নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানব পাচার বেড়ে যাওয়া প্রমাণ করে দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও কর্মসংস্থানের অভাব।

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৭:৫৯


যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচার বিষয়ক প্রতিবেদন ২০১৭ প্রকাশ করা হয়েছে গত মঙ্গলবার। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানব পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার নুন্যতম মান বজায় না রাখায় একধাপ নেমে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় স্তরে নজরদারিতে থাকা দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমরা বরাবরই জেনে আসছি দেশে আইন আছে কিন্তু আইনের কোন সঠিক প্রয়োগ নেই। ঠিক এই ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। কঠোর আইন আছে কিন্তু বাস্তবতা খুবই নির্মম। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হল যারা এই আইন প্রয়োগ করবে তারাই কিনা এই মানব পাচার অপকর্মে জড়িত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সীমান্ত রক্ষা বাহিনী, জনশক্তি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নাকি জড়িত যা সরকার অপরাধীদের দণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। এখানে রাজনৈতিক কোন ইস্যু খুঁজলে হবেনা। যে বা যারা সরকারে আছে এবং দেশ পরিচালনা করছে তাঁরা এই জন্য সম্পূর্ণ দায়ী। আগের সরকারের সময় এত লোক পাচার হয়েছে আর বর্তমান সরকারের সময় একটু কম হচ্ছে এই সমস্ত কোন কথা বলে আর পাড় পাওয়া যাবে না। এখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতিই নয় শুধু, সুস্পষ্ট মানবিক বিপর্যয়। মুলতঃ আইন শৃঙ্খলা অবনতি, বেকারত্ব, সুশাসন বজায় না থাকা, সমাজে নিম্নবৃত্ত শ্রেণী মানুষের যথাযথ মূল্যায়ন না থাকা বিষয়গুলো মানব পাচারের জন্য দায়ী। সরকার বলছে মাত্র ৪০ হাজার খরচ করে মানুষ বিদেশে যেতে পারবে কর্মসংস্থানের জন্য। এমন কি ঋণ গ্রহনের মাধ্যমে মানুষ প্রবাসে কাজের জন্য যেতে পারবে। কিন্তু বাস্তবতা নির্মম, বড় নির্দয়। ৫-৭ লাখ টাকা না হলে কেউ বিদেশ পাড়ি দিতে পারেনা। অন্যদিকে সুশাসন থেকে বঞ্চিত সমাজে অবহেলিত সহজ সরল একটি অংশ দালালদের খপ্পরে পড়ে বেঁচে থাকার জন্য বাধ্য হচ্ছে পতিতা বৃত্তি গ্রহণে। দিল্লি থেকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী অনুরোধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে চিঠি লিখেছেন ভারতে পতিতালয়ে বাংলাদেশী শিশু, কিশোরী, নারী পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। ভারতে পতিতালয়ে বাংলাদেশী শিশু কিশোর ও নারীদের সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সরজমিনে দেখা গেছে যে শুধু একটি আশ্রয় কেন্দ্রে নাকি ৪০ জনের মধ্যে ২৯জন বাংলাদেশী। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, দারিদ্রতা, বিয়ের সমস্যা, চাকরীর অভাব ইত্যাদি কারণে মানুষ পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে ভারতে যৌনপল্লীগুলোতে বিক্রি হচ্ছে। আদিম সভ্যতার কথা কমবেশি আমরা সবাই জানি। ছোট বেলায় স্কুলে সমাজ-বিজ্ঞান বিষয়ে এই আদিম সভ্যতা পড়েছি। সেখানে খুব সামান্যই জানা হয়েছিল। আর যা জানা হয়েছিল তার মধ্যে ইতিবাচক থেকে নেতিবাচক বিষয় বেশি জানা গেছে। যেমন পাথরে পাথরে ঘষে আগুন আবিষ্কার ছাড়া ইতিবাচক তেমন কিছু ছিল না। সভ্যতার ক্রমবিকাশ বর্ণনা করতে গিয়ে আদিম মানুষ উলঙ্গ থাকতেন বা গাছের লতাপাতা দিয়ে লজ্জা নিবারণ করতেন, কাঁচা মাংস খেতেন, শিক্ষা বা জ্ঞান অর্জন বলে কিছু ছিল না, মানুষ দলবদ্ধ ভাবে বসবাস করলেও এক গোত্রের সাথে অন্য গোত্রের মিল ছিলনা, বর্তমানে ইট পাথরের তৈরি সভ্যতার ছোঁয়া ছিল না, বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াত সর্বপরি আদিম মানুষ যে অসভ্য ছিল তেমনটাই বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে স্কুল পেরিয়ে কলেজ, ইউনিভার্সিটি, এমন কি আজকে এই একবিংশ শতাব্দীতে মুক্ত জ্ঞান চর্চার এক অভয়রন্যে সেই মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ জানতে গেলে মোটামুটি একই রকম। পূর্বে মানুষ অসভ্য ছিল! বিশেষ করে মধ্যযুগের সমাজ ব্যবস্থা ও মানুষের আচার আচরণ নাকি তেমনটাই ছিল। তাই মধ্যযুগ পূর্ব এই আধুনিক সমাজে অন্ধকার যুগ বলে প্রমাণিত অনেকের কাছে। সমাজ বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ, কবি সাহিত্যিক মোটামুটি সর্বস্তরে তাঁদের স্ব স্ব ক্ষেত্রে তেমনটাই বলতে চেয়েছেন। কারণও ছিল হয়ত তাঁরা তেমনই দেখেছিলেন। আমরাও তাই মানি, কারণ ছিলনা শিক্ষার আলো, বুঝত না মানবিক মূল্যবোধ। তাইতো আমরা বড়াই করে বলি আমরা আধুনিক, সভ্য ও ভদ্র আর ওরা ছিল আদিম, অসভ্য। আদিম যুগ অথবা মধ্যযুগে যে যুগের কথাই বলি না কেন, সেখানে অনেক কিছু না থাকলেও মানবিকতা একেবারে ছিলনা এরকম কোন প্রমান বা সঠিক ইতিহাস পাওয়া যাবে না। আর কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও শিক্ষার আলোর অভাবে মানুষ অমানবিক হবে তা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা যে শিক্ষার বড়াই করি, আমাদের আধুনিক মনেকরি কিন্তু আমাদের যে মানবিকতা নেই তাহলে কি আমারা সত্যিই আধুনিক এবং মানবিক। আধুনিকতা আর উন্নয়নের তারতম্যে জাতি, দেশ ও মানুষের অমানবিকতার ধরনটাও ভিন্ন হয়। যারা উন্নত দেশ তারা দেখা যায় গরীব দেশ ও জাতি গোষ্ঠী কে বিভিন্ন ভাবে ছবক দেন। কিন্তু তাদের ভিতরটা কি আমরা জানি? আমরা সমুদ্রে ভাসমান রহিংগাদের আমাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয়নি। আমরা হয় অমানবিক হয়েছিলাম, হ্যাঁ কিছু কারণও আছে, যেমন অনেক রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আছে তাদের কোন সুরাহা হয়নি, হতে পারি আমরা গরীব দেশ, শিক্ষা, আধুনিকতায় ও মানবিকতায় অনেক পিছিয়ে। কিন্তু মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড তারা কি করলেন? অমানবিকতার চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তাদের দেশে গন কবর দিয়ে, দাস প্রথা চালু করে সেই মধ্য যুগীয় বর্বরতাকেউ হার মানিয়েছে। শুধু কি তাই সমুদ্রে ভাসমান, ভুখা, শিশু, মহিলা ও হড্ডি সর্বস্ব ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারিও ওদের মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলতে পারেনি। এমন করুন হৃদয় বিদারক দৃশ্য লিখে প্রকাশ করা অসম্ভব। বিশ্ব মিডিয়ার কল্যাণে সারাবিশ্বের হৃদয়বান মানুষের অনুরোধে তারা কিছুটা নমনীয় হলেও ছিলেন নগ্ন কৌশলে।
বিশ্বকে দেখানোর জন্য উপর থেকে উড়োজাহাজে করে খাদ্য ফেলা হল। বিধিবাম, খাদ্য ফেলা হল ঠিকই কিন্তু নৌকায় বা জাহাজে না ফেলে সমুদ্রের পানিতে, যেন ভুখা, শিশু, মহিলা ও হড্ডি সর্বস্ব ক্ষুধার্ত শক্তিহীন মানুষগুলো পানিতে ঝাঁপিয়ে পরে মরে। শুধু তাই নয় মাঝিদের উপর হুকুম জারী করা হল যে, পানিতে ডুবে মরলেও যেন তাঁদের না বাঁচানো হয়। হায়রে মানবতা! আমি নিশ্চিত না হয়ে আর পারছি না যে, পরপার থেকে আমাদের আদিম পূর্বশরিরা এই অমানবিক দৃশ্য দেখছেন আর মনেপ্রাণে অভিশাপ দিচ্ছেন ধবংস হউক এই আধুনিক সভ্যতা, ধবংস হউক ঘৃণ্য তোমাদের আধুনিকতা।


মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



দেশকে নরকে পরিণট করেছে কিছু লোক।

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৩০

বিদ্যুৎ বলেছেন: হ্যাঁ আপনি ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৫৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: এ দেশে কর্মসংস্থানের অভাব ছিল না কবে?
দেশে যতদিন সঠিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে না মানব পাচারও থামবে না।
সরকার এ বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে অবস্থা আরও ভয়াভয়ো হবে।

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:০১

বিদ্যুৎ বলেছেন: হ্যাঁ, আপনি যথার্থই বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:১৮

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: মানুষ দিনে দিনে অমানুষ জানোয়ারে পরিনিতি হচ্ছে ।

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৩

বিদ্যুৎ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। কতিপয় হিংস্র জানোয়ার ছাড়া বেশির ভাগ জন্তু জানোয়ার খুব শান্ত ও নিরাপদ কিন্তু কিছু মানুষ হিংস্র পশুদের চেয়ে বেশি অনিরাপদ।

৪| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কি যে বলেন??
কল্পনার ঘোড়ায় মধ্যম উন্নয়নের দেশে পৌছে গেছে দেশ! গড় হিসেবে দরবেশ আর ভিখিরি গড় কত জানেন???
ট্যাগিংবাজি রাজনীতি কোথায় পৌছে দিচ্ছে দেখার কেউ নেই!!!


এখানে রাজনৈতিক কোন ইস্যু খুঁজলে হবেনা। যে বা যারা সরকারে আছে এবং দেশ পরিচালনা করছে তাঁরা এই জন্য সম্পূর্ণ দায়ী। আগের সরকারের সময় এত লোক পাচার হয়েছে আর বর্তমান সরকারের সময় একটু কম হচ্ছে এই সমস্ত কোন কথা বলে আর পাড় পাওয়া যাবে না। এখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতিই নয় শুধু, সুস্পষ্ট মানবিক বিপর্যয়।

+++

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫

বিদ্যুৎ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:০৮

কানিজ রিনা বলেছেন: বাস্তব কিছু সত্য তুলে ধরেছেন। আমাদের
দেশে বেকারত্ব্য সমাধানের অগ্রগতি নাই।
ধন্যবাদ।

১৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬

বিদ্যুৎ বলেছেন: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যে সহমত প্রকাশের জন্য।

৬| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৬

তারেক ফাহিম বলেছেন: গত কয়েক দিন পূর্ব মানব পাচার এক নারীর অভিযোগ শুনলাম, শেষ পর্যন্ত ঐ নারী ওমান থেকে প্যগনেনসি হয়ে ফিরে আসলো। সময়পোযুগি পোষ্ট আমার কাছে।

১৯ শে জুলাই, ২০১৭ ভোর ৪:৫৬

বিদ্যুৎ বলেছেন: ধন্যবাদ তারেক ফাহিম আপনাকে। শুনতে খুব কষ্ট হয় এবং লজ্জারও ব্যাপার। ঐ নারী হয়ত দুর্গতি নিয়ে প্রাণে ফিরে এসেছে কিন্তু অনেকে জীবিত ফিরেও আসতে পারে নাই। সাগরের অতল গহ্বরে বিলীন হয়ে গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.