নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহেনা যাতনা দিবস রজনী

বদিউজ্জামান মিলন

আমি একজন খেটে খাওয়া শ্রমিক। রবীন্দ্রনাথ আমার গুরু। উনার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, গান আমার দারুণ প্রিয়। আমি প্রথম আলো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছি। বেড়ানো আমার শখ, শখটা এখন ঘুমানোতে ডাইভার্ট হয়ে গেছে। খেলা দেখার নেশাটা ছাড়তে পারি নি এখনও......

বদিউজ্জামান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোনো এক মধ্যবিত্ত বাঙালির ঈদের গল্প

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬

আজ ঈদ। মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দ। গল্পটা পড়েছিলাম ছোটোবেলায়। তখন শুধু এই ঈদের আনন্দ গল্পের বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো না। আনন্দটা আমার ছোট হৃদয়ে ঢেউ তুলতো। আমাদের হাবিবপুর ঈদগাহ মাঠটা সাজানোর দায়িত্ব পড়তো আমাদের সমবয়সীদের। এটা নব্বইয়ের দশকের কথা। আমি ফুল কাটতাম। কাগজের রঙিন ফুল। আমার চেয়ে বেশি ভালো ফুল কাটতো আমার ছোটো ভাই। আমরা আমাদের বাড়িটাও সাজানোর চেষ্টা করতাম।

গ্রামে আমার সমবয়সীদের বেশিরভাগ এখন মধ্যপ্রাচ্যে। দুবাই, সৌদি, কুয়েত, কাতার-সব দেশেই আছে। আমি ঢাকায় থাকি। চাকুরির সুবাদে কম যাওয়া হয় গ্রামে। গেলে কাউকে পাই না। কালের স্বাক্ষী হয়ে টিকে থাকা আম বাগানটাও উচ্ছন্নে গেছে। মনে হয় গ্রাম না, মরুভূমি।

আমাদের মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের ঈদ আনন্দ মনে হয় সবার একই রকম। কিন্ত আমাদের ঈদ আনন্দে কোথায় যেন একটা বাধা থাকতোই। দেখতাম ঈদের দিন আম্মা কোনে নতুন শাড়ী পরছেনা। আম্মা কাদছে। আজ সকালেও কেদেছে। আমি চাকরি করে..চাকরির আগে টিউশনি করেও মনে আছে আড়ঙ এর পাশের প্রাইড শো রুম থেকে মায়ের ঈদের শাড়ি কিনেছিলাম। আজ আমি আম্মাকে কোনো শাড়ী দিতে পারিন। দিলে নিবে না। আমি তাকে কিছু বলতেই জানি কাদবে। আম্মা তাই এখনো কাঁদছে।

মায়ের ধারণা আমি অমানুষ। আমি কুলাঙ্গার। আমরা তিন ভাইয়ের কেউ বাড়িতে নেই আজ। বড় ভাই কোথায় কেউ খোজ রাখেনা। কেউ জানেনা। গ্রামের গরীব মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে বিদেশ পাঠানোর নামে টাকা নিয়ে ভেগেছিল। এরপর বাবা জমি বেচে সেই দেনা শোধ করে। সেই থেকে বড় ভাই উধাও। মাঝে একবার এসেছিল বাড়িতে।

আমি ঢাকায় থাকি। চাকরির সুবাদে। আমি বাড়িতে যাই না। যেতে পারি না। ছুটি কম পাই। এবার ছুটি পেয়েও যেতে পারি নি। বাড়ি কার কাছে যাবো। বাবা টেলিফোনে গালাগালি করে। মা বলে আমরা তার ছেলেরা নাকি কুকুর! কুকুরের মতো জন্ম দিয়েছে। বড় করেছে। আম্মাকে আমি বলি আমার দোষটা কোথায়? তুমি কেন তোমার কোনো ছেলের সঙ্গেই মানিয়ে নিতে পারোনা।তুমি কেন তোমার কোনো বউমাকে দেখতে পারো না? তুমি না মা। মা আর মাতৃভূমি, দেশ আর মাটি নাকি এক। মা তার বুকে সব টেনে নেয়। আমি কি তোমার বুকে আশ্রয় পেয়েছি?

তুমি কেন এমন করো? তোমার একমাত্র মেয়ে যাকে তুমি তোমার পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছো তার কথাতেই তুমি ওঠ বসো। আমি তো আমার পছন্দের কোনো মেয়েকে বিয়ে করিনি। মনে পড়ে মা, আমি তখন সবে চাকরি পেয়েছি, তুমি কোথা থেকে কি সব শুনলে আমাকে ছাগলের মতো গলায় দড়ি বেঁধে বাড়ি নিয়ে গেলে। আমাকে জোর করে বিয়ে দিলে। আমার এখন সংসার হয়েছে। একটা মেয়ে হয়েছে। তবু তোমাকে ঈদ পার্বণে অসুখে বিসুখে খরচ দিয়েছি। তুমি গৃহস্থ বাড়ির বউ। তোমার জমি জিরাত, ডিপ টিউবয়েল, পাওয়ার ট্রেলার, দুধেল গাই--- সোনার সংসার তোমার। এক ছেলে দাম্মাম থাকতো। তবু তোমার এত কিসের অভাব? আজো আমি সেটা ভেবে পাই না।

সংসারে সম্পত্তিই কি সব? সুখ শান্তি এসবের কি কোনো মূল্য নেই? তুমি কি ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখেছ কেন তোমার সংসার আজ তিন টুকরো? জানি এই বোধ তোমার কোনোদিন হবে না। তোমার এক ছেলে ঢাকা। এক ছেলে গ্রামে থেকেও বাড়ি ছেড়ে অন্য খানে বাড়ি ভাড়া করে থাকে। এগুলো বলার..ভাবার কেউ নেই।

জানিনা কবে এসব সমস্যা সমাধান হবে? আদৌ হবে কি না জানিনা।

*পুরোটাই একটা কাল্পনিক গল্প। *

একটু আগে আমার মেয়েটা এসে আমাকে বলল, বাবা তুমি মনে হয় আমার ওপরে রাগ করেছো। আমি আমার ছোট্টো মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম, না মা। আমি কি তোমার ওপর রাগ করতে পারি! তুমিই তো আমার সব। এক মা আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আরেক মা ঠিকই আমাকে বুকে টেনে নিয়েছে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ঈদ মোবারক!!!!!!!


:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.