নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নির্মম হলেও চরম সত্য, এর বিচার কি হবে না?

১৩ ই জুন, ২০১৪ রাত ৯:৩৭



ভারত ও পাকিস্তান পন্থী এবং ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা সমর্থক গোষ্ঠীর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। যেখানে বাংলাদেশ পন্থী মানুষের ভীষণ অভাব। নিজেদের কে নিয়ে ভাবার কোন ফুসরত নেই গাঁটের পয়সা খরচ করে দেশের আইন এর তোয়াক্কা না করে ভিন দেশি পতাকা বানানো ও তা বাড়ীর ছাদে বা সামনে পতাকা উড়িয়ে, দেশের আইন তো ভঙ্গ করছেই তার সাথে জানাচ্ছে আমারা আসলে গোলামী করতেই বেশি ভালোবাসি। কিন্তু লক্ষ্য করা যায় বাংলাদেশ বা বাংলাদেশী কোন ফুটবল দল খেলার সময় মাঠের গ্যালারী পুরায় ফাঁকা থাকে। তাই আসুন আমরা যদি শুধু ফুটবল খেলা কে ভালোবাসি তাহলে দেশীয় ফুটবল খেলার মাঠে গিয়ে খেলোয়াড়দের এবং ফুটবল খেলাটা কে সমর্থন জানায় ক্রিকেটের মত। তাহলে আগামীতে আমরাও হতে পারি এই বিশ্ব ফুটবল আসরের এক গর্বিত অংশীদার। বিশ্ব ফুটবল জ্বরে আমরা কাবু তারপরেও কিছু তথ্য বহুল বিষয় না লিখে পারছি না কারণ এটা যে আমাদের জীবন মরণ সমস্যা।

আমরা অনেক প্রতিবন্ধীর নাম শুনেছি এই যেমন শারীরিক প্রতিবন্ধী, মানুষিক প্রতিবন্ধী ইত্যাদি। এছাড়া আরও অনেক প্রতিবন্ধী আছে তবে আমরা মুলত এই শারীরিক এবং মানুষিক প্রতিবন্ধীর সাথেই বেশি পরিচিত। আমাদের দেশে বিশেষ করে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ সমূহে প্রতিবন্ধীদের সমাজে বা পরিবারে বোঝা বা আপদ মনে করা হয়। আর প্রতিবন্ধত মূলত প্রকৃতি প্রদত্ত হয়ে থাকে। কেউ এটাকে অভিশাপ আবার কেউ এটাকে আশীর্বাদ মনে করে থাকে। ধর্মীয় দৃষ্টি কোন থেকে ও পৃথিবীতে বিদ্যমান বিভিন্ন সমাজ ব্যবস্থার দিক থেকে দেখলে আমরা বরং এটাকে অভিশাপ নয় প্রকৃত পক্ষে মহান আশীর্বাদ মনে করতে পারি। এটা মনে করার অনেক উদাহরণ এই বিশ্ব পরিমণ্ডলে আছে। আমরা জানি বর্তমান একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞানের যে মহান অগ্রগতি লক্ষ্য করছি তা কিন্তু একজন প্রতিবন্ধী মানুষেরই অবদান। অতএব আমাদের জন্য মহান আশীর্বাদ। যা হোক এবার আসি আমাদের প্রিয় জন্ম ভূমি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে, প্রকৃতি সৃষ্ট প্রতিবন্ধীর বাইরে আমাদের দেশের আদর্শহীন রাজনীতিবিদরা যে, বাংলাদেশকে এক প্রতিবন্ধতে পরিনিত করেছে তা হল “আর্থিক প্রতিবন্ধী বাংলাদেশ”। এই প্রতিবন্ধীত্ব যে জাতির জন্য কোন ভাবেই মঙ্গলজনক নয় তা সবারই জানা। আর এটা যে আদর্শহীন রাজনীতি ও নেতা-নেত্রির হাতে তৈরি তাতে কেউ দ্বিমত করবেন না। এক দশক আগেও দেখতাম যে কোন বাড়িতে আগুন ধরে পুড়ে গেলে ঐ বাড়ির কর্তা এবং বাড়ির কর্ত্রীরা তাদের বালিশের শোকে কাঁদত আর মূর্ছা যেত। আগুনে এত এত জিনিস পুড়ে ছারখার হয়ে গেল অথচ কিনা তাঁরা শুধু সামান্য বালিশের জন্য কাঁদত। কেন কাঁদত ইতিমধ্যে সবারই জানার কথা। কারণ মোটামুটি সবার বাড়িতে নিরাপদ বাক্স না থাকলেও কিছু বালিশ এবং কিছু মাটির হাঁড়িপাতিল ছিল সবারই। আবার অনেকের ট্রাংক বা বাক্স থাকলেও অধিকতর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ করে গ্রাম বাংলার মানুষ তাঁদের অতি কষ্টার্জিত সঞ্চয় ঐ বালিশ বা মাটির হাড়ী অথবা বাঁশের খোলে ভরে বাড়িতে রাখত। কারণ তাঁদের ছিল ডাকাতের ভয় আর ডাকাতের প্রথম নজর কিন্তু ঐ বাক্স বা ট্রাংক। তাই হাজারও ক্ষতির মধ্যেও বালিশ, মাটির হাড়ী বা বাঁশের খোল পোড়ার কষ্ট সহ্য করতে পারে না। তার সারা বছরের বা জীবনের সমস্ত উপার্জন যে ওটাই ছিল। আর তাতে যে শুধু ঐ ব্যাক্তিই শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হয় তা কিন্তু নয় এখানে দেশও অনেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।কিন্তু ২০০৭ সালে আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম বেশ কয়েকটি কারণে যেমন আমি প্রথম ঐ সালেই আমার ব্যাংক হিসাব খুলেছিলাম তাও আবার অনেকটা বাধ্য হয়ে কারণ ঐ বছরে আমি ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক কর্তৃক একটি মেধা বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমি স্কলারশিপ পায়। যার শিক্ষা ব্যয় তাঁরা সরাসরি প্রতিষ্ঠানকে দিলেও মাসিক যে বৃত্তির টাকা সরাসরি আমার ব্যাংক হিসাবে জমা হত তাই ব্যাংক হিসাব খোলা ছিল বাধ্যতামূলক। তখন আমি একটি ব্যাংক কার্ড পাই যেটা দিয়ে ATM বুথ থেকে যখন তখন টাকা তুলতে পারতাম। তাই পরিচিত সবাইকে ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করতাম আর মনে মনে ভাবতাম এবার দেশ শুধুই সামনে এগিয়ে যাবে কেউ রুখতে পারবেনা। দেশে রাজনীতিক অস্থিরতার মধ্যে যখন পরিবর্তনের শ্লোগানে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর হয়ে তখন পরিবর্তনের নমুনা দেখাল দেশের জনগন। তারপর আটষট্টি হাজার গ্রাম বাংলার কৃষকের সহজ শর্তে ব্যাংক হিসাব খোলা এসবই যেন স্বপ্নের মত। আমি কিছু দিন আগে একটি লেখা লিখেছিলাম বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় নিয়ে। সেখানে দেখিয়ে ছিলাম বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এর একটি রিপোর্ট যেখানে ছিল ২০১২-১৩ অর্থ বছরে মাথাপিছু আয় ৭৭,৫৭৫ টাকা। মাননীয় অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেবকে আমি সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা ও সম্মান করি বর্তমান মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের মধ্যে। তাঁর প্রতি এত আমার দুর্বলতার কারণ তাঁর মেধা, শিক্ষা ও গৌরবময় কর্ম জীবন বিশেষ করে বিশ্বের নাম করা দুটি বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার কারণে। তাই আমি তাকে সবচেয়ে বেশি ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম যেদিন তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ম্যাধমে সমস্ত ব্যাংককে সহজ শর্তে কৃষকদের ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন।যদি মাথাপিছু আয় ৭৭,৫৭৫ টাকা হয়ে থাকে আর এর মধ্যে অধিকাংশ মানুষ ব্যাংক হিসাবের অভাবে ঘরে টাকা জমা রাখে তবে গড় হিসাবে বছরে প্রায় ১২ লক্ষ ৪১ হাজার ২’শ কোটি টাকা অলস ভাবে পরে থাকে মানুষের ঘরে যাতে দেশ অনেক বড় রকমের আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই আমি অর্থ মন্ত্রীকে বেশি বেশি ধন্যবাদ জানিয়ে ছিলাম। যাতে করে সকলের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এত বড় অংকের টাকার সঠিক ব্যবহার হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাঙ্গালী জাতির যে আমরা আমাদের নেতাদের অতি মাত্রায় বিশ্বাস করি বলে তাঁরা আমাদের সাথে যথারীতি প্রতারণা করে চলেছে। তার প্রমাণ হল তাঁরা ভাল মানুষ সেজে একজন পাকা মৎস্য শিকারির ভূমিকা পালন করছে। যেমন একজন মৎস্য শিকারি মাছ শিকারের জন্য প্রথমে মাছকে কাছে ভিড়ানোর জন্য পানির মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গায় মাছের জন্য সুস্বাদু খাবার ছিটায় তাঁর পর বঁড়শিতে আধার বা খাবার লাগিয়ে শিকারের জন্য বসে থাকে আর মাছ একবার ভুল করে খাবার খেলে সেই মাছের জীবন শেষ। ঠিক তেমনি গত বাজেটে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়ে এক বারে ত্রিশ লক্ষ মাছ শিকার করেছিল। আবার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়ে মানুষকে আবারও ফাঁদে ফেলে ব্যাংকের টাকা লুট করেছে। গত ১৫ই জানুয়ারী ২০১৩ তারিখে দৈনিক নিউএজ এর অনলাইন সম্পাদনায় প্রকাশিত খবরে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের বারাত দিয়ে বলা হয় রাষ্ট্রায়ত্বখাতের কয়েকটি ব্যাংকসহ দেশি বিদেশি অনেক গুলো ব্যাংক বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাটের সাথে জড়িত। এর মধ্যে শুধু সোনালী ব্যাংক রূপসী বাংলা হোটেল শাখা হতে ৩৭০০ কোটি টাকা লুট। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংক ২৫০ কোটি, জনতা ব্যাংক ৩১৫ কোটি, রূপালী ব্যাংক ১০০ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ২ কোটি, প্রাইভেট ব্যাংকের মধ্যে প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৫ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ১০ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ২০ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ১৫ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ৩০ কোটি, সিটি ব্যাংক ১০ কোটি, উত্তরা ব্যাংক ২০ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ৫ কোটি, ইসলামী ব্যাংক ১৫ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক ২৫ কোটি, মার্কেনটাইল ব্যাংক ২৫ কোটি, যমুনা ব্যাংক ২৫ কোটি, শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক ১১০ কোটি, ন্যাশনাল ক্রেডিট এন্ড কমার্স ব্যাংক ২৫ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১০০ কোটি, এক্সপোর্ট ইম্পপোর্ট ব্যাংক ৫ কোটি, ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স ইনভেস্ট এন্ড কমার্স ব্যাংক ২ কোটি, ট্রাষ্ট ব্যাংক ২৫ লাখ, পূবালী ব্যাংক ১৫ কোটি, ডাচ বাংলা ব্যাংক ১৫ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ২ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ১৫ কোটি, এবি ব্যাংক ৫ কোটি এবং বিদেশি ব্যাংক এসটেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ইন বাংলাদেশ ৩ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক অফ পাকিস্তান ইন বাংলাদেশ ৮ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড চাটারড ব্যাংক বাংলাদেশ ২ কোটি, ব্যাংক আলফালাহ ইন বাংলাদেশ ২ কোটি এবং এইচ এস বি সি ব্যাংক ইন বাংলাদেশ ১৫ কোটি এবং সর্বশেষ রাষ্ট্রীয় খাতের ব্যাংক বেসিক ব্যাংকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা তসরুপ হয়েছে। কি পরিমাণ টাকা তসরুপ বা লুট হচ্ছে ব্যাংক গুলো থেকে তা আমাদের মত সাধারণ মানুষের ধারণার বাইরে। কিন্তু একথা শতভাগ সত্য যে এই সমস্ত টাকাই কিন্তু এই দেশের জনগণের টাকা।এখন আসি অর্থ মন্ত্রীর ব্যাপারে তিনি মানুষকে ডেকে নিয়ে ঐ মাছের মত মরণ ফাঁদে ফেলেছেন। যেখান থেকে আর বাঁচার উপায় নেই। বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে অনেকে পাগল বলা শুরু করেছে। অবশ্য তার ভারসাম্য হীন কথায় হয়ত মানুষ পাগল বলছে। এত কাড়িকাড়ি টাকা আত্মসাধ হচ্ছে কিন্তু অর্থ মন্ত্রী বলছেন এটা কিছুই না অবশ্য তার এই কথায় আমি তেমন আমলে নেই নি কারণ তিনি বিশ্ব ব্যাংক এ চাকুরী করেছেন সেখানে তো আসলে হাজার হাজার কোটি টাকা কিছুই না। হয়ত তিনি ভুলে গিয়েছিলেন যে এটা বাংলাদেশ বিশ্ব ব্যাংক নয় যেখানে প্রায় অর্ধেক বা তার বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।

যে যাই বলুক তিনি যে একজন জ্ঞানী, অভিজ্ঞ এবং সর্বপরি একজন সুস্থ মানুষ তাতে আমার বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই। তিনি মানুষকে ডেকে নিয়ে যে মরণ ফাঁদে ফেলেছেন এবং দেশকে একটি আর্থিক প্রতিবন্ধী করেছেন তার দায় তিনি কোন ভাবেই এড়াতে পারেন না। আর ব্যাংক লুটের বিষয়টি সরকার আমলে নিয়ে এর কঠোর বিচার না করতে পারে, এ টাকা কোথায় গিয়েছে তা বের করা এবং মানুষকে সমস্ত আর্থিক খাতে যেমন, ব্যাংক, বিমা, শেয়ার বাজার সহ সকল খাতে মানুষের বিশ্বাস আস্থা এবং নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে না পারে তাহলে দেশ চির দিনের মত আর্থিক প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে। যতই দেশ ডিজিটাল হোক না কেন, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং যায় চালু হউক না কেন যদি সরকার জনগণের অর্থের নিরাপত্তা না দিতে পারে তবে দেশ অবশ্যই আর্থিক সঙ্কটে পরে থাকবে। আর জাতি হিসেবে হয়ত এই বীরের জাতি বাঙ্গালীকে কাঙ্গালি জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেতে হবে। অপরাধ বড়ই মারাত্মক এর পরিণাম হবে বড়ই ভয়ানক এটাই নিয়ম। শোনা যায় এদেশের মানুষ অনেকে খুবই ধনী কিন্তু দেশ গরীব। তিনি যদি বাংলার মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাঁদের কে মাছের মত বোকা প্রাণী মনে করে থাকেন তাহলে তিনি চরম ভুলের মধ্যে আছেন। আর তার এই চরম ভুলের শাস্তি হতে পারে ইতিহাসের চরম সাক্ষী।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.