স্কুল, কলেজ বা নিদেন পক্ষে ইউনিভার্সিটিতে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব আর ফেসবুকে “ফেসবুক ফ্রেন্ড” নামক বন্ধুত্বের দাবী ও অধিকারের মাত্রা এক নয়?
বন্ধুত্বের বায়োলজি পড়াতে আসিনি। শুধু একটা নিজস্ব বিশ্বাস বলতে বসেছি।
আমরা মানি বা না মানি, স্কুল কলেজের জিগড়ি দোস্ত আর ভার্চুয়াল জগতের পরিচীত হওয়া ফ্রেন্ড-দু’য়ের মধ্যে সম্পর্কটাতে কিছুটা ব্যবধান আছে।
জিগড়ি দোস্ত’র সাথে যেভাবে বিহ্যাভ, রিএ্যাক্ট করা যায়, আমার মনে হয় না ভার্চুয়াল জগতের “ফ্রেন্ড”দের সাথে সেটা হুবহু একই রকম করা যায়।
মাঝেসাঝেই অনেককে দেখতে পাই, ফ্রেন্ডলিস্ট ছাঁটাই করেন।
অনেকে ঘোষনা দিয়ে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনায় নামেন। যদিও, ’ফেসবুক ফেরেন্ড’ দিয়ে ঝাড় বানানোর সময়ে কাউকে বিজ্ঞাপন দিতে দেখা যায় না, কিন্তু ওই ঝাড় নানা কারনে ছাঁটাই করার সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিজ্ঞাপন কেন দিতে হয় তা জানি না।
যাহোক, নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে। তো, এই ছাঁটাই ক্রিয়ার একটা বড় অংশ ঘটার কালে ঘটনকারী ব্যক্তি অভিযোগ করেন,
“এমন বন্ধু ফেসবুক তালিকায় রেখে কী লাভ, যে কখনো একটা লাইক, কমেন্ট দেয় না।”
যদিও, আমার খুব ইচ্ছে করে, ওনাকেও জিজ্ঞেস করি,
“তা, আপনি আপনার হাজার পাঁচেক ফেসবুক ফ্রেন্ডের কতজনের পোস্টে লাইক কমেন্ট করেন? আপনি নিজে কি পারেন ৫ হাজার ফ্রেন্ডকে নিয়মিত রেসপন্ড করতে?”
সাধু সাধু। নিশ্চয়ই পারে।
আমিও ফাঁসবই, মানে ফ্যাচবুক ফেরেন্ড ছাঁটাই করি। মানুষ ফেরেনড বাড়ায়, আর আমি কমাই।
সেই কমানোর জন্য আমার কিছু ঘ্যাঁচাং ফুঁ নিজস্ব তরিকা ও থিওরী আছে। সেই তরিকা ও থিওরীতে ফিল্টার করে ঘ্যাঁচাং করি। রোজই কিছু কিছু করি। গোপন সেই ফিল্টারে কারা ঘ্যাচাং হয়, সেটা বলে দিলে পাবলিক আমাকেই ঘ্যাঁচাং করে দেবে।
তাই মুখে কুলুপ আটলুম।
>>>>>>>>>>>>>>>>
সাত: বন্ধুত্ব বাড়াবার ব্যকরন
।।--।।
বন্ধুত্ব, হোক সেটি বাস্তবের মাটির ধরণীতে, হোক ফেসবুকের ভার্চুয়ালে,
তাকে পেতে, বাড়াতে ও ধরে রাখতে আপনাকে বাঁদর নাচ জানতে হবে। প্রত্যেককে তার পছন্দ ও ফরমায়েশ মতো বাঁদর নাচ দেখাতে পারলে তবেই টিকবে এমন বন্ধুত্ব।
আপনি যতই গায়ে, পায়ে, সময়ে, অবয়বে বড় হবেন, ঋদ্ধ হবেন, ততই আপনার বন্ধু সংখ্যা কমবে, বান্ধব হ্রাস পাবে, একাকিত্ব বাড়বে। বন্ধুত্বের, সম্পর্কের ক্ষেত্রে ডেলিকেসী বা সূক্ষ্ণতা একটি বড় শত্রু।
আপনার ভেতরে সূক্ষ্ণতা যত বেশি হবে, যত বেশি আপনি ভাবুক হবেন, চিন্তাশীল হবেন, আপনার বন্ধুর সংখ্যা, সুহৃদের সংখ্যা ততই কম থাকবে। তবে বিনিময়ে সেই একা জীবনে পাবেন একান্ত নিজের কিছু সময়।
নিজেকে দেখার, জানার, নিজেকে নিয়ে ভাববার মতো কিছুটা দামী সময়।
আপনার অবশ্য এক্ষেত্রে কোনো choice নেই। মোহ কেটে গেলে সব হয় অচেনা। চেনা মানুষ, চেনা সময় বদলে যায়। চেনা মানুষকে চিনতে কষ্ট হয়।
আমাকে আমার পার্টনার (স্ত্রী) নিটোল মাঝে মাঝে আগে জিজ্ঞেস করতেন,
“তোমার তেমন বন্ধুবান্ধব দেখতে পাই না।”
অবশ্য তেনারও যে উপচে পড়ছে-তা-ও নয়। বস্তুত আমরা দু’জন খুব ভাল বন্ধু হয়ে পড়েছি সেই পাকেচক্রে।
যাহোক, আমি তাকে বলতাম,
“দেখো, বন্ধুত্বের জন্য দাম চুকাতে হয়। যে যতটা চুকাতে রাজি, সে তত বন্ধুভাগ্যে ভাগ্যবান। যার যত কম, সে তত ভ্যাগাবন্ড। সূক্ষতাপন্থী (অতি খুঁতখুঁতে নয়, সূক্ষ্ণতা) মানুষের বন্ধু এমনিতেও কম হবে-সেটাই স্বাভাবিক।”
আপনাকে মেনে নিতে হবে, যে, জগতের সকল ভাল আপনার জন্য নয়। জগতের সকলে আপনার স্বজন, সৃহুদ ও বন্ধু হবার নয়।
আপনি যতই চেষ্টা করুন, যত ত্যাগ স্বীকারই করুন, সবার সাথে আপনার বন্ধুত্ব হবে না।
সবাই আপনাকে বন্ধুত্ব দেবে না। কোরামে নেবে না। তাই, বন্ধুত্ব’র জন্য হাত বাড়াবার আগেই দেখে নিন, আপনি আপনার ছোট্ট তরীর রশি টাইটানিকের রেলিঙে বাঁধবার চেষ্টা করছেন কিনা। করলে ক্ষ্যামা দিন।
স্বার্থের গোলাম এই পৃথিবীতে নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব আর নিষ্কাম প্রেম যেন সমার্থক। একবার একটা প্রশ্ন করেছিলাম ফেসবুকে।
”কোনো রকম কাজ বা স্বার্থ ছাড়া শেষ ফোনকলটি কবে রিসিভ করেছেন?”
পজিটিভ রেসপন্স অতি সামান্যই ছিল। যুগ পাল্টেছে। বন্ধুর জন্য একটা সময়ে মানুষ জীবন দিত। এখন মানুষ তার সামান্য মতামতকে কমপ্রোমাইজ করতেই রাজি হয় না।
>>>>>>>>>>>
আট: ”তোমাদের মাঝে কি কেউ আছে বন্ধু আমার?”
আমার মনে আছে, একবার মজা করে "কিছু বন্ধু নিয়োগ হবে।" বিজ্ঞাপন মার্কা পোস্ট দিয়েছিলাম।
বন্ধুত্ব আসলে করা যায় না, হয়ে যায়। সেখানে বয়স, শ্রেনী কোনো ইস্যু না। ইস্যু হল মানসিকতা।
আমি একটা শব্দ ব্যবহার করি-সুহৃদ। সু হৃদয় যার, তাদের মাঝেই হয় বন্ধুতা। সুহৃদ অভি’র একটি পোস্ট হতে একবার একটা দারুন ফোকাস সামনে এল, যা হল, প্রাপ্তবয়স্ক বনাম প্রাপ্তমনস্ক এবং সমবয়সী বনাম সমমনা।
মাইন্ডেসেট, মেন্টালিটি, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং সাইকোলজিক্যাল স্ট্যাডিতে এই শেষ দুটি প্রপঞ্চ যথেষ্ট গুরুত্বের দাবীদার বলে আমার বিশ্বাস।
সত্যিই তো, প্রাপ্তবয়স্ক বা অপ্রাপ্তবয়স্ক তো কোনো বড় বিষয় না। বিষয়টা তো হল প্রাপ্ত বা পরিপক্ক মানসিকতার।
বয়স যাই হোক, মানসিক পরিপক্কতা না থাকলে সেই বয়স ও অভিজ্ঞতা দিয়ে হবে টা কী? মূল্যই বা কী?
একই কথা প্রযোজ্য সম্পর্কের বেলায়। সমান মন ও মানসিকতাই যদি না থাকে, তাহলে বয়সের মিল দিয়ে কী হবে?
লেখার মধ্যেখানে ফেসবুক টাইমলাইনে একটি ’বন্ধুতা অনুরোধ জানানি’ (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট নোটিফিকেশন) এলো।
কোনো এক অচেনা মানব আমার মুখবই বন্ধু হতে চেয়েছেন। টাইমলাইনে ঢুকে দেখি, আরো ৯৭৮ টি এমন অনুরোধ আটকা পড়ে আছে। যাদের কাউকেই চিনি না। আবার চিনিও।
আহ, নতুন ধরনের বন্ধুতা-ফেসবুক বন্ধুতা। বন্ধুহীন জীবনে এই বা কম কীসে?
কৈশোরে, যৌবনে, পূর্ন বয়সে বন্ধু বানাইনি, বাড়াইনি। আস্তে আস্তে বোহিমিয়ান আর একাকী জগতের বাসিন্দা হয়ে পড়েছি। ’বন্ধু’ খুঁজতে আতশ কাঁচ লাগে এখন।
কখনো কারো সাথে বন্ধুত্ব বিষয়টি ঠিক হয়ে ওঠেনি। হয়তো পড়তায় পড়ে না, অথবা মানুষটাই আমি চাঁছাছোলা।
আমি তাই দুটো শব্দ ব্যবহার করি, ‘সুহৃদ’ ও ‘ফেসবুক কানেকশন’।
একবার একজন অমন সুহৃদ ‘ধন্যবাদ বন্ধু’ জানিয়ে একটা বার্তা দিয়েছেন। আমি তাকে বললাম, ভাই, আমি তো বন্ধু না। স্রেফ শুভাকাঙ্খী। বেচারা রেগে গেল। কিংবা অভিমান করল। হয়তো সেই অভিমান আজও ভাঙেনি।
না ভাঙুক।
কিছু অভিমান জমে থাক চোখের কোণে,
অভিমান জমুক রক্তাক্ত হৃদয়ে। আনমনে।
আবদ্ধ ঘরের সিলিঙে থেমে যাক কিছু জমানো কষ্ট,
অথবা জানালার কাঁচে বিন্দু বিন্দু জমা বাস্প।
সুহৃদ মিঠুলকে নিয়ে একবার একটি পোস্ট দেবার পরে ঘটনাপ্রবাহে, মিঠুলকে অনেকগুলো মানুষ বন্ধুতা অনুরোধ পাঠালো।
মিঠুল পরের দিন দুঃখ প্রকাশ করে জানালো,
”ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট চেক করে দেখি, ওয়ালিদের আর আমার সবগুলা মিউচুয়াল ফ্রেন্ডই হইল পোলা। অর ফ্রেন্ডলিস্টে কোনো মাইয়া মানুষ নাই লাগে।” হা হা হা। বেচারা।
তবে, আছে। একজন। খালি আমার গিন্নী নিটোল। বাকিরা কেবলই পান্ডববর্জিত পুরুষকূল।
ফেসবুকে ফ্রেন্ড কতজন, তার সংখ্যা নিয়ে ও সেই সংখ্যায় নানা উপলক্ষ্যে কাঁচি চালানো নিয়ে অনেক লেখা দেখি। মজা লাগে।
ফেসবুক ফ্রেন্ড! তায় আবার সত্যিকারের ভালোবাসা আর মিথ্যাকারের ভালোবাসা। হা হা হা হা হা।
জগতের সব এ্যাডজেকটিভ ও এ্যাডভারব আপেক্ষিকতার সন্তান।
ভাল>মন্দ কু>সু ন্যায়>অন্যায় আলো>আঁধার সত্যি>মিথ্যা সাদা>কালো সব, সব আপেক্ষিক।
যেমন আপেক্ষিক বন্ধুত্ব। আজ যে বান্ধব, কাল সেই আবার হয়ে পড়ে চরম শত্রূ। আজ যে, আপনাকে কৃতজ্ঞতায় গদ গদ হয়ে কলিজার দোস্ত বলে জড়িয়ে ধরছে, হতে পারে, কালকে সেই আপনাকে জনসম্মুখে অপদস্থ করতে পারলে খুশি হবে।
আজ যে পরম আপনজন, কাল পরিবর্তনের ধারায় সেই আপনার কাছে হয়ে যেতে পারে ঘৃনিত দূর্জন।
চারগন্ডা জীবনে কতজন উল্কার মতো এসেছে। বন্ধু ডাকে, আপন জ্ঞানে কত্ত কত্ত ভালোবাসা অযাচিতভাবে দিয়েছে। আবার সেই একদিন ব্যাখ্যার সুযোগ না দিয়ে একতরফা অভিমান করে চলে গেছে।
আবার হয়তো কোনোদিন নিজে হতেই ভুল ভাঙবে।
একটি সত্যি কথা বলি। পৃথিবী সত্য কথা, সত্য বচন, ন্যায্য বচনের স্থান নয়। পৃথিবী আসলে মেকী সভ্যতার। মেকী ভালোবাসার।আমাদের চিরচেনা পৃথিবী স্বার্থের, আত্মকেন্দ্রীকতার, প্রতারনার, কপোটতার।
মুখোশের।
মাঝে মাঝে পৃথিবীটাকে ভেঙে নতুন করে গড়তে ইচ্ছে হয়।
পাগলামি।
#HypocriteSociety #acidtestofriendship #friendship #childhood #relationship #stepparents #কুমিরেরমায়া #language #corporatefriendship #hypocricy #fakefriendship #selfishpeople #purposefulfriendship
২২ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:০৩
বেচারা বলেছেন: রাজীব নুর: আপনার মনোভাব প্রকাশের ধরনটা যে অত্যন্ত আপত্তিকর হয়ে যায় কখনো কখনো-সেটা কি আপনাকে কেউ বলেছে? রুক্ষতা কি প্রগতি চর্চার আবশ্যকীয় অঙ্গ?
একজন লেখক কেন লেখা দীর্ঘ বা সংক্ষিপ্ত করবেন-সেটা আপনি ঠিক করে দেবেন? ছোট লিখব না বড়-সেটা কি পাঠকের চয়েজ?
পাঠকের চয়েজ হল কী বলেছি, কেমন বলেছি, যৌক্তিক না অযৌক্তিক বলেছি-সেটা নিয়ে মতামত দেয়া। আপনি লেখাকে ভাল লেগেছে, মন্দ লেগেছে বলতে পারেন। এখানে ওখানে দেয়া যুক্তি ও তথ্য খন্ডন করতে পারেন। কিন্তু,
এই সব কেন লিখেছেন, এসব ‘অযথা’ লিখেছেন, ’অযথা’ টেনে লম্বা করেছেন-এগুলো পর্যালোচনা নয়, এগুলো হল লেখকের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্থ করা।
আগে পরেও আপনি এমন অদ্ভুৎ ও বিরক্তিকর মন্তব্য করেছেন। এবং লেখককে সফলভাবে বিরক্ত করে তুলতে পেরেছেন।
ওয়েল, এখন আবার আপনি বলতে পারেন, এই যে, আপনি লেখক হয়ে পাঠকের পর্যালোচনার সীমা নির্ধারন করে দিচ্ছেন। ভাইস ভারসা।
২| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫১
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
:একটি সত্যি কথা বলি। পৃথিবী সত্য কথা, সত্য বচন, ন্যায্য বচনের স্থান নয়। পৃথিবী আসলে মেকী সভ্যতার। মেকী ভালোবাসার।আমাদের চিরচেনা পৃথিবী স্বার্থের, আত্মকেন্দ্রীকতার, প্রতারনার, কপোটতার।
এজন্যই মানুষ কিছুদিন পর বিলুপ্ত হয়ে যাবে,পৃথীবি বেঁচে থাকবে।
২২ শে এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১০:০৩
বেচারা বলেছেন: সেটাই মানুষের অবশ্যম্ভাবি পরিণতি।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: অযথাই লেখাটা টেনে লম্বা করেছেন।