নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে কারণে আগস্টের দুঃস্বপ্ন আওয়ামীলীগকে তাড়া করে বেড়ায়!

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:৩৫



সবচেয়ে মান সম্পন্ন কাগজ তৈরি হয় পাকশী কাগজ কলে, এই কাগজ পাকিস্তানীরা বাংলাদেশ (পূর্ব পাকিস্তান) থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়। সেই কাগজে সিল লাগিয়ে বাংলাদেশে (পূর্ব পাকিস্তানে) বেশি মূল্যে বিক্রি করে। আমরা এটা মানিনা মানব না।
চাকুরী ক্ষেত্রে সব বড় বড় পদে পশ্চিম পাকিস্তানীরা আর নিম্ন পদে বাংলাদেশীরা (পূর্ব পাকিস্তানীরা) তাও যদি শূন্য পদ থাকে। এটা চরম বৈষম্য আমারা মানিনা মানব না।
রাষ্ট্রীয় খাতে বাজেটের বড় অংশ –ই খরচ হত পশ্চিম পাকিস্তানে যদিও পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে বসবাসকারী জনসংখ্যা আনুপাতিক হারে অধিক ছিল। এটা মারাত্মক অন্যায় অতএব আমরা এই চরম অর্থনীতিক বৈষম্য মানিনা মানব না।
এই সবগুলোই হল অর্থনৈতিক বৈষম্য। আর মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র চেতনা হল বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের “অর্থনৈতিক মুক্তি”। যে যত চেতনার কথাই বলুক সব হল অর্থনৈতিক মুক্তির অনুষঙ্গ মাত্র।
বাঙ্গালী জাতি বীরের জাতি, জাত চেনাতে সময় নেয়নি। শুরু হল দূর্বার আন্দোলন, মুক্তির আন্দোলন, স্বাধীনতার আন্দোলন বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলন। মূলত ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হওয়া বাংলার মানুষের সেই কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জিত হয় ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।
বাঙ্গালী জাতি যেমন বীরের জাতি তেমনি আবেগ প্রবণ জাতি হিসাবেও বেশ পরিচিত। বাঙ্গালী জাতি এক লম্বা সময় ধরে সংগ্রাম করে আসছিল। সঠিক দিক নির্দেশনা, দক্ষ নেতৃত্বের আর সুসময় এর সম্মিলন না হওয়ায় সংগ্রাম কোন সাফল্য আনতে পারছিল না। ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক ও সাধারণ নির্বাচনকে বাংলার মানুষ সেই শৃঙ্খল ভাঙ্গার সুসময় হিসেবে বেছে নেন, আর যোগ্য নেতা হিসেবে বেছে নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। যে নেতা বাংলার মানুষকে অর্থনীতিক মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন বাংলার রাজনিতিক অসচেতন মানুষ সেই নেতাকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করে বিশ্বকে জানিয়ে দিল আমরা পারি। রাজনীতি অসচেতন এই জন্য বললাম যে ভোটবিহীন নির্বাচনে যে দেশে সরকার থাকতে পারে তারা আর যায় হোক নির্বাচন বা রাজনীতি সচেতন অবশ্যই নয়। কিন্তু ১৯৭০ সালে নির্বাচনে বাংলার মানুষ ভোট বিপ্লব ঘটিয়েছিল কারণ শুধু অর্থনীতিক মুক্তি বা স্বাধীনতার জন্য।কারণ দেওয়ালে যে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। আবেগে মানুষ কি না করে। নিরস্ত্র হয়েও জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শুধু অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে। দেশ স্বাধীন হল কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তি! নাহ তা আর হল না নেতা ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন কিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় তাই নিয়ে, তাঁর অনুসারীরা শুরু করলেন জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ব্যাংক লুট, সরকারী ও ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠান এর অর্থ লুট আবার অনেকে মত্ত হলেন সুন্দরী নারীর সর্বনাশের কাজে। দেশ এক বিশৃঙ্খল অবস্থায় পতিত হল। জাতি হয়ে গেল দ্বিধা বিভক্ত। যে জাতি এক মহান নেতার আহ্বানে জীবনের মায়া না করে নিজেদের সপে দিলেন যুদ্ধে এই জাতি পরে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়লেন সেই অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে। শুধু তাই নয় এই নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ড বা নিহতের খবরে দ্বিধা বিভক্ত জাতি মিষ্টি বিলিয়েছে, আনন্দ মিছিল করেছে!
অর্থনৈতিক বৈষম্য যেমন প্রকট তেমনি ভাবে আর্থিক নিরাপত্তা ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে। অর্থনৈতিক মুক্তি না আসা পর্যন্ত আরও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
আর্থিক নিরাপত্তার জন্য খুব বেশি কিছু করার দরকার নেই শুধু কিছু পদক্ষেপ ই দিতে পারে এর সুন্দর সমাধান। আর তা করতে হবে সরকারকেই। সুশাসন! হ্যাঁ একমাত্র সুশাসন ই পারে দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে। বিশ্বের সব দেশেই কম বেশি অপরাধ সংঘঠিত হয়, তার সুবিচার ও হয়। কিন্তু আমাদের দেশে অপরাধ সংঘঠিত হয় কিন্তু তার কোন সুবিচার হয় না।
“আয় বুঝে ব্যয় কর” এই কথা এখন আর চলে না, এখন “ ব্যয় বুঝে আয় কর” এই ধারার সময়। তাই প্রতি বছর প্রচুর ঘারতি নিয়ে বাজেট পাস করা হয়।মানুষ বিশেষ করে তরুন সমাজ কাজ করতে চাই কারণ তাদের অনেক চাহিদা আছে, আছে দেশ গঠনের প্রাণান্তর চেষ্টা কিন্তু সরকারী ভাবে তেমন কোন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকার বাহাদুরি করে বলে দেশে আজ প্রায় ২১ বিলিয়ন রেকর্ড বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আছে। কিন্তু যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠায় তাঁদের প্রতি কি দায়িত্ব পালন করে সরকার? রাজনীতিকদের হয়ত ধারণা যে, প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠায় তাঁদের পরিবার পরিজনদের জন্য এটা দেশের জন্য নয়! কারণ আমাদের বেশির ভাগ নেতা নেত্রী যে নগদ গ্রহণে অভ্যস্ত। সেই জন্যই হয়ত প্রবাসে হাইকমিশন এমনকি দেশে ফিরতে বিমান বন্দরে প্রবাসীদের হেনস্তা হতে হয়। এত অর্থ জমা আছে ভাল কথা কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থ যে অলস পরে আছে তা কি দেশের জন্য ভাল। অদক্ষ সরকার তাই এই বিপুল অর্থের কোন সৎ ব্যাবহার করতে পারছে না। বিশ্ব ব্যাংকের এক জরিপে প্রকাশ করা হয়েছে যে বাংলাদেশে প্রায় ৭ কোটি ৪০ লাখ মানুষের অর্থ লেনদেনের কোন ব্যাংক হিসাব নেই। তাহলে ভাবুন ত তাঁরা কিভাবে টাকা লেনদেন বা জমা রাখেন? তাঁরা টাকা জমা রাখেন লেপ,কাঁথা,বালিশ, বাঁশের চোঙ অথবা বাক্সে।
বাংলাদেশ ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক এর তথ্য মতে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১,৩১৪ ডলার।তাহলে ৭ কোটি ৪০ লাখ গুণন ১,৩১৪ ডলার সমান ৯৭,২৩৬,০০০,০০০ ডলার যা টাকায় প্রায় ৭৭৭,৮৮৮০,০০০,০০০ পরিমাণ অর্থ অলস পরে থাকে মানুষের ঘরে।
বিশ্বে অনেক দেশে যেমন যুক্তরাজ্যে ব্যাংকগুলো তাঁদের গ্রাহকদের সেবা ও বিনিয়োগ বান্ধব সার্ভিস দিয়ে থাকে। যেমন হিসাব খুলতে কোন অর্থ লাগে না। আবার যদি কোন গ্রাহক মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ লেনদেন করে তাহলে তাঁদের ইন্টারেস্ট দেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ, এমন কি মাসিক বা বাৎসরিক কোন চার্জ গ্রাহককে দিতে হয় না । অর্থাৎ ব্যাংকে অর্থ জমা এবং নিয়মিত লেনদেন হল গ্রাহকের জন্য এক ধরনের বিনিয়োগ। তাছাড়া আরও অনেক সুবিধা গ্রাহকরা পেয়ে থাকেন যেমন, বিনামুল্যে বা স্বল্প খরচে বিমা সুবিধা, ঋণ প্রদান সুবিধা ইত্যাদি।
কিন্তু বাংলাদেশে তেমন কোন ব্যাবস্থা নেই। ১০ টাকা দিয়ে কৃষকের ব্যাংক হিসাব খোলার একটা সুবিধা চালু হয়েছিল। ভেবেছিলাম খুব ভাল একটি কাজ হবে। কিন্তু নাহ! তা আর হল না। আওয়ামীলীগ সরকার নারীদের যেমন সমান অধিকারের কথা বলে রাস্তায় নামিয়ে তাদের সোনার ছেলেদের দিয়ে ধর্ষণ করছে, শেয়ার বাজারের বিনিয়োগের জন্য মানুষকে ধোঁকা দিয়ে সর্বস্বান্ত করেছে, এমনি ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়ে জনগণের ব্যাংকের টাকা লুট করেছে। অনিয়ম যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরকম বিশৃঙ্খল সমাজ তথা রাষ্ট্র ব্যাবস্থা চলতে থাকলে ১৫ই আগস্ট বারবার ফিরে আসবে! আর বিভক্ত জাতি আবার আনন্দ মিছিল করবে এবং মিষ্টি বিলাবে! আমারা তরুণ প্রজন্ম এই রকম নির্মম উপহাস দেখতে চাইনা। তাই সরকারের উচিৎ দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে সমাজে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের মনে আস্থা বা বিশ্বাস তৈরি করা যে আওয়ামীলীগ সরকার দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে। তাতে মানুষ স্বস্তিতে থাকবে আর আওয়ামীলীগ পাবে আবার ১৫ই আগস্ট ফিরে আসার দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.