নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবতাহীন মানব হয় কেমনে?

২২ শে মে, ২০১৫ ভোর ৪:১৫


আদিম সভ্যতার কথা কমবেশি আমরা সবাই জানি। ছোট বেলায় স্কুলে সমাজ-বিজ্ঞান বিষয়ে এই আদিম সভ্যতা পড়েছি। সেখানে খুব সামান্যই জানা হয়েছিল। আর যা জানা হয়েছিল তার মধ্যে ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক বিষয় বেশি জানা গেছে। যেমন পাথরে পাথরে ঘষে আগুন আবিষ্কার ছাড়া ইতিবাচক তেমন কিছু ছিল না। সভ্যতার ক্রমবিকাশ বর্ণনা করতে গিয়ে আদিম মানুষ উলঙ্গ থাকতেন বা গাছের লতাপাতা দিয়ে লজ্জা নিবারণ করতেন, কাঁচা মাংস খেতেন, শিক্ষা বা জ্ঞান অর্জন বলে কিছু ছিল না, মানুষ দলবদ্ধ ভাবে বসবাস করলেও এক গোত্রের সাথে অন্য গোত্রের মিল ছিলনা, বর্তমানে ইট পাথরের তৈরি সভ্যতার ছোঁয়া ছিল না, বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াত সর্বপরি আদিম মানুষ যে অসভ্য ছিল তেমনটাই বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে স্কুল পেরিয়ে কলেজ, ইউনিভার্সিটি, এমন কি আজকে এই একবিংশ শতাব্দীতে মুক্ত জ্ঞান চর্চার এক অভয়রন্যে সেই মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ জানতে গেলে মোটামুটি একই রকম। পূর্বে মানুষ অসভ্য ছিল। বিশেষ করে মধ্যযুগের সমাজ ব্যবস্থা ও মানুষের আচার আচরণ নাকি তেমনটাই ছিল। তাই মধ্যযুগ পূর্ব এই আধুনিক সমাজে অন্ধকার যুগ বলে প্রমাণিত। সমাজ বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ, কবি সাহিত্যিক মোটামুটি সর্বস্তরে তাঁদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে তেমনটাই বলতে চেয়েছেন। কারণও ছিল হয়ত তাঁরা তেমনই দেখেছিলেন। আমরাও তাই মানি কারণ ছিলনা শিক্ষার আলো, বুঝত না মানবিক মূল্যবোধ। তাইতো আমরা বড়াই করে বলি আমরা আধুনিক, সভ্য ও ভদ্র আর ওরা ছিল আদিম, অসভ্য। আদিম যুগ অথবা মধ্যযুগে যে যুগের কথাই বলি না কেন, সেখানে অনেক কিছু না থাকলেও মানবিকতা একেবারে ছিলনা এরকম কোন প্রমান বা সঠিক ইতিহাস পাওয়া যাবে না। আর কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও শিক্ষার আলোর অভাবে মানুষ অমানবিক হবে তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা যে শিক্ষার বড়াই করি, আমাদের আধুনিক মনেকরি কিন্তু আমাদের যে মানবিকতা নেই তাহলে কি আমারা সত্যিই আধুনিক এবং মানবিক। আধুনিকতা আর উন্নয়নের তারতম্যে জাতি, দেশ ও মানুষের অমানবিকতার ধরনটাও ভিন্ন হয়। যারা উন্নত দেশ তারা দেখা যায় গরীব দেশ ও জাতি গোষ্ঠী কে বিভিন্ন ভাবে ছবক দেন। কিন্তু তাদের ভিতরটা কি আমরা জানি? আমরা সমুদ্রে ভাসমান রহিংগাদের আমাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয়নি। আমরা হয় অমানবিক হয়েছিলাম, হ্যাঁ কিছু কারণও আছে, যেমন অনেক রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আছে তাদের কোন সুরাহা হয়নি, হতে পারি আমরা গরীব দেশ, শিক্ষা, আধুনিকতায় ও মানবিকতায় অনেক পিছিয়ে। কিন্তু মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড তারা কি করলেন? অমানবিকতার চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তাদের দেশে গন কবর দিয়ে, দাস প্রথা চালু করে সেই মধ্য যুগীয় বর্বরতা কেউ হার মানিয়েছে। শুধু কি তাই সমুদ্রে ভাসমান, ভুখা, শিশু, মহিলা ও হড্ডি সর্বস্ব ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারিও ওদের মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলতে পারেনি। এমন করুন হৃদয় বিদারক দৃশ্য লিখে প্রকাশ করা অসম্ভব। বিশ্ব মিডিয়ার কল্যাণে সারাবিশ্বের হৃদয়বান মানুষের অনুরোধে তারা কিছুটা নমনীয় হলেও ছিলেন নগ্ন কৌশলে। বিশ্বকে দেখানোর জন্য উপর থেকে উড়োজাহাজে করে খাদ্য ফেলা হল। বিধিবাম, খাদ্য ফেলা হল ঠিকই কিন্তু নৌকায় বা জাহাজে না ফেলে সমুদ্রের পানিতে, যেন ভুখা, শিশু, মহিলা ও হড্ডি সর্বস্ব ক্ষুধার্ত শক্তিহীন মানুষগুলো পানিতে ঝাঁপিয়ে পরে মরে। শুধু তাই নয় মাঝিদের উপর হুকুম জারী করা হল যে, পানিতে ডুবে মরলেও যে তাঁদের না বাঁচানো হয়। হায়রে মানবতা! আমি নিশ্চিত না হয়ে আর পারছি না যে, পরপার থেকে আমাদের আদিম পূর্বশরিরা এই অমানবিক দৃশ্য দেখছেন আর মনেপ্রাণে অভিশাপ দিচ্ছেন ধবংস হউক এই আধুনিক সভ্যতা, ধবংস হউক ঘৃণ্য মানবতা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.