নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবার ইদ যেন হয় ঈদের মতঃ ঈদ মোবারক

২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:১০


মূল কলাম এখানে পড়তে পারবেন।

জীবনের প্রথম যে কোন জিনিস কত যে আনন্দের তা লিখে এমন কি মুখে বলেও সেই মিশ্র সুখানুভূতি প্রকাশ করা সম্ভব না। জীবনে প্রথম মায়ের হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার স্মৃতি, বাবার হাত ধরে রঙিন পোশাকে খোশমেজাজে প্রথম ঈদগাহে যাওয়া এসব আমার পরিষ্কার মনে নেই। তবে সেটা আমার জন্য কেমন অনুভূতি ছিল তা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে না পারলেও,আমার দৃঢ় বিশ্বাস প্রত্যেক বাবা মায়ের জন্য তা যেমন মধুর স্মৃতি তেমনি সব ছেলেমেয়েদের শৈশবের এক মধুর স্মৃতি তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর কোন মায়ের সন্তান যদি নিজ নিজ কাজে সফল হয় তাহলে তো কোন কথায় নেই! আমার প্রথম ভাষা বাংলা ভাষা। এটা আমার মায়ের ভাষা। আমি শুনেছি আমার শেখা বা প্রথম বলা শব্দ ছিল মা শব্দ। আমার সাথে অনেকেই একমত হবেন শিশুদের প্রথম শেখা শব্দ মা। তবে আমাদের দেশে উচ্চ সমাজে মা’কে আম্মা না বললে তাদের নাকি জাত থাকে না। কারণ মা শব্দটা তাদের কাছে উচ্চতর শব্দ নয়। পৃথিবীতে একমাত্র জাতি আমরা যারা মাতৃভাষার জন্য সংগ্রাম করে প্রাণ দিয়েছি। অথচ আমাদের ভাষা স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে না তা কি করে হয়? তাই আমাদের মায়ের ভাষাকে নির্ভুল করতে এবং সমৃদ্ধ করতে এক গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাদের বাংলা একাডেমির উপর। বাংলা বানানে একটি নিয়ম আছে যে “বিদেশি ভাষার শব্দের বানানে দীর্ঘ ঈ-কার থাকবে না” লিখতে হবে ই-কার দিয়ে। আমাদের এত সমৃদ্ধ একটি ভাষা ও শব্দের ভাণ্ডার থাকতেও “বাংলা একাডেমি” একাডেমি বিদেশি শব্দ ভাড়া করে বাংলা একাডেমি নাম ধারণ করেছে। এখন এই বানান রীতির নিয়ম ব্যতিরেকে তারাও বাংলা একাডেমী অর্থাৎ ঈ-কার দিয়ে একাডেমি লিখত। ঈদ একটি বিদেশি শব্দ তাই তাঁরা বলছেন এই ঈদ বানান লেখা ইদ অর্থাৎ ই-কার দিয়ে লিখতে হবে। অনেকে বলেন রেকর্ড হয় তো ভাঙ্গার জন্যেই কিন্তু আসলে কি তাই? এমন কিছু রেকর্ড থাকে যা ভঙ্গুর নয় বা ভাঙ্গার জন্য নয়। এই যেমন জীবনে যা কিছু প্রথম তা কোন দিন ভাঙ্গা যাবে না। হয়ত তার চেয়ে অনেক কিছু বেশি করা সম্ভব কিন্তু যা প্রথম তা শুধুই প্রথম। আমাদের বাংলা একাডেমি এবার থেকে ঈদ কে ইদ হিসাবে পালন করতে বলেছেন। কারণ তাঁদের মতে ঈদ বানান এত দিন ভুল ছিল। ইদ হল শুদ্ধ বানান। বিদেশি ভাষার শব্দের বানানে দীর্ঘ ঈ-কার থাকবে না তাই যদি ঈদ কে ইদ লিখতে হয় তবে কোন কিছুর নামকে যে বদলানো নিয়মের বরখেলাপ তা তো আমাদের মেনে চলা উচিৎ। ঈদকে দীর্ঘ ‘ঈ’ দিয়ে আবহমানকাল থেকেই লেখা হচ্ছে। এটি একটি উৎসবের নাম তাই আমি মনেকরি ঈদ কে ঈদ হিসাবে লেখায় উত্তম। সে যাইহোক আমাদের ঈদ আনন্দে যেন কোন কমতি না হয় সেটি মুখ্য আমাদের কাছে। তাঁরা রেকর্ড ভাঙ্গার কাজে নেমেছে তাঁরা ভেঙ্গে আবার রেকর্ড গড়ুক। তবে অনেক প্রথমের মাঝেও কিছু কিছু জিনিস মানুষকে আবেগের স্রোতে আবহমান কাল ধরে পার্থিব বা অপার্থিব, বস্তুগত বা অবস্তুগত এমনকি কঠিন বাস্তবতার স্মৃতির বিপরীত স্রোতে হয়ত বহমান চলতে সাহায্য করবে! হতে পারে সময় কাল স্থান ভেদে ভিন্নতর। জীবনে প্রথম মোবাইল ফোন কেনার মধ্যে অনেকের মত আমিও আনন্দে উল্লাসে ভেসেছিলাম। নতুন ফোন বলে কথা এখন তো আবার সাথে ইন্টারনেটের কল্যাণে ভিডিও কল, হালের ফ্যাশন সেলফি বিমার! লাইফ গসিপিং ইত্যাদি আরও অনেক কিছু যুক্ত হয়েছে আমাদের কাজ কর্মে ও আবেগের সাথে। এত সব কিছু হয়েছে বা আমরা পেয়েছি তা অবশ্যই প্রমাণ করে আমাদের সামর্থ্য বেড়েছে। এই সব অনুভূতি নিঃসন্দেহে মধুর কিন্তু সেই ছেলেবেলায় দুইটা ম্যাচের বাক্সের সাথে তার বা গুণা পেঁচিয়ে একজনের মুখে আর আরেকজনের কানে চেপে ধরে যে হ্যালো হ্যালো বা নাম ধরে আমরা ছোটবেলার বন্ধু বা খেলার সাথীরা একে অপরের সাথে কথা বলা বা ডাকাডাকি করতাম সেই অনুভূতি কি এখন অনুভব করি? নিশ্চয় না। এমনকি এই যুগের শিশুরা কি তা জানে? সেই অনুভূতি কি তাদের স্পর্শ করবে? হয়ত না। বহুবার উড়োজাহাজে চড়ে উড়েছি। দেশ,মহাদেশ পেরিয়েছি, পেরিয়েছি সেই ছোটবেলায় শোনা গল্পের সাত সমুদ্র তের নদী। তবে প্রথম উড়োজাহাজে চড়ার অনুভূতি ছিল সে এক অন্যরকম অনুভূতি। খুব বেশি আলোড়িত বা উদ্দীপ্ত ছিলাম তা শুধুই নির্বাক স্মৃতি। উড়োজাহাজ যত ওপরে উঠছে নিজের বুক যেন ফুলে প্রসারিত হয়ে তার চেয়ে বেশি উঁচু হচ্ছে। ছমছম করছে সমগ্র আবেগের পৃথিবী। যতই উড়ছে জাহাজ ততই ভেতরে ও বাইরে পরিবর্তিত হচ্ছে পরিবেশ। রাশি রাশি শুভ্র মেঘের স্তর ভেদ করে দিগন্ত জোড়া পাহাড় পর্বত নদী নালা সবুজ মাঠ পেরিয়ে চলছি ঊর্ধ্বলোকে। আহ! ভাবতেই অবাক লাগে। মনে পড়ে যায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর সেই সংকল্প কবিতার লাইন গুলো “ থাকব নাকো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগতটাকে, কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে; দেশ হইতে দেশ দেশান্তরে”। এত সুন্দর সুখানুভূতি ও স্মৃতিও যেন হার মানে সেই ছোট্টবেলায় বাবা মার সাথে ঈদের ছুটিতে শিশু পার্কে গিয়ে উড়োজাহাজ অথবা পঙ্খিঘোড়া সদৃশ নাগরদোলায় বা দোলনায় চড়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করা। যান্ত্রিক জীবন, আমরা পুরোপুরি যন্ত্র নির্ভর হয়ে গেছি। নিজের উপার্জনের টাকা জমিয়ে প্রিয় ব্র্যান্ডের নামী দামী গাড়ি কিনে লং ড্রাইভে বন্ধুদের সাথে ঈদ আড্ডায় মেতে থাকা সে এক অসাধারণ কিছু মুহূর্ত হয়ত আমার মত অনেকের কাছে ঈদ আনন্দ উপভগের আর এক অনন্য মধুর স্মৃতি। যেকোন আড্ডাবাজ তো নয়ই, নিপাট সিরিয়াস টাইপের ব্যক্তিও কোন দিন এই সব মধুর স্মৃতি ভুলতে পারবেনা যদি কারো স্মৃতি তাঁর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা না করে। তারপরেও সেই ছোট্টবেলায় ঈদ করতে পরিবারের সাথে শহর থেকে গ্রামে গিয়ে বন্ধু,খেলার সাথীদের সাথে সুপারি গাছের সেই শাখা বা ঠোঙ্গায় চড়ে অথবা সাইকেলের পুরনো তিনটি বিয়ারিং দিয়ে বানানো গাড়ীতে চড়ে ঘুরে বেড়ানো সেই দুরন্ত শৈশবের ঈদের সাথে তুলনা চলে? কখনও না। তেমনি ভাবে বাংলা একাডেমি নব্য আবিষ্কৃত ইদ লিখে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় লিখে কি আর এই চিরায়িত বা ঈদকে দীর্ঘ ‘ঈ’ দিয়ে আবহমানকাল থেকেই লেখা ঈদ মোবারক এর মত আনন্দ ও বিশুদ্ধতা অনুভব করা যাবে। সে যাইহোক ইদ অথবা ঈদ,পরিবার আত্মীয় পরিজনের সাথে মিলে ঈদ উজ্জাপন আমাদের জন্য এক অনন্য সুযোগ। ঈদ আমাদের সবার মাঝে খুশি আর আনন্দের পরিবেশ বয়ে নিয়ে আসুক। ঈদ যেন হয় আমাদের জন্য নিরাপদ,অনাবিক সুখ আর শান্তিময়। ঈদ মোবারক।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জুন, ২০১৭ রাত ১০:০৬

বিজন রয় বলেছেন: ঈদ মোবারক।

২৮ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৫:৫২

বিদ্যুৎ বলেছেন: ঈদ মোবারক। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.