নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহান স্বাধীনতা নিয়ে আর অবহেলা নয়।

২১ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৪:৫১



আবেগ থাকা ভাল কিন্তু অতিরিক্ত আবেগ থাকা ভাল না। আমরা বাঙ্গালী জাতি বেশ আবেগ প্রবণ জাতি কিন্তু মাঝে মাঝে তা এতটাই প্রকাশ পায় যে জাতি হিসেবে কুলাঙ্গার বললেও ভুল হবে না। তবে আবেগ বেশি থাকলেও আমাদের মানবিক অনুভূতি বেশ লোপ পেতে যাচ্ছে। আর এই দুর্বল দিকগুলোই কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ তবে অন্য দল গুলো দৌড়ে পিছিয়ে থাকলেও বসে নেই। যে যেমন পারছে চেষ্টা করে যাচ্ছে তবে সবাই আবার একই রকম না এদের মধ্যে অনেক ব্যতিক্রমও আছে। সমাজে, রাষ্ট্রের কোথাও গুণীজনের সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে তিমির অন্ধকারে, জাতিকে দেওয়া হচ্ছে ভুল পথ নির্দেশনা। কেউ কারও ভাল দেখতে পারে না। জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী নিয়মিত কলাম লিখে থাকেন সময় পেলে পড়ি কিছু জানার জন্য কিন্তু মাঝে মাঝে খুব হতাশ হয়ে যাই তার লিখা পড়ে। অমর একুশের গানটির জন্য আমি তার ভীষণ অনুরাগী। গত কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের জাতীয় পুরষ্কার প্রদান নিয়ে একটি লিখা লিখেছেন। খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তে গেলাম কিন্তু রীতিমত হোঁচট খেলাম। পুরস্কারের বেশ অনিয়মের কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, তাঁকে যখন পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল তিনি নাকি তা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন কিন্তু তার নেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে খুব বেশি করে অনুরোধ করাই তিনি পুরস্কার নিতে রাজী হয়েছিলেন। তার মতে বিভিন্ন সরকার আজেবাজে লোকদের জাতীয় পুরস্কার দেওয়ায় এই পুরস্কারের মান নষ্ট হয়েছে তাই তিনি জাতীয় পুরস্কার নিতে রাজী ছিলেন না। তিনি আরও বলেছে ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুছ কে নোবেল পুরস্কার দেওয়ায় এর মান নষ্ট হয়েছে তাই তাঁকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হলে তিনি তা প্রত্যাখান করবেন।তিনি বলেছেন সামান্য ও মানহীন জাতীয় পুরস্কার, কিন্তু তা নেওয়ার লোভ সামলাতে পারেন নাই তিনি, আবার কিনা নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করবেন! ২০০৬ সালে সমগ্র জাতিই এই নোবেল পাওয়ার জন্য গৌরবান্বিত হয়ে সেদিন ডঃ ইউনুছ কে গণসংবর্ধনা দিয়েছিল। তখন তিনি সব রাজনীতিক দলের কাছে খুব সমাদিত ছিলেন কিন্তু তত্বাবধায়ক সরকারের সময় তৃতীয় শক্তির দল গঠনের চেষ্টা করায় শেখ হাসিনার রোষানলের শিকার হন। আর জনার আব্দুল গাফফার সাহেব তার নেত্রী কে খুশি করার জন্য এক ধাপ এগিয়ে বললেন তিনি নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করবেন। গোলামীর এত নিম্ম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, বেমালুম ভুলে গেলেন তিনি নোবেল পাওয়ার যোগ্য কিনা!! হায় রে আবেগ! এইটা হল আবেগে গোলামী।

দেশ এখন ক্রিকেট জোয়ারে ভাসছে। ক্রিকেট বাঙ্গালীর প্রাণের উচ্ছ্বাস। রাত জেগে খেলা দেখি, দেশের ছেলেদের খেলা দেখে দুই চোখের ঘুম উধাও হয়ে যায়। বিজয় আনন্দে আমিও ভাসতে চাই কিন্তু মনটা কয়েক দিন ধরে বেশ খারাপ, ইচ্ছা থাকলেও আর সবার মত অতি আবেগে ভাসতে পারছি না বরঞ্চ দুঃখে - অভিমানে মন ভারাক্রান্ত। এক সপ্তাহ আগে একটি লেখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রেহের জন্য বিবিসি’র ওয়েব সাইটে ঢুকে আমি আক্কেলগুড়ুম। সেখানে বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাস লিখতে গিয়ে তাঁরা লিখেছেন যে, “১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জন্ম হয়”। আমি লেখাটি দেখে ভীষণ রেগে গেলাম, ১৯৭১ সালে যদি পাক-ভারত যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্ম হয় তাহলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ কে অস্বীকার করা হয়। বীর শহীদদের প্রতি রীতিমত অসম্মান করা হয়, বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার ও স্বাধীন বাংলাদেশ কে অস্বীকার করা হয়। তাই সঙ্গে সঙ্গে বিবিসি কর্তৃপক্ষকে আমি অভিযোগ করি এবং ১৯৭১ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের স্থলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান লিখার দাবি করি। তাঁরা আমাকে বলেছিল দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাবে কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা আমাকে জানিয়েছে, তবে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি তাই আবার আমি অভিযোগ করি এবার তাঁরা ২৮ দিনের সময় নিয়েছে বিশেষজ্ঞ দিয়ে ভালভাবে খতিয়ে দেখার জন্য। শুধু আন্তর্জাতিক ভাবেই নয় দেশের ভিতরেও কিছু মানুষ আছে যারা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অনেকটা খাট করে দেখে, কেউ আবেগ তারিত হয়ে আবার কেউ সচেতন ভাবে। বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারানোর পরে কিছু চ্যানেলে মানুষের প্রতিক্রিয়া প্রচার করা হয়েছিল, অনেকেই বললেন বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মত আরও একটি বিজয় অর্জন করল।এটা হল অতি আবেগ-ই মূর্খতা। ব্লগার রাজীব হত্যার পরে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছিলেন আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ, এটা হল সচেতন ভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অবমাননা।আর ভারত এ তো রীতিমত বাংলাদেশকে অপমান করে ভিডিও বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এই ভাবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অনর্থক তুলনা করে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্ব নতুন প্রজন্মের কাছে গুরুত্বহীন করে তোলা হচ্ছে। দেশে নাকি পূর্ণ বাক স্বাধীনতা আছে! আছে তবে শুধু ধর্মের আর বিরোধী মতের প্রতি বিরূপ ও অকথ্য গালাগালির জন্য কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ এর প্রতি নয়। আওয়ামীলীগ বা শেখ হাসিনার সমালোচনা করলে তার অবস্থান হবে শ্রীঘরে না হয় দশ দিন রিমান্ডের পর ICU তে। এই হল দেশে বাক স্বাধীনতা। শুনেছি বঙ্গবন্ধু বাকশাল করে মানুষের বাক স্বাধীনতা সীমিত করে ছিলেন তারপরও কেউ কেউ তাঁর চামড়া তুলে নিতে চেয়ে ছিল আবার কেউ কেউ তো তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল কিন্তু তাদেরকে এত অত্যাচার সইতে হয়নি অবশ্য এরাই এখন আওয়ামীলীগের হর্তাকর্তা।তবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বললে তাঁর সর্বনাশ। বাক স্বাধীনতার নামে আমাদের এমন কোন কথা বা মন্তব্য করা উচিৎ নয় যাতে অন্য ব্যাক্তির,গোষ্ঠীর বা সম্প্রদায়ের স্বাধীনতা হরণ বা বিনষ্ট হয়। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ কিন্তু আছে অনুকূল আবহাওয়া,সমতল ও উর্বর ভূমি, আছে মানব সম্পদের মত এক বিশাল ভাণ্ডার শুধু সঠিক দিক নির্দেশনার অভাবে দেশ আজ বয়সের তুলনায় অনেক অনেক পিছিয়ে। সময় যখন সামনে চলার দেশ তখন অস্থিতিশীল, পক্ষাঘাতগ্রস্থ সামনে চলার ক্ষমতা প্রায় হারাতে বসেছে। ক্ষমতার লোভে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করা হচ্ছে কিন্তু এর পরিনাম বড়ই নিষ্ঠুর। ১৯৪৭ সালে এই জাতি দ্বিধাবিভক্তির কারণেই ইতিহাস এর স্মরণ কালের ভয়াবহ দেশান্তর ঘটে। মানুষ নিজের নাড়ীপোতা বসতভিটা, দেশপ্রেম, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে ছুটতে হয়েছিল জীবনের মায়ায় এক অনিশ্চিত গন্তব্যে। ১৯৭১ সালে সেই একই রকম প্রায়, অবিশ্বাস আর বঞ্চনার কারণে খণ্ডিত হল। তবে বরাবরের মত ক্ষমতা লোভীদের কারণে এই বিয়োজন। দেশ টিকিয়ে রাখতে হলে সবচেয়ে প্রধান কাজ জাতিকে একজোট বা ইউনাইটেড করে রাখা। উন্নায়ন চলমান প্রক্রিয়া এটা হবেই। ইতিহাস এর ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। স্কটল্যান্ড যেখানে বিভাজনের বিপক্ষে ভোট দেয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদীরা যেখানে বেনি আমিন নেতানিয়াহুর ডাকে সাড়া না দিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদীরা নিজ নিজ দেশেই থাকার পক্ষে, সেখানে আমরা শুধু ক্ষমতার লোভে জাতিকে দ্বিধাবিভক্তি করছি। এর পরিনাম নিশ্চয় ভাল কিছু বয়ে আনবে না। আসুন আমরা শুধু আবেগে অচেতন হয়ে দেশের অমঙ্গল হয় এমন কাজ যারা করে তাদের সমর্থন না করি।আসুন আমরা প্রথমে একজোট হয় তারপর দেশেমাতার সেবাই নিজেদের উজাড় করে দেয়।

জয় হোক মেহানতি মানুষের।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৫:২০

কালের সময় বলেছেন: জয় হোক মেহানতি মানুষের।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১২

বিদ্যুৎ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.