নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সহেনা যাতনা দিবস রজনী

বদিউজ্জামান মিলন

আমি একজন খেটে খাওয়া শ্রমিক। রবীন্দ্রনাথ আমার গুরু। উনার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, গান আমার দারুণ প্রিয়। আমি প্রথম আলো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছি। বেড়ানো আমার শখ, শখটা এখন ঘুমানোতে ডাইভার্ট হয়ে গেছে। খেলা দেখার নেশাটা ছাড়তে পারি নি এখনও......

বদিউজ্জামান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার ফরিদপুর ভ্রমণ

২৭ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৯

ফরিদপুর আমার শ্বশুরবাড়ির এলাকা। গোপালগঞ্জ মুকসুদপুর শ্বশুরবাড়ি। ফরিদপুর তাদের একাধিক আত্মীয়স্বজন থাকে। এবার অফিসের শত ব্যস্ততার মাঝেও ছুটি নিয়ে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যেতে হলো ফরিদপুর। মূল শহরে নয়। শহর থেকে বাইরে যে রাস্তাটা মাগুরার দিকে গিয়েছে ওই জায়গাটার নাম মাঝকান্দি। মধুখালির ঠিক আগে। মাঝকান্দি হয়ে যে রাস্তা গোপালগঞ্জের দিকে গেল ওই রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গেলে বাগানের ভেতর বাড়িটা। খুব ছিমছাম। ঢাকা থেকে পরিবার পরিজন মানে শ্বাশুড়ি, বউ, শ্যালিকা, ভাইরা , আমার তিন কন্যাসহ সবাই একটা মাইক্রোবাস ভাড়া করে রওয়ানা করলাম। গাড়িতে ওঠার পর থেকেই সবাই যেন (আমি বাদে) বমির মহোৎসব শুরু করে দিল। আমার ছোটো দুই মেয়ে অবশ্য বাদ। দৌলতদিয়া ফেরিতে উঠে সেটা থামল। বাকি রাস্তা আল্লাহ আল্লাহ করে কাটিয়ে দিলাম।
নতুন শ্বশুরবাড়ি । তাই মিষ্টি কিনতে হবে। চলে এলাম মধুখালী বাজারে। বাগাটের মিষ্টি প্রায় পনের কেজি মতো কিনলাম। দোকানি ইয়া বড় রসগোল্লা খাওয়ালো। দুইটা খাওয়ার পর আমার দুপুরের ভাত খাওয়াই হলো না। রাতে খেলাম একবারে। ও হ্যাঁ, আসল কথা তো বলাই হয়নি। আমাদের বরণ করা হলো। কুলা, দুর্বা ঘাস, রঙিন হাড়ি এবং আরো কত কি যে ছিল। একটা বিষয় বুঝলাম, এই এলাকাতে প্রচুর খেজুর ও তাল গাছ। আছে বাগানের পর বাগান লিচু । এবং বাঁশঝাড়।
গ্রাম এলাকা। তবে ছিমছাম। মসজিদ একটু পরপর চোখে পড়ল দু একটা করে। যাই হোক পরদিন অনুষ্ঠান। যে কারণে ঢাকা থেকে যাওয়া।
বিনোদোন পর্ব: ঢাকা শহরেরর শত ব্যস্ততার মাঝে আমরা বিনোদন খুঁজতে টিভি রিমোট হাতড়ে মরি। কিন্তু বিজ্ঞাপনের অত্যাচারে সেখানেও অসহায়। কিন্তু গ্রামে যে বিজ্ঞাপন ছাড়াই এত বিনোদন জমা ছিল সেটা আপনারা কেউ না দেখলে বুঝবেন না। কয়েকটা উদাহরণ দিই। গিয়ে দেখি বিশাল ডেকসেট ভাড়া করা হয়েছে। কিন্তু কেউ গান বাজাচ্ছে না। আমি গিয়ে আমার অ্যান্ড্রুয়েড স্যামসাং মোবাইলে নতুন যতো হিন্দি গান আছে বাজানো শুরু করলাম। রাতে এল বিনোদনের ফেরিওয়ালারা। গ্রামের উঠতি তরুণ যুবকরা মিলে ব্রেকড্যান্স দিল। গানের তালে তালে। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরাও বাদ গেল না। এদের নাচের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। কিন্তু যে রিদমে পায়ে পা মিলিয়ে দৃষ্টিনন্দন নাচল, আমি সত্যি অভিভূত। মানিব্যাগ বের করে সবাইকে টাকা দিতে শুরু করলাম।
এরপর এল কৌতুকাভিনয়। ব্যাপারটা এমন: মোবাইলে মীরাক্কেল বা অন্য কোনো স্থানীয় অভিনেতাদের কৌতুকের খন্ডাংশ বাজাল ওরা। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেকাপ, গেটাপ তো আছেই। এবং ডাবিংয়ের মতো সংলাপ। এদের সৃষ্টিশীলতা দেখে আমি তো অবাক! আর ওদের অভিনয় দেখে সবাই হেসে গড়াগড়ি যাওয়ার জোগাড়। রাত ২টা পর্যন্ত গান, নাচ ও অভিনয় চলল।
পরদিন অনুষ্ঠান। একদিন পর শ্বশুরবাড়িতে বাজার করতে হবে। এটাই নাকি ওখানকার নিয়ম। নতুন শ্ব্বশুর বাড়ি বলে কথা। আসলে তো গেলাম বিয়ের ১০ বছর পর। সে যাই হোক ওখানে কাছাকাছি বাজারে নাকি মাছ নেই, এজন্য ঠিক হলো অনেক দূরে নকুলহাটি যেতে হবে। বোয়ালমারি, চাঁদপুর, সালথা (সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পৈতৃক ভিটা), জয়কালী, এরপর নকুলহাটি। রাস্তা নির্জন। পিচঢালা পথ। স্কুলের মেয়েরা বাড়ির পথ ধরছে। অসাধারণ লাগছিল। এক পর্যায়ে হাটে পৌঁছালাম। মোটামুটি মানের থানা পর্যায়ের হাট হবে হয়তো । কিন্তু আমরা হাট শুরুর এত আগে পৌঁছে গেছি যে ওই দুপুরে খাঁ খাঁ রোদের মধ্যে বাজারে বসে থাকতে হল। আমি একটা সেলুনে ঢুকে সেভ করলাম ওই ফাঁকে। সেভ করার পর দিলাম লম্বা ঘুম। বাজারে সবার মুখে একটাই দেখি আলোচনা@ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা কেন এভাবে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারল। (আগেরদিন ছিল ওই সেমিফাইনাল)। কিভাবে কাঁদল মরনে মরকেল আর ডি ভিলিয়ার্সরা।
অবশেষে বেলা ৩টার দিকে ছাগল ও গরু আসা শুরু হলো। একজন ব্যাপারী ধরে আমার শ্বশুর এবং মামা শ্বশুর বেছে বেছে ছাগল একটা কিনল। ৬ হাজার ৪ শ দিয়ে। সিঙাড়া আর কলা কিনলাম দুই ফানা। পানির বোতল ছিলই। এরপর আসার পথে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে বাড়ির পথ ধরলাম। কাছাকাছি একটা বাজার নামটা সম্ভবত চাঁদপুর বাজার, বোয়ালমারির মধ্যে পড়েছে। বটগাছ আছে বাজারেরর পাশে। সেখান থেকে পানসুপারি কেনা হলো। ও হ্যাঁ। আমরা গিয়েছিলাম ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়িতে। পথে সেটা একবার নষ্টও হলো। একপর্যায়ে ভালো হলো অটোমেটিক। এজন্যই বোধহয় স্থানীয় লোকে এই গাড়িকে অটো বলে!
বাজার শেষ করে যখন বাড়ি ফিরলাম সকালের সূর্য বিকেলে দূর দিগন্তে হেলে পড়েছে।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৬

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: ফরিদপুরের কোনো ভাই থাকলে আওয়াজ দিয়েন। ভুলভাল হলে বইলেন কিন্তু!!!

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০১

♥কবি♥ বলেছেন: ফরিদপুর আসলে অসম্ভব সুন্দর একটা জায়গা নিজের এলাকা বলে বলছি না আমি এর আনাচে কানাচে বহু জায়গায় ঘুরেছি। তবে সব চাইতে মজার এমুহুর্তে যা মনে পড়ছে তা হল- ফরিদপুর বেড়ীবাধ এলাকায় পদ্মা নদীতে হস্তচালিত উচা/ভেষাল দ্বারা নিজ হাতে তাঁজা ইলিশ মাছ ধরার স্মৃতি যা কখনো ভুলব না।

৩| ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২

এনামুল রেজা বলেছেন: বেশ লাগলো পড়তে। :D

৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

লিমন আজাদ বলেছেন: ফরিদপুর আমার গ্রামের বাড়ি। আমার জন্মস্থান। ফরিদপুর শহরে। তবে আপনার উল্লেখিত স্থানগুলোও ভালই চিনি।

কিন্ত একটা জিনিস বুঝলাম না, আপনার তিন কন্যা অথচ বললেন নতুন শ্বশুরবাড়ি ! :O

যাই হোক, হিন্দিগান কম বাজিয়ে বেশি বেশি বাংলা গান বাজালে বেশি খুশি হতাম। :P

ফরিদপুরবাসির পক্ষ থেকে আপনাকে শুভেচ্ছা। :)

৫| ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ লিমন আজাদ, এনামুল রেজা এবং কবি ভাইকে। বাংলা গান্ও বাজিয়েছি। তবে নাচের বেলায় ওরা হিন্দিগানই বেশি পছন্দ করছিল তো তাই..

৬| ২৭ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৪০

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: আমার শ্বশুর বাড়ীও গোপালগঞ্জ মুকসুদপুর :#) :-B

৭| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৩৫

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
এতক্ষন লগইন না করেই পড়তেছিলাম সবার পোষ্টগুলো, ফরিদপুরের নেটিভ হওয়র জন্য আপনার পোষ্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য লগইন কলাম ।

তো ভাই বুঝলাম আপনি ফরিদ পুরের (মেয়ের) জামাই, কিন্তু আপনি কোন (বৃহত্তর) জিলার লোক ! তা কিন্তু উল্লেখ করেন নাই, উল্লেখ করলে খুশি হতাম । B-N-C-C না হইলেই হয় ।

ফরিদপুরের জামি হওয়ায় আপনার প্রতি অভিন্দন রহিল ।

৮| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৩

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: @ এ কে এম রেজাউল করিম ভাই: আমার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। আপনার কাঙ্খিত বিএনসিসি তে নই। বৃহত্তর যশোর জেলাতে..ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া কি যে ভালো লাগলো লেখাটা! যেন আমিই বেড়াতে গিয়েছিলাম।

১০| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর ভ্রমন বিনোদন ।বিয়ের দশ বছর পর প্রথম শ্বশুড়বাড়ি !!!। বেশ আনন্দ করেছেন বুঝা গেল।সুন্দর শেয়ার ।

১১| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪

হাইপারসনিক বলেছেন: সবকিছু মোটামুটি ভালই লাগল,তবে যেতে পারলে আরও মজা পাইতাম....

১২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:২৮

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ শায়মা, সেলিম আনোয়ার এবং হাইপারসনিককে...

১৩| ২৫ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭

ফোনেটিক বলেছেন: ফরিদপুর জেলার দর্শনীয় স্থান - http://www.deshiinfo.com/ফরিদপুর-জেলা-ভ্রমণ/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.